আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"স্ত্রীর কিডনির লোভে একাধিক বিয়ে!" এদেরকে মানুষ বলে পরিচয় দিতে নিজেকে খুব ছোট মনে হয়।

আমি লেখক নই পাঠক ----- ইতিপূর্বে এঘটনা নিয়ে অনেকে হয়তো লিখেছেন, তারপরও ঘৃনার বহি প্রকাশ ঘটাতে এই প্রচেষ্টা। কিছু দিন ধরে ভিভিন্ন সংবাদপত্রে ও টেলিভিশনের খবরে ভয়াভহ এই খবরটা জানতে পারলাম, কিছু মানুষ রূপী জানোয়ার নিজের স্ত্রীর এবং ঋণগ্রস্ত ও গ্রামের সহজ সরল অনেক মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে তদের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে। আমি জানিনা যারা এসকল কাজের সাথে জড়িত তাদেরকে কতটুকু ঘৃনা করলে যথার্থ হবে বা আদৌ হবে কিনা। তাই আপনাদের সাথে নিয়ে তাদের প্রতি ধিক্কার জানাতে চাই এবং জরিতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি। মুল খবর টি সূত্র : প্রথম আলো।

তারিখ: ০৪-০৯-২০১১ জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার কয়েকটি গ্রামে স্ত্রীর কিডনি বিক্রির জন্য কেউ কেউ একাধিক বিয়ে করছেন। জোর করে কিডনি বিক্রির চেষ্টার কারণে বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। প্রথম আলোর অনুসন্ধানে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এদিকে কালাইয়ে কিডনির ব্যবসার ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গতকালই সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছে।

জানা গেছে, প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা তদন্ত কমিটি নিশ্চিত করেছে। গত মঙ্গলবার প্রথম আলোয় কালাইয়ে কিডনির ব্যবসা নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ছাপা হয়। তাতে ঋণগ্রস্ত মানুষ কীভাবে দালাল চক্রের হাতে পড়ে গত পাঁচ বছরে ঢাকার নামকরা হাসপাতালে কিডনি বিক্রি করেছেন, এর বর্ণনা ছিল। প্রতিবেদন প্রকাশের পর জেলা প্রশাসনকে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেয় সরকারের উচ্চ মহল। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি।

কমিটির সদস্যরা গত পরশু কালাইয়ের বিভিন্ন গ্রামে যান। প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দুই শতাধিক অভাবী মানুষ কিডনি বিক্রি করে দিয়েছে। অনেকে স্ত্রীর কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। স্ত্রীর কিডনি বিক্রির জন্য একাধিক বিয়ে করেছেন কেউ কেউ। উপজেলার বিয়ালা (আতার) আশ্রয়ণের দিনমজুর সমসের আলীর মেয়ে শাপলা আখতারের সঙ্গে চার মাস আগে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর শাপলা জানতে পারেন, মোস্তাফিজুর বিবাহিত এবং তাঁর সন্তান আছে। বিয়ের মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় বেড়ানোর কথা বলে তিনি শাপলাকে ঢাকায় নিয়ে যান। ওঠেন কল্যাণপুরের একটি আবাসিক হোটেলে। শাপলা প্রথম আলোকে বলেন, এক রাত হোটেলে থাকার পর স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলে মোস্তাফিজুর তাঁকে একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। এক সপ্তাহ পর পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট নেওয়ার কথা বলে আবারও শাপলাকে ঢাকায় নিয়ে যান মোস্তাফিজুর।

এবার বজলুর রহমান নামের একজনের বাসায় বেড়াতেও নিয়ে যান তিনি, পরিচয় করে দিয়ে বলেন, ‘উনি ডিআইজি। ’ শাপলা বলেন, ‘রাতে হোটেলের অন্য কক্ষে মোস্তাফিজুর ও বজলুর রহমানের কথা শুনে আমার কিডনি বিক্রি করার বিষয়টি টের পাই। জানতে পারি, বজলুরের একটি কিডনি নষ্ট। আমাকে মাদ্রাজে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ’ পরদিন ভিসার কাগজপত্রে সই দেওয়া হয়, তাঁর ছবি তোলা হয়।

তবে এক দিন পর কৌশলে তিনি পালিয়ে আসতে পারেন। বাড়িতে ফেরার পর স্বামীর নির্যাতনের শিকার হন শাপলা। বলেন, কিডনি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় স্বামী তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বিয়ের দুই মাসের মাথায় তালাকের কাগজ পাঠান মোস্তাফিজুর। শাপলা বলেন, ‘ছাড়াছাড়ি হলেও আমি বেঁচে গেছি।

’ স্ত্রীর কিডনি বিক্রিতে ব্যর্থ মোস্তাফিজুর নিজেই একটি কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রথম আলোর অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোস্তাফিজুর একা নয়। উপজেলার কিডনি বিক্রি করে দেওয়া অনেকেই একাধিক বিয়ে করেছেন। এ ব্যাপারে মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার বলেন, কিডনি বিক্রেতারা শুধু নিজের কিডনিই বিক্রি করে থেমে থাকছেন না, কেউ কেউ স্ত্রীর কিডনি বিক্রির জন্যই একাধিক বিয়ে করছেন। স্ত্রী রাজি না হলে সংসার ভেঙে যাচ্ছে।

কিডনি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় একজন গৃহবধূর পালিয়ে আসার ঘটনাও অনেকের জানা। উলিপুর গ্রামের তোজাম্মেল হোসেন নিজের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। ১২ বছর আগে তিনি প্রথম বিয়ে করেন সিদ্দিকা বেগমকে। দুই বছর আগে বিয়ে করেন মনোয়ারা বেগমকে। বিয়ের পর স্ত্রীর কিডনি বিক্রির চেষ্টা করায় তাঁদের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।

কিডনির দালালি করায় পুলিশ বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার তোজাম্মেলের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করেছে। ভেরেন্ডি গ্রামের মেহেরুল ইসলামের প্রথম স্ত্রী ছিলেন রুপালী বেগম। ছাড়াছাড়ির বছর খানেকের মাথায় মেহেরুল বিয়ে করেন সেলিনা বেগমকে। মাস দুয়েক আগে তাঁরা দুজনই কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন। মেহেরুলের ছোট ভাই শাহারুল ইসলাম দুই বছর আগে নিজের কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন।

স্ত্রীর কিডনি বিক্রির চেষ্টা করায় একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়েছে বলে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। মাস ছয়েক আগে বগুড়ার ঝোপগাড়ী এলাকায় রেখা বেগমকে বিয়ে করেন শাহারুল। রেখা তাঁর তৃতীয় স্ত্রী। শাহারুল ইসলাম কিডনি বিক্রির কারণে তালাক হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক কারণেই তালাক হয়েছে। এ ধরনের আরও বেশ কিছু ঘটনার তথ্য প্রথম আলো সংগ্রহ করেছে।

কালাই উপজেলা চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান বলেন, কিডনি বিক্রির গ্রামগুলো থেকে এখন সামাজিক অপরাধের ভয়াবহ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে জেলা প্রশাসক অশোক কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিয়েছে। প্রতিবেদনের বিষয় জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক প্রথম আলোকে বলেন, কিডনি বিষয়ে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে তিনি বলেন, কত মানুষ কিডনি বিক্রি করেছে, এর সঠিক সংখ্যা নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। কারণ, অনেকেই বিষয়টি গোপন রাখতে চাইছেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.