আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি হালায় বাঙ্গাল ই রইয়া গেলাম

দেশ ছাড়ছি বহুত দিন, ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ড আর মিলি সেকেন্ড পার হইয়া গেল। পাউরুটি, বাটার, দুধ, ডিম, বাঁশচিকনি চালের বাঁশ আর মুরগী গিলতে গিলতে আমি টায়ার্ড। খাওয়ার সময় অনেক কষ্টে, রাগে, দুখে অনেকের চৌদ্দ গুষ্টির নাম মুখে চলে আসতে চায়, কিন্তুক সাধু মানুষ, সে সব কথা মুখে আনবার পারি না। সাধু হইলেও খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে আমি পুরাই ভোগী। দিনে এক বেলা খাম তবু ও মসলাদার ভূনাটাই খাম।

সপতাহে এক বেলা খাম তো ষ্টার কাবাবের মগজ আর ভূনা গরুই খাম। দেশে থাকতে মাংস রান্না টা প্র্যাকটিস এ থাকলেও এখানে ১ কেজি গরুর যা দাম তাতে আমার ১৫ দিনের খাওয়া হয়ে যায়। কিন্তু আর না। ক্রমাগত বৈরাগ্য সাধনে নয় আমার মুক্তি। ভাবলাম আজ একটু ফুর্তি করি।

অন্য শহরে ইন্ডিয়ান শপ এ একটু ঘুর মারতে গেলাম। আহা কি আনন্দ, দেখি বেগুন ভর্তা কৌটায় ভরা আর থাইল্যান্ড এর বাঁশছাড়া চাল। সঙ্গে মসলা মাখিয়ে রাখা ভেড়ার কলিজা আগোরা রাইফেল স্কয়ার যেমন বেচে। আজ হবে ফিষ্টি। মনের আনন্দে বহুত টাকা খসায়ে নিয়ে নিলাম সব ১ইউনিট করে।

রান্না শেষে সব সাজায়ে মনে হল আহা, একটা ছবি তুলে রাখি, কত সুন্দর হইছে দেখতে। আমার বউ ও এত সুন্দর রাঁধে না। খেতে বসে সব মাখায়ে মুখে দেয়ার পর এত দিনের সংযম, ত্যাগ, তিতিক্ষা সব ফারাক্কা, তিস্তার বাঁধ ভাঙ্গা উত্তেজনার মত ভাইসা গেল। মুখ দিয়া বাইর হইয়াই গেল, হারা............., শু......চ্চা। কৌটায় ভইরা আর মসলা মাখাইয়া ......... বেচতাছস।

তগোর চৌদ্দ ............বাপ....................। (আরো দিছি, কিন্তুক আর লিখুমনা)। সব গারবেজ ব্যাগ এ ভইরা ফেলাইয়া দিয়া মনের দুখে সাধু হইয়া গেচি আবার। গাছ তলায় বইসা ফল খাই আর ভাবি, আমি হালায় পুরাই বাঙ্গাল। সবাই পিজ্জা, কর্নফ্লেক্স আর প্যানকেক খাইয়া বাকবাকুম, আর তোমার হালায় ভুনা কলিজা লাগে, না পুষ্টি বেগুনের ভর্তা লাগে।

না খাইয়া মর হালায়। আহা আমার বউটা ভালোই রানতো শেষের দিকে। পত্থম পত্থম মুখ রাখতে আর কষ্ট না দিতে খাইতাম, আর দুফরে বাইরে ভাল কইরা সাঁটাইয়া নিতাম। পরে পরে তো বাসা থেইকা বাটি ভইরা নিতাম। আহারে!!! চু চু চু!!!! (বউরে খুশাইতে লিখি নাই।

ও জানে না আমি লিখতাছি এইখানে আর সামুতে ফেইসবুকে লিন্ক ছাড়া ও আসার কোন কোইশ্চেন নাই। বিজি মানু) আইজকার ফিষ্টি তে লস পুরা ১০০০ টাকা। ফূর্তি টা না করে ভাল কাজে লাগাইলে এই বাচ্চাটা হয়তো আরো কিছু বেশিদিন নানা দুঃখ কষ্টের মাঝেও মায়ের মনে শান্তির পরশ বুলাতো। ওদের ভাগ দিবে বলে কে.এফ.সি. ১০০ গ্রাম আলু ভেজে বেচে ৭০ টাকায়, আর আমরাও স্ট্যটাস মারতে ওইখানে গিয়া ভাব মাইরা আসি। বাসায় কষ্ট করেন একটু, এক কেজি আলু ভাজা ৩০ টাকায় বানাইতে পারবেন।

বন্ধুদের নিয়া খান আর বাকি টাকাটা এদের খাওয়ান। আমাদের দেশেই আছে ক্ষুধার অনেক জ্বালা যন্ত্রনার কথা। সোনাবরু(১০) না খেতে পেয়ে ক্ষুধায় আত্নহত্যা করেছে। মেয়েটির ভাই ফেরদৌস তার মৃত বোনের ব্যাগ হাতে কাঁদছে যা সে তাকে কিনে দিয়েছিল ২০০ টাকায়। ফেরদৌসের মাসিক বেতন ছিল ৫০০ টাকা।

দারিদ্র্যের কারনে সে ঢাকায় লেখাপড়া ছেড়ে কাজ নিয়েছিল। (কালের কন্ঠ, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১১) বাচ্চাগুলো কি এভাবে কষ্টের হাত থেকে বাঁচল না আমাদের বলল, যে চিকিৎসার আগের মৌলিক প্রয়োজন খাওয়া। চিকিৎসকরা তার পেশা দিয়ে মানব সেবা করুন আর নাই করুন, দেশের বাকি পেশার লোকগুলোর মানব সেবা করার পথে বাধা কে, নাকি ওটা কেবল ডাক্তার আর এন জি ও দের ব্যবসা বলতে পেরেই আমরা খুশি? জাগো মানুষ জাগো। । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.