আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঈদের নামাজের তাকবীর কত ! লা মাযহাবী এবং ভন্ড জাকির নায়েক!!

সাহেব-বিবি-গোলাম.....সাবধান.. বর্তমান যামানায় ইসলাম নিয়ে এমন কথা শুনা যায় যা শরীয়ত সম্মত নয়। অনেকেই বলে এটা শুদ্ধ আর ওটা অশুদ্ধ। যদিও তা হাদীস বা কুরান এ নাই। ইসলামী শরীয়াতে এমন কিছু বিষয় আছে যা একাধিক নিয়মে আদায় করার পদ্ধতি আছে এবং তা গ্রহণ যোগ্য। হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম হতে সব নিয়ম প্রমাণিত।

যদিও উত্তম হওয়া নিয়ে মতভেদ আছে তবে জায়েজ হওয়া নিয়ে কারও কোন মতভেদ নাই। কোথাও ৬ তাকবীর আবার কোথাও ১২ তাকবীর বা কোথাও ৯ তাকবীর আবার কোন হাদীসে ৮ তাকবীর এর কথাও বলা হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাঃ, হযরত আবু মুসা আশ'আরী রাঃ, হযরত হুযাইফা রাঃ, হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাঃ, হযরত মূগীরা বিন শু'বা রাঃ, হযরত আবু মাসউদ আনসারী রাঃ, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রাঃ, হযরত আনাস ইবনে মালিক রাঃ ও অপর এক বর্ণনায় আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ তাকবীরে তাহরীমা ছাড়া ৬ তাকবীর এর বর্ণনা করেছেন। তারা নিজেরাও এভাবেই নামাজ আদায় করেছেন। এবং এ ব্যাপারে মারূফ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

(এ ব্যাপারে দেখতে পারেনঃ সুনানে আবু দাউদ, ১ম খন্ড ১৬৩ পৃ, জামে তিরমীযী ১ম খন্ড, ৭০ পৃ, মুসনাদে আহমদ ৪র্থ খন্ড ৪১৬ পৃ, ত্বাহাবী শরীফ ২য় খন্ড ৪০১ পৃ, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২য় খন্ড ৭৯ পৃ, মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, ৩য় খন্ড ২৯৪ পৃ, মুয়াত্তা মুহাম্মাদ ১৪১ পৃ) হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর যামানায় জানাজার নামাজের তাকবীর এর ব্যাপারে মতভেদ হয়। যে কয় তাকবীর হবে। এই মতভেদ নিরসনের জন্য ঈদের নামাজের ন্যায়(প্রথম রাকাতে তাকবীর এ তাহরীমার সাথে অতিরিক্ত তিন তাকবীর এবং পরের রাকাতে রুকুর তাকবীর মিলিয়ে ৪ তাকবীর) জানাজার নামাজে ৪ তাকবীর গ্রহণ করা হয়। যা ঈদের নামাজে ৬ তাকবীর এর ইজমা প্রমাণ করে। প্রমাণঃ ত্বাহাবী শরীফ ১ম খন্ড ২৩৯ পৃ এবং ৩১৯ পৃ হযরত আবদুল্লাহ থেকে ৬ তাকবীর এবং ১২ তাকবীর উভয় বর্ননাই আছে।

তার ১২ তাকবীর এর উপর ভিত্তি করে আব্বাসিয় খলীফাগন আমল করতেন। ইমাম শাফেয়ী এবং ইমাম আহমদ ১২ তাকবীর এবং ইমাম মালিক রহঃ তাকবীর এ তাহরীমা সহ ১২ তাকবীর গ্রহণ করেছেন। এবং ৬ তাকবীর কে তারা জায়িজ বলেছেন। বস্তুত মুজতাহিদীনের মাঝে ৬ বা ১২ তাকবীর হওয়ার ব্যাপারে যে মতভেদ তা শুধু উত্তম হবার ব্যাপারে। কিন্তু কেউ কোনটাকে অস্বীকার করেন নাই।

রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম কে লক্ষ করে বললেন "তোমরা ভুলো না যেন, ঈদের নামাজে (প্রতি রাকা'আতে নামাজের সংশ্লিষ্ট তাকবীরসহ) চার চার তাকবীর রয়েছেজানাজার নামাজের ন্যায়। " সেই সাথে তিনি তা চার হওয়াকে হাতের আঙ্গুলের দ্বারা ইশারা করে দেখিয়ে দেন চার আঙ্গুল উচিয়ে এবং বৃদ্ধাঙ্গুলী বন্ধ করে রেখে। '' ত্বাহাবী শরীফ ২য় খন্ড ৩৭১ পৃ। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন,''ঈদের নামাজে মোট ৯ তাকবীর। প্রথম রাকায়াতে ৫ তাকবীর দিবে।

এ রাকায়াতের তাকবীর হবে ক্বিরাতের পূর্বে। আর দ্বিতীয় রাকায়াতে প্রথমে ক্বিরাত পড়বে অতঃপর চার তাকবীর বলবে রুকুর তাকবীরসহ। '' জামে তিরমীযী ১ম খন্ড ৭০ পৃ হযরত কুরদূস রহঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন শাসনকর্তা ওয়ালিদ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হুযাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু আবু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু ও আবু মূসা আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু এর কাছে ইশার নামাজের পর এ কথা জিজ্ঞাসা করার জন্য লোক পাঠালেন যে মুসলিমজাতির ঈদ অতি আসন্ন। সুতরাং ঈদের নামাজ কীরূপে হবে? তারা বললেন আবু আবদুর রহমান কে জিজ্ঞাসা করুন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন।

জবাবে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, "নামাজে দন্ডায়মান হবে এবং চার তাকবীর দিবে। অতঃপর সূরাহ ফাতিহা এবং মুফাসসালাত থেকে কোন একটি সুরাহ পড়বে। অতঃপর তাকবীর বলবে এবং রুকূ করবে। এই পাচ তাকবীর হল। তারপর দাঁড়াবে তখন সুরাহ ফাতিহা অ মুফাসসালাত থেকে শেষ তাকবীর রুকূতে যাবে।

এই হল দুই ঈদের নামাজের মোট ৯ তাকবীর । " তখন উপস্থিত সাহাবীগনের কেউ এ কথা অস্বীকার করেননি। মু'জামে কাবীর - তাবারানী-৯ম খন্ড ৩০৫ পৃ হযরত আবু আব্দুর রহমান ইবনে ছাবিত ইবনে ছাওবান রহঃ থেকে বর্ণিত তিনি স্বীয় পিতা ছাবিত ইবনে ছওবান রহঃ থেকে তিনি মাকহুল রহঃ থেকে বর্ণনা করেন তিনি বলেন আমাকে হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু এর সঙ্গী আবু আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা জানিয়েছেন যে হযরত সাঈদ ইবনুল আস র. সাহাবী হযরত আবু মূসা আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু ও হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করেন রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরে কভাবে তাকবীর দিতেন? উওরে আবু মূসা আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন "রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদের নামাজে ৪ তাকবীর দিতেন, যেমন তাকবীর দিতেন জানাযার নামাজে। " তখন হুজাইফা রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে সত্যায়ন করে বলেন "তিনি সত্য বলিয়াছেন" তখন আবু মূসা আশয়ারী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন "এভাবেই আমি বসরায় ঈদের নামাজে তাকবীর দিতাম যখন আমি তাদের আমীর ছিলাম। " আবু আয়িশা র।

বলেন"সাঈদ ইবনুল আস রহঃ প্রশ্ন ক্রার সময় আমি স্ব্যং তার সাথে উপস্থিত ছিলাম" সুনানে আবু দাউদ ১ম খন্ড ১৬৩ পৃ , মুসনাদে আহমদ ৪র্থ খন্ড ৪১৬ পৃ বর্তমানে জাকির নায়েক এই কথা প্রচার করে বেড়াচ্ছেন যে ৬ তাকবীর এ নাকি ঈদের নামাজ হয় না। এর সাথে লা-মাযহাবীরাও এই কথা বলে। জাকির নায়েক নিজেও লা মাযহাবী হবার কারনে সে এই কথা বলে। যেখানে ফতওয়া দেবার অধিকার শুধু মুফতীরওই আছে এমনকি মাওলানা গনও ফতোয়া দিতে পারেন না। সেখানে ইসলামে কেন এমন কথা বলে যাদের এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই।

(ডাক্তার জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র ভলিয়ম -৫ ;৪৭৫ পৃ) তাদের মতে এটাই নামাজের একমাত্র সটিক পদ্ধতি। (ডাক্তার জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র ভলিয়ম-২; ৪৫ পৃ) নিঃসন্দেহে তাদের এ কথা বিভ্রান্তিকর অ অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। ভাল থাকবেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.