আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মিশ্র - ৪

নিঃস্বার্থ মন্তব্যকে ধন্যবাদ, সাময়িক ভাবে আমি মন্তব্যে নেই ---অক্টোবর ২০--- ধূঁয়ো উড়ছে, ছেড়ে দিচ্ছে যন্ত্রযান অর্ধেকটা শরীর দরজায়, পাদানিতে পা কত বার ইচ্ছে করে যাব যাব করি, যাতে তুমি সেধে ডেকে নাও, আর যাবার সময় ঘনালেই মায়া বাড়িয়ে বল, থেকে গেলে হয় না? *** পাপীদের স্মৃতি পাথরে লিখে রাখে জনতা সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণে, সংহিতা, এ চুম্বন যদি ভুল হয়, হৃদয়ে মমী করে তুলে রেখো ঘৃণায় ভুলে যেও না। ---অক্টোবর ২৩--- ঝড়ো বাতাস বনাম খোলা হুড - চুলে অবিন্যাস আংটি আঙুল থেকে তর্জনী চিরুনি বার বার ঠিক করে নেয়া, নোনা ধরা ইটের হাম্মামে স্নান সেরে টেবিলে বসি ---অক্টোবর ২৬--- হৃদয় এর অপভ্রংশ বৈকাল হ্রদ *** নিউরনে ঝিলিক খেলা করছে হাসবো খেলব বলে হাইড্রাঞ্জিয়ার লাল নীলের মাঠে এসেছি আমরা হঠাৎ সেই খেলা থামিয়ে একটা বিষণ্ণ প্রজাপতির চোখের কাছে আত্মসমর্পণ করেছ তুমি। ---অক্টোবর ২৭--- কি যে ভাবছি চাঁদ, রাতের মহর্ষি, আকাশে ছড়ানো চাপালিশ অঙ্গারের রাজকন্যা অসীম রেল লাইন জোড়া দিয়ে মই করে উঠে যাব সেখানে ---নভেম্বর ১--- জেরি-ক্যানে রাখা বিশুদ্ধ পানীয় বরফের কুচি সুখী গৃহে ফোয়ারা টিলা ভেঙে নির্ঝরিণী জল ছুটে আসে যত পায় তৃষ্ণা মেটে না তার বসে আছে চেয়ে নিতে অভাগা উপেনের চোখে তিন ফোঁটা জল * চন্দনা পাখি নেমেছিল ঝাঁকে, চোখে চোখে ডাকছে গোলাপের কুঁড়ি অধৈর্যা কি আর এমনি এমনি ডাকি নিচে নেমেছ অপেক্ষায় না থেকে * পামিস্ট সুদক্ষ মুখরা ধনুকের জ্যা এমন মুখেরও ওপর বলে যায় ও দু'জন দু প্রান্তে রবে আজীবন সমুদ্র তফাতে ---নভেম্বর ২--- সাশ্রয়ী বাতির মত সাশ্রয়ী ভোর হয় দেরী করে কাক জেগে ওঠে এক কাপ চা যদি আসে খবরের কাগজ নিয়ে ফের গড়া গড়ি নার্ড বালকেরা ভাববে বিছানায় নিউটনের আপেল পড়ে দ্রুত চাদর ভাঁজ হয়ে একপাশ নেমে গেছে, উঠে যাব ফ্যান ঘুরছে বাতাসে বইয়ের পাতা উল্টে যাচ্ছে, ধরি নি * নিয়ম মেনে তীর্থে যাবে, ললাটে সিঁদুর দিয়ে কপালে ঋণপত্র ডলে তুলেছ গঙ্গার স্নানে বেশ করেছিলাম বুকে টেনে ঋতু, পাপী করে দিলাম এভাবে কতবার চেয়ে আছি, কত বার চেয়েছিলাম কতবার ফুলগুলো ছিঁড়ে ফেলে পরিচ্ছন্ন হয়ে ডান পাশে নদী রেখে চোখ থেকে জল নিয়ে শরীর স্নান করো পাঁজরের একটা ছাপ বুকের কোমলে একটা সড়ক কেটে সেতু খুলে গেল সেদিনের পর ঘড়া কাঁখে ঘাটে যাও বিনয়ী বধূ হয়ে রাধা ঘর ভর্তি জন্ম দিয়ে পূর্ণ হও প্রভুর অণু ধার নিয়ে নথের সোনা ধুয়ে রাখ তেঁতুল জলে * স্নান ঘরে জলের শব্দে কান পেতে থাকি ধাতব কাচের শব্দে শুয়ে থাকি কাচপোকার মত বৃষ্টির মত করে আসা ও যাওয়া দরজা খুলে অন্য রুমে দ্রুত চলে যাওয়া * ঘুমিয়েও তো মানুষ হেটে যেতে পারে আর জেগে থেকে বসা থেকে দাঁড়ানো, এর মধ্যে তিন বার অনুমতি মনে মনে চাওয়া যদি বলে শুয়ে যাও শীত পড়ছে মেঘের আঁচড়ে ছিঁড়ে গিয়ে যেন ঝিলের ভিতর ভেজা ঘুড়ি এর ভেতর কতবার অজুহাত যাবো না যাবো না আজ ছুটি জড় হলেও চলন থাকে কারো ঘাড়ে, যতক্ষণ সমাধিটা ঝিনুকের মতো বুজে যায় জীবিত মরণ হলে পাথর সেধেও তাকে ডেকে টলাতে পারে না। ---নভেম্বর ৩--- ঘন বনের ভেতর ছুটতে থাকা গাড়িটা যদি থেমে যায় মেরুন আলোয়। কেউ নেই।

কারো জন্য অপেক্ষা করে লাভ নেই। গুটি কয় যাত্রী নেমে যায়। পিছন পিছন ছায়ারা নেমে যায়। জুতোয় থাকে প্লাস্টিকের ছাঁচ। গাড়ির ছাদে বৃষ্টির জল।

ভেজা টিনের বডি। বৃষ্টিতে ভারী হয়। ওজনে ভরিয়ে দেয় পিঠ। গাছের স্টেনসিলে দূর মণির দীপ বাতাসে কাঁপে। বাজপাখির দল নেমে আসছিল।

সব পাখি মাটির অশান্তি এড়ায়। অথচ তীক্ষ্ণ স্প্লিনটার ঝাঁঝরা করে দিচ্ছিল নিভাঁজ পায়রার ডানা। তখন একটা ঘোড়া যদি আসে। কি আলো, কি তার অন্ধকার। কি আকাশে থেকে নিরাশা নেমে আসে।

মে অলৌকিক বার্তায় খুড়িয়ে মৃতপ্রায় সীমান্তে ছুটছে কেউ। বোমা ফুটছে মুড়ির মতন। আহত হরিণের পাল। মার্বেল গড়িয়ে পড়ছে হাত থেকে শিশুর। বাল্যকাল।

ছায়াপথে খসে পড়ে ইউরেনাসের ম্যাপ। উপত্যকায় নেমে পড়ল সবাই । শুধু একজন নেই। এক প্রেয়সী যার চোখ কাঁদছে একা। রয়ে গেছে ঘরে।

কেউ তাকে ডাকছে না । একলা যেও না বলার মত মা নেই। সবাই ছুটছে নিজের জন্য। ছুটে যাওয়ার জন্য লাইন কাটা। সাদা সাদা চকের লাইন।

কুরুশ কাটা বুনছে গ্রাম্য-পট। ফসলের সবুজ পাতায় পাতা-কপি আসে। ফুলের সঙ্গে পামরের শত্রুতা। কীটদের সঙ্গে মাটির মাখামাখি। তুমি কি এখনো বসে আছে সকালে।

বারান্দায় আড়মোড়া সাদা পোশাক। স্যান্ডেল দুই পায়ে। এক পাটি খাটের নিচে। মাকড়সায় একটা বল থেমে গেছে। ঝালরে ঝুলে থাকা মাছি।

মাছির ডানায় এনামেল রং। সিঁড়িতে দেখছিলাম হকার ছেলে লাফিয়ে উঠছে। পর্দায় নীল নীল ছোট পানি ঝরছে। স্নানের বালতিতে শিশু। খেলনা রাজহাঁস দুলছে।

জল ঝরছে। ভেন্টিলেটরে ভৈরবীর সুর। কার জন্য বসছে পাখি। কাল যে বসেছিল সাদা কালো শ্যামা। দোপাটিরা ঝরে পড়ে গেছে শীতের আগেই।

--নভেম্বর ৪--- সমুদ্র না দেখলেও খাবার বাসনে এত চিমটি সাগর সেঁচা নুন ছেড়ে দিয়ে চিনা গেলাস জল চুমুক চুমুক পানে অভিনয় করে গেছি সমুদ্র বিলাসী তারপর গোগ্রাসে শাক মাংস খেয়ে নোনা জলে সমুদ্রের মিশ্রণ করে দিতেই পুড়ে যাওয়া দেহ-নালী শান্ত হয়ে যায় * ভাল না বেসে একই রইলি এমন কি তোর পাল্টানো নেই আলতো টোকায় ধুলো ঝেড়ে অন্য কিছু ভাবতে কি নেই * যতটা স্বাধীন ভাবছি ঠিক ততটুকু পরাধীন স্বপ্ন দেখতে ভয় হয় বহু দূরে যেতে ইচ্ছে হয় এক জোড়া টায়ারে বিশ্ব ঘুরে আসব এমন ইচ্ছে হয়, থেমে যাব যখন খুশি রাত হলে মুসাফির হয়ে, কৃষকের ঘরে, নদীর উপত্যকায়, নগরীর আলোয় থেমে যাব ৫২ সপ্তাহ ছুটি পেলে সাইকেলে নেমে যেতাম বিশ্ব-ভ্রমণে, কেউ ঠেকাতে পারত না । আমাদের স্বপ্নগুলো ভীতুর মত নষ্ট হয় নিজের ইচ্ছের ফুরিয়ে অন্যরা যা চাবে তাই হয় যে পথে সফল গিয়েছিল সে পথের হ্যাণ্ডবুক কিনে দিন ও রাত ফুরায় - সাদা কালোয় ঘোড়ায় সময়ের শবযাত্রা যায় ---নভেম্বর ৬--- একটা বাকাট্টা ঘুড়ি হেলে দুলে বসল চিলের ডানায় চিল বসল তিতিরের পালকে, সুতো কই ঘুড়ির? লাল সুতো। পেখমের না ইচ্ছে ছিল ভাগাভাগি হতে বইয়ের ভিতর চেপে রেখেছি ময়ূর কৌটো দিয়ে ফোন ফোন খেলছে ঐ বাচ্চাটা, ফোন দিলে বাবা আসবে আর বাবা মানে বেতন, বেতন মজা মজা মা ঘুমাচ্ছিল নানী ঘুমাচ্ছিল আর জঙ্গলের কঞ্চিতে একটা মাছরাঙা এবার ঘুমাও তো কালকে শিং ভেঙে যদি আসতে রাজী হয় চমরী গাই আনবো * গ্রামের বলে রাগ লাগছে কেন যে ময়লা মানুষ যখন তখন বাড়ি ঢোকে লুঙ্গী পরে আর না বুঝে সোফায় বসে পড়ে আমি লক্ষ্মী বউটিকে দেখেছি জল আনতে উনিই কি ইনি ও মাই গড, এত শুকনো লাগে * তুমি না হলে দ্বিতীয় কেউ হতো না হলেও আরেক জন হত যেই আসতো প্রথম প্রেম হত বীজগণিতের সম্ভাবনায় একজন, সে ---নভেম্বর ৮--- সে যদি বাড়ি থাকে যেন কাছে আসে ঘুমিয়েছি রাত্রি আমি আগুনের পাশে শ্বাপদের পায়ে চলে রক্তে হয়ে খুন শিমুল শিরীষ ডালে খসেছে ফাল্গুন চুলেতে চিরুনি নেই মনেতে সন্ত্রাস এলো মেলো গৃহ আমার অরণ্যে নির্বাস পুস্কুরিনে ডুবে পাখি ওষ্ঠে খায় নির মাধুকরী চেয়ে থাকে ঝিলমের তীর ঝিঁ ঝিঁ ডাকে মৌন ভেঙে ঝরে বেতফল মাঝ রাতে বৃষ্টি নামে নেই কোলাহল * সাজাতে হয় না কথা সাজাতে হবে না কথা কথাকে তপ্ত লোহার পাতে ডলে নিলে ধারালো হবে রাজনীতি কথাকে শীতল করে নিলে বরফ গলে নদী বইবে চোখে কথাকে অতসী কাচে পোড়াও, ছাই হয়ে ভাসবে গঙ্গা জলে আসছে কথার মিছিল দলে দলে না সাজাতে লুডোর ছকে যেমন খুশি পড়ুক আধেক বেলা থাকছি বসে ছক্কা পাবো বলে * এভাবে বলতে নেই মাছেরা যখন কাঁদে কেউ দেখে না তাদেরও ইচ্ছে করে বাতাসে উঠে আসতে * ফুলদের আদিম হতে ইচ্ছে করে ছড়িয়ে পেখম স্বয়ম্বরায় সখা ডেকে নিতে এমন দৈব পরাগায়ন; যার সঙ্গে হঠাৎ বিয়ে তার সঙ্গে ঘরে - কার সহ্য হয় * দেখুক সবাই ঘাতক হয়ে - ক্রীতদাস হলেও খুশী জয়ী হয়ে তোমায় পাবো * জানলা দিয়ে চেয়ে দেখছি চেয়ে মেঘ বালিকা যাচ্ছে চলে ভেবে ছিলাম বলে যাবে কোথায় যাবে, দুপুর রোদে কি খাবে আবার ভাবি এই তো ভাল, রঙের জামে থামলে যদি বৃষ্টি নামে * ছবি ঘুরপাক খায় পানকৌড়ি নদী প্রেমিকার চোখ তার শালিক নিবিড় ধানের খেত * পৃথিবীর বুকে সুপ্রাচীন; কেউ থাকে অতীতে পায় নি যে শতদল; প্রগাঢ় সুরভী * নিরন্তর মোড়ে অর্থহীন সবুজ সংকেত দেখে চলছিলাম তারপর ফুলস্টপ, সেখান থেকেই তুমি এলে * দীনতা ছিল শব্দে, বৈরাগ্য, বিরহে উঠে এসেছি দেখ শিয়রের কাছে চুপ তুমি মৌনতা অরূপ * পুড়ছে কি এত শব্দ ছাড়া হতচ্ছাড়া পুড়ছে কি প্রশস্থ ললাট বেদনার নীল ছাইতে জমে যাচ্ছে ফুল, তুমি বিদায় নিখিল ---নভেম্বর ৯--- এত কষ্টে রজত বালির ধারে হেটে যাচ্ছে শামুক ওর পেটে হাভাত পাকস্থলী; গর্ভের জায়গাটা বেশ খালি দামী হতে কপাল যার সে দামী হয় জলগালিচায় শুয়ে থাকে আর হয় মুক্তোবতী * সিঁথি পেতে নিয়েছিলে প্রেমের সিঁদুর, দিয়েছি এই প্রতিজ্ঞায় কষ্ট পেয়ে আলাদা হব না, বাহুতে ঘুমাবো ঘাড়ে ঘাড়ে যেমন রাত কাটাতাম ধাতব কুটিরে কলার পাতা, ডাবুরের ডাল, কাজলীর ঝোল অজিন মাদুর আদিম নি:শ্বাস বিবমিষা সংবাদ যেন পাই জীবরাইল পাখি উপহৃত স্তনে এই গৃহে দুজনের ভাগ নাভিরসে শিশুদের রুটি হলে জননী উপাধী দিয়ে বাহুতে জড়াই উত্তেজিত সাপ আলিঙ্গনে, ভবিষ্যৎকাল, বর্ষণে বাদলে ঘর আলোকিত করে শৈশব মানুষ বড় বড় দিন সঞ্চয়ে বেড়ে যাবে পলি সেই প্রতিজ্ঞায় --- ড্রাফট ১.৪/ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।