আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সফলতার পিছনে ব্যর্থতা

চারপাশে ঘন অন্ধকারে চোখ মেলে ভাবছি ব্যর্থতা সাফল্যের শিখরে পৌছানোর পথ। ইতিহাস পড়লে দেখা যায় অনেকে ব্যর্থতাকে জয় করে সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন। আপাততদৃষ্টিতে তাদের দেখে বুঝা যাবে না ব্যর্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তারা বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডে এখনও গৌরান্বিত হয়ে আছেন। তেমনি ক’জনের ব্যর্থতার পর সাফল্য হবার জীবনচিত্র তুলে ধরা হলো। ওয়াল্টা ডিসনে : অল্প বয়সে ওয়াল্টা ডিসনে ব্যঙ্গচিত্রকর অঙ্কন করে তা প্রকাশিত করার জন্য বিভিন্ন খবরের কাগজের অফিসে গিয়ে সম্পাদকের সাথে কথা বলতেন।

কিন্তু সবাই তাকে ও তার চিত্রঙ্কনকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মন্তব্য হিসেবে তারা জুড়ে দিয়েছিলেন যে, ‘ডিসনের কোন প্রতিভাই নেই। ’ পরে ক্ষোভে-দুঃখে তিনি গির্জায় এসে সময় দিতে থাকেন। একসময় এক পাদ্রী তাকে কিছু ব্যঙ্গচিত্র আঁকার ফরমাশ করেন। ডিসনে গির্জার কাছে একটা ছোট চালাঘরে বাসা বেঁধেছিলেন।

সেখানে অনেক ইঁদুর ঘোরাফেরা করতে তিনি প্রায়ই দেখতেন। একটি ছোট ইঁদুর দেখে তার ভালো লাগে এবং সেটি শেষ পর্যন্ত তার বিখ্যাত ‘মিকি মাউস’-এ পরিণতি লাভ করে। আর এ অঙ্কনটিই তাকে বিশ্ববিখ্যাত করে তোলে। আব্রাহাম লিঙ্কন আব্রাহাম লিঙ্কন শুধু আমেরিকার নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে যে ক’জন মানবতাবাদি গণতন্ত্রকামী মহান রাষ্ট্রনায়ক জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি তাদের অন্যতম। আব্রাহাম ছিলেন আমেরিকান ১৬তম প্রেসিডেন্ট।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অখন্ডতা এবং মানুষের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখার জন্যই সংগ্রাম করেছেন তাই নয়, অজস্র কাজের মধ্যে মানুষের মর্যাদার দিগন্তকে প্রসারিত করেছেন। তার বয়স যখন ২১ বছর বয়স তখন তিনি ব্যবসায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এর পরের বছর আইন সভার নির্বাচনে পরাস্ত হন। আবারো ব্যবসার কার্যক্রম তিনি শুরু করে ঠিক দু’বছর পর ২৪ বছর বয়সে তিনি পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত হন। এরপর স্ত্রী মেরীর সমর্থনে রাজনীতিতে পুরোপুরি মনোনিবেশ করলেন।

কংগ্রেসের নির্বাচনে পরাস্ত হন ৩৪ বৎসর বয়সে। ৪৫ বৎৎসর বয়সে হারলেন সাধারণ নির্বাচনেও। ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হলেন ৪৭ বৎসরে। সিনেটের নির্বাচনে আবার হারলেন ৪৯ বৎসর বয়সে। অবশেষে ৫২ বৎসরে এসে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এত ব্যর্থতার পর তিনি রাজনীতি ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি পরাজয়কে সমাপ্তি না করে সাফল্যকে ধরতে এগিয়ে গিয়েছিলেন এবং পেয়েও ছিলেন। টমাস এডিসন : একটি ৪ বছরের বাচ্চা স্কুল থেকে বাড়িতে ফিরল তার মাস্টারমোশাইয়ের একটি ছোট চিঠি নিয়ে। মাস্টার মশাই তার মাকে লিখেছেন, আপনার টমি এত বোকা যে তার পক্ষে লেখাপড়া শেখা সম্ভব নয়। তাকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিন।

বালকটির মা প্রতিজ্ঞা করলেন, আমার টমি মোটেই বোকা নয় আমি তাকে নিজেই পড়াবো। ছোট এ বাচ্চা টমি মাত্র ৩ মাস স্কুলের শিক্ষা লাভ করেছিলেন এবং তিনি আংশিকভাবে বধিরও ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই টমি বিখ্যাত টমাস এডিসন হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। আমরা সবাই জানি বৈদ্যুতিক বাল্ব তৈরি করতে গিয়ে তিনি ১০০০০ বার ব্যর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আশা ছেড়ে দেননি।

এত ব্যর্থতার পরও সাফল্যভাবে বাল্ব তিনি আবিষ্কার করে ছেড়েছেন। শুধু তাই নয় ১৯১৪ সালে ৬৭ বৎসর বয়সে টমাস এডসনের কয়েক মিলিয়ন ডলারের কারখানা আগুনে বিনষ্ট হয়ে যায়। তখন তিনি বলেছিলেন, বিপর্যয়ের মধ্যে একটি মহৎ শিক্ষা আছে, আমাদের সমস্ত ত্র“টি বিচ্যুতি পুড়ে ছাই হয়ে গেল। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ আমরা আবার নতুন করে শুরু করবো। ’ এই বিপর্যয় সত্ত্বেও ৩ সপ্তাহ পরে তিনি "Phonograph" যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন।

সার্বিক দৃষ্টিকোন থেকে ঘটনাগুলো সহজবোধ্যতা লাগলেও কত আনন্দ, বেদনা, আতঙ্ক, লাঞ্চনা, হতাশার মধ্যেও এইসব মহান ব্যক্তিরা সাফল্যকে ছিনিয়ে এনেছিলেন। তাই আমাদের প্রত্যেকের জীবনে সাফলতা আনতে চাইলে সিনিয়র টম ওয়াটসনের কথার সঙ্গে এক হতে হবে। “যদি সফল হতে চাও তবে ব্যর্থতার হার দ্বিগুণ করে দাও। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।