আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হোটেল বয় সেজে নিজামীকে নেতা কর্মীদের আপ্যায়ন

আমি নতুন কিছু লিখবো তাহের বাহিনী ফের মাঠে সক্রিয় মঙ্গলবার দৈনিক জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় ''কুমিল্লায় পুলিশ পাহারায় নিজামীর গোপন বৈঠক'' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে জামায়াত-শিবিরের কিছু নেতাকর্মী স্থানীয় সাংবাদিকসহ প্রশাসনকে বিভ্রান্তিমূলক বিভিন্ন তথ্য দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে জেলার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মাঠে নেমেছে। জনকণ্ঠের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অথবা চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে নিয়মিতই চৌদ্দগ্রামের হোটেল হাইওয়ে ইন এ জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী।

সোমবার ওই হোটেলে পেঁৗছার প্রায় আধা ঘণ্টা আগেই জামায়াতের কুমিলস্না দক্ষিণ জেলা আমীর মাওলানা আব্দুস সাত্তার, মহানগর জামায়াতের আমীর কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমির শাহাব উদ্দীন, জামায়াতের নেতা শাহ মিজানুর রহমান, ভিপি জাহাঙ্গীরসহ জামায়াতের অর্ধ শত নেতাকর্মী ওই হোটেলের দ্বিতীয় তলায় একমাত্র ভিআইপি লাউঞ্জটি বুকিং করেন। অনেকটা রাজকীয় কায়দায় খাবারের মেনু হিসেবে হাজির করা হয় দেশীয় কয়েক রকমের মাছ, দেশীয় মুরগী, গরম্নর গোস্ত, খাসির গোস্তসহ আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার। জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতাকর্মী হোটেল বয় সেজে ওই খাবার পরিবেশন করেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের হোটেল হাইওয়ে ইন-এর সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মীরা তাঁকে সুকৌশলে ওই হোটেলের অভ্যনত্মরে দ্বিতীয় তলায় ভিআইপি লাউঞ্জে নিয়ে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিক নির্দেশনামূলক বৈঠক করেন। এ সময় মতিউর রহমান নিজামীর পাহারায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও ভুরিভোজে ব্যস্ত ছিল।

এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম জামায়াত নেতা শাহ মিজানুর রহমান জানান, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ওই হোটেলে আমাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছে মাত্র। গোপন কোন কথা বাতর্া আমাদের মধ্যে হয়নি। এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরম্নল হাসান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে কুমিলস্না পুলিশ সুপার মোখলেসুর রহমান জানান, আমি বিষয়টি পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। পরে খবর নিয়ে মতিউর রহমান নিজামী ওই হোটেলে নামাজ ও খাওয়া দাওয়ার বিষয়টি সত্যতা পেয়েছি।

তবে গোপন কোন বৈঠকের বিষয়টি ঠিক নয়। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা সংস্থার একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মতিউর রহমান নিজামী ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার পথে ওই হোটেলে নামাজ পড়েন ও খাবার খান। ওই সময় স্থানীয় নেতাকমর্ীরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে ও কুশল বিনিময় করেন। এর বেশি কিছুই হয়নি। ওই গোপন বৈঠক সম্পর্কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদশর্ী জানান, কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী হিসেবে ডা. সৈয়দ আবদুলস্নাহ মোহাম্মদ তাহের এমপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময়ে প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতিতে নামান জামায়াত শিবির ক্যাডার ও জঙ্গীদের।

এমনকি এমপি নির্বাচিত হয়ে খুন, সন্ত্রাস, টেন্ডার, জমি, বালু, জলমহাল দখল, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ক্ষমতার জোরে এসব মামলা ও অভিযোগ ধামাচাপা দিয়েছে ডা. তাহের। ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর তাহের বাহিনীর অত্যাচার ও জঙ্গী সম্পৃক্ততার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রার্থী হিসেবে চৌদ্দগ্রাম আসনের সংসদ সদস্য হয়ে যাওয়ার ঘটনা মনে হলে এখনও এলাকার মানুষজনের চোখে ভেসে ওঠে এক বিভীষিকাময় অত্যাচারের চিত্র। নির্বাচনের দিন সব কেন্দ্র দখল করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থান থেকে তার এলাকায় নিয়ে আসে ১০ সহস্রাধিক জামায়াত শিবির ও জঙ্গী সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীর সদস্য।

জঙ্গী ও জামায়াত শিবির ক্যাডার দিয়ে ভোট ডাকাতিসহ নানা ধরনের অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়েছে তাহের বাহিনী। সেই তাহের বাহিনীকে আবারো মাঠে সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে। কিছুদিন গাঁ ঢাকা দিয়ে থাকলেও সম্প্রতি প্রকাশ্যে ওরা পুনরায় সংগঠিত হচ্ছে। দেশের সকল গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স সেলে (টিএফআই) জেএমবি নেতা ভাগ্নে শহীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছিলেন- যথাসময়ে, যথাস্থানে এবং যথাযথ ব্যক্তির ওপর শক্তি প্রয়োগের হুমকিদাতা জামায়াতের সাবেক এমপি তাহেরের নেপথ্য শক্তির চাঞ্চল্যকর তথ্য। ডা. তাহের জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহ্্রীর ও জামায়াত-শিবিরের সমন্বয়ক হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ঠেকাতে সুইসাইড স্কোয়াডের ৫০ সদস্যের একটি দল দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। এ জন্য সাতটি স্পর্শকাতর স্থান ও গুরম্নত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট করা হয়েছে। হামলার টার্গেটের মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর কার্যালয়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আনত্মর্জাতিক ট্রাইবু্যনাল ও ট্রাইবু্যনালের বিচারপতি, আইনজীবী, তদনত্মকারী সংস্থা ও তদনত্মকারী কর্মকর্তারা, সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা। নামীদামী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও হাসপাতাল। এ সব স্পর্শকাতর স্থান ও ব্যক্তির ওপর হামলা চালাতে কাজ করে যাচ্ছে ৫০ জনের সুইসাইড স্কোয়াডটি।

তিনি আরও জানান, জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা গ্রেফতারের আগেই জেএমবি, হুজি, হিযবুত তাহ্্রীর ও জামায়াত-শিবিরের সমন্বয়ক ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক এমপি তাহেরকে নিয়োজিত করা হয়েছে। তাহেরের নেতৃত্বেই এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য জঙ্গী সংগঠনগুলোকে একত্রিত করে নাশকতা ও হামলার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। ডা. তাহের আগে থেকেই জঙ্গীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ওই সব বিষয়গুলো নিয়েই সোমবার হোটেল হাইওয়ে ইন এ কথাবার্তা হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এক শ' টাকায় জনকণ্ঠ বিক্রি ॥ মঙ্গলবার দৈনিক জনকণ্ঠের প্রথম পাতায় ''কুমিলস্নায় পুলিশ পাহারায় নিজামীর গোপন বৈঠক'' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর কুমিলস্নাজুড়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

কুমিলস্নায় সকাল ৮টার মধ্যেই দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সমসত্ম কপি বিক্রি হয়ে যায়। শহরের অলিতে গলিতে বিষয়টি নিয়ে বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। শহরের কান্দিরপাড়, বাদুলতলা, ঝাউতলা, পুলিশ লাইন, শাসনগাছা, রাজগঞ্জ, চকবাজার, টমছমব্রিজ এলাকায় দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার ফটো কপি বিক্রি করতে দেখা যায়। শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকার পত্রিকার হকার স্বপন দৈনিক জনকণ্ঠের কিছু কপি ১০০ টাকা করে বিক্রি করেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.