আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রমজানের প্রস্তুতি এখনই

আলোকিত জীবন বাংলা ভাষায় ইসলাম প্রচারের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাহে রমজান আগমনের দুই মাস আগে থেকেই রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিতেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজবের শুরুতেই নিজে এবং সাহাবায়ে কিরামকে এই দোয়া করার জন্য বলতেন— ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রাজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান’ (হে আল্লাহ! রজব এবং শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় কর এবং আমাদের রমজানের পুণ্যময় মাস অর্জনের সৌভাগ্য দান কর)। রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ ঘোষণার প্রেক্ষিতেই বিশ্বের মুসলমানরা রমজান আসার আগে থেকেই এর জন্য প্রতি বছর প্রস্তুতি শুরু করে দেন। সাহাবায়ে কেরামের পর তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীন, মুহাদ্দিসীন, আইম্মায়ে মুজাতাহিদীনসহ সব সার্কেলের মুসলমানরা নিজ নিজ পরিসরে রমজানের প্রস্তুতি নিয়ে সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন। উপমহাদেশসহ এই বাংলাদেশেও রমজান আসার আগেই রমজানের একটি ব্যাপক প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যায়।

এমনকি সরকারের পক্ষ থেকেও রমজানের জন্য একটি ব্যাপক প্রস্তুতি আগ থেকেই পরিলক্ষিত হয়। রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি না হয় সে জন্য আনুষ্ঠানিক হলেও সরকার বিভিন্ন ঘোষণা ও বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানির কথা জানিয়ে দেয়। ইফতারি, তারাবি এবং সাহরির সময় বিদ্যুত্ সরবরাহের, গ্যাস-পানির সমস্যা নিরসনের এবং যানজটমুক্ত রাস্তাঘাট রাখার একটি কসরত সরকারের পক্ষ থেকেও পরিলক্ষিত হয়। বৈষয়িক এসব প্রস্তুতি ছাড়াও ইবাদতকেন্দ্রিক প্রস্তুতিটিও শুরু হয় বেশ জোরেশোরেই। মসজিদগুলোর সংস্কার ও চুনকাম ইত্যাদি করে মসজিদের দায়িত্বশীলরা মসজিদকে রমজানের ইবাদতযোগ্য করে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন।

যেসব মসজিদে খতমে তারাবির হাফেজ নির্ধারিত না থাকে সেসব মসজিদে নতুনভাবে নিয়োগ দেয়া হাফেজে কোরআনদের। এ সময়টায় হাফেজে কোরআন যাদের তারাবি নামাজ ঠিক নেই তারা নিজেদের তারাবি নামাজের জন্য মসজিদ ঠিক করে নেন। মসজিদকেন্দ্রিক তারাবি নামাজ ছাড়াও অফিস ও বাসাকেন্দ্রিক তারাবি নামাজের ব্যবস্থাপনার কাজটাও সম্পন্ন হয়ে থাকে এ সময়ে। হাফেজে কোরআনের অধিকাংশই ছাত্র কিংবা শিক্ষক হওয়ার কারণে শাবানের ১৫ তারিখ পর্যন্ত তারা মূলত ব্যস্ত থাকেন পরীক্ষা দেয়া কিংবা নেয়ার কাজে। ১৫ শাবানের মাঝে এসব কাজ শেষ করেই তারা লেগে যান কোরআন শরিফ তিলাওয়াতের এবং মুখস্ত কার্যক্রমের ঝালাই কাজে।

রমজানের আগ পর্যন্ত তারা কোরআন তিলাওয়াতেই ব্যস্ত থাকেন। রমজান মাসের আগেই ঢাকাসহ প্রায় সারাদেশই খতমে তারাবির জন্য সাধারণ মুসল্লিরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। রমজান মাসে কোথায় কীভাবে তারাবি পড়বেন এবং নিজের অন্য কাজগুলো কীভাবে সম্পন্ন করবেন—এসবই তারা রমজানের আগেই ঠিক করে রাখেন। রমজানের প্রস্তুতির বিষয়টি যেমনিভাবে একশ্রেণীর মুসলমান বেশ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে থাকেন, আবার একটি শ্রেণী এমনও রয়েছে যারা এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। মুসলমান হিসেবে সবার জন্যই জরুরি এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে যথাযথভাবে রমজানের ইবাদত-বন্দেগিতে লেগে যাওয়া।

কারণ এ মাসের ইবাদত-বন্দেগির সাওয়াব অন্য মাসের ইবাদত-বন্দেগি থেকে কমপক্ষে ৭০ গুণ বেশি। সুতরাং আসুন এখনই আমরা রমজানের পুণ্যময় ইবাদত-বন্দেগির জন্য প্রস্তুতি নিয়ে নিজের বিগত দিনের পাপতাপ মাফির এ সুবর্ণ সুযোগ গ্রহণ করি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।