আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রেম করতে দেওয়ার স্বপক্ষে যুক্তি !!

"স্বপ্ন্ তো দেখার জন্যই ,তাই স্বপ্ন দেখে চলি অবিরাম" আজকালকার তরুণ-তরুণীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা মুঠোফোনে জেনারেটরের মত ফটফট ফটফট করিয়া কথা বলিতে দেখা যায়। যদিও মুরুব্বিরা এহেন কর্মকাণ্ডের ঘোর বিরোধী তারপরও তাহাদের কাছে আমাদের কর্মের সপক্ষে যুক্তি তুলিয়া ধরছি । পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বর্তমানে আমাদের জনসংখ্যার ৭ কোটি ১২ লক্ষ ৫৫ হাজার জন ছেলে। আর ৭ কোটি ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার জন মেয়ে। এক বধু এক স্বামী নীতি গ্রহন করিলে দেখা যাচ্ছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার ছেলের ( খোদা তুমি আমারে এই ১ লক্ষ্য ৪০ হাজার এর ভেতর রাখিও না) কপালে বউ না জুটিয়া লাউ জোটার সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে।

তাহলে কি এই ১ লক্ষ ৯০ হাজার ছেলেকে অফিসিয়ালি gay বলিয়া ঘোষণা করা হইবে ? আশা করি মুরুব্বীরা এহেন পাপকর্মের লাইসেন্স প্রদান করিবেন না। তাই রিয়েল-এস্টেট কোম্পানিগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে আগে আসলে আগে পাইবেন ভিত্তিতে এখন থেকে বউ বুকিং দেওয়ার কোন বিকল্প নাই। এবার দেখি আমাদের অফুরন্ত পেয়ার-মহাব্বাতের স্বপক্ষে যুক্তি উপাস্থাপন : বেকার সমস্যার সমাধান : বাংলাদেশে এমনিতেই বেকারের সংখ্যা হাতে গুনে শেষ করার মতো নয়। প্রথমে আসি ফুল ব্যাবসায়ীদের কথায়। আমরা বয়ফ্রেন্ড- গার্লফ্রেন্ডদের দানের নিমিত্তে প্রত্যাহ অসংখ্য পুষ্প ক্রয় করিয়া থাকি।

যদি আমাদের ভালবাসা বন্ধ হইয়া যাই তাহলে আমাদের আর পুষ্প ক্রয় করিতে হইবে না। আর এর ফলে পুষ্পের দোকান সমূহ বন্ধ হইয়া বেকারের সংখ্যা বাডিয়া যাইবে। সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি : বর্তমানে প্রায় সাতটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে । যাহারা সারাক্ষন আমাদের "জারা জারা টাচ মি টাচ মি, জারা জারা কিস মি কিস মি কিস মি" শ্লোগানে অনুপ্রানিত করিয়া রাত-দিন সুলভ মুল্যে ইটিশ-পিটিশ করিতে প্রেরনা দান করিয়া যাইতেছে। যেহেতু এসব কোম্পানির দেওয়া বিপুল পরিমান রাজস্ব সরকারের আয়ের অন্যতম খাত বলিয়া বিবেচ্য হইয়া আসিতেছে , তাই আমরা প্রেম-পিরিতি বন্ধ করিয়া দিলে সরকারও রাজস্ব আয় হারিয়ে বেকায়াদায় পরিবে বলিয়া আমাদের বিশ্বাস।

দেশের জন্য আমাদের কিছু দায় আছে বৈকি। তাই এহেন ক্ষতি আমরা হইতে দিতে পারিনা। মাদকমুক্ত সমাজ গঠন : তরুন সমাজকে ধূমপান তথা মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে ভালবাসার বিকল্প নাই। লক্ষ্য করিলে দেখা যাইবে , আম্মাজান-আব্বাজানের শত ক্যাচাম্যাচিতেও বীরপুরুষদের ধূমপান কিঞ্ছিত না কমিলেও তার জানেমানের মানে তার দেবীরুপী (ডেকচির তলার মতো কালা হইলেও ওইটা দেবী) গার্লফ্রেন্ড হুশ করিয়া নিঃশ্বাস ফেলিয়া বারণ করিলেই সুবোধ বালকের মতো ধূমপান ছাড়িয়া দিয়া মুখে আটানা দামের মিল্ক ক্যান্ডি পুরিয়া দিতে দেখা যায়। সুতরাং দেখা যাইতেছে মাদকমুক্ত সমাজ গডিয়া তুলিতে প্রেমিকারা অসামান্য অবদান রাখিয়া চলিতেছেন ।

প্রযুক্তিগত উন্নয়ন : বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর হলেও মোবাইলের ব্যাবহার তথা এসএমএস লিখতে না জানিয়া এবং মোবাইলের ইংরেজি হরফের ডায়াল নম্বর পডিতে না জানিয়া প্রেম করিতে যাওয়া আর প্রেসিডেন্ট ওবামার স্ত্রীর বাথরুমে উকি দিতে যাওয়ার দুঃসাহস দেখাইতে যাওয়া একই কথা। তাই এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে মানুষকে সচেতন করিয়া তুলিতে প্রেম-পিরিতির অবদান অনস্বীকার্য । অপচয় রোধ : প্রেম করিবার সময় ছেলেমেয়েদের বাবা-মায়ের টাকা পয়সার প্রতি তেমন কোন মায়া আছে বলিয়া দেখা যায় না। তাই বাসায় মাঝে মাঝে শুটকি ভর্তা দিয়া ভাত খাইলেও প্রেমিকাকে ঠিকই বাফেট খাওয়াইয়াতে লইয়া যাইতে দেখা যায়। কিন্তু বিবাহের সময় আসিলেই দেখা যায়,তারা নিজদের ভুল বুঝিতে পারে এবং সিদ্ধান্ত নেয় বাবা-মায়ের টাকার এহেন অপচয় তাহারা আর হইতে দিতে পারেন না।

তাই পালিয়ে বিয়ে করাটাই সর্বোত্তম উপায় বলিয়া তারা ঠিক করিয়া নেয় । এতদ্বারা তাহারা অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করিয়া দেয়। যেমন- পারিবারিকভাবে বিয়ের আয়োজন করিলে ব্যাপকহারে গরু-খাসী-মুরগি জবাই দেওয়া হইবে। আর তরুন সমাজ কখনোই এইভাবে বন্য প্রাণী ধ্বংস করিয়া তাহাদের বিলুপ্তির পথে ঠেলিয়া দিতে পারেনা । তারপর আছে আলোকসজ্জার নামে তাদের প্রানপ্রিয় দেশের বিদ্যুৎশক্তির অপচয়ের বাডাবাডি।

এহেন বাডাবাডি রোধ করিতে হইলেও পালিয়ে বিয়ের কোন বিকল্প নেয়। এইভাবেই যুগে-যুগে আমাদের কপোত-কপোতীরা মুরুব্বীদের শত বাধাকে জয় করিয়া নীরবে নিভৃতে দেশের সেবা করিয়া চলিতেছে... (চলিবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।