আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সার্বজনীন ক্ষমতার দাপট!!

* আমি খুজে বেড়াই নিজেকে * ক্ষমতাবান যারা তারাই ক্ষমতার দাপট দেখায়। যাদের ক্ষমতা নেই তারা যেই হোক না কেন তাঁর কোন দাপট নেই। কেউ যদি একটু মাথাটা একটু উপরে তুলতে চেষ্টা করে তাঁর উঁচু মাথাটা নীচে নামিয়ে দেয়া সময়ের ব্যাপার। তাঁর আগে অজুহাত লোকলজ্জার ভয়ে অজুহাত দাড় করাতে হয়। বেয়াড়ার জন্য কিছু কৌশল প্রয়োগ করা হয়।

ক্ষমতা বানদের চরিত্র উজ্জল থাকে, তারা মনে করে। তারা নিজেদের দাম্ভিকতা নানান ভাবে প্রকাশ করে। বাকি যারা সবাই নীচতলার মানুষ অথবা প্রাণী। যেমন ক্ষমতাবান হলে আপনি পাশ দিয়ে যাবেন। কিন্তু ক্ষমতাবানের দিকে ফিরে তাকাননি অথবা কাচুমাচু করে একটা সালাম দেন নাই।

ক্ষমতা বানের ইহা সহ্য হবেনা। আপনাকে ডেকে বা ধরে নিয়ে গিয়ে হাত পা ভেংগে দিলে আপনি আশ্চর্য হতে পারেন না। আপনি যদি মনে করেন আপনি আশ্চর্য হবেন বা কোন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন এটা তাঁর সহ্য হবেনা কারন আপনি ক্ষমতাবানের দাপট কে থোরাই কেয়ার করেন। শাস্তি আপনারও প্রাপ্য হয়ে যায়। ক্ষমতা বান যদি মনে করেন অবশ্যই আপনি অপরাধ করেছেন।

কে কি মনে করলো তা মুল্যহীন। এই ক্ষমতাবানেরা বলয় তৈরি করে থাকে। আসলে এই বলয়টা দরকার। না হলে শক্তিমত্তা দেখানো যায়না, বিশেষ করে বেয়াড়া শায়েস্তা করতে বলয়ের সহযোগিতা লাগে। একটু নীচের ক্যাটাগরি হলে কোন ব্যাপারনা, তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।

ক্ষমতাবানের ক্ষমতা মৃত্যুর পরেও টিকে থাকে তাঁর উত্তরাধিকারিরা টিকিয়ে রাখে। সেই ছোটবেলায় দাদা বাড়ি যেতে হলে এক পিরসাহেবের মাজার এলে রিক্সা থেকে নেমে হেঁটে যেতে হতো। না হলে বেয়াদবি ভাবা হতো এখনও হয়ে থাকে। এই ক্ষমতা প্রদর্শন যত ক্ষুদ্র পরিসর হোক আর যত বৃহৎ পরিসরই হোক এবং স্থান কাল পাত্র ভেদে ক্ষমতার দাপট ও মোহ একই ধাঁচের। যার যেমন ক্ষমতা থাকে তেমন প্রদর্শন থাকে।

এইতো আমরা ক্ষমতা প্রদর্শন দেখতে পেলাম অতি নিকট সময়ে, ফিলিস্তিনিরা আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য সুদীর্ঘ কাল লড়াই করে আসছে। যাদের উপর চাপিয়ে দেয়া আছে ইসরাইল নামক একটি রাষ্ট্রকে। ইতিহাসের অত দীর্ঘ আলোচনায় যাবনা। তবে মার্কিনীরা যে ফিলিস্তিনের সাথে ইসরাইলকে নোংরা ভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ইস্রাইলের নানান অনাচার সত্ত্বেও। যার বহিঃপ্রকাশ সম্প্রতি দেখতে পেয়েছি।

জাতিসংঘে ফিলিস্তিন স্থায়ী সদস্য পদ পাওয়ার ব্যাপারে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস প্রস্তাব উত্থাপন করতে চাইলে আমেরিকা সরাসরি কোন রাখঢাক হীন ভাবে এর নিলজ্জ বিরোধিতা করে এবং শান্তি নিয়ে নানান হুমকি ধামকি দেয়। এতো কিছুর পরেও ফিলিস্তিন জাতিসংঘে সদস্যপদের জন্য আবেদন উপস্থাপন করে। এদিকে ৩ অক্টোবর সোমবারই ফ্রান্সের রাজধানি প্যারিসে সংখ্যা গরিষ্ঠ ভতে জয়লাভ করে ফিলিস্তিনিরা জাতি সংঘের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনেস্কর পূর্ণ সদস্য পথ লাভ করে যা ফিলিস্তিনি জনগণের দীর্ঘ দিনের দাবি আদায়ের একটি বড় পদক্ষেপ। আমেরিকার দাদা গিরি চেতিয়ে উঠলে ইউনেস্কোকে হুমকি দিয়ে বসে। আর্থিক সহযোগিতা বন্ধ করে দিবে।

বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ফিলিস্তিনের প্রাপ্য অধিকারকে অগ্রাহ্য করলো। আমেরিকা জাতিসংঘ ও এর সহসঙ্ঘের একটা সবচেয়ে বড় ডোনার। সুতরাং ক্ষমতা তার রয়েছেই। জাতিসংঘে যদি অর্থ সহযোগিতা বন্ধ করে দেয় তবে স্বাভাবিক ভাবেই জাতি সংঘ অর্থ সংকটে পড়বে। আমেরিকার নীতি হীন ভাবে তাদের অপছন্দ হল বলেই তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়েদিচ্ছে।

যার কোন লজিক থাকেনা। দেখার বিষয় জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্য পদ পায় কিনা। * * * ক্ষমতা যার কাছেই থাকুক যত ছোট ভাবেই থাকুক, এর ষোল কলা পূর্ণ করে ছাড়ে। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ মিনি বিশ্বকাপ আয়জন করেছিল। মিনি বিশ্বকাপ আয়জন উপলক্ষে বাংলাদেশের স্টেডিয়াম গুলোতে ব্যাপক সংস্কার করা হয়।

সংস্কারের শেষের দিকে একবার গিয়েছিলাম ঢাকা স্টেডিয়াম এলাকায় কোন এক কাজে। তো ইচ্ছে হল এতো বড় একটা আয়োজন, একটু দেখিনা কি করছে ওরা, কেমন হল স্টেডিয়ামটী। যেই কথা সেই কাজ আমি আর আমার এক আত্মীয় এবং বন্ধু সাথে ছিল। গেলাম দুজনে গেটে। যেয়ে দেখি গেটটি বেশ খানিকটা খোলা।

সিকিউরিটি কেউ নেই। ভাবলাম ধকে পড়ি। কিন্তু পড়ে ভাবলাম এভাবে ঢুকা ঠিক হবেনা মনে হয় তাই অপেক্ষা করতে লাগলাম গেটের কাছাকাছি। কিছুক্ষন পর কোথা একটা সিকিউরিটি এল বিড়ি ফুকতে ফুকতে। গেটে একটা পুরনো চেয়ারে বসে রইলো।

কাছি গিয়ে মনোবাসনা জানালাম। অমনিতেই তাঁর পাওনা ক্ষমতা জাহির করা শুরু করলো। যান যান এখানে ঢুকা নিষেধ। আবার বলতে কেন বিরক্ত করছেন, বলেছিনা যেতে দেয়া যাবেনা। বললাম দেখুন আপনিত ছিলেন না আমরা চাইলেই ঢুকতে পারতাম কিন্তু ঢুকিনি।

অমনিতেই তেলে বেগুনে রেগে গিয়ে কে বল্ল আমি ছিলাম না। আমি এখানেই ছিলাম, চা খেতে খেতে গেটে লক্ষ্য রাখছিলাম। এইবার আর কাছেই দাঁড়াতে দিলনা। মোটামুটি পাওয়া ক্ষমতা জাহির করে তারিয়ে দিলো। আমরা মনবাঞ্ছা পুরন না করে ফেরত আসি।

একটু পিছনে তাকিয়ে দেখি ৪/৫ জন ছেলে ভিতরে ঢুকে গেলো সিকিউরিটিকে কোন কেয়ার না করেই। ওরা অবশ্যই কোন স্টাফ বা কর্মচারী ছিলনা। দেখলাম ক্ষমতার দাপট কাহাকে বলে ও কত প্রকার। * * * এবার আরেকটা গল্প বলি সকলের জানা তাঁর পরেও বলি। এক ব্যাক্তি বিবাহ করেছেন।

শালা শালিরা নতুন দুলাভাইকে ঘিরে রেখেছেন। দুলা ভাই এর সাথে সেকি মজা করছে সবাই। হাস্যরসের কোন কমতি নেই। শশুর বাড়ি মাথায় তুলে ফেলেছেন। সবাই দুলাভাইকে নিয়ে সেকি খুশি, দুলাভাইয়ের মত মানুষই হয় না।

এতো মজা করতে পারে, প্রশংসায় পঞ্চমুখ। দুলাভাইকে শালা শালিরা সুধায় দুলাভাই আপনি কি করেন। দুলাভাই ট্রাফিক কনস্টেবল। মোটামুটি কাজের একটা ফিরিস্তি দিয়ে দেয় আমার অনেক ক্ষমতা। আমি রাস্তায় দাড়িয়ে হাত তুললে যত বড় গাড়ি হোক আর যেই হোক হাট তোলা মাত্র গাড়ি থেমে যেতে বাধ্য।

দুলাভাইয়ের এতো ক্ষমতা! শালা শালি তো চোখ কপালে তোলে। ওরে বাবা, আমার দুলাভাই এতো ক্ষমতা, মন্ত্রী এমপির গাড়িও থেমে যায়। শালা শালি এতো ক্ষমতাধর দুলাভাইয়ের ক্ষমতা দেখতে চায়। দুলাভাই পড়েছে ফ্যাসাদে, ইনিয়ে বিনিয়ে কেটে পড়তে চাইলেও ছাড়া পায়না। বাধ্য হয়ে দুলাভাই রওয়ানা হলেন ক্ষমতা জাহির করতে।

নতুন ইস্ত্রী করা ইউনিফর্ম পরে। রাস্তায় দাঁড়ালেন। শালাশালিরা অধীর অপেক্ষায়। দুলাভাইয়ের ক্ষমতা দেখবে। হঠাৎ একটা গাড়ি আসছে দেখে বলল দুলাভাই এই গাড়িটা থামান।

কর্নেল সাহেবের গাড়ি দেখে দুলাভাইয়ের কলিজা শুকিয়ে যায়। তাঁর পরেও ক্ষমতা দেখানো বলে কথা, প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে যাবে। দুলাভাই শুকনো হাসি হেসে কর্নেল সাহেবের গাড়ির সামনে হাত তুলল। গাড়ি থেমে গেলো। শালা শালি মহা খুশি, আরে দুলাভাই যা বলল তাই ঠিক।

কিছুক্ষন পর আবার ইশারা করলো গাড়ি টিকে চলে যেতে। গাড়িটি একটু সামনে গিয়ে থেমে যায়। কর্নেল সাহেব এসে দুলাভাইয়ের গালে কষে দুইটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিলো কোন কথা ছাড়া এবং চলে গেল। শালা শালিরা দুলাভাইয়ে কাছে জানতে চাইল কেন থাপ্পড় মারল লোকটা। ট্রাফিক দুলাভাই কষ্টের হাসি হেসে বলল আমি আমার ক্ষমতা দেখিয়েছিলাম, লোকটা তাঁর ক্ষমতা দেখিয়েছে।

ক্ষমতা আসলে এমন এক জিনিস এর ব্যবহার স্থান কাল পাত্র ভেদে বিভিন্ন হয়, তা নৈতিক বা অনৈতিক যাই হোক। ক্ষমতা বানের কাছে সকলে অসহায়। ক্ষমতা বানের দয়ায় সকলকেই টিকে থাকতে হয়। *** ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.