আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যান্সার আক্রান্ত নাহিদ জাহান লিনার জন্য সহযোগিতার আবেদন

সত্য ও ন্যােয়ের প্রতীক নাহিদ জাহান। ডাকনাম লিনা। হাসিখুশি, চঞ্চল, উচ্ছল ও বন্ধুবৎসল লিনা হঠাৎ করেই ২০০৯ সালের অক্টোবরে আক্রান্ত হলো স্তন ক্যানসারে। ক্যানসার ধরা পড়ার কিছুদিন পরেই অপারেশন হলো লিনার। কেটে ফেলতে হলো বুকের একটি পাশ।

চলল দীর্ঘ যন্ত্রণাদায়ক কেমোথেরাপি। লিনার মুখের উজ্জ্বল হাসিটি তবু ম্লান হলো না। কেমোর ফলে ওর মাথার চুল পড়ে গেল। আমাদের বলল, ‘ক্যানসার হয়েছে তো কী? আমি অন্য সব সারভাইভারকে খুঁজে বের করছি। সবার জন্য অনেক কাজ করতে হবে।

’ আমরা হতবাক হই। বন্ধুর হাতে হাত রাখি। বলি, আমরা সবাই তোমার লড়াইয়ের সাথি হব। লিনা শুধু মুখে মুখে নয়, কাজেও ক্যানসারে আক্রান্তদের পাশে এসে দাঁড়াতে শুরু করল। স্তন ক্যানসারের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সংসদ ভবনের সামনে শোভাযাত্রা হবে।

লিনা তার অসুস্থ শরীর নিয়েও সেখানে উপস্থিত। নতুন কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে, তাকে কোথায় যেতে হবে, কী চিকিৎসা নিতে হবে—সব পরামর্শ দিতে লিনা হাজির। যেন লিনা হার মানতে জানে না। ক্যানসার যেন সত্যিই পরাজিত হবে লিনার কাছে। নাহিদ জাহান লিনা গবেষক হিসেবে একুশে টেলিভিশনে কাজ করেছে, নিউজ রুম সমন্বয়ক হিসেবে এটিএন বাংলায় এবং অ্যাসাইনমেন্ট প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেছে বন্ধ হয়ে যাওয়া টিভি চ্যানেল সিএসবিতে।

এখন কাজ করছে এনটিভিতে। ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতি করেছে লিনা, যুক্ত থেকেছে সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে। সেই লিনা ক্যানসারের প্রথম ধাক্কাটা ভালোই সামলে নিয়েছিল। দ্বিতীয়বার ২০১০ সালে ওর পায়ের হাড়ে আবার ফিরে এসেছিল ক্যানসা। সেই ক্যানসার সারাতে আবার ইনজেকশন, আবার রেডিওথেরাপি।

তার পরও লিনা হতাশ হয়নি, চিকিৎসা শেষে আবার ফিরে এসেছিল হাট-বাজার-অফিস, আড্ডা আর পলাশ-আনাকে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে। বুকের ব্যথা, পায়ের টনটনানি, তীব্র মানসিক চাপ—সব নিয়েই লিনা ছুটছিল তার সাড়ে চার বছর বয়সী মেয়ে আনাকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। লিনার জীবনটা যে এখন আনাকে ঘিরেই। ছোট্ট আনা জানে না, মায়ের বুকের ডান পাশটা কেটে ফেলা হয়েছে। চিকিৎসকের কড়া নিষেধ, ভারী কিছু তোলা যাবে না, আনাকে কোলে নেওয়াও বারণ।

মনে পড়ে, স্তন ক্যানসারের সঙ্গে কঠিন যুদ্ধের দিনগুলোর কথা বলে যে লিনা একবারও কাঁদেনি, সেই লিনার চোখে ততবার পানি আসে যতবার ও বলে, ‘আনাকে একটু কোলে নিতে পারি না। মেয়েটা ছটফট করে। ’ ক্যানসারের মতো সর্বগ্রাসী রোগকে পরাজিত করা তো সহজ কাজ নয়। নইলে সপ্তাহে আগে করা ল্যাব টেস্টের রেজাল্টে কেন থাকবে ক্যানসারের আবার পূর্ণোদ্যমে ফিরে আসার খবর, কেন চিকিৎসকেরা আবার জানাবেন, নতুন করে কেমো নিতে হবে, নতুন করে শুরু করতে হবে চিকিৎসা। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.