আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লিনার জন্য লেখা

লিনার জন্য কিছু লিখতে চেয়েছিলাম। যদিও ব্লগে লেখার অভ্যাশ ছিলনা। আজ এই প্রথম 'ক্যান্সার আক্রান্ত নাহিদ জাহান লিনার জন্য সহযোগিতার আবেদন' লেখাটি পড়ে মনে হলো অন্তত ছোট করে হলেও কিছু লিখি। প্রপদের এক বন্ধুর পাঠানো ইমেইল থেকে লেখাটি পেলাম। সেই সাথে মর্মান্তিক খবরটিও।

লিনা আমাদের সময়ের নারী প্রগতির প্রথমসারির কর্মীদের একজন ছিল। আমরা কখনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলাম না। শুধু কাজের সহকর্মী হিসেবেই বেশ দারুন লাগতো ওকে। ওর অসম্ভব খবরটি পড়ে কি যেন কেমন লাগল। অনুভুতি চেপে বসে থাকাটা স্বভাব নয়।

তাই মন্তব্য করতে গেলাম। কিন্তু সেখানেও বাধা। বলা হলোঃ "দুঃখিত আপনি এখানে মন্তব্য করতে পারবেন না । লক্ষ্য করুনঃ নতুন ব্লগারদের জন্য নীতিমালা - নতুন ব্লগাররা প্রথম পাতায় একসেস না পাওয়া পর্যন্ত অন্য কারও ব্লগে মন্তব্য করতে পারবেন না । কিন্তু নিজের ব্লগে পোস্ট বা মন্তব্য করতে পারবেন ।

কিছু ব্লগারের নতুন নিক রেজিস্ট্রেশন এর মাধ্যমে, ফ্লাডিং এবং ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করার উদ্দেশ্যকে ঠেকানোর জন্য সাময়িক এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । " কিন্তু আমার যে আলাদা করে কিছু লেখার নেই। শারমিনের লেখাটির পর লিনাকে নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। লিনাকে বাচাতে হবে। "আমরা চাই, লিনার জন্য আমাদের বাড়িয়ে দেওয়া হাতটা আপনিও ধরুন।

আমরা চাই, লিনা বাঁচুক। আনাকে কোলে নিতে না পারলেও অন্তত ওর হাত ধরে হাঁটতে পারুক লিনা। " ওকে বেচে থাকার শক্তি যোগানো দরকার। কথাটি শারমিন যেভাবে বলতে পেরেছে তার উপর আমার আর কি বলার আছে? বরং ক্যান্সার নিয়ে কিছু লিখতে গেলে আমার ভুল হয়ে যাবে। ক্যান্সার থেকে আমার প্রিয়জনেরা কেউ বাচেনি।

সাত বছর বয়সে দেখেছি আমার বিলেতবাসী প্রিয় খালু চলে গেলেন ছোট খালাকে তরুনী থেকে বিধবা করে। এফ আর সি এস ডাক্তার ছিলেন তিনি। বিলেতের হাসপাতালেই কাজ করতেন। চিকিৎসার কোন অসুবিধে হয়নি। তবু বাচেননি।

তারপর এক যুগ পার হতেই আবার এল ক্যানসার। চলে গেলেন ছোট চাচা। তার ক'বছর পর, আমি যে বছর ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে জার্মানি এলা্‌ম। আট বছরের অভিমানী ভাইটি আমার চলে গেল আরেক ক্যান্সারে। আর সবশেষে এইতো এই আটমাস আগে।

নভেম্বরের এক কনকনে শিতের সন্ধায় আমাদের নয় বছরের শিশু মেয়েটি বেশ হাসতে হাসতেই বিদায় নিল। অনেক চেয়েও বাচেনি ও। ছবিতে যেমন হাসছে। ওভাবেই বিদায় নিল। না আর্থিক সংকট বা চিকিৎসার অভাবে নয়।

বরং ওরা সবা্ই যথার্থ চিকিৎসা পেয়েছে। এই বিলেতে আমাদের শিশু মেয়ে ইযির চিকিৎসা সরকারি খরচেই হয়েছে। সবচেয়ে ভালো সার্জেনের হাতে অস্রোপাচার হয়েছে। ওর এতটুকু মাথার ভেতরে চার চারটি সফল অপারেশন হয়েছে। তিন মাসের রেডিওথেরাপী।

আর ছয় মাসের কেমোথেরাপী দেয়া হয়েছে। ওর মাথার চুল সব পড়ে গেছে। তবু মেয়ের মুখের হাসিটি তেমনি অমলিন ছিল। বাচতে চেয়েছিল মেয়েটি আমাদের। ওর ছোট নোটবুকটিতে চুপি চুপি লিখেছিল " মা বাবা কিছু জানেন না।

আমি ঠিক ভালো হয়ে উঠবো। " কিন্তু বাচানো যায়নি ওকে। বাধ মানেনি ক্যান্সার। বারবার ফিরে এসেছে ওর শিশুমস্তিষ্কে ভয়াবহ রূপে। মরণব্যাধি ক্যানসারের হাত থেকে বাচেনি কেউ।

লিনার খবরটি এমন এক সময়ে এল যখন ভালো কিছু ভাবতে ভুলে গেছি। তবু লিনাকে বাচানোর চেস্টা করতে হবে। লিনার জন্য অবশ্যই টাকা পাঠাতে হবে। খুব দ্রুতই যোগাযোগ করছি। পাঠককেও অনুরোধ করছি আসুন লিনার জন্য আর্থিক সাহায্য নিয়ে ওর পাশে দাড়াই।

দয়া করে নিচের লেখাটি পড়ুনঃ Click This Link এ লেখাটি আলাদা করে ছাবাপার কিছু নেই। বরং শারমিনের লেখার নিচে মন্তব্য হিসেবে ভালো দেখাতো। ভালো হয়ে উঠুক লিনা। ভালোবাসা রইল লিনার জন্য। অনেক আদর আনার জন্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।