আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এ্যাডভেঞ্চার অব সিপ্পি (ফটোব্লগ) -১

এক সময় বই ছিল আমার নিত্য সঙ্গী , অনেক রাত জেগে বালিশ নিয়ে উপুর হয়ে বই পড়তে পড়তে বুক ব্যাথা হয়ে যেত । পড়া শেষ হতো না । আজো বইয়ের কথা মনে হলে আমার বুকে ব্যাথা হয়, তাদের মলাটে ধুলোর আস্তর জমেছে বলে । বইয়ের পোকা থেকে এখন আমি ইন্টারনেটের পোকা । ভ্রমণ বাংলাদেশ প্রতি বৎসর বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গায় প্রচুর ট্যুর করে থাকে ।

গত বছর ডিসেম্বরে এমনি একটা ট্যুর ছিল সিপ্পি পাহাড় ট্রাকিং । উচ্চতায় ইহা বাংলাদেশের ৪র্থ কিন্তু দূর্গমতায় প্রথম । সদস্য ছিলাম আমরা ২৩ জন । অবশ্য আমরা কয়েকজন বাদে আমরা বাকীরা দূর্গম সিপ্পির চুড়ায় পা রাখতে পারিনি । বেশী দূর্গম স্থানগুলোতে ছবিও উঠাতে পারিনি ।

তবু যেটুকু উঠাতে পেরেছিলাম তাই দেখুন আমার ক্যামেরায়.............. ঢাকা থেকে বান্দরবান পৌছতেই আমাদের সকাল ৯টা বেজে গেল, ওখানে নাস্তা সেরে চান্দের গাড়িতে এমনিভাবে গাদাগাদি বসে শুরু হলো আমাদের যাত্রা......... পথিমধ্যে পুলিশ আমাদের গাড়ি বেশ কিছুক্ষণ আটকে রাখে, সম্ভবত গাড়ির কাগজে সমস্যা, এই সময়টা আমি বেশ কিছু ছবি তুলি, তারই একটা পাহাড়ের মধ্যিখানে চকচকে সাঙ্গু নদী । কইক্ষং ঝিরি এসে ট্রলারের জন্য অপেক্ষা,,,,,,,,,,,,,,,, অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো, ট্রলার চলে এলো । কিন্তু খরস্রোতা সাঙ্গু নদীতে ট্রলারের অবস্থা দেখে আমি কিছুটা সংকিত, খুবই গাদাগাদি করে উপর-নীচে যাত্রীতে বোঝাই । ট্রলারের ছাদ এতো নিচু যে, প্রায় মাথা ঠেকে থাকে । এখানেও আবার লেট, যাত্রী কম বলে ছাড়ল বেশ দেরী করে ।

ট্রলার ছাড়লে আমি ক্যামেরা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম, সাঙ্গু নদীর শিশু মাঝি এমন দৃশ্য দেখে মনের অজান্তেই আমি বলে ফেলি "এমন দেশটি কোথাও খুজে.........." বয়ে চলা সাঙ্গু নদী, সামনে রহস্য ঘেরা পাহাড় । কথায় আছেনা, ঢাকা শহরে একবার লাল বাতির সিগনালে পড়লে পুরো রাস্তায়ই লাল বাতি দেখতে হয়, আমাদের ও হয়েছে তাই । যানঝটের কারণে ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে লেট, চান্দের গাড়ি পুলিশে আটকানো, ট্রলার দেরীতে আসা সব যায়গায়ই লেট, আর এবার রুমা পৌছার আগেই ট্রলার বিকল হয়ে গেল, সুতরাং এমন খাড়া পার ধরে হাটা ছাড়া আর কোন বিকল্প রইল না । আমাদের জন্য চান্দের গাড়ি আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছিল । চূড়ান্ত বিপদে ফেলে সেই গাড়ি ও লাপাত্তা ।

অনেক অপেক্ষার পর একটা দেড় টনি ট্রাকের ব্যবস্থা হল, সেই ট্রাকে চড়ার কথা আমি মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত ভুলবো না, এমন খাড়া চড়াই উৎরাই পাড়ি দি্তে হয়েছিল যে একটু এদিক সেদিক হলেই হয়তো হাজার ফুট খাদে চলে যাবো আমরা, ভয় থেকে দূরে থাকতে এখন আমি ক্যামেরা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম । মুন্নুয়াম পাড়া, এখানে আমাদের রাতে থাকার পরিকল্পনা ছিল না, কিন্তু সব জায়গায় লেট হওয়ার কারণে এখানে রাতে থাকতে হয় । এখানকার কারবারি আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন । তার বাড়িতে একটা স্কুল আছে, সেখানেই আমরা থাকি । রাতের খাবার ছিল খিচুড়ি , ডিম সালাদ আর শুটকি ভর্তা ।

ইশ্ কিযে মজা হয়েছিল না খাবারটা । মুন্নুয়াম পাড়ায় ভোরঃ শীতে আগুন পোহাচ্ছে মা ও তার শিশু সন্তান । আমাদের দেখতে ওরা আগুন পোহানোর কথা ভুলে গেছে ভ্রমন বাংলাদেশের সেক্রেটারী মনা ভাই, কি এমন বলছিল আমার আজো জানা হয়নি । যার কারণে সবাই মন্ত্রমূগ্ধের ন্যায় শুনছিলো ওনার কথা । আমাদের সিপ্পি টিম, মুন্নুয়াম পাড়াকে বিদায় জানিয়ে সিপ্পির পথে রওয়ানা হওয়ার সময়ে তোলা ছবি, ওকানকার মানুষদের আতিথেয়তা আমি কোনদিন ভুলব না ।

চলবে................  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.