আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলাম অনুসারে কেউ নাস্তিক বা আস্তিক নয়

ইসলামের অবিশ্বাসীরা কাফের হতে পারে নাস্তিক হতে পারেনা। তেমনি ইসলামের অনুসারীরাও মুমিন হতে পারেন কিন্তু আস্তিক হতে পারে না। তৎসম শব্দ আস্তিক-নাস্তিক বেদবেদান্ত, উপনিষদ দর্শনের সাথে যায় কিন্তু ইসলাম দর্শনের সাথে যায় না। আস্তিক শব্দটি এসেছে ভারতীয় ধর্ম গ্রন্থ বেদ থেকে। ধর্মগ্রন্থ বেদ অনুসারে আস্তিক শব্দের অর্থ বিশ্বাসী।

বেদের ধর্মে বিশ্বাস আছে যাদের তাদেরকে বেদ অনুসারে আস্তিক বলা হয়। নাস্তিক শব্দটি আস্তিক শব্দের বিপরীত শব্দ। যারা বেদে বিশ্বাসী এবং মূর্তি পূজা করে তাদেরকেই বলা হয় আস্তিক। যুগের পরিক্রমায় এই আস্তিকতা এবং বেদ বিশ্বাসের প্রমাণ মেলে মূর্তি পূজায়। অর্থাৎ যারা বেদে বিশ্বাস করে এবং একই বিশ্বাসে মূর্তি পূজা করে তারাই আস্তিক।

ঠিক এরই বিপরীতে যারা বেদে বিশ্বাস করে না তাদেরকে বেদে নাস্তিক বলা হয়েছে। এছাড়া যারা বেদে বিশ্বাস করে অথচ মূর্তি পূজায় বিশ্বাস করে না, তাদেরকেও নাস্তিক বলা হয়। এমন জাতি বা গোষ্টী আছে যারা বেদে বিশ্বাস করে না কিন্তু পরকাল বা পরজন্মে বিশ্বাস করে তারাও নাস্তিক। এই ধারণা অনুসারে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরাও হয়ত নাস্তিক। বেদ অনুসারে মাধ্যমিক, যোগাচার, সৌত্রান্তিক, বৈভাষিক, দিগম্বররা নাস্তিক।

কারণ তারা বেদে বিশ্বাসী ছিলেন না। এছাড়া মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী না হওয়ায় চার্বাকদেরকে নাস্তিক বলা হয়। যেহেতু বেদে যারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী না তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। সেহেতু বেদ অনুসারে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা সবাই নাস্তিক। কেননা ইসলাম ধর্মের মূল আকীদা হল নিরাকার আল্লাহ’র উপর বিশ্বাস।

যারা আল্লাহ’র উপর বিশ্বাস এনেছেন কিন্তু মূর্তি পূজা করেন না বেদ অনুসারে তারা নাস্তিক। ইসলামে অবিশ্বাসীদের কোনভাবেই সংস্কৃত ভাষার দুহিতা বাংলা শব্দ নাস্তিক দিয়ে বোঝানো সম্ভব না। আমরা ইসলাম এবং আল্লাহ’র উপর অবিশ্বাসীদের কাফের বা মুরতাদ বলতে পারি। কোন ভাবেই নাস্তিক বলতে পারি না। তেমনি আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কোন ভাবেই আস্তিক বলতে পারিনা।

শ্রী হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ অনুসারে আস্তিক একজন মুনির নাম। এই শব্দকোষের আস্তিক নিয়ে গল্পটি এমন- “আস্তিক জনৈক মুনি। ইঁহার পিতার নাম জরৎকারু। বাসুকির ভগিনী জরৎকারু(মনসাদেবী) ইঁহার জননী। কথিত আছে যে, জরৎকারু(অর্থাৎ মনসাদেবী) স্বামীর নিকট পুত্র প্রার্থনা করিলে জরৎকারু মুনি “অস্তি”(অর্থাৎআমার ঔরসে তোমার গর্ভসঞ্চার হইয়াছে) বলিয়া চলিয়া যান।

সেই হেতু ইঁহার নাম ‘আস্তিক’। অর্জুন তনয় মহারাজ পরীক্ষিত ব্রক্ষশাপে তক্ষক দংশনে মৃত্যু হওয়ায়, তৎপুত্র জনমেজয় সর্পযজ্ঞ করিয়া নাগকূল নির্মূল করিতে আরম্ভ করিলে, সর্পরাজ বাসুকি নিজ ভগিনীর দ্বারা আস্তিককে সমুদয় জ্ঞাপন করান। আস্তিক যজ্ঞস্থলে উপস্থিত হইয়া জনমেজয়কে সন্তুষ্ট করিয়া যজ্ঞ হতে বিরত করেন। অতঃপর জনমেজয় অশ্বমেধ যজ্ঞের অনুষ্ঠান করিলে, আস্তিক বিলক্ষণ সাহায্য করিয়াছিলেন। ” আমরা এই আস্তিক শব্দের এই অর্থটি ব্যবহার করি না।

প্রচলিত অর্থও যদি আমরা গ্রহণ করি তবে কোন ভাবেই ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসীকে আস্তিক এবং অবিশ্বাসীদের নাস্তিক বলতে পারি না। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.