আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেয়ালঃ রিভিউ এন্ড রিয়েকশন

কিশোরঃ "দেয়াল" পড়া শেষ করলাম। অসাধারন একটা উপন্যাস। স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে অন্ন-বস্ত্রের অভাব, রক্ষী বাহিনীর অত্যাচার, কিছু বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর আবেগপ্রবন হয়ে নেয়া ভুল সিদ্ধান্ত, ১৫ই আগস্টের রাতের কাহিনী, কিছু জায়গায় অবিশ্বাস্য হলে সত্য বঙ্গবন্ধু নিহত হয়ার পর আনন্দের মিছিল বের হয়া,খন্দকার মোশতাকের ভুমিকা,জাতীয় চার নেতার হত্যা, খালেদ মোশারফের সেনাবাহিনীর প্রধান হওয়া এবং পরে নিহত হওয়া, সিপাহি বিদ্রোহ, মেজর জেনারেল জিয়ার ক্ষমতায় আরোহণ এবং কর্নেল তাহের এর প্রহসনের বিচার এবং সবশেষে জিয়ার নিজেই নিহত হওয়া। জাতীয় জীবনের মোটামুটি সব গুরুত্বপুর্ন ঘটনার এ অল্প বিস্তর সন্নিবেশ ঘটেছে বইয়ে। পরিমার্জন যা করা হয়েছে, তা না হলে হয়ত আর কিছু তথ্য জানা হত।

"জোছনা ও জনণীর" পরে এই উপন্যাস মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের উপর লেখা অন্যতম তথ্যবহুল ও আমার এখন র্পযন্ত পড়া শ্রেষ্ঠ একটা উপন্যাস। "স্যার হুমায়ুন আহমেদ" আপনাকে মিস করছি অনেক। দেশের এরকম একটা সময়ে আপনার এরকম আরও কিছু লেখা, বড় দরকার ছিল আমাদের। উনার একটা এপিগ্রাম উল্লেখ না করে পারছিনা, "মানব জাতির স্বভাব হচ্ছে, সে সত্যের চেয়ে মিথ্যার আশ্রয়ে নিজেকে বেশি নিরাপদ মনে করে!"- বড় সত্যি কথা! শাকিলঃ দেয়াল উপন্যাসের রিভিউটা বাহুল্য দোষে আক্রান্ত ... এতো আহামরি কিছু কি সত্যি ছিল?? কিশোরঃ শাকিল, তুই পড়ছিস? কোথায় কোথায় বাহুল্য দোষ হইসে আমাকে দেখা। শাকিলঃ পড়সি বলেই তো বললাম যে তোর রিভিউ বাহুল্য দোষে আক্রান্ত।

পুরা উপন্যাস খাপছাড়া খাপছাড়া। কর্নেল তাহেরের ভাইয়ের কল্যাণে কিনা জানিনা এই উপন্যাসে উনাকে খুব বেশি হাইলাইট করে হইসে। শেষের দিকে তো সবটাই বলতে গেলে পরীক্ষার খাতার মত ডেট বসায় কি হইসে লিখে গেছেন। অসুস্থ অবস্থায় হুমায়ুন আহমেদের কাছ থেকে বেশি আশা করা ঠিক না কিন্তু এই উপন্যাস ঠিক উনার ক্লাসের সাথে যায় না। আমাকে আর কিছু জিগাইস না কারন আমি সমালোচক না!! আমিঃ যেকোন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ, যদি সে সত্যকে সাদরে গ্রহণ করতে আগ্রহী হয় তবে "দেয়াল" উপন্যাস অবশ্যই তার কাছে প্রশংসনীয় মনে হবে! আর দেয়ালের কাহিনী একজন সৎ, নিরপেক্ষ, দেশপ্রেমিক সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা, যিনি নিজেও দোষে-গুণে মিশ্রিত অসাধারণ প্রতিভার সাধারণ এক মানুষ।

শুধুমাত্র কিছু মানুষকে সার্বজনীনভাবে পূজনীয় করে রাখতেই উপন্যাসটি কিছুটা পরিমার্জিত করা হয়েছে, যা অনাকাংখিত। কিশোরঃ শাকিল, খাপছাড়া আমার কাছেও লাগসে। আনোয়ার কে হাইলাইট করা হইসে,আমার মনে হয় নাই। আর খাপ ছাড়া যেটা আমার আর তোর কাছে লাগছে তার কারন হল, উনি যেভাবে লিখছিলেন, ঠিক সেইভাবে কিন্তু সেটা আমাদের হাতে আসেনি। ভুলে যাস না,প্রথম আলো তে প্রথম কিস্তি ছাপার পরেই এটা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক উঠে এবং যেহেতু উনি বেচে নেই, তাই তার সৃষ্টিকে বিতর্কের উর্ধে রাখার জন্য এতে অনেক পরিমার্জন করা হ্‌ যার ফলাফল ই হচ্ছে মাঝে মাঝে খাপ ছাড়া মনে হওয়া।

কিশোরঃ আবীর, মনের কথাটা বলে দিলি। ধণ্যবাদ দোস্ত। শাকিলঃ দোস্ত আমার আশা ছিল এই উপন্যাসটা সুনীলের প্রথম আলো, পূর্ব পশ্চিম এই টাইপের হবে। হুমায়ুন আহমেদ খুব সাদামাটা একটা উপন্যাস লিখেছেন। তুই যদি ইতিহাস না জানিস তাহলে তোর জন্য সুপাঠ্য হতে পারে।

কিন্তু দেয়াল একটা পরিপূর্ণ ইতিহাসের দলিল না... উফ!! বহুত আতলামি হইসে... খুদা হাফেজ কিশোরঃ "আমার আশা ছিল এই উপন্যাসটা সুনীলের প্রথম আলো, পূর্ব পশ্চিম এই টাইপের হবে", "অসুস্থ অবস্থায় হুমায়ুন আহমেদের কাছ থেকে বেশি আশা করা ঠিক না "- শাকিল, দুইটাই তোর কথা তো? শাকিলঃ দ্যাট ইজ দ্যা ডীফরেন্স বিটয়িন রিয়ালিটি অ্যান্ড হোপ! কিশোরঃ "তুই যদি ইতিহাস না জানিস তাহলে তোর জন্য সুপাঠ্য হতে পারে। " দোস্ত শাকিল, এস, এস, সি তে সমাজে এ+ পাইছিলাম, কেম্নে জানি! ইতিহাস জানি না, এটা বলা ঠিক না। ইতিহাস অবশ্যই জানি এবং বাংলাদেশের ইতিহাস যে নিয়ত পরিবর্তনশীল এটাই মনে হয় তুই ভুলে গেছস। স্বাধীনতার পর এই ৪২ বছরে,ইতিহাসের রদবদল হয়েছে অনেকবার। ৭৫ থেকে ৮১ পর্যন্ত দেশের অবস্থা আসলে কেমন ছিল সেটা কেউ ঠিক মত বলতে পারেনা।

এক এক জন লেখক বিভিন্ন দৃষ্টিকন থেকে তার বর্ননা দিয়েছেন, এবং তা নিয়ে বিতর্ক উঠছে। হুমায়ুন আহমেদ তার উর্ধে নন। তবুও, অনেকটা নিরপেক্ষ থেকে উনি উনার দৃষ্টিকোন থেকে ৭৫ এবং এর পরবর্তী ঘটনা সমুহের বিব্রন দিয়েছেন, এবং শধুমাত্র এই কারনেই আমার কাছে এটা সুপাঠ্য হয়েছে। আমিঃ ব্যাপারটা অনেকটা এরকম- "ইঁদুর মারা যাচ্ছে, মারা যেতে যেতে সে বলে গেল- ওই বিড়াল, ঐ কুকুরটাই তোর আসল বাপ, এই জন্য তুই রাতের বেলায় ঘেউ ঘেউ করস"... need guts, i guess. ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।