আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্লিনটন বললেন, ইউনূস পরিস্থিতির শিকার, এটা অত্যন্ত মর্মবেদনার বিষয় যে, সে লোকটিকে বাংলাদেশে অপমান করা হয়েছে।

বাধা পেলেই সৃষ্টি হয় গণজোয়ার। মাই ফ্রেন্ড আমি জানি কি হয়েছে। বুধবার নিউ ইয়র্কে তোলা ছবি আবু তাহের, নিউজ ওয়ার্ল্ড, নিউ ইয়র্ক থেকে: যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বলেছেন, গ্রামীণের প্রতিষ্ঠাতা, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন। আমি জানি সেখানে কি ঘটেছে? আসলে এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। ক্লিনটন বলেন, ড. ইউনূস হচ্ছেন একজন সৃষ্টিশীল মানুষ।

অন্ধকারে বাতিঘরের ন্যায় যিনি বিশ্বের অগণিত মানুষকে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তার আবিষ্কৃত ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষ নিজ পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। তবে এটা অত্যন্ত মর্মবেদনার বিষয় যে, সে লোকটিকে বাংলাদেশে অপমান করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিপর্যস্ত ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ বিষয়ক এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ক্লিনটন নিউজ ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম মানবকল্যাণ সংস্থা রকফেলার ফাউন্ডেশন কর্তৃক ‘ইনভেশন ২০১১ ফোরাম’ শীর্ষক প্রথম পুরস্কার অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্বদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

গতকাল বুধবার ম্যানহাটনে আয়োজন করা হয় এ অনুষ্ঠানের। এতে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. পল ফারমার, এজিটি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাথি কচাবি, মেরি রবিনসন্স ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেরি রবিনসন্স, রকফেলার ফাউন্ডেশনের প্রধান ড. জুডিট রডিন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিশ্বের মানবতার কল্যাণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্লিনটনকে রকফেলার ফাউন্ডেশনের লাইফ টাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৮টার দিকে ক্লিনটন অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এ সময় অনেকেই তার সঙ্গে কথা বলতে ভিড় জমান।

এ অবস্থায় গ্রামীণ ও ড. ইউনূস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি উপরিউক্ত মন্তব্য করেন। ক্লিনটন বলেন, ড. ইউনূসকে গ্রামীণ থেকে বয়সের ছুতা ধরে সরানো হয়েছে। কিন্তু এটা আসল কারণ বলে আমরা মনে করি না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে পরশ্রীকাতরতা ও প্রতিহিংসা। একজন নিরস্ত্র শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে সরকারের এ অবস্থান আন্তর্জাতিক সমাজে কখনও গ্রহণীয় হবে না।

তিনি বলেন, আরকানসাসের গভর্নর থাকা অবস্থায় আমরা নিজেরাই ড. ইউনূসকে নিয়ে গিয়ে ক্ষুদ্রঋণ চালু করেছিলাম। সেটা এখন যুক্তরাষ্ট্রে একটি জনপ্রিয় কর্মসূচি। আমি প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় এর যত ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন সেটা করেছি। এটা আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়, প্রেসিডেন্ট ওবামা নিজেও ড. ইউনূসের একজন অনুরাগী। প্রেসিডেন্ট ওবামা নিজেও এ কর্মসূচিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি বলেন, বিশ্বের দারিদ্র্য দূরীকরণে ক্ষুদ্রঋণের কার্যকারিতা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য এর প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশ্ববাসী আজীবন স্মরণ রাখবে। ইতিহাসের পাতা থেকে কেউ তার নাম মুছতে পারবে না। অনুষ্ঠানে পুরস্কার গ্রহণের পর সবার উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণেও ক্লিনটন গ্রামীণ ও ক্ষুদ্রঋণের কথা উল্লেখ করেন। বিল ক্লিনটন বলেন, সরকার এখন সংঘাতে ব্যস্ত, সহযোগিতায় নয়।

ড. ইউনূস হিংসার শিকার। তিনি বলেন, ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ এ বিশ্বের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দারিদ্র্য বিমোচনের কোন বিকল্প নেই। এ লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠান শেষে ক্লিনটন নিজেই এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরেন ড. ইউনুসকে। এ সময় তারা কুশলাদি বিনিময় করেন।

একই অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের প্রধান ড. ফজলে হাসান আবেদও আমন্ত্রিত ছিলেন। ক্লিনটন তার সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান ও আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি, অবকাঠামো এবং উদ্ভাবনের সমন্বয় করতে হবে। কারণ এর প্রতিটি একে অন্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এজন্য বিশ্বের সৃষ্টিশীল সমাজকে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

Click This Link  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.