আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয়নাল হাজারী নেই তাতে কী... আছেন নিজাম হাজারী

mamun.press@gmail.com ফেনীতে জয়নাল হাজারী নেই, তাতে কী? থেমে নেই হাজারী জমানার মতো সেই টেন্ডারবাজি, বালুমহাল লুট, বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার। স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সারির নেতা, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের এক শ্রেণীর নেতার সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এখন ফেনী। আর এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের নতুন সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী। এই সিন্ডিকেট যা করে, যা বলে, তা এখন ফেনীতে আইন। তারা নগদ টাকার বিনিময়ে টেন্ডারের কাজ ভাগাভাগি করে।

বালুমহাল তাদের অবৈধ দখলে। তাদের হাত এত লম্বা যে, কথা না শুনলে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদেরও নাকানি-চুবানি খেতে হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টেন্ডারবাজি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে একাধিকবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন। লাভ হয়নি। ফেনীর ঠিকাদার, ব্যবসায়ী, বালুমহাল ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বললে ফেনীর যে চিত্রটি পাওয়া যায় তা আদৌ সুখকর নয়।

প্রশাসনের সঙ্গে কথা বললে আকারে-ইঙ্গিতে তারা তাদের অসহায়ত্বের কথা জানান। কারও যেন কিছু করার নেই। ঠিকাদারদের অনেকে ইতিমধ্যে পেশা বদল করেছেন। গত দু'বছরে ফেনীর বিভিন্ন বিভাগে কমপক্ষে দুইশ' কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে। কোনো ঠিকাদার টেন্ডারে অংশ নিতে পারেননি।

ফেনীর রাজনীতির খবর রাখেন, এমন বিশেল্গষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি জয়নাল হাজারী ভারতে পলাতক জীবন ছেড়ে ফেনীতে ফিরে আসেন। এর আগের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর অভিযানের মুখে হাজারী পালিয়ে যান। এরই মধ্যে তার ওপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের খৰ নেমে আসে। পলাতক অবস্থায় দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ চলে যায় হাজারীর বিরুদ্ধে।

ফেনীতে ফিরে হাজারী দেখতে পান, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারই এক সময়ের দোসর যুবলীগ নেতা নিজাম হাজারী। নিজাম হাজারীর ছাত্রজীবন কেটেছে চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামে এক অস্ত্র মামলায় তার ১০ বছরের সাজা হয়। কয়েক বছর কারাভোগের পর তিনি মুক্তি পান। হাজারী ফেনীতে আসার আগেই নিজাম হাজারী আওয়ামী লীগের হাজারীবিরোধীদের নিয়ে হাজারীবিরোধী জোট গঠন করেন।

তার সঙ্গে যোগ দেন জয়নাল হাজারীর স্টিয়ারিং কমিটির কিছু ক্যাডার। নিজাম হাজারী ফেনী থেকে হাজারীকে উৎখাত করার জন্য কঠিন অবস্থান গ্রহণ করেন। স্থানীয় বিশেল্গষক মহল জানায়, নিজাম হাজারীকে ঢাকায় থেকে দলীয় ও প্রশাসনিক শক্তি জোগান বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ পদপ্রার্থী ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এপিএস আলাউদ্দিন নাসিম। কিছুদিনের মাথায় প্রশাসনের প্রতিকূলতায় হাজারী বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। জয়নাল হাজারীর অভিযোগ, নিজাম বাহিনী তার বাড়িতে গুলি চালায়, বাড়ির আসবাবপত্র পুড়িয়ে দেয়।

তিনি ফেনী থানায় মামলা করেন। জয়নাল হাজারী বিভিন্ন সভা-সমিতিতে প্রতিনিয়ত নিজাম হাজারীকে নিজাম ডাকাত বলে কুৎসা রটনা করতে থাকেন। প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে হাজারী একপর্যায়ে ঢাকায় চলে যান। এখন ঢাকায়ই তার স্থায়ী বসবাস। জয়নাল হাজারীর ফেনী ত্যাগের পর সাধারণ মানুষ ভেবেছিল সুদিন আসছে।

কিন্তু দলে দলে স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যরা নিজাম হাজারীর পক্ষে যোগদান করার পর হাজারী জমানাই আবার ফিরে আসে বলে বিশেল্গষকদের অভিমত। এর মধ্যে পৌর নির্বাচন এলে নিজাম হাজারী স্বঘোষিত আওয়ামী লীগের একক মেয়র প্রার্থী হন। এরপর ফেনী আওয়ামী লীগের সাধারণ সভা আহ্বান করে নিজাম হাজারীকে দলের সদস্য বানানো হয়। নিজাম হাজারীর সঙ্গে একাট্টা হয়ে ফেনীকে নিয়ন্ত্রণ করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অনেক নেতা তার সঙ্গে যোগদান করেন। দ্রুত আবার পরিবর্তন হতে থাকে ফেনীর আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতির।

ফেনীর একাধিক মহল ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নাম জানা যায়। নিজাম হাজারীর সঙ্গে এ সময় যোগ দেন যুবলীগ নেতা ও ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম, পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল মজুমদার, ছাত্রলীগ নেতা ও পরশুরাম পৌরসভা চেয়ারম্যান সাজেল চৌধুরী। তাদের নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। এই সিন্ডিকেট এখন ফেনীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর শক্তি। স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এ কয়েক নেতাকে নিয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে।

তাদের হাতকে আরও মজবুত করেছে জয়নাল হাজারীর সেই স্টিয়ারিং কমিটির অস্ত্রধারী ক্যাডাররা। ফেনী শহর ও প্রতিটি উপজেলা সদর এবং গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে কয়েক হাজার সিন্ডিকেট সদস্য। জানা যায়, নিজাম হাজারী তার নিরাপত্তায় সশস্ত্র পাহারার জন্য একটি চৌকস প্রাইভেট বাহিনী গঠন করেছেন। নিজাম হাজারী যেখানে যান সেখানেই নিদিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে এ বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়ে থাকে। টেন্ডার ভাগাভাগি :অনেক ঠিকাদার জানান, গত দুই বছরে তাদের পক্ষে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও গণপূর্ত বিভাগে টেন্ডার ক্রয় ও দাখিল করতে পারেননি।

গত ১০ অক্টোবর পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রায় ২২ কোটি টাকার ১২টি টেন্ডার দাখিলের নির্ধারিত তারিখ ছিল। এর একদিন আগে টেন্ডার সিডিউল কেনার শেষ তারিখ থাকলেও ওই সিন্ডিকেট ১০ দিন আগে তাদের অনুসারীদের নিয়ে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সব ঠিকাদারকে জানিয়ে দেয়, ৫ জন নির্ধারিত ঠিকাদার ছাড়া আর কেউ টেন্ডার সিডিউল ক্রয় করতে পারবে না। সিদ্ধান্ত হয়, কাজের টেন্ডার ফরম ক্রয় ও তা ড্রপ করবেন ঠিকাদার রতন, জীবন, দিদার, জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও ছালে বাবুল। এ নির্দেশের পর ঠিকাদারদের পক্ষে আর টেন্ডার ক্রয় করা সম্ভব হয়নি। পরে সিন্ডিকেট কয়েকজনের কাছ থেকে টেন্ডার মূল্যের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে টাকা নিয়ে কাজ বিক্রি করে।

ঠিকাদাররা জানান, এর আগে দু'তিনবার তারা বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন দফতর থেকে টেন্ডার সিডিউল ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু টেন্ডার ফেলার দিন সকাল থেকে অফিসে ও টেন্ডার বাক্সে সন্ত্রাসী পাহারা থাকায় তারা টেন্ডার জমা দিতে পারেননি। সংশিল্গষ্ট দফতর টেন্ডার অনুষ্ঠানের দিন পুলিশ মোতায়েন করলেও পুলিশের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হয়নি। ফেনীর ঠিকাদাররা জানান, ফেনীতে ঠিকাদারি পেশার সঙ্গে পাঁচ শতাধিক ব্যবসায়ী জড়িত। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপির সঙ্গে জড়িত ও নিরপেক্ষ ঠিকাদার রয়েছেন।

গত দুই বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও গণপূর্ত বিভাগে প্রায় দুইশ' কোটি টাকার কাজ হয়েছে, কিন্তু খোদ আওয়ামী লীগ সমর্থক ঠিকাদারদের পক্ষেও কাজ নেওয়া কিংবা টেন্ডার দাখিল করা সম্ভব হয়নি। টেন্ডার ভাগাভাগির এ কাজ ফেনী শহরের বাইরেও প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে ফ্রি স্টাইল চলে আসছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ বাদে আর কারও পক্ষে ঠিকাদারি কাজ করা কোনো উপজেলায় সম্ভব হয় না। টাকার ভাগ চলে যায় সিন্ডিকেটের হিসাবে। ফেনীতে টেন্ডার জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে বলে স্বীকার করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজ আহাম্মদ চৌধুরী।

কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার টেন্ডারবাজি কঠোর হস্তে দমন করার জন্য প্রশাসনের কাছে তিনি দাবি করেছেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে দলীয় একটি মহল টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে বলে লিখিত অভিযোগ করেন বলেও তিনি জানান। বালুমহাল লুট :ফেনীর সবচেয়ে লোভনীয় ও কাঁচা টাকার উৎস ফেনীর বালুমহাল। প্রতিবছর ফেনীর মুহুরী, ফেনী নদী ও কহুয়া নদী থেকে প্রায় শতকোটি টাকার বালু পাওয়া যায়। সরকার প্রতিবছর ফেনীর নির্ধারিত ১৮টি বালুমহাল ইজারা দিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করে থাকে।

ফেনীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শওকত ইকবাল শাহীন জানান, গত দু'বছর ফেনীর সব বালুমহাল ইজারা বন্ধ রয়েছে। একই চক্র বালুমহালের ইজারা প্রদানের ওপর কৌশলে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে রাখে। আদালত বালু মামলার সুরাহা হওয়া পর্যন্ত বালু উত্তোলন স্থগিত করেন। ইজারা বন্ধ থাকার সুযোগে বিনা বাধায় চক্রটি লুট করে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকার বালু। ফেনীর বালুমহাল ঘুরে ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, ১৮টি বালুমহাল থেকে একদিনের জন্যও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।

ছয়জনের সিন্ডিকেট নির্দিষ্ট হারে ট্রাকপিছু মোটা টাকার বিনিময়ে বালুমহাল চালু করে রেখেছে। মুহুরী ও ফেনী নদীতে প্রকাশ্যে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ঘটনায় বিভিন্ন থানায় নির্বাহী কর্মকর্তারা একাধিক মামলা করেছেন। অভিযোগ পাওয়া যায়, মাঝে মধ্যে পুলিশ লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করে শ্রমিকশ্রেণীর কিছু লোককে আটক ও ড্রেজার জব্দ করে। আবার চালু হয়ে যায় বালু উত্তোলন।

অবৈধ বালু লুটকারীদের বাধার মুখে গত কয়েক মাস ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাজ বন্ধ থাকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাটির প্রয়োজনে সরকার ফেনী নদী থেকে বালু উত্তোলন করার অনুমতি দিয়েছিল চলতি বছরের প্রথম দিকে। এ বাহিনীর হামলার মুখে কিছুতেই তাদের পক্ষে বালু উত্তোলন করা সম্ভব ছিল না। চলতি মাসের প্রথমদিকে মহাসড়ক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের ওপর বালু সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ও আগুন ধরিয়ে দিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। পরে সরকারি উচ্চমহলের নির্দেশে র‌্যাব ও পুলিশ পাহারায় মহাসড়ক নির্মাণকাজ শুরু করা হয়।

কাবিখা :ফেনীর এই সিন্ডিকেটের দাপটে ফেনীর কাবিখাসহ স্থানীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ধরনের কাজ হচ্ছে নামমাত্র। অভিযোগ পাওয়া যায়, ফেনীর বিএনপিদলীয় এমপিদের অনুমোদিত কাবিখার কাজের কমিটি গঠন করা হয় সিন্ডিকেটের দেওয়া নাম অনুসারে। অভিযোগ পাওয়া যায়, তারা কাজ না করেই তুলে নেয় বরাদ্দ করা চাল-গম। কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমনকি বিরোধীদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুমোদন করা কাজের পরিণতি হয়েছে একই।

লুট হয়ে যায় কোটি টাকার চাল-গম। বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি :ফেনী শহরের মহিপাল বাসস্ট্যান্ড, সোনাগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী বাসস্ট্যান্ড সর্বত্র সিন্ডিকেটের নিজস্ব লোকের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করা হয়। বাস মালিকরা জানান, এখন বাস মালিক সমিতিতে সিন্ডিকেটের লোক বসানো হয়েছে। চাঁদা তোলা হয় সিএনজি স্কুটার থেকেও। তারা জিপির সঙ্গে চাঁদার টাকা তুলে নিচ্ছে ।

হুমায়ুন নামের এক বাসচালক জানান, প্রতিদিন রুটে গাড়ি চালাতে হলে তাদের রুট বুঝে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা গুনতে হয়। রাতে এসব টাকার ভাগ পেঁৗছে যায় সিন্ডিকেটের তহবিলে। পুলিশের একটি বিশ্বস্ত সূত্র দাবি করেছে, ফেনীতে বদলি হয়ে আসা ইন্সপেক্টররা (ওসি) জেলায় বদলি হয়ে এলে সিন্ডিকেটের অনুমতি ছাড়া থানায় পোস্টিং পান না। সিন্ডিকেটের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি পেলে তবে থানার ওসির পদ পেতে পারেন। একজন নামকরা অফিসার গত কয়েক মাস ফেনীতে থাকলেও তিনি সিন্ডিকেটের অনুমতি পাননি বলে রিজার্ভ পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

নিজাম হাজারী যা বলেন : নিজাম হাজারী বরাবরই ফেনীর বর্তমান অবস্থাকে হাজারী আমলের চেয়ে শতগুণ ভালো বলে দাবি করেন। তিনি সমকালকে জানান, এখন ফেনীতে কোনো রাজনৈতিক খুনের ঘটনা নেই। বিরোধী দলের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হয় না। টেন্ডার সন্ত্রাসের ব্যাপারে তার অভিমত, সন্ত্রাস নয়, ঠিকাদাররা সমঝোতার মাধ্যমে কাজ নিয়ে যান। এটা ঠিকাদারদের নিজস্ব ব্যাপার।

নিজাম হাজারী আরও জানান, তিনি নিজে পৌরসভার মেয়র হয়ে পৌর ফান্ড থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করেন না। ফেনীর উন্নয়নে এ টাকা খরচ করা হয়। ফেনী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জানান, তিনি সবসময় শোনেন টেন্ডার জালিয়াতির কথা। তার প্রশ্ন, টেন্ডারসন্ত্রাস হলে বিএনপির লোকজন কাজ পায় কীভাবে? তিনি টেন্ডারসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান। জয়নাল হাজারী যা বললেন_ ফেনীর বর্তমান হাল-হকিকত নিয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে জয়নাল হাজারী সমকালকে জানান, তিনি গডফাদার ছিলেন না, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একশ্রেণীর সংবাদপত্র তাকে ও দেশের কয়েকজন জননেতাকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গডফাদার হিসেবে কলঙ্কিত করতে চেয়েছিল।

তার মতে, এখন ফেনীতে হাজার গুণ বেশি টেন্ডারবাজি, বালুমহাল লুট ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে না। তিনি তিনজন সাংবাদিকের নাম উলেল্গখ করে বলেন, তারা প্রতিটি টেন্ডারবাজির পর টাকার ভাগ ও মাসোয়ারা পেয়ে থাকেন। তিনি বলেন, ফেনীর মানুষ বর্তমানে একটি দুষ্টচক্রের হাতে জিম্মি। সবাই এখন এ চক্র থেকে মুক্তি চাইছে।

তিনি গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এক পরাজিত প্রার্থীর বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করেন। জয়নাল হাজারী বলেন, ফেনীর সিন্ডিকেট চক্রের মধ্যে বর্তমানে টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সংকট শুরু হয়েছে। যে কোনো সময় বিস্টেম্ফারণ ঘটতে পারে। ----মঙ্গলবার | ২৫ অক্টোবর ২০১১ | ১০ কার্তিক ১৪১৮ | ২৬ জিলকদ ১৪৩২/ সমকাল ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।