আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"রংধণু থেকেই জন্ম হয় ভালবাসার"-রংধণু নিয়ে প্রচলিত কিছু প্রাচীণ ধারণা...

“হালকা হাসি চোখে জল”...এইতো জীবন রংধণু- আকাশের বুকে সাত রঙ্গের বাঁকা হাসি। রংধণু দেখলে মন ভাল হয়ে যায় আমাদের সবারই, স্রষ্টার অপরূপ সৃষ্টির কথা স্মরন করিয়ে দেয় রংধণু। প্রকৃতির এই বিস্ময়কর সৌন্দর্য নিয়ে মানুষ কিন্তু অনেক আগে থেকেই বেশ কৌতুহলী ছিল। রংধণু কেন হয় তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আমরা সবাই জানি। কিন্তু একসময় এ নিয়ে প্রচলিত ছিল অনেক কাল্পনিক বিশ্বাস আর মজার কিছু ধারনা।

দেখে নেই আগের যুগে মানুষ কি ভাবত রংধণু নিয়েঃ গ্রীক পুরানে রংধণুকে মনে করা হয় স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে বার্তা পৌছানোর জন্য স্বর্গদূত আইরিস এর বানানো রাস্তা। স্বর্গ থেকে এ পথেই নাকি যাওয়া আসা করত স্বর্গদূত আইরিস। আর চাইনিজদের বিশ্বাস আকাশের মধ্যে একসময় নাকি চিড় ধরে এবং একটা ফাটল সৃষ্টি হয়। আর তখন নুওয়া নামক এক দেবী পাঁচ রঙের পাচটি পাথর দিয়ে সুপার গ্লু বানিয়ে সিল করে দেয় সেই ফাটল! টেনশন নিয়েন না, আকাশ ভেঙ্গে পড়ার ভয় নাই, এ সুপার গ্লু ফেভিকলের চেয়েও মজবুত!! বাইবেলেও বলা হয়েছ রংধনুর কথা। এ পৃথিবী আর কখনো বন্যায় ধ্বংশ হবেনা- ইশ্বর মানুষের কাছে তার এই প্রতিজ্ঞা স্মরন করিয়ে দেয়ার জন্য তারই প্রতীক হিসেবেই আকাশে রংধনু ওঠে।

আবার অনেকের মতে সেন্ট পিটার যখন নতুন কোন আত্মাকে স্বর্গে প্রবেশ করানোর জন্য স্বর্গের গেট খুলে দেয় তখন স্বর্গ থেকে আসা আলোর ছটা পৃথিবীতে এসে পড়ে- এটাই হচ্ছে রংধণু । হিন্দু পুরানেও রংধনু নিয়ে প্রচলিত আছে অনেক রুপকথা। রংধণুকে বলা হয় ইন্দ্রধনু। মানে ইন্দ্রের ধনুক। ইন্দ্র হচ্ছে স্বর্গের দেবতাদের রাজা যার বিশেষ অস্ত্র বজ্র বা বিদ্যুৎ।

শুধু হিন্দু পুরানে না, প্রাচীন আরবেও রংধণুকে মনে করা হত মেঘের ধনুক যা স্রস্টার একটি বিশেষ অস্ত্র। আরবদের মতে রংধনুর ৪ টি রঙ- লাল, হলুদ, সবুজ আর নীল। ক্রোয়েশিয়ায় রংধণুকে মনে করা হত গডের বসার স্থান বা গডের সিংহাসন। আর গ্রীনল্যান্ডের লোকদের ধারনা ছিল রংধণু হচ্ছে গডের কাপড়ের পাড়...শাড়ির আঁচলও বলতে পারেন!! আফ্রিকায় মনে করা হত রংধনুকে পৃথিবীর বেষ্টনী আর স্বর্গের দেবদূত। তবে সবচেয়ে মজার আর সবচেয়ে সহজ ব্যাখ্যা ছিল জার্মানদের।

তাদের মতে রংধণু আর কিছুই না- পাখিদের রঙ করার জন্য গড যখন রঙ তুলি নিয়ে বসত তখন তার রঙ রাখার পাত্রটিই হচ্ছে রংধনু। মানুষের মনে ভালবাসার জন্ম হয়েছে কিভাবে জানেন? সেটাও কিন্তু রংধণু থেকেই। জাপানের পৌরানিক কাহিনির ব্যাখ্যাটা এরকমই। তাদের মতে পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী ইসাগানী আর ইসানামী যখন স্বর্গে দাঁড়িয়ে ছিল তখন হঠাৎ তাদের নজরে পড়ল একটি রঙ্গিন ভাসমান ব্রীজ। নিজি নামের এই রঙ্গিন ব্রীজ দিয়ে তারা এগুতে থাকল পৃথিবীর দিকে।

পৃথিবীর কাছাকাছি এসে তাদের চোখে পড়ল নানান ধরনের জীবজন্তু । আর তাদের দেখেই পৃথিবীর প্রতি মায়া পড়া গেল ইসাগানী আর ইসানামীর। এই ভালবাসার টানেই তারা থেকে গেল পৃথিবীতে আর ফেরত গেলনা স্বর্গে। এভাবেই রংধনু ব্রীজে ভাসতে ভাসতে মানুষের মধ্যে জন্ম নিল ভালবাসা । বলতে পারেন জাপানীরা কিভাবে কাঠি দিয়ে খাওয়া শিখল? আরে রংধণু ব্রীজের উপর দিয়ে আসার সময় তারা কি শুধু জীবজন্তুই দেখেছিল নাকি...পাখিদেরও তো দেখেছিল!! অনেক আগে ইউরোপিয়ানরা বিশ্বাস করত কেউ যদি রংধণুর নিচ দিয়ে একপাশ থেকে আর এক পাশে ক্রস করে তাহলে ছেলেরা মেয়ে আর মেয়েরা ছেলেতে রূপান্তরিত হয়ে যাবে! জেন্ডার চেঞ্জের ইচ্ছা থাকলে ট্রাই করে দেখতে পারেন।

এর থেকে সহজ, কম কষ্টসাধ্য আর সবচেয়ে সস্তা উপায় আর কোথাও পাবেন না কিন্তু!! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।