আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব বাধা পেরিয়ে রুমানা মনজুর

দুই বছর আগে এই দিনটির ভাবনা তাঁর স্বপ্নেও ছিল না। ভিনদেশে সবকিছু নতুন করে শুরু করাটা যেন এক যুদ্ধই ছিল। তবে এই যুদ্ধে যে তিনি বিজয়ী, তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা যেন এল ২৮ জুন। কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়া থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করলেন রুমানা মনজুর।
‘সবকিছু নিখুঁতভাবে করতে চাইতাম আমি।

এই অর্জনটা আমার জন্য খুব জরুরি ছিল। এ গ্রেড পেয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি পেয়েছি। আবার যেন নিজেকে ফিরে পাচ্ছি। ’ টেলিকনফারেন্সে কথা হয় রুমানার সঙ্গে। তাঁর ফুফাতো ভাই রাশেদ মাকসুদ এ সময় বললেন, ‘ওর পরিচিতরা সবাই জানেন, রুমানা যা শুরু করে, তাতে সফল হয়েই ছাড়ে।

মাঝের সবকিছু ভুলে ও যেন সেই আগের রুমানাই হয়ে উঠছে। ’
২০১১ সালে স্বামীর আক্রমণে চোখ হারান রুমানা, তারপর মেয়ে ও মা-বাবাকে নিয়ে কানাডায় যাওয়া। আবার নতুন করে পড়াশোনা শুরু করা। মানসিক যন্ত্রণা তো ছিলই, ব্রেইল পদ্ধতিতে নতুন করে সবকিছু শিখতে হয়েছে তাঁর। তবে খুব দ্রুতই সামলে নেন নিজেকে।

জলবায়ু পরিবর্তন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, এসবের প্রভাব বাংলাদেশে কেমন হতে পারে, কীভাবে বাংলাদেশ এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারে—এ নিয়ে থিসিস করেন তিনি। ‘পিএইচডি করার কথা ছিল, তবে এই বিষয়ে তা না করে এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে আইন বিষয়ে পড়া শুরু করব। আইন অনেক বৈচিত্র্যময় ক্ষেত্র। এ বিষয়ে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। ’ বলেন তিনি।


২৮ জুন ছিল তাঁর থিসিস ডিফেন্সের দিন। শিক্ষক, সতীর্থ আর শ্রোতাদের সামনে তাঁকে থিসিস উপস্থাপন করতে হয়েছে, প্রশ্নোত্তর পর্বও ছিল। তবে সে সময়ে তাঁর পুরো মনোযোগ ছিল উপস্থাপনেই বলে জানালেন তিনি। ‘আর কিছু মাথাতেই ছিল না। প্রশ্নগুলো সামলাচ্ছিলাম।

শেষ হওয়ার পর বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে আসলেই আমি পেরেছি। ’
তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। তবে ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়াতেই পড়বেন বলে তিনি জানালেন।
রুমানার ছোট্ট মেয়ে আনুশেহ এখন নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে নতুন দেশে। ‘ও আমার সঙ্গে যখন রাস্তায় বের হয়, অনেকেই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেন, অভিনন্দন জানান।

ও প্রশ্ন করে, “মা তুমি কী করেছ যে সবাই তোমাকে এত পছন্দ করে?’” বলে হাসলেন রুমানা। আনুশেহ এখন বুঝতে পারে যে ওর মায়ের শক্তি অপরিসীম। এই লড়াইয়ে মা হেরে যাননি। আর সবার প্রার্থনা সঙ্গে করে রুমানা এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর। পড়াশোনা শেষ করে কাজের ক্ষেত্রে প্রবেশ করতে চান তিনি।

‘অন্ধ হয়ে গেছি বলে কাজ করব না, এমন যেন না হয়। দেশের সবার দোয়া চাই আমি। ’ বলেন তিনি। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.