আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কুরবানীর লক্ষ্যবস্তু কে ছিলেন ইসমাঈল আ. না কি ইসহাক আ.?

_________অসৎ লোকের কর্মকান্ডে সমাজ ধ্বংস হয় না, ___________সমাজ ধ্বংস হয় ভালো মানুষের নিস্ক্রিয়তা। কুরবানীর লক্ষ্যবস্তু কে ছিলেন ইসমাঈল আ. না কি ইসহাক আ.? মুসলিম, ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছে অতিপ্রিয় নাম ইবরাহীম। কারণ, পরবর্তী নবী-রাসূলরা তাঁরই বংশধর হতে মনোনীত। হযরত ইবরাহীম আ. এর মোট সন্তানের সংখ্যা ছিল ১৩ জন। তাদের মাঝে সবার বড় ছিলেন ইসমাঈল আ. আর মেজ ছিলেন ইসহাক আ.।

ইসমাঈলের জননী ছিলেন হাজেরা আ. আর ইসহাকের জননী ছিলেন সারা আ.। ইসমাইল ও ইসহাকের আবাসভূমি ইসলমাঈল আ. এর স্মৃতিবিজড়িত পুরো মক্কা নগরী। মক্কা নগরীর পুনর্জন্ম হয় তাঁরই দ্বারা। যদিও এর ইতিহাস আরও প্রাচীন। হযরত ইসমাঈল ও তাঁর মাকে আল্লাহর নির্দেশে ইবরাহীম আ. এখানেই রেখে যান।

অপর দিকে ইসহাক আ. কে শামে (বর্তমান ফিলিস্তিনে) হযরত ইবরাহীম বসবাস করার নির্দেশ দেন । তাঁর দ্বারা এ এলাকার প্রাণ সঞ্চারিত হয়। ধর্মীয় গ্রন্থে ইসমাঈল ও ইসহাকের আলোচনা ইবরাহীম আ. এর সন্তানদের মাঝে কেবল ইসমাঈল ও ইসহাকের আলোচনা ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে রয়েছে। আল কুরআনুল কারীমে তাদের প্রশংসা একাধিক স্থানে করা হয়েছে। ইসমাঈল আ. সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা বলেন, “আমি তাকে এক ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম”।

(সূরা আস সাফ্ফাত-১০১)। আর ইসহাক আ. সম্পর্কে ফেরেশতাদের উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, “আমরা তোমাকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ দিচ্ছি” (সূরা আল হিজর-৫৩)। দেখার বিষয় হলো, আল কুরআনে উভয়ের আলোচনা খুবই ভারসাম্যপূর্ণ। একজনকে হালিম (ধৈর্যশীল), অপর জনকে আলিম (জ্ঞানী) বলে ব্যক্ত করা হয়েছে। বাইবেলে কুরবানীর লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে স্ববিরোধিতা বাইবেল অনুসারী ইহুদি-খ্রিষ্টানদের দাবি হলো ইবরাহীম আ. এর কুরবানীর লক্ষ্যবস্তু ছিলেন ইসহাক আ.।

এ সম্পর্কে বাইবেলে বলা হয়েছে : ‘তুমি আপন পুত্র, তোমার অদ্বিতীয় পুত্রকে, যাহাকে তুমি ভালবাস, সেই ইসহাক কে লইয়া মোরিয়া দেশে যাও এবং তথাকার যে এক পর্বতের কথা আমি তোমাকে বলিব, তাহার উপর তাহাকে হোমার্থে কুরবানী করো’। (আদি পুস্তক ২২:২)। এখানে ইবরাহীম আ. কে তাঁর অদ্বিতীয় পুত্রকে কুরবানী করার কথা উদ্ধৃত হয়েছে। অথচ বাস্তব কথা হলো, ইসহাক কোনোকালেও তার অদ্বিতীয় পুত্র ছিলেন না। স্বয়ং বাইবেল থেকেই প্রমাণিত হয় যে, হযরত ইসমাঈল আ. ছিলেন দীর্ঘ ১৪ বছর পর্যন্ত ইবরাহীম আ. এর এক মাত্র ও অদ্বিতীয় পুত্র।

বাইবেলে উদ্ধৃত হয়েছে: ‘ইবরাহীমের ৮৬ বছর বয়সে হাগার ইবরাহীমের নিমিত্তে ইসমাঈলকে প্রসব করিল’। (আদি পুস্তক,১৬:১৬)। ‘ইবরাহীমের একশত বৎসর বয়সে তাহার পুত্র ইসহাকের জন্ম হয়’। (আদি পুস্তক,২১:৫)। বাইবেলের এ বিবরণ থেকে স্পষ্ট প্রতিভাত হয়, ইসমাঈল আ. ছিলেন হযরত ইবরাহীম আ. এর প্রথম ও অদ্বিতীয় সন্তান।

এ ছাড়া বাইবেলের অন্য এক প্রসঙ্গে বলা হয়েছে : ‘ইবরাহীমের লিঙ্গাগ্রের ত্বক ছেদনকালে তাহার বয়স নিরানব্বই বছর, আর তাহার পুত্র ইসমাঈলের লিঙ্গাগ্রের ত্বক ছেদনকালে তাহার বয়স তের বছর’। (আদি পুস্তক ১৭:২৪-২৫)। অতএব, এখানে লক্ষ্য করা যায় যে, ইবরাহীম আ. নিরানব্বই বছর বয়সে যখন খতনা করার নির্দেশপ্রাপ্ত হন, তখনো তাঁর পরিবারের একমাত্র পুত্র সন্তান হিসেবে হযরত ইসমাঈল আ. ছিলেন। এবং তখন তার বয়স তের বছর। ফলে আল্লাহ কর্তৃক অদ্বিতীয় সন্তানকে কুরবানী করার নির্দেশপ্রাপ্ত হলে বাইবেলের বিবরণ মতেই ইসমাঈল আ. এরই হওয়ার কথা।

একদল খ্রিষ্টান পাদ্রি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বলে থাকে যে, ইসহাক স্বাধীনা মহিলার সন্তান হওয়ায় তিনিই আল্লাহর প্রতিশ্রুত পবিত্র সন্তান, আর হাজেরা দাসী হওয়ায় তাঁর পুত্র ইসমাঈল দাসী পুত্র। এ ধরনের কথা সত্যের অপলাপ বৈ আর কিছুই নয়। হাজেরা মোটেই দাসী ছিলেন না। তিনি ছিলেন মিসরের রাজবংশীয় রমণী। খোদ বাইবেলেই বহুবার ইসমাঈলকে ইবরাহীমের পুত্র বলা হয়েছে, যে ভাবে ইসহাককে বলা হয়েছে।

এ জন্য নি¤েœাক্ত অধ্যায়গুলো দেখা যেতে পারে। আদি- পুস্তক ১৭:২৩, ২৬, ২৫। উপরন্তু ইসহাক আ. এর জন্য বাইবেলে যে রূপ বিরাট ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বিদ্যমান, ইসমাঈল আ. এর জন্যও তদ্রƒপ বিরাট ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বিদ্যমান রয়েছে। এবার বাইবেল থেকে দেখা যাক, ‘সদাপ্রভুর দূত তাহাকে (হাজেরাকে) আরো বলিলেন, আমি তোমার বংশের এমন বৃদ্ধি করিব যে, বাহুল্য প্রযুক্ত অগণ্য হইবে’। (আদি পুস্তক ১৬:১০)।

আরো বলা হয়েছে : ‘আর ইসমাঈলের বিষয়েও তোমার (ইবরাহীমের) প্রার্থণা শুনিলাম। দেখ, আমি তাহাকে আশীর্বাদ করিলাম এবং তাহাকে ফলবান করিয়া তাহার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করিব, তাহা হইতে দ্বাদশ রাজা উৎপন্ন হইবে এবং আমি তাহাকে বড় জাতি করিব’। (আদি পুস্তক,১৭:২০)। এই যদি হয় খোদ ইসমাঈল আ. সম্পর্কে উচ্চমার্গের প্রশংসা, সেখানে তাকে দাসী পুত্র বলে অবজ্ঞা করার দুঃসাহস সঞ্চারিত হয় কোত্থেকে? আল-কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে কুরবানীর লক্ষ্যবস্তু আল- কুরআনুল কারীমে সুস্পষ্ট বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত যে হযরত ইবরাহীম আ. তাঁর প্রথম পুত্র ইসমাঈল আ. কেই কুরবানী করতে নিয়েছিলেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হচ্ছে : “অতঃপর আমি তাকে এক ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দিলাম।

সে যখন তাঁর পিতার সাথে কাজ করার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইবরাহীম বলল, হে প্রাণ প্রিয় বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহ করছি । সুতরাং তুমি চিন্তা ভাবনা করে দেখ এবং এ ব্যাপারে তোমার অভিমত কি? তা বল। সে বলল, হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন। ইনশা আল্লাহ আমাকে আপনি ধৈর্যশীলদের মধ্যে পাবেন। অবশেষে যখন পিতা-পুত্র উভয়ে আল্লাহর কছে নিজেদেরকে সোপর্দ করলো এবং ইবরাহীম আ. পুত্রকে কাত করে শুইয়ে দিলেন (যবেহ করার জন্য) তখন আমরা তাঁকে সম্বোধনন করে বললাম, হে ইবরাহীম! তুমি স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখিয়েছ।

আমরা সৎকর্মশীলদের এরূপ প্রতিদানই দিয়ে থাকি। বস্তুত এ এক সুস্পষ্ট কঠিন পরীক্ষা। আর আমরা বিরাট কুরবানী ফিদিয়া স্বরূপ দিয়ে তাঁকে (ইসমাঈলকে) উদ্ধার করেছি”। (সূরা আস-সাফ্ফাত-৩৭:১০১-১০৭) লক্ষ্যণীয় যে, এই সূরায় এ ঘটনার ইতি টানার পর অনতিদূরে ইসহাক আ. এর নামোল্লেখ করে আলোচনা করা হয়েছে। এতে এ কথা ইঙ্গিত করে যে, কুরবানী করার স্বপ্ন ছিল অন্য কারো প্রতি।

শুধু তাই না, আল কুরআনুল কারীমের যে সব আয়াতে ইসমাঈল ও ইসহাক আ. এর কথা বর্ণনা করা হয়েছে, সেখানে প্রথমে ইসমাঈল এবং পরে ইসহাক আ. এর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ইসহাক আ. এর সুসংবাদ যখন দেয়া হয় তখন ইবরাহীম আ. ফিলিস্তিনে সারার নিকট অবস্থান করছিলেন। লূত আ. এর কওমকে ধ্বংস করার জন্য যে ফেরেশতারা এসেছিলেন তাঁরাই ইসহাক আ. এর সুসংবাদদাতা ছিলেন। লূত আ. তো এ এলাকাতেই প্রেরিত ছিলেন। এ থেকে প্রমাণ হয়, এখান থেকে বহু দূরে মক্কায় অবস্থানকারী ইসমাঈল আ. যবেহের জন্য আদিষ্ট ছিলেন।

আল্লাহর ঘর বাইতুল্লাহ নির্মাণ এবং সেখানকার ঐতিহাসিক ঘটনাবলীই বড় প্রমাণ হলো ইসমাঈল আ. এর জাবিহুল্লাহ হওয়ার। মিনায় কুরবানী করা এবং ইসমাঈলকে নিয়ে মিনা প্রান্তরে যাত্রা পথে ইবলিসের কুমন্ত্রণা দেয়া এবং তার প্রতি ঘৃণাভরে পাথর ছুড়ে মারার যে ইতিহাস কালান্তরে চলে আসছে, এমন কোন প্রতীকী ঘটনা কি ফিলিস্তিনে ইসহাক আ. কে নিয়ে আছে? মক্কা কেন্দ্রিক ইতিহাস যেমন বাইবেলে বিস্মৃত হয়েছে, তেমনি কুরবানীর ইতিহাসকে ও বিকৃত করা হয়েছে। ইসহাক যদি আসলেই ‘জাবিহুল্লাহ’ (আল্লাহর জন্য জবেহ কৃত) হতেন তাতে মুসলিম মিল্লাতের তো কোন আপত্তি ছিল না। কারণ, মুসলিম জাতি সব নবীর প্রতি সমান ভাবে শ্রদ্ধাশীল। তিনি আরবী নবী না ইসরাইলী নবী, তা কস্মিনকালেও দেখার বিষয় নয়।

আক্ষেপের বিষয় হলো, ইসরাইলী বিবরণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে স্বল্পসংখ্যক মুসলিম গবেষক ও তাফসিরকারকও দি¦ধায় পড়ে যান। কিন্তু সাহাবায়ে কিরাম থেকে অদ্যাবধি এ বিষয়ে কেউ কোন দ্বিমত পোষণ করেছেন বলে কোন প্রমাণ নেই। রাসূলুল্লাহ সা. কে একদা এক লোক, ‘হে ইবনুজ জাবিহাইন’ বলে আহ্বান করলে তিনি মৃদু হেসে এতে সম্মতি জানিয়েছিলেন বলে বর্ণিত হয়েছে। উল্লেখ্য, রাসূলুল্লাহ সা. এর পিতা আবদুল্লাহকে কুরবানীর মান্নত করা হয়েছিল। সে হিসেবে তাকেও ‘জাবিহ’ বলা হতো।

আর অপর জাবিহ হলেন তাঁর উর্ধ্বতন পিতা ইসমাঈল আ.। অনন্তর রাসূলুল্লাহ সা. নিজের সম্পর্কে বলেছেন , ‘আমি দুই যবেহকৃত ব্যক্তির পুত্র’। (তাফসীরে কাবীর ,২৬খন্ড -১৫৩ পৃষ্ঠা)। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইহুদীরা ধারণা করে, জাবিহ ছিলেন ইসহাক অথচ তারা এ বিষয়ে মিথ্যাবাদী। উমর ইবনে আবদুল আজিজের রহ. দরবারে একদা এ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল যে, কাকে যবেহ করতে চাওয়া হয়েছিল, ইসহাককে না ইসমাঈলকে? মজলিসে তখন এমন এক ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন, যিনি আগে ইহুদী পন্ডিত ছিলেন এবং পরে সর্বান্তকরণে ইসলামে দীক্ষিত হন।

তিনি তৎক্ষণাৎ বলে উঠলেন, আমিরুল মুমিনীন! আমি শপথ করে বলছি, ইসমাঈলকেই যবেহ করতে চাওয়া হয়েছিল। ইহুদীরাও এ সত্য ভালো করে জানে। কিন্তু আরবদের প্রতি বিদ্বেষবশত: তারা ইসহাককে জাবিহুল্লাহ বলে দাবি করে। (তাফসীরে তাবারী, ২৩ খন্ড ৫৪পৃষ্ঠা)। সুদূর অতীত থেকে রাসূলুল্লাহ সা. এর আবির্ভাবকাল পর্যন্ত লোকেরা হজ্জের সাথে কুরবানী করে আসছে।

ইবরাহীম আ. যেখানে কুরবানী করেছিলেন লোকেরা তথায় কুরবানী করে আসছে। রাসূলুল্লাহ সা. নবুওয়াত লাভের পর এই প্রথা বহাল রাখেন এবং সেই থেকে বর্তমান কাল পর্যন্ত তা অব্যাহত আছে। সাড়ে চার হাজার বছর ধরে অব্যাহত এ সুন্নাত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পিতা-পুত্রের কুরবানীর উত্তরাধিকারী ইসমাঈল আ. এর উত্তরসূরীরা। ইসহাক বংশীয়দের মাঝে কোন কালেই কুরবানীর স্মৃতিস্বরূপ এ প্রথা উদ্যাপিত হয়নি। কুরআন হাদীসের দলীলর মাধ্যমে এ কথা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে, হযরত ইবরাহীম আ. তাঁর প্রথমজাত, একমাত্র ও অদ্বীতিয় পুত্র ইসমাঈল আ. কেই কুরবানীর জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন।

এমন কি বাইবেলও প্রমাণ করে যে ইসমাঈল আ. কেই কুরবানীর জন্য নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসমাঈল ও ইসহাক আ. কে নিয়ে এতো বিভ্রান্তি কেন? কারণ, ইহুদী-খ্রিষ্টান মিলিত শক্তি সব সময়ই মুসলিম বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করে। কেননা ইহুদীরা মনে করতো যে, শেষ নবী তাদের বংশধর অর্থাৎ ইসহাক আ. এর বংশ থেকে আসবে, কিন্তু আল্লাহ তায়ালা হযরত ইসমাঈল আ. এর বংশ থেকেই শেষ রাসূল প্রেরণ করেন। যেহেতু তারা ইসহাক আ. এর বংশধর তাই তারা তাঁকেই প্রাধান্য দিতে গিয়ে মহা সত্য একটি ঘটনা কে তারা মিথ্যা পতিপন্ন করার জন্য বাইবেলের পরিবর্তন করতেও দ্বিধাবোধ করেনি। হযরত ইসমাঈল আ. এর নামের স্থলে হযরত ইসহাক আ. এর নাম যুক্ত করে দেয়।

আর তাদের এ সকল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ফাঁদে বার বার মুসলমানরা ফেঁসে যাচ্ছে। এমনকি কিছু কিছু মুসলিম- অমুসলিম পন্ডিতগণ তাদের প্রচারণায় বিভ্রান্ত হয়েছেন। সব চেয়ে পরিতাপের বিষয়! সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে একজন পৌত্তলিক অনুসারী কুরবানীর বিশুদ্ধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা করেন। আর আমাদের বিজ্ঞ (!) মুসলিম বিচারক বললেন, এ ব্যাপারে নাকি তার আরও গবেষণা করতে হবে। এই যদি হয় মুসলমানদের ইসলামী শিক্ষার অবস্থা তা হলে তো ইহুদী-খ্রীষ্টান শক্তি আমাদেরকে বিভ্রান্ত করবেই।

মুসলমানরা তাদের মৌলিক শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কুরআন এবং হাদীসের জ্ঞানার্জনে তাদের অনিহার কারণে, ভুলে যাচ্ছে নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য, তাহজীব-তামাদ্দুন, শিক্ষা-সংস্কৃতি। মুসলমান আজ নিজেদের উন্নতির জন্য তাকিয়ে থাকে পাশ্চাত্যের দিকে, মনে হয় যেন সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি সব কিছুই তাদের অনুকরণেই নিহিত। তাই আল্লামা ড. ইকবাল রহ. মুসলমানদের এই অবস্থা দেখে সতর্ক করে বলছেন, كى ترقى مسلما نون نى جو فرنغى بنكر- وه فرنغى كى ترقى هى مسلما نون كى نهى “মুসলমান কর্তৃক পাশ্চাত্যের অনুকরণে যে ধরনের উন্নতি হয়েছে, সে তো মুসলমানের উন্নতি নয়, প্রকৃত পক্ষে তা কেবল পাশ্চাত্যেরই উন্নতি”। তাই মুসলিম মিল্লাতের করণীয় হচ্ছে কুরআন এবং হাদীসের গবেষণা করে ইসলামের সঠিক জ্ঞান অর্জন করা।

এবং সেই জ্ঞান পৌঁছে দিতে হবে বিশ্ব ব্যাপী মানবতার মুক্তির জন্য। তাহলেই জাতি মুক্তি পাবে সকল ষড়যন্ত্র ও বিভ্রান্তি থেকে। আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের উপর দায়েম ও কায়েম থাকার তাওফিক দান করুন। আমাদের জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত, আমাদের প্রতিটি কার্যক্রম এবং চিন্তা-চেতনা সকল কিছুই হোক ইসলামের জন্য। আমিন, ইয়া রব্বাল আলামিন।

ঈদুল আযহা ও কুরবানীর তাৎপর্য এবং কুরবানীর মাসায়েল , ৪র্থ কিস্তি {বিস্তারিত মাসায়েল} Click This Link ৩য় কিস্তি পড়ুন >> ঈদুল আযহা ও কুরবানীর তাৎপর্য এবং কুরবানীর মাসায়েল। ৩য় কিস্তি {যিলহজ্জ মাসের করনীয় কাজ}। http://www.somewhereinblog.net/blog/shopnochari99/29477021 ২য় কিস্তি পড়ুন >>ঈদুল আযহা ও কুরবানীর তাৎপর্য এবং কুরবানীর মাসায়েল। ২য় কিস্তি{লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং শিক্ষনীয় বিষয়} Click This Link ১ম কিস্তি >> পড়ুন কুরবানীর ইতিহাস Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.