আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী' এর স্মরনে-

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী যাকে মজলুম নেতা বলা হত৷ মজলুম অর্থাত্‍ উত্‍পীড়িত৷ যার উপর অত্যাচার করা হয়৷ তিনি সারাজীবন অত্যাচার, শোষন ও জুলমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে গেছেন৷ তিনি কৃষক, শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সারা জীবন ছিলেন বদ্ধপরিকর৷ তিনি প্রথম জীবনে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক ছিলেন৷ তিনি তার বাস্তব জীবনে দেখেছেন তত্‍কালীন জমিদার প্রথা ও বাঙ্গীলের উপর শোষন, বঞ্চনা আর অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র৷ যা দ্বারা তিনিও হয়ত জুলুমের স্বিকার হয়েছিলেন তাইত তিনি সেই অত্যাচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পেরেছিলেন৷ আর যখনই তিনি দেখেছেন মানুষের উপর অত্যাচার , নির্যাতন তখনই আক্রোশে ফেটে পড়েছেন আর তখন সেই সব অত্যাচারিত , নিপীড়িত মানুষগুলি তার পাশে এসে দাড়িয়েছেন৷ যা আমি আমার বাস্তব জীবন থেকে অনুভব করতে পারি৷ তিনি ১৯২৪ সনে ভারতের আসামের ধুবড়ি জেলার ভাসান চরে বিরাট কৃষক সমাবেশে কৃষকের পৰে ভাষন দিয়েছিলেন আর সেদিন তারা তাকে 'ভাসানী চরের মাওলানা' উপাধী দেন৷ আর সেই থেকে তিনি হয়ে গেলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী৷ তিনি সব সময় লাইন প্রথার বিরুদ্ধে কাজ করেছিলেন৷ লাইন প্রথা হল অবিভক্ত ভারতবর্ষের আসাম প্রদেশের একটি কুখ্যাত আইন৷ আসামে বাঙ্গালী নির্যাতন ও বাঙ্গালীদের নিপীড়নের জন্য এই প্রথা চালু করা হয়৷ এই প্রথা অনুযায়ী বাঙ্গালীদের একটি নিদিষ্ট সীমারেখার মধ্যে বাস করতে হত৷ এর ফলে দ্রুত বাঙ্গালীরা ভুমিহীন, অসহায় ও দরিদ্র হয়ে পড়ে ৷ তিনি এই আইনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেন আর ১৯৪৫ সনে তা বাতিল হয়৷ তিনি প্রথমে বিট্রিশ ভারত বিরোধী সংগ্রাম করেছেন৷ তারপর ১৯৪৭ সনে তিনি আসাম থেকে এসে পুর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ ও পরে আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেন৷ তারপর ১৯৫২ সনে ভাষা আন্দোলন শুরু হলে তিনি রাষ্ট্রভাষার দাবীতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করেন বলে সেদিন তিনি গ্রেফতার হন৷ ১৯৫৭ সনে তিনি টাংগাইলে কাগমারীতে এক বিশাল আর্ন্তজাতিক, সাংস্কৃতিক সম্মেলন আহবান করেন৷ একে ইতিহাস বিখ্যাত কাগমারী সম্মেলন বলা হয়৷ আবদুল হামিদ খান ভাসানী অবশেষে বুঝতে পেরেছিলেন যে পাকিস্তান সরকার পুর্ব পাকিস্তানের উপর যে নিপীড়ন ও বৈষ্যম্য নীতি গ্রহন করেছে তা এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হয়ে যাবে যা তিনি ১৯৭০ সনের পল্টন ময়দানের জনসভায় জাতিকে স্বরন করে দিয়েছিলেন৷ মাওলানা ভাসানী লক্ষ লক্ষ জনতাকে সংগে নিয়ে ১৯৭৬ সনের ১৬ মে ঢাকা রাজশাহী লং মার্চে অংশগ্রন করেছিলেন কেবল ফারাক্কা বাধের বিরুদ্ধে কারন গঙ্গা নদীর উপর ফারাক্কা বাধ নির্মানের ফলে মরুকরন শুরু হয়েছিল বলে৷ আমি জীবনে মাওলানা আবদুল ভাসানী কেবল নামটিই শুনেছিলাম কিন্ত তাকে পড়ার সময় হয়নি৷ জাস্ট এখন টিভি নিউজে জানলাম আগামী কাল তার খুব সম্ভবত: মৃত দিবস৷ তাই তাকে পড়ার চেষ্টা করে কোথায় না পেয়ে ফাইভের একটি নোট বই থেকে তাকে পড়লাম জানলাম এবং বুঝলাম৷ আর আমি তার পা হতে মাথা পর্যন্ত জেনে গেলাম৷ তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ যিনি কষ্ট, দু:খ, যন্ত্রনা, অত্যাচার, নির্যাতন, জুলুম, স্বৈরাচার সবই দেখেছেন তারপর এক জীবন্ত ইতিহাস হয়ে গিয়েছিলেন৷ তিনিই বাংলার ইতিহাসে একমাত্র আদর্শ৷ তিনিই শিক্ষক৷ তিনিই গুরু৷ তিনি সেই বিট্রিশ ভারত বিরোধী আন্দোলনের নেতা চিত্ত রঞ্জন দাসের অনুপ্রেরনায় অনুপ্রানিত হয়ে স্বদেশপ্রেমে উজ্জিবিত এক মহাপুরুষ৷ আর সবচেয়ে বড় সত্য হল তিনিই বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা৷ কারন আমি পেয়েছি তিনি আসাম থেকে এসে প্রথমে পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্টা করেন আর পরে আওয়ামীল৷ তিনিই প্রথম সম্ভব: বিট্রিশ ভারত ও পরে বাঙ্গালীর অস্বিত্ব রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছেন৷ যা তার লাইন প্রথার বিরুদ্ধে সংগ্রামে বুঝা যায়৷ ঠিক আজকের সব ছিটমহল, করিডোর সম্ভবত: তারই রপান্তর৷ যাকে বলে শোষন নীতি৷ আর তিনি এই শোষন নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন সারাজীবন সোচ্চার৷ তার সেই দীর্ঘ জীবন শেষে এসেও তিনি ১৯৭৬ সনে লক্ষ লক্ষ জনতাকে নিয়ে ঢাকা রাজশাহী লং মার্চে অংশগ্রহন করেছিলেন কেবল গঙ্গার উপর ফারাক্কা বাধ নির্মানের কারনে কারন তিনি অনুভব করেছিলেন এই ফারাক্কা বাধ বাঙ্গালী কৃষক সমাজের উপর হুমকি সরুপ৷ বাংলার মাঠ, ঘাট পানির অভাবে মরুভুমি হয়ে যাবে৷ তখন মানুষ দরিদ্র, অসহায় হয়ে পড়বে৷ এটা হল শোষন নীতি৷ আমি আজ অবাক হয়ে যাই যে মানুষটি তার সারা জীবনের অভিঙ্গতার আলোতে বাংলার গণ মানুষের মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন আর সেই বাংলায় আজ কাক শুকুনে বসে সেই জনগনের শরীর কুরে কুরে খাচ্ছে৷ যা আজ বাংলার জনগণ মেনে নিবে না৷ আমি সত্যকে খুজেঁ পেয়েছি কারন আমি দেখেছি এই আওযামীল শেখ মুজিবের হাতে গড়া আওয়ামীলীগ নয় এটা মাওলানা ভাসানীর জীবন থেকে দেখা সেই তত্‍কালীন বাংলার জমিদারদের নির্যাতন, নিপীড়ন এর চিত্র হতে, ১৯৫২ এর রক্ত হতে আর পূর্ব বাংলার গণ মানুষের চিরকালের স্বাধীনতার সপ্নে প্রতিষ্টিত এই আওয়ামীগ৷ আর সেই আওয়ামীলীগক্ আজ যারা ব্যবসায় পরিনত করেছে, জনগণকে শোষন, নির্যাতন , নিপীড়ন করছে৷ তাদের জনগণ কোনদিন ক্ষমা করবেনা আর ক্ষমা করবে না সেই মজলুম নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী৷ এবার বাংলার কৃষক, শ্রমিক, মজদুর আর অসহায় জনগন জেগে উঠবে সেই ভাসানীর অনুপ্রেরনা্য়৷ আর আমরা হব আজ নতুন করে বাংলায় তার উত্তরসুরী৷ জয় হোক বাংলার কৃষক, শ্রমিক আর মেহনতি মানুষের ৷ জয় হোক মাওলানা আবদুল হামিন খান ভাসানীর৷ (সমাপ্ত)৷ কৃষান কন্যা রাহিলা, ১৬ নভেম্বর,২০১১ খ্রি:, রাত : ২-০১ মি:৷  

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.