আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেউ মালিক, কেউ শ্রমিক।

আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি মানুষ তার মৌলিক প্রয়োজন অর্থাত্ খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ইত্যাদি পূরণ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের প্রত্যেকের ক্ষমতা সমান নয়। কেউ মালিক, কেউ শ্রমিক। অর্থাত্ প্রত্যেকে তার নিজ নিজ দক্ষতা অনুসারে কাজ করে।

কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে কোনো কাজকেই খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পরের কাজ করা তথা শ্রমের মূল্য আদায় বা গ্রহণ করা ইসলামের দৃষ্টিতে মোটেই ঘৃণার কাজ নয়। আমাদের নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, কোন ধরনের উপার্জন উত্তম ও পবিত্রতম। তিনি উত্তরে জানালেন, ‘কোনো ব্যক্তির নিজ শ্রমের উপার্জন এবং সত্ ব্যবসালব্ধ মুনাফা। উপার্জনে হালাল যে কোনো পথ অবলম্বন করায় কারও মনে কোনোরূপ হীনমন্যতাবোধ জাগ্রত হওয়া উচিত নয়।

মজুর নিজেকে খাটো মনে করবে না। পক্ষান্তরে মালিকও নিজেকে শ্রেষ্ঠ মনে করবে না। ’ মূলত পণ্য উত্পাদনে মূলধন ও শ্রম অপরিহার্য। এছাড়া উত্পাদন সম্ভব নয়। কাজেই উত্পাদনের ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগী মনে করতে হবে।

মজুরের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘যারা তোমাদের কাজ করে জীবিকা উপার্জন করে, সেই শ্রমিক তোমাদের ভাই। আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। কাজেই যাদের কাছে এমন লোক রয়েছে, তাদেরকে যেন সে তাই খেতে দেয় যা সে নিজে খায়; তাদেরকে যেন তাই পরতে দেয় যা সে নিজে পরে। ক্ষমতার বাইরে কোনো কাজ যেন তাকে করতে বাধ্য না করে। ’ মহানবী (সা.) বলেন, ‘শ্রমিককে তার ঘাম শুকানোর আগেই পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।

পারিশ্রমিক দিতে অকারণে বিলম্ব করা সমীচীন নয়। ’ শ্রমিক যাতে তার শ্রমের সঠিক মূল্য পায়, সেজন্য মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মজুরের বেতন নির্ধারণ না করে তাকে কাজে নিযুক্ত করবে না। ’ শ্রমিক-মালিকের কার্যকলাপের যে নীতিমালা ইসলাম দিয়েছে, তা অনুসরণ করলে শ্রমিক তার ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হবে না এবং মালিক-শ্রমিকের মধ্যে কোনোদিন মনোমালিন্যও হবে না। আল্লাহ ও রাসূল (সা.)-এর তরফ থেকে শ্রমজীবী মানুষের জন্য যে নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে, এখানে তা উল্লেখ করা হলো : মানুষ একই মাটির তৈরি; অতএব তাকওয়া ছাড়া কারও ওপর কারও প্রাধান্য নেই। হালাল রুজি ইবাদত কবুলের প্রথম শর্ত।

শ্রমিক ও মালিক ভাই ভাই; কারও সঙ্গে কারও দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ নেই। আপস ও সমালোচনার মাধ্যমে উত্পাদনের গতি বৃদ্ধি করতে হবে। শ্রমিককে উত্পাদনের একটি লভ্যাংশ প্রদান করে অংশীদার বানাতে হবে। যাতে করে সে উত্পাদনে আন্তরিক হতে পারে। এতে মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে সৌহার্দ্যের ঘাটতি ঘটবে না।

মালিকরা বন্ধু হয়ে যাবে শ্রমিকদের। শ্রমিক ভাইদের জন্য রাসূল (সা.) সুসংবাদ দিয়েছেন—‘যারা ইমানি চেতনাসহকারে শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করবে, তারা ধনীদের থেকে ৫০০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ (আল-হাদিস)। কাজেই দেশ ও জাতির উন্নতিকল্পে এভাবে ইসলামী নীতিমালা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.