আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! (কিছু লাইনের জন্য ছোটদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক)

"মাসুদ পারভেজ মিঠু" দ্যা "পেক পেক পেক" বয়!!! কত্ত ইচ্ছে ছিল প্রথম ডেট স্মরনীয় করে রাখব! মনে রাখার মতো একটা দিন হবে। কিন্তু কিসের কি। আমার মতো আনলাকি যে আর সুখ করতে পারবে না তা আর আমার মনে ছিল না! ডেটের আগের রাতে জানের সাথে ম্যাসেজ বিনিময় করছিলাম আর প্ল্যান করছিলাম যে কিভাবে কি করবো। -জান, আজকে আমাদের রিলেশনের ৪ সপ্তাহ পূর্ণ হয়েছে! আমাদের এখনো দেখা হয়নি। তোমাকে এই মুহুর্তে অনেক মিস করছি।

কাল আমার অপেক্ষার অবসান হবে। তোমাকে দেখব। অনেক এক্সাইটেড আমি! এতোদিন যাকে কল্পনা করছি তাকে কাল দেখবো ভাবতেই জানি কেমন লাগছে। তুমি কি কর? - আমারো জানি কেমন লাগছে? আমি টিভি দেখি। আচ্ছা কাল যদি দেখ যে আমি তোমার মনের মত না তাহলে কি হবে? - মানে কি? মনের মতো না মানে কি? আমি জানি তুমি হবে পরীর থেকেও সুন্দর।

শোন, আমি সকালে বেইলী রোডের মোড়ে থাকবো। তুমি ক্লাশ শেষ করে এসো। বুঝেছ জান? লাভ ইউ! - ওকে জান। তুমি কোন টেনশন করো না। আমি ঠিক সময়ই থাকবো।

আমিও তোমাকে অনেক মিস করছি। বাবু, শোন আমার এখন ঘুমাতে হবে। কাল সকাল সকাল উঠতে হবে তো। সকালে তোমাকে ফোন দিবনে। কেমন? গুড নাইট জানু পাখি! লাভ ইউ টু! ওর ম্যাসেজ পেয়ে আমার শরীরে জানি কি অনুভূত হতে লাগলো।

রাত কেমন করে যাবে এই চিন্তায় ঘুম আসতেছে না। ৪ মাসের ফ্রেন্ডশিপ, তারপর প্রপোজ করা। তারপর রিলেশনের ৪ সপ্তাহ পার করা। এতো প্রতীক্ষার পর কাল আমি তাকে দেখবো। মনের ভিতর কেমন উড়ু উড়ু করছিল।

এইসব ভাবতে ভাবতে কখন জানি ঘুমিয়ে পরলাম। সকালে চড়ুই পাখি ডাকার আগে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। উঠেই শার্ট প্যান্ট ইস্ত্রী করলাম, সেভ করলাম। গোসল করলাম। কেমন জানি লাগছে! আজ ওকে দেখব।

আমার জানু কে দেখব। ভাবতেই শরীর ও মন শিহরিত হচ্ছে। বাই দা ওয়ে, মাঞ্জা টাঞ্জা মেরে সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাসা থেকে বের হলাম। রিকশা করে বেইলী রোড যাব। রিকশা করে কিছুদুর যাওয়ার পর অনুভব করলাম ছোট প্রকৃতি আমাকে ডাকছে! শালা, আর ডাকার সময় পেল না।

বাসায় থাকতে কত চেষ্টা করলাম। তখন তো আসলা না! এখন এতো ফাল পারতেছে কেন? আমিও কম যাই না। আমার সহ্য শক্তিও চরম! ঘন্টা পাঁচেক তো এমনিতেই কাটাইয়া দিতে পারবো! কিন্তু রিকশা যত এগুচ্ছে ততই আমি কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যাচ্ছি। অবশেষে বেইলী রোডে এসে ভাড়া দিয়ে রিকশা বিদায় করলাম। মাঝখানে জান আমাকে ফোন দিয়ে বলল যে ওর ক্লাশ শেষ, আসতেছে।

খুশী হবার বদলে মুখ কেমন জানি ফ্যাকাশে হয়ে যেতে লাগলো! সহ্য শক্তির কথা চিন্তা করে এগুলো মন থেকে ঝেড়ে ফেললাম। ওর জন্য চকোলেট কিনলাম। ঘুরতেই দেখি রাস্তার ওপারে ও এসে পরেছে। মনে হচ্ছে যেন পরী দেখছি। আমার জান এতো সুন্দর! মন চাইছিল দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি।

যেই রাস্তা ক্রস করার জন্য দৌড় দিলাম তখনই আবার ডাক দিলো। শরীরটা পুরা বাকিয়ে গেল। খুব কষ্ট করে ওর কাছে গেলাম। একবার ভাবলাম রাস্তার কাছেই বা পাশের কোন মার্কেটে কাজটা সেরে ফেলি। কি জানি লজ্জার কথা চিন্তা করে আর যাওয়া হলো না।

ভাবলাম ধানমন্ডি গিয়ে কাজ সারবো। এখন আর ওর সামনে শরমিন্দা হতে চাইনা। কিন্তু তখন যে কত বড় ভুল করলাম তা ঘুনাক্ষরেও টের পেলাম না। ওকে বললাম ধানমন্ডি চলো। কাজ আছে।

ওইখানে গিয়ে আড্ডা দেই। ও প্রথমে যেতে চাইলো না। পরে নিমরাজি হলো। সিএনজি নিয়ে ধানমন্ডির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ঢাকার গলির যা অবস্থা।

রাস্তার এক একটা ঝাকুনিকে আমার যমের মতো মনে হলো। এই বুঝি কিছু একটা হয়ে গেল। সিএনজি’র নরম সিটে আমি কেমন যেন হারিয়ে যেতে লাগলাম! আসলে তখন আমি সহ্য করতে না পেরে তন্দ্রায় চলে যাচ্ছিলাম। তখন মনে হলো কেউ যেন আমার কানের কাছে বলছে “শি” “শি” “শি” (আমরা বাচ্চাদেরকে যেভাবে বলি!) আমি তখন দেখছি যে আমি ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছি। পৌছে দেখলাম কোন কমোড নাই! আজব! এইরকম তো হবার কথা নয়।

আবারো আমি সেই শব্দ শুনতে পেলাম “শি” “শি” “শি”এখন শব্দ শুনার সাথে ধাক্কাও অনুভব করতে লাগলাম। কিন্তু ধাক্কার দিকে আমার কোন কান নাই। আমি এখন ফ্রি হতে যাব। অন্য দিকে কান পরে দেয়া যাবে। আরে আজিব, চেইন খুলছে না কেন।

হচ্ছেটা কি এইসব। আমার সাথে এইগুলা কি! আমাকে কেউ ফ্রি হতে দেবে না? ওহ! চেইন খুলেছে! এইবার শান্তির দিকে পা বাড়াবো। যেই না পা বাড়াতে যাবো তখনই বড় একটা ঝাঁকুনি। মাম্মিইইইইইইইই!!! আমি তখন নিজেকে আবিষ্কার করলাম সিএনজি’র ভিতরে। ভাবলাম যে এতোক্ষন আমি সপ্ন দেখেছি? মানে এতোক্ষন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম! আজিব, আমার জান কই? ও পাশে নেই কেন? ওকে নিয়ে তো আমি ধানমন্ডি যাচ্ছিলাম।

সিএনজিওয়ালাকে জিজ্ঞেশ করলাম - ভাই, আমার পাশে যে মেয়েটা ছিল ও কই? - ভাই, উনি তো অনেক আগে নেমে গেছেন! আপনাকে অনেক ডাকাডাকি করছিলেন। কিন্তু আপনি তো ঘুমে নাক ডাকছিলেন তাই উনি নেমে গেছেন। - হায় আল্লাহ কি বলেন? কখন গেল ও? - ১৫, ২০ মিনিট তো হবে ই। - এতো সময়য়য়! বলেন কি? তাহলে ওই সময় আমি আমার নামের বদলে শি” “শি” “শি শুনছিলাম। আর ধাক্কাটা আসলে আমার জানই দিয়েছিল।

হে আল্লাহ এ কি হলো আমার সাথে? আচ্ছা, ভাই, আপনি একটু দাড়ান, আমি আসছি। এই কথা বলেই আমি নেমে দৌড়াতে শুরু করলাম। ওর মোবাইলে ফোন দিচ্ছি। মোবাইল বন্ধ! আমার তো টেনশনে ঘাম বের হয়ে গেছে। হঠাৎ করে উপলব্ধি করলাম নিজেকে কেন জানি পাতলা পাতলা লাগছে।

নিচের দিকে তাকালাম। যা দেখলাম আমি নিজেই ভয় পেয়ে গেলাম! পাশে কয়েকটি পিচ্ছি বাচ্চা আমার দিকে তাকাইয়া আছে! (আল্লাহ জানেন কোনদিকে তাকাইয়া ছিল!) হে আল্লাহ, এ কি হল? প্রথম দিনেই এমন হবে আমি তো কল্পনাও করি নি। এখন আমি ওকে কেমনে সামলাব। কেমনে বুঝাব সবকিছু। আল্লাহ আমাকে সহ্য শক্তি দেন! এই বলতে বলতে সিএনিজি যোগে নিজ বাসা উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম।

ইচ্ছে ছিলো এ ছবির মতো আমার সপ্নের ফার্ষ্ট ডেট হবে! কিন্তু........... এটা একটা ফিকশন এবং ফান পোষ্ট। ভালো না লাগলে প্লীজ বকা দিবেন না। সবাই ভালো থাকবেন।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.