আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফাউল কথা

আমি অনেক ছোট একটা মানুষ। মাঝে মাঝে মনে হয়, কোনও দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছি। তারপরে মনে হয়, স্বপ্ন হলেও তো একটা সময় শেষ হত। এর তো কোনও শেষ হওয়ার আশা দেখি না। পৃথিবীর মধ্যে আমাদের দেশটাই বোধহয় একমাত্র দেশ, যেইখানে দুইটা ইউনিক জিনিস দেখা যায়।

একটা হল যানজট আর আরেকটা হল হরতাল। জ্যাম তো অনেক জায়গাতেই বাধে, কিন্তু ঢাকা শহরের সর্বগ্রাসী জ্যামের মত জিনিস আর কোনও জায়গাতে হয় বলে আমার মনে হয় না। আর হরতালের কথা নতুন করে বলার তো কিছু নেই। আমার আগে অনেকে অনেক কথা বলে গেছেন, পরেও অনেক কথা অনেকে বলবেন। আমার আর নতুন করে বলার কিছু নেই।

এই ব্লগ টা লিখতে বসেছি অনেকটা রাগের মাথায়, খেপে গিয়ে। গত কয়েকটা দিন যা দেখছি এবং শুনছি,তাতে মাথা টা ক্যামন জানি গরম হয়ে উঠছে। রাগ হচ্ছে সবার উপরে, নিজের উপরে, দেশের উপরে। সৃষ্টিকর্তার উপরে। তিনি এমন একটা দেশে পাঠিয়েছেন যেখানে সবকিছু চলে উলটো রাস্তায়।

অথচ তিনি পাঠাবার আগে আমাদের মাথা টা, আমাদের বিবেক টা উলটো দিকে ঘুরিয়ে দিতে ভুলে গিয়েছেন, তাই আমরা এসব দেখে শুনে খেপে যাই, রেগে মেগে সব কিছু পালটে দিতে চাই। আমি যখন এই ব্লগ টা লিখছি, তখন একই সাথে আমার একটা বন্ধুর সাথে চ্যাটও করছিলাম। ও এখন বাড়িতে। কাল ফিরবে ক্যাম্পাসএ। বললাম, তাড়াতাড়ি ফিরে আস, অনেক মজা করব।

ও বলল, আসব, যদি এক্সিডেন্ট না করি। চারদিকের এইসব এক্সিডেন্টগুলো হয়ে বোধহয় এক হিসেবে ভালই হচ্ছে। আমাদের চারদিক থেকে এইসব পরিচিত মানুষ গুলোকে এক এক করে চলে যেতে দেখছি, আর সেই সাথে মৃত্যু সম্পর্কে আমাদের ধারনা টা বদলাচ্ছে। এক দিন যে চলে যাব, এই ধারনা টা আর পাকাপোক্ত হচ্ছে। গত ৬ মাসে আমার দুইটা ক্লাসমেট কে এই এক্সিডেন্টএ চলে যেতে দেখেছি।

আমার দ্বিতীয় যে বন্ধু টা মারা গেল, তার কাহিনি শুনবেন? ঝিনাইদহে এক্সিডেন্ট করে ও। উরুর হাড় দু'টুকরো হয়ে যায়। যশোরএ ওর অপারেশান হয়। অপারেশানএর পর অবস্থা খারাপ হতে থাকায় ডাক্তার বলেন ঢাকায় নিয়ে যেতে। ঢাকায় আসার পথে, সাভারের কাছে ওর এ্যাম্বুলেন্স আবার এক্সিডেন্ট করে।

লাইফ সাপোর্টএ ছিল ও, এইবার স্পটেই মারা যায়। এখন পথে বের হতে বড় ভয় লাগে, বাস বা ট্রাক আস্তে দেখলে ভয়ে রাস্তার একপাশে সরে দাড়াই। বলা তো যায় না, যদি গায়ের উপর তুলে দেয়? কেমন যেন অদ্ভুত লাগে, যারা আমাদের দেশটা চালাচ্ছে, এত বড় দেশটা, এত গুলো মানুষের দায়িত্ব যাদের হাতে, তারা কি আদৌ কোনও মানুষ, না গরু-ছাগল?? একটা দেশের যোগাযোগমন্ত্রী কি করে বলেন, সিটবেল্ট বাধা থাকলে তারেক মাসুদ ও তার সাথের আর সবাই মারা যেতেন না, যেখানে ওই মাইক্রোবাসটার অর্ধেক গুড়ো হয়ে গেছে? এই চূড়ান্ত দায়িত্বহীনটার পরিচয় কেন দেন তারা বারবার? লেখাটা কেমন জানি উলটোপালটা করে ফেলছি, গুলিয়ে যাচ্ছে সবকিছু। ক্ষমা করবেন। পড়ার জন্যে ধন্যবাদ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।