আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুন্দলপুরে বাপেক্সের গ্যাস আবিষ্কারের পর পিএসসি নিয়ে প্রশ্ন

আজ আমার মন ভাল নেই। সময় আর অসময়ের আধো আলো মুজাহিরুল হক রুমেন দেশের স্থলভাগে বহুজাতিক কোম্পানির চেয়ে বেশি সফলতা দেখানোর পর তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে আর কোনো বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে পিএসসি (উৎপাদন বণ্টন চুক্তি) করার যৌক্তিকতা নিয়ে আবারো প্রশ্ন তুলেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি বাপেক্স সর্বশেষ গত বুধবার সকালে নোয়াখালীর সুন্দলপুরে গ্যাস আবিষ্কারের পর বিষয়টি আবার সরকারকে বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন তারা। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী বিডি রহমত উল্লাহ বার্তা২৪ ডটনেটকে জানান, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সরঞ্জাম নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে সফল প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। যার কাজের সফলতা অনুপাত ১ : ৩৩: ১৬।

অথচ তারা কাজ করছে অতি পুরনো তিনটি ও আধুনিক মাত্র একটি রিগ নিয়ে। যার একটির বয়স ৪০ বছর ও দুইটির ২৮ বছর। তিনি বলেন, “সরকার যদি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির কাছে বশ্যতা পোষণে ব্যস্ত না থাকে, তবে কয়েকটি রিগ কিনে দিলেই বাপেক্স কী করতে পারে তা প্রমাণিত হবে। রিগের দাম খুব বেশি নয়। প্রয়োজনে লোনের মাধ্যমেও রিগ কেনা সম্ভব।

তা কেনা দরকার। ” এ বিষয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্বববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম শামসুল আলম বার্তা২৪ ডটনেটকে বলেন, “জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা শুরু থেকে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলার সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলে আসছেন। সরকার তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে টাকার অভাবের কথা বারবার বলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৯ সালে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল গঠন করা হয়। এ ফান্ডে বর্তমানে এক হাজার কোটি টাকা আছে। কিন্তু জ্বালানি মন্ত্রণালয় অদৃশ্য কারণে রহস্যজনকভাবে এ ফান্ডের টাকা জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবহার করতে দিচ্ছে না।

” স্থলভাগে বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে পিএসসি চুক্তি সম্পর্কে পেট্রোবাংলা চেয়াম্যান হোসেন মনসুরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বাপেক্সের সফলতার কথা স্বীকার করেন। তবে বহুজাতিকের সঙ্গে চুক্তির প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশী-বিদেশী কোম্পানি মিলে অনুসন্ধান কুপ খনন করেছে ৭৫টি। যার মধ্যে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে ২৫টি। সাফল্যের হার ৩:১।

অন্যদিকে, শুধু দেশীয় কোম্পানির মধ্যে অয়েল অ্যঅন্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (ওজিডিসি), পেট্রোবাংলা ও বাপেক্স মিলিতভাবে এ পর্যন্ত ১৮টি অনুসন্ধান কূপ খনন করে আটটি গ্যাসত্রে আবিষ্কার করেছে। এদের মিলিত সাফল্যের হার ২.২৫:১। আর শুধু বাপেক্স চারটি অনুসন্ধান কূপ খনন করে তিনটিতে গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। সাফল্যের হার ১.৩৩:১৬। অর্থাৎ যে জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দাতাহীনতার কথা বলে বহুজাতিক কোম্পানি ডেকে আনা হচ্ছে সেই প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের হার বাংলাদেশ কর্মরত ওইসব বিদেশী কোম্পানির সাফল্যের হারের দ্বিগুণেরও বেশি।

১৯৬২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় ওজিডিসি প্রতিষ্ঠার পর পাকিস্তান আমলেই বাংলাদেশে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম করে শুরু করে। তারা চারটি কূপ খনন করেই সেমুতাং এ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করে। স্বাধীনতার পর সাবেক ওজিডিসি’র জনবল, রিগ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি নিয়ে দেশে ‘তৈল সন্ধানী’ নামে একটি অনুসন্ধান কোম্পানি সৃষ্টি করা হয় এবং মূলত এ কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণের জন্য পেট্রোবাংলা সৃষ্টি করা হয়। ১৯৮৯ সালে বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শে বাপেক্স গঠন করা হয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।