আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙালির মধ্যপ্রাচ্য (৭)

দুবাই বিমানবন্দর: অস্বস্থিকর আড়াই ঘন্টা দুবাই বিমান বন্দরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল আমার! কোনো বিমানবন্দর এত সুন্দর হতে পারে, আমার জানা ছিল না। এই জীবনে খুব বেশি বিমানবন্দর অবশ্য আমার দেখাও হয় নি। সিলেটের ওসমানী, ঢাকার জিয়া, চট্টগ্রামের শাহ আমানত, কলকাতার দমদম ও নেপালের কাঠমুন্ডু, এর আগে আমার দৌঁড় ছিল এ পর্যন্তই। অবশ্য পরবর্তীতে দেখা লন্ডনের হিথ্রু বিমানবন্দরও দুবাই বিমানবন্দরের সামনে দাঁড়াতেই পারবে না। আমার বিশ্বাস, এরচে সুন্দর কোনো বিমানবন্দর আর হতেই পারে না।

সবকিছু পরিকল্পিত, সাজানো, গোছানো। কোথাও কোনো অপরিকল্পনার ছাপ নেই। দুবাই বিমানবন্দরে এ্যামিরেটস এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের জন্য আলাদা একটি টার্মিনাল করে রাখা হয়েছে। টার্মিনাল নং-৩। ঝকঝকে চকচকে পরিবেশ।

যে দিকে চোখ পড়ে, চোখ ফেরাতে ইচ্ছা করে না। সামনের দিকে এগিয়ে চললাম আমরা। তিনতলা-একতলা করে এগিয়ে চললাম ইমিগ্রেশনের দিকে। অভ্যন্তরের চোখ জুড়ানো সব দৃশ্য সামনে পড়তে লাগলো। কোথাও পানির ফোয়ারা আবার কোথাও চোখ ধাঁধাঁনো লাইটিং।

এক্সেলেটর চেপে উপরে উঠার সময় লক্ষ্য করলাম হাতের ডানে এমনভাবে কৃত্রিম পাহাড়ী ঝরনা মতন তৈরি করে রাখা হয়েছে যে, বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে আপনার নিজেরই এক সময় বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করবে এটা সত্যি সত্যিই কোনো ঝরনা। বিমান থেকে নেমে ইমিগ্রেশন পর্যন্ত পৌঁছতে আমাদের সময় লাগলো চৌদ্দ মিনিটের মত। অবশ্য পুরো পথ হেটে যেতে হয় নি। ওখানে হাটতে ইচ্ছে না করলেও সমস্যা নেই। চলন্ত লিফট রয়েছে।

আপনি জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই সামনের দিকে আগাতে পারবেন। একটু দূরে দূরে দাঁড়িয়ে আছে এ্যামিরেটস গাইড মেয়েরা। ‘প্লিজ স্যার’ বলে বলে তারা পথ দেখিয়ে দেয়। এ জন্য আপনি ইচ্ছে করলেও রাস্তা হারিয়ে ফেলতে পারবেন না। আরব বিশ্বের একটি মুসলিম দেশের বিমান বন্দরে হাটুর অনেক উপরে স্কাট পরা অর্ধ উলঙ্গ মেয়েদের “হাই স্যার! হ্যালো স্যার! এক্সকিউজমি স্যার” টাইপ কালচার আরব বিশ্বের হাজার বছরের ঐতিহ্যের সাথে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ অথবা সাংঘর্ষিক, ভাবতে ভাবতে এক সময় নিজেদেরকে আবিষ্কার করলাম ইমিগ্রেশনের লাইনে।

চোখ বুলিয়ে নিলাম চতুর্দিকে। লম্বা সাদা কুর্তা, মাথায় সাদা রুমাল, রুমালের উপরে কালো বেড়িয়া। দেখেই বুঝা যায় এরা অরিজিনাল আরবী। স্যুট পরিহিত/ পরিহিতা কয়েকজনকেও কাজ করতে দেখলাম। এরা ইন্ডিয়ান।

আরবী-ইন্ডিয়ান মিলে কন্ট্রোল করছেন ইমিগ্রেশন। আমরা দাঁড়িয়েছি আরবী কর্মকর্তার লাইনে। উনি মুসলমান, আমরা মুসলমান, দেশটিও ইসলামী। মন ভাল হয়ে যাওয়ার মত ব্যাপার। কিন্তু বেশিক্ষণ এই মন ভালো হয়ে যাওয়ার অনুভূতিটা ধরে রাখা গেলো না।

যথাসময়ে আমরা এগিয়ে গেলাম কাউন্টারের দিকে, আমি ও মুছা। আরবী অফিসার আমাদের দিকে একবার তাকিয়ে পাসপোর্ট ভিসা খুব ভাল করে পরীক্ষা করে দেখতে লাগলেন। অপ্রয়োজনীয় ও অবান্তর সব প্রশ্ন করতে লাগলেন আমাদেরকে। বাংলাদেশী পাসপোর্ট আমাদের। সবেমাত্র ল্যান্ড করা ঢাকা টু দুবাই আমিরাত বিমানে এসেছি, তারপরও “কোথা থেকে এসেছেন? কেন এসেছেন? যাবেন কোথায়? এই প্রথম আসলেন?” ইত্যাদি প্রশ্নবানে জর্জরিত করে তুললেন আমাদেরকে।

ইচ্ছে করছিলো বলি, এক্সকিউজমি জনাব, আপনার সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আমাদের পার্সপোর্ট, ভিসা এবং তৎসংশ্লিষ্ট পেপারেই আছে। খামাখা কষ্ট করে আমাদের জিজ্ঞেস করার দরকার কি? আপনার দেখার বিষয় পাসপোর্ট-ভিসা ও আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র আসল না নকল। কিন্তু সেটা আর জিজ্ঞেস করলাম না। শুনেছি এই ভদ্রলোকদের মেজাজ-মর্জি একটু খারাপই থাকে। সুবোদ বালকের মত তাদের অসংলগ্ন ও অবান্তর প্রশ্নগুলোর জবাব দিলাম।

সাত মিনিটের সওয়াল-জওয়াব পর্ব শেষে পাসপোর্টে সীল পড়লো। মনে হলো যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁছলাম। সামনের দিকে পা বাড়াতেই আবারো ডাক দিয়ে থামানো হল আমাদেরকে। কোনো কারণ ছাড়াই বুকটা ধক্ করে উঠলো। এখন আবার কী জানতে চাইবে- কে জানে! তাদের আঞ্চলিক আরবী বুঝতে কষ্ট হয়।

তাদের ইংরেজি জ্ঞানও আবার ভয়াবহ। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ থেকে আমাদের বলা হল, ব্যাগ চেক করা হবে। খুব কষ্ট হল তখন। বুকের ভেতরে চাপা যন্ত্রণা অনুভব করলাম। ব্যাগ চেক করা হবে, এ কারণে নয়, মুসলিম দেশে মুসলমানকেই কেন শুধু সন্দেহের টার্গেট বানানো হচ্ছে, এজন্য।

আমি লক্ষ্য করলাম আমার ডানে-বামে সাদা চামড়ার দেশের অনেক হাফপ্যান্ট-ফুলপ্যান্ট নারী-পুরুষ ইমিগ্রেশন কাউন্টার অতিক্রম করছে। অনেক নিগ্রোও। তাদের দিকে এক পলক তাকিয়েই তাদের পাসপোর্টে সীল দিয়ে ওয়েলকাম বলে তাদের যেতে দেয়া হচ্ছে। তাদের একেক জনের কাঁধের ঝুলানো ব্যাগ টেনে পারছে না। হাতেও আছে ব্যাগ।

কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যবান ব্যাগগুলোর দিকে কারো কোনো লক্ষ্যই নেই। এরা সন্দেহের উর্ধ্বে। এরা ধোয়া তুলসীর পাতা। সন্দেহের টার্গেট শুধু মুসলমান! আমার নিজের অজান্তেই চোখ দুটো ভিজে উঠলো লজ্জায়, অপমানে, ঘৃণায়, ক্ষোভে। তাকিয়ে দেখলাম অন্য কাউন্টারগুলোতেও কেবল তাদেরকেই খুব ভাল করে তল্লাশি করা হচ্ছে।

যারা টুপি পাঞ্জাবী পরা ও দাড়ি রাখার ভয়াবহ অপরাধটি করছেন। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল আমার। পাশের দেয়ালে ডিজিটাল বোর্ডে Wel come to UAEলেখা না থাকলে আমার মনে হয়ত সন্দেহ দেখা দিত ভুল করে আমরা অমুসলিম কোনো দেশের বিমানবন্দরে ঢুকে পড়েকি কি না! ব্যাগ অপারেশন আমাদেরকে বলা হয়েছে ব্যাগ তল্লাশী করা হবে। যথারীতি আমরা ব্যাগ এগিয়ে দিলাম সামনের দিকে। তন্ন তন্ন করে অপারেশন শুরু হল ব্যাগে।

সকল কাপড়-চোপড় বের করে দেখা হল। পলিথিন দিয়ে মোড়ানো পান-সুপারী দু’আঙ্গুল দিয়ে ধরে ফেলে দেয়া হল ডাষ্টবিনে। পানের মায়ায় দু’একবার অবশ্য কিরোয়েষ্ট করেছিলাম। ওরা তাতে পাত্তা দিল না। শুধু বললো, “মমনু আল হুকুমিয়্যাহ” অর্থাৎ রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ।

এরপর আর কিছু বললাম না। বেশি কথা বললে নিষিদ্ধ বস্তু (পান-সুপারী) বহনের দায়ে কে জানে আবার মামলা-টামলায় জড়িয়ে দেয় কি না? শুধু মনের মধ্যে খচখচ্ করতে লাগলো। খুব বাছাই করে পান-সুপারীগুলো সাথে নিয়েছিলাম। আহারে! ব্যাগে আমার কিছু বিজনেস ডকুমেন্ট ছিল। ওগুলো উল্টে পাল্টে দেখা হল।

আমার ক’টি বই ছিলো। ওগুলো বের করে খুলে দেখতে লাগলো। যেহেতু বইগুলো বাংলা, সঙ্গত কারণেই তাদের পড়তে পারার কোনো কারণ নেই। অন্য একজনকে ডেকে আনা হলো। সম্ভবত বাংলা বিশারদ কেউ হবেন।

তিনি মিনিট পাঁচেক বইগুলো নাড়াচাড়া করে তাদেরকে কী যেন বলে চলে গেলেন। আমি ভয় পেয়ে গেলাম। পরিষ্কার পানিকে তারা অযথাই ঘোলা করছে। বই নিয়ে আমার দিকে এগিয়ে এলেন কর্মকর্তা। ইংরেজি জানা লোক।

হাসি মুখে বললেন, Are you author? বলেই আমার বইগুলো সামনে তুলে ধরলেন। কিছু কিছু মুহুর্ত আছে, যেখানে নিজেকে ছোট করে প্রকাশ করতে নেই। হিতে বিপরীত হতে পারে। আমার কাছে মনে হল এটাও তেমন মুহুর্ত। আমি বললাম, , Yes I am. Do you have any doubt? ভূরু কুচকে তাকালেন তিনি।

বললেন, Steel now how many book’s you are writing? আমি ভাবলাম, মওকা যখন পেয়েছি, তখন একটু লম্বাচুড়া বলে মাপ পাইয়ে দেই। অনেক জ্বালাতন করেছে ব্যাটারা। আমি বললাম, By now I have fifteen number of books. And I use to write columns in many dailies of Bangladesh for fifteen years about. যদিও সে পর্যন্ত আমার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা মাত্র ছ'টি। হাত বাড়িয়ে দিলেন কর্মকর্তা। এই প্রথম মনে হল একটু ভাল চোখে তাকালেন তিনি আমাদের দিকে।

বললেন, Congratulation’s. এত গঞ্ছনার পর এই কংগ্রাচুলেশন্সে আমি খুব একটা খুশি হতে পারলাম না। শেষ হল ব্যাগ চেকিং। নিজেদের আক্কেলকে দুষারোপ করতে লাগলাম। আমাদের ব্যাগ দু’টো বেল্টে দিয়ে দিলে এত ঝামেলায় জড়াতে হত না, পানগুলোও বেঁচে যেত। কিছু দূর অগ্রসর হবার পর আরো কয়েকজন ভয়াবহ দায়িত্বশীল অফিসার আবারো ব্যাগ চেক করলেন।

ঘটনাটি মোট তিনবার ঘটানো হল। তৃতীয় বার মুছা কিছুটা রেগে গিয়েই ইন্ডিয়ান অই কর্মকর্তা/কর্মচারীকে বললো, “আওর কেতনে বার? তিনবার তো হ-চুঁকা” সে বললো, “কেয়া আপকো কায়ী তকলিফ হেঁ?” আমি বললাম, নেহি ভাই, হামকো কায়ী তকলিফ তো নেহি, মাগার হামারা কাপড়ৌকা বহুত তকলীফ হো রহা হে। হেসে ফেললো লোকটি। বললো, “ঠিক হে, প্লিজ ইজহাব। ” অর্থাৎ ঠিক আছে, যান।

ভাবলাম, বাব্বাহ! আরবীও শিখে ফেলেছে দেখছি। যথেষ্ট অস্বস্থি ও বিরক্তিকর অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা পা বাড়ালাম সামনের দিকে। আমাদেরকে আমিরাত সফলের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল “সিলেট বিভাগ প্রবাসী সমবায় সমিতি, আল আইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত’ নামক সংগঠন। ঢাকা থেকে ফ্লাইটের কিছুক্ষণ আগেও কথা হয়েছে সংগঠনটির সেক্রেটারী জেনারেল হাফিজ মোঃ আব্দুল্লাহর সাথে। ফ্লাইট শিডিউল তাকে জানানোর পর তিনি বলেছিলেন, “আমরা এয়ারপোর্টে আপনাদেরকে রিসিভ করবো।

” আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, আব্দুল্লাহ ভাই, আপনাদের আল-আইন থেকে দুবাই এয়ারপোর্টের দূরত্ব কেমন? তিনি বললেন, “এই ধরনের একশ সত্তর আশি কিলোমিটার হবে আর কি!” আমি বলেছিলাম, সর্বনাশ! বলেন কী? এতদূর থেকে আপনাদের আসার কোনো দরকার নেই। সাড়ে তিন হাজার মাইল দূরে একা আসতে পারলে বাকীটাও পারবো। আর দুবাই শহরেই যখন আমাদের হোটেল বুকিং করা আছে, তাই আমরা ট্যাক্সি নিয়েই হোটেলে চলে যাব। এত রাতে আপনাদের কষ্ট করার কোনো মানে হয় না। কিন্তু ইমিগ্রেশন এর ঝামেলা শেষ করে বাইরে বেরিয়ে আমি লক্ষ্য করলাম ম্যাঙ্গ জুস, ফ্রেশ পানি এবং পান নিয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন প্রবাসী কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ।

সবার সামনে ছিলেন সংগঠনটির সেক্রেটারী সিলেটের জৈন্তার আব্দুল্লাহ ভাই। এগিয়ে এসে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলেন আমাদের। একে একে আমাদেরকে পরম স্নেহে কাছে টেনে নিলেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ, সিলেট ঢাকাদক্ষিণের জালাল ভাই, জকিগঞ্জের আব্দুল জলিল ভাই, বিশ্বানাথের ইদ্রিস ভাই ও মুজিবুর রহমান প্রমুখ। কৃতজ্ঞতায় চোখ দু’টো ঝাঁপসা হয়ে এলো। লোকাল টাইম রাত তিনটা মতন বাজে।

এই গভীর রাতে এই মানুষগুলো ঘন্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে আছেন আমাদের জন্য। চোখ দু’টো ভিজে উঠলো আমার। মুহুর্তেই ভুলেগেলাম ইমিগ্রেশনের অহেতুক বিড়ম্বনা। মন ভাল হয়ে গেল। এই আন্তরিকতা শুধু বাঙালিদের মাঝেই আছে।

মনে মনে বললাম, ধন্য আমি বাঙালি। অবশ্য তখন খুব লজ্জাও লাগছিল। আমরা কোনো সেলিব্রেটি না। রাজনৈতিক নেতা-টেতাও না। আবার বড় কোনো বুযুর্গও না।

অতি সাধারণ লোক। অথচ আমাদেরকেই কি না রিসিভ করার জন্য এই মানুষগুলো বসে আছেন? এয়ারপোর্টের ভেতর থেকেই আব্দুল্লাহ ভাই আমাকে একটি ‘ডু’ মোবাইলের সীম কিনে দিলেন। তাঁরা আমাদের জন্য গাড়ী নিয়ে এসেছেন। বললেন চলুন। এদিকে প্রায় ৪৮ ঘন্টার ক্লান্তি শরীরে।

২৯ জুলাই সন্ধ্যা ৭টায় টিকেট কনফার্ম হবার পর ঐ রাত সারারাত ব্যবসায়ীক কাজ-কাম গুছাতে হয়েছে। সকালে ২ ঘন্টা ঘুমিয়ে আবারো উঠে পড়তে হয়েছে। সকাল ১০টায় বেরিয়ে পড়েছি বাসা থেকে। ১২টায় সিলেট থেকে ঢাকার বাসে। কাঁচপুরের জ্যামের কল্যাণে বিকাল সাড়ে ৬টায় গিয়ে পৌঁছি ঢাকায়।

সেখান থেকে ট্যাক্সি নিয়ে পল্টন, মালিবাগ, মহাখালির ঐতিহাসিক জ্যাম ঠেলে কোনো রকমে রাত ন’টায় জিয়া বিমান বন্দরে পৌছি। তারপর দীর্ঘ বিমান জার্নি। আর গাড়ীতে বা বিমানে ঘুমানোর মহান অভ্যাসটি আমি রপ্ত করতে পারি নি। আবার দুবাই এয়ারপোর্টের ভক্কর-চক্কর মিলিয়ে প্রায় ৪৮ ঘন্টার ক্লান্তি শরীরে। মাথার ভেতরেও অনুভব করছি ভোতা ধরনের যন্ত্রণা।

বললাম, আব্দুল্লাহ ভাই, খুব ট্রায়ার্ড লাগছে। এই মুহুর্তে আরো ২শ কিলোমিটার জার্নি করতে শরীর সাপোর্ট করছে না। আর আপনাদের আরবীতে একটা কথা আছে না, ওয়ালি যছদুকা আলাইকা হক্কুন। (তোমার উপর তোমার শরীরেও হক্ব আছে)। তাছাড়া ৪ দিনের জন্য তো হোটেল বুক করা।

অন্তত একদিন হলেও থেকে যাই। কিছু পয়সা হালাল হোক। আব্দুল্লাহ ভাই হেসে বললেন, “ঠিক আছে। একদিন না হয় বিশ্রামই নিন। ” বাইরে বেরিয়ে তারা আমাদেরকে ট্যাক্সি ঠিক করে দিলেন।

তাদের গাড়ী এয়ারপোর্টের অনেক বাইরে রাখা ছিল। ৩৫ দিরহামের বিনিময়ে এবং ১৮ মিনিটে আমরা গিয়ে পৌঁছলাম দুবাই শহরের বারডুবাই এলাকার খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাযি রোডে হোটেল সী-শেল ইন্টারন্যাশনালে। রিসিপশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে সোজা চলে গেলাম ৩য় তলায় আমাদের জন্য বুক করা ৩১০ নং রুমে। কাপড় পাল্টে ফ্রেশ হয়ে গা এলিয়ে দিলাম বিছানায়। প্রায় অবশ হয়ে আসা শরীরে রিলাক্সের হাওয়া লাগলো।

কয়েক মিনিটের মধ্যেই তলিয়ে গেলাম গভীর ঘুমের রাজ্যে। ক্রমশ----------- ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.