আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খেলার মাঠে কথা কাটাকাটি.।.। তারপর মোবাইলে কল করে ডেকে নিয়ে সজলকে খুন করা হল নির্মম ভাবে

পারলে নিজেকে ইকারাকাস বানিয়ে ... হাসপাতালে নেয়ার পথে মুমূর্ষু সজলের মুখে বার বার একটা কথা ই ছিল - "বাবা, আমি কোন দোষ করি নাই, ওরা আমারে বিনাদোষে মারছে। " ঘটনাটি গত শুক্রবার রাতের। ইতিমধ্যে প্রেস ও ইলেকট্রিক মিডিয়াতে এ নিয়ে প্রচার ঘটেছে। কিন্তু ছেলেটি মারা যাওয়ার পেছনে শুধু ফুসফুসভেদী ছোঁড়া দায়ী নয়, এর সাথে হাসপাতালে দায়িত্তে থাকা ডাক্তারের ও দায়বদ্ধতা আছে। মিরপুর মাজার রোড সংলগ্ন বাগবারি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম নজু এর একমাত্র ছেলে আহাদুল ইসলাম সজল (১৮) সরকারি বাংলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ১ম বর্ষের ছাত্র।

ঘটনার দিন বিকেলে খেলার মাঠে সজলের সাথে কথা কাটাকাটি হয় ঐ এলাকার অপর স্থানীয় ছেলে আশিক(২২), হিমেল(২১), সগির(২০) ও অন্যান্ন কয়েকজনের সাথে। এদেরকে এলাকাবাসী উশ্রিংখল আর নেশাগ্রস্থ হিসেবে চেনে। বিকেলে খেলার মাঠে কথা কাটাকাটির জের ধরে রাত ১০টার দিকে হিমেল সজল মোবাইলে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় নিজেদের ঝামেলা মিটমাট করার কথা বলে। সজল গাবতলি বালুর মাঠের কাছে আসতেই সেখানে হিমেল, আশিক, সগির ও আরও বেশ কয়েকজন ছেলেকে জোট বাধা অবস্থায় দেখতে পায়। সজল পরিস্থিতি কিছুটা বুঝে ওঠার আগেই হিমেল, আশিকরা ওকে দৌরে ধরতে আসে।

সজল বালুর মাঠের পেছনের চিপা গলি দিয়ে বের হয়ে আসতে আসতে আশিক ও সগির ওকে ধরে ফেলে দুপাশ থেকে। আর তখন হিমেল পেছন থেকে সজলের পিঠে আমূলে ছোঁড়া চালিয়ে দেয়। ইতিমধ্যে সজলের এক আত্মীয় ছোট ভাই সম্রাট ওর পেছনে পেছনে বালুর মাঠ পর্যন্ত এসেছিল এবং সজলকে ছুটে পালাতে দেখে নিজেও ভঁয় পেয়ে দূরে কিছুটা চলে আসে। সেখান থেকে সে সজলকে ছোঁড়া দিয়ে আঘাত করার সম্পূর্ণ ঘটনা দেখতে পায়। সজলকে যে বাড়ির গেইটের সামনে ছুড়ি মারা হয় সেটা হল তাদের পরিচিত স্থানীয় আইয়ুব আলির বাসা।

পরবর্তীতে তিনি ও সম্রাট গুরুতর আহত সজলকে বাড়ির কাছে নিয়ে আসে। সজলের পরিবার ওকে সাথে সাথে সেলিনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে ডাক্তাররা তাদের ইমারজেন্সি ইকুইপমেন্টের ঘাটতির কথা বলে ফিরিয়ে দেয়। তারপর তারা ইবনে সিনা ও ল্যাব এইড হাসপাতেলে আহত সজলকে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও একই অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অতপর সজলকে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও ডাক্তাররা অপারেশন সার্জন এর না থাকার কথা বলে তাদের ফিরিয়ে দিলে সজলকে নিয়ে তার বাবা বক্ষব্যাধি হাসপাতেলে নিয়ে যায়। ততক্ষণে সজলের শরীর থেকে প্রায় সব রক্তই ঝরে গেছে।

এমনকি পরীক্ষা করার জন্যে কয়েক ফোঁটা রক্ত পেতে চারবার সূচ ঢোকাতে হয়েছে। তখন বাজে রাত ১২.১০। দায়িত্বরত ডঃ আমজাদ এক্সরে করার কথা বললেও সেটা সকালে করবে বলে গুরুত্ব দেয় নি। এর মধ্যে হাসপাতালের সকল গেইট ও তালা মেরে দেয়া হয় বলে জানায় সজলের পরিবার। ভোর ৬টার দিকে সজলের বাবা বাসায় ফোন করে কান্না জড়ানো কণ্ঠে জানায় যে সজলের হাত পা সব ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, ও আর জীবিত নেই।

হাসপাতালে নেয়ার পথে সজল নিজেও তার হত্যাকারী হিসেবে হিমেল, আশিক ও সগির এর নাম বলে এবং বার বার বাবা ও মামার কাছে ওকে বিনাদোষে খুনের চেষ্টার সুবিচার দাবী করেছিল বলে জানায় সজলের মামা। এ বিষয়ে দারুস সালাম থানায় ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ধারায় ঘাতক হিমেল, পিতাঃ মোক্তার হোসেন, সহযোগী আশিক, পিতাঃ ময়াজ্জেম হোসেন ও সহযোগী সগির, পিতাঃ মনসূর আলি কে প্রধান আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে সজলের পরিবার, মামলা নং-২১, ১৭/০৯/২০১১। তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা সালাম জানান ৩ জন আসামীকে ধরা হয়েছে, এবং বাকীদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে। সজলের পরিবার জানায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা একই এলাকার লোক। কিন্তু পুলিশের গাফলতির কারণে সজল (ঘাতকদের সহকারী,) রকি ( ঘটনার সাথে জড়িত) ও হিমেলের বাবা মোক্তার হোসেন চারা কাউকে এখনো ঘ্রেফতার করতে পারেনি।

আগামীকাল বাদ আছর সজলের কূলখানি অনুষ্ঠিত হবে এবং তারপর সজল হত্যার সুবিচারের দাবীতে গাবতলি টার্মিনালের সামনে মানব বন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.