আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আমাদের বিদ্যালয়।

আলো খুঁজছি আলো, পেয়ে যাই যদি ভালো। চাই সত্যের আলো, হোক তা যত কালো। ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত সদরপুর থানার অন্যতম একটি বিদ্যালয় হচ্ছে আমাদের বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়টি সদরপুরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। সদরপুরের জনমানুষের শিক্ষা বিস্তারে যে কয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে তাদের মধ্যে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম।

১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে বিদ্যালয়টি তাঁর শিক্ষার আলোয় প্রতিনিয়ত আলোকিত করে যাচ্ছে অগনিত ছাত্রদের। নিচে সংক্ষেপে আমাদের বিদ্যালয়ের জন্ম ইতিহাস তুলে ধরা হলোঃ জন্ম ইতিহাসঃ উপজেলা সদরে বালিকাদের একটি উচ্চ বিদ্যালয় থাকলেও বালকদের কোন উচ্চ বিদ্যালয় ছিল না। মূলত এই অভাববোধের ভেতরেই অন্তর্নিহিত ছিল এই বিদ্যালয়ের প্রাণ। এই অভাব পূরনের নিমিত্তেই তৎকালীন সময়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা তাঁদের এবং উপজেলার কর্মকর্তা কর্মচারীদের এবং সর্বোপরি সর্বসাধারণের ছেলে সন্তানদের লেখাপড়া সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে তাঁরা আলাপ আলোচোনা করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সালের প্রথম সপ্তাহে এই খণ্ড খণ্ড আলোচনা গুলো একটি সংগঠিত রূপ নেয়।

১৯৮৪ সালের প্রথম সপ্তাহেই জনাব গোলাম কিবরিয়া, এ এইচ এম ইসহাক মিয়া, কাজী খলিলুর রহমান এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব দেওয়ান আফছার উদ্দীনের শরণপন্ন হন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা শেষে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ সংকুলান এবং জমি দানে একমাত্র খাজা বাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) সাহেবই সাহায্য করে পারেন উপজেলায় একটি বালক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে। এরই ধারাবাহিকতায় উনারা বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের প্রতিনিধি জনাব শাহাবুদ্দিন আহমেদ এর সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাঁকে সাথে নিয়ে খাজা বাবার নিকট বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানান। খাজা বাবা ফরিদপুরী সবকিছু শুনে বিদ্যালয় স্থাপনে সম্মত হন এবং জনাব শাহাবুদ্দিন আহমেদ এবং অন্যান্যদেরকে জায়গা নির্ধারণ এবং বিদ্যালয় স্থাপনে কত টাকা খরচ হতে পারে তার একটি খসড়া প্রস্তুত করতে বলেন। খাজা বাবার সম্মতি ও আদেশ পেয়ে উনারা সদরপুর স্টেডিয়াম মাঠের উত্তর দিকে বর্তমানের এই জায়গাটি নির্ধারণ করেন।

এরপরে খাজা বাবা ফরিদপুরী ঐ জমির মালিক স্থানীয় মরহুম জনাব মানিক মোল্লা এবং জনাব ইসমাইল মোল্লার নিকট থেকে ১ একর ৪ শতাংশ জমি বাজারমূল্যে ক্রয় করেন এবং বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য ৩ লক্ষাধিক টাকা এককালীন প্রদান করেন। পরবর্তীতে সরকার খেলার মাঠ এবং বিদ্যালয়ের অন্যান্য উন্নয়নের জন্য আরও ২ একর ৫৭ শতাংশ জমি হুকুম দখল করে বিদ্যালয়ের জন্য অর্ন্তভুক্ত করেন। বর্তমানে বিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৩ একর ৬১ শতাংশ। ১৮ জানুয়ারি ১৯৮৪ সালে স্থানীয় সকল শ্রেণীর মানুষের উপস্থিতিতে জনাকীর্ণ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল মেমোরিয়াল ইন্সটিটিউশন নামে বিদ্যালয় স্থাপনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ৩১ মে ১৯৮৪ সালে বিদ্যালয়টি এম পি ও ভুক্তি করা হয়।

১৯৮৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। এবং বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করার সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বিশাল জনসভার মাধ্যমে বিদ্যালয়টি সরকারিভাবে উদ্বোধন করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক ছিলেন ৫ জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জনাব এ এইচ এম ইসহাক মিয়া (প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক), জনাব মোঃ সুরুজ্জামান এবং জনাব সুলতান মাহমুদ।

দেড় শতাধিকের অধিক ছাত্র, ১৮ জন শিক্ষক (পরবর্তীতে আরও ১৩ জন নিয়োগ দেয়া হয়), ১১ জন এম এল এস এস, এবং ১ জন লাইব্রেরীয়ান এই সর্বমোট ৩১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়ে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। ১ বছরের মধ্যে বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ৪ শতাধিক পার হয়ে যায়। ১৯৮৬ সাল থেকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিনিয়ত সাফল্য বয়ে আনছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পদে কাজ করছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৫ শতাধিক এর অধিক ছাত্র রয়েছে, প্রতি বছর তুমুল প্রতিযোগীতার মাধ্যমে মেধা তালিকার ভিত্তিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়ে থাকে।

সার্বিক সহযোগিতায়ঃ কাজী মোঃ সোহরাব হোসেন। বিশেষ কৃতজ্ঞতাঃ শেফালী খানম (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক)। ইমেইলঃ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.