আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

///////////দুঃস্বপ্ন////////// বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী


প্রক্রিয়াটির সাথে মানব সন্তান জন্মগ্রহনের কোন পার্থক্য নেই। শুধুই একটাই পার্থক্য টেনে এনেছে পৃথিবীর ভিন্ন প্রান্ত থেকে সাতজন বিজ্ঞানী কে এই গোপন ল্যাবরেটরিতে। আর সেটা হল এই বানরীর থেকে এই প্রথম বার জন্ম লাভ করবে মানব সন্তান। ক্লোনিং প্রক্রিয়াটি অতীত পৃথিবীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল- শুধু মাত্র মানব প্রজাতির ধবংসের কারন হতে পারে এই ভেবে। ক্লোনিং এর প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞানী রিচারড সিড ১৯৯৭ সালে ঘোষনা করেছিলেন নিজের মৃতা স্ত্রীর ক্লোনিং করবেন।

কিন্তু আমেরিকা এবং জাপানের অসহযোগিতা এবং বাধার ফলে সেই বিজ্ঞানীকে বরন করে নিতে হয় স্বেচ্ছা মৃত্যু। কিন্তু তাঁর ইচ্ছার মৃত্যু ঘটেনি। তাই সেই ঘটনার প্রায় ২০০ বছর পর লোপা আহসানের হাত ধরে সাতজন বিজ্ঞানী কাজ করেছেন নিরলস ভাবে। যে সব তথ্য ও উপাত্ত ধবংস করে ফেলা হয়েছিল সেই সব তথ্য কে আবার গবেষনা করে একত্র করেছেন এই সাত জন বিজ্ঞানী। উনারা তারপর মানুষ জন্মদানের চেষ্টা করে চলেছেন।

এই প্রচেষ্টার ৯ম বছরে উনারা মানূষ থেকে মানূষের জন্ম না দিয়ে মানব সন্তান বানর কিনবা শিম্পাঞ্জি থেকে করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সামনে প্রসব বেদনায় কাতর এই বানরী তিন নম্বর সাবজেক্ট । আর এই বানরীর থেকে মানব সন্তান হবে বহুল প্রতিক্ষিত ক্লোন মানব সন্তান। অষ্ট্রেলিয়াল গহীন জংগল থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই বানরীকে পাঁচ মাস আগে। তারপর এর মাঝে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে মানব শুক্রানু।

লোপা আহসানের স্বামী ডঃ আদিল আহসান এর শরীরের কোষের সাথে উনার শুক্রানুর নিউক্লিয়াস মিলিয়ে জেনেটিক মিক্সিং এর মাধ্যমে বানানো সেই শুক্রানু প্রবেশ করানো হয় সেই বানরীর জড়ায়ুতে। সেখানে তিলে তিলে বেড়ে ঊঠেছে এই মাঞ্চ সন্তান। ডিম্বানু হিসেবে নেয়া হয়েছে বানরীর ভ্রুন- কিন্তু সেই ডিম্বানু মানব শুক্রানুর সাথে মিলিত হয়ে নিষিক্ত হবার পর মানব শুক্রানুর ডিএনএ এর উপর কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়া করতে পারেনি। বিশেষত মানব সন্তানটির জন্মের পর কিছু কিছু স্বভাব বানরীর জিন থেকে আসলেও মানব প্রকৃতিই হবে সন্তানটির গঠনের পরিচায়ক। এর মাঝে আল্ট্রাভিশনোগ্রাফিতে মানব সন্তানটিকে ছেলে হিসেবে সনাক্ত করা গেছে।

এই প্রক্রিয়াটিতে অনেক বিপদের আশঙ্কা ছিল। প্রায় ৯০ বছর আগে পৃথিবীর সব কয়টা আল্ট্রাভিশনোগ্রাফি মেশিন বন্ধ করে দেয়া হয়। ধবংস করে দেয়া হয় অনেক গুলো। কারন সেই সময় মায়েদের পেটের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে এটা দেখার জন্য মুখিয়ে থাকত সবাই। একসময় মেয়ে সন্তান হলে গর্ভপাতের হার এত বেড়ে যায় যে এই যন্ত্রটাকে ধবংস করে ফেলা হয় পৃথিবী থেকে।

অনেক গুলো পুরোনো যন্ত্রাংশ থেকে এটাকে বানিয়েছেন চিনের বিজ্ঞানী নিংচ। বিজ্ঞানী নিংচ এর বানানো মেশিনে প্রতিনিয়ত পরীক্ষা করা হয়েছে সেই সন্তানকে। দুপুর বারোটা সাত মিনিটে বানরীর প্রসব বেদনা ঊঠে। বানর সন্তান অনেক ছোট খাট হলেও এই মানব সন্তান কিছুটা বড় বলে বিজ্ঞানীরা মিলে সিজারের সিদ্ধান্ত নেন। বিজ্ঞানীদের মাঝে আদিল এই গুরু দায়িত্ব নিজের হাতে নেন।

অপারেশন টেবিলে বানরীকে অজ্ঞান করা হল এবং তখন নিজের হাতে খুর দিয়ে বানরীর পেটের নিচ দিকের কিছু লোম তুলে স্কাল পেল দিয়ে চামড়া কেটেই অবাক হয়ে গেলেন আদিল। প্রচন্ড শকে কাপা হাতে বাচ্চাটার নাড়ি কাচি দিয়ে কেটে তুলে নিলেন তিনি। এর মাঝেই সেই বানরী মারা গেল জটিল অপারেশনে রক্ত ক্ষয়ের ফলে। বাচ্চাটার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন ডঃ আদিল। বাচ্চাটা অদ্ভুত আকৃতির।

সবচেয়ে বিসাদৃশ্য হল বাচ্চাটার মাথা। সব কিছু মানুষের মত হলেই মাচ্চাটার মাথা ঠিক বানরের মত। বাচ্চাটাকে লোপার দিকে তুলে ধরেন ডঃ আদিল। আর বাচ্চটাকে দেখেই জ্ঞান হারান লোপা...... ................................................. বিছানা থেকে ধড়ফড় করে ঊঠে পরে লোপা। চারদিকে ভাল করে তাকালো সে।

না চার পাশে কিছু নেই। সব স্বাভাবিক। রাত পোহাতে অনেক বাকি। কিন্তু স্বপ্ন টা দেখে অনেক ভয় পেয়ে ঘেমে গেছে লোপা। সাইড টেবিলে রাখা কাচের গ্লাস টা নিয়ে ঢকঢক করে শেষ করে ফেলল সে গ্লাসের সমস্থ পানি।

তারপর তার বেঢপ ভাবে উঁচু হয়ে থাকা পেটে পরম মমতায় হাত বুলাল লোপা। দুইদিন পরেই তার অপারেশন হবে। জন্ম হবে তার প্রথম সন্তানের। এই সময় এরকম দুঃস্বপ্ন দেখা স্বাভাবিক- বলেছিলেন ডাক্তার। এটা ভেবেই আবার আগের মত ঘুমিয়ে গেল লোপা আহসান- মৃত ডঃ আদিলের সন্তান যার উদরে বেড়ে ঊঠছে.... ( সমাপ্ত ) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।