আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের আম্বিয়া আপা ও মঞ্জু আপা

নিজেকে শিক্ষিত ভাবতে চাই, কারন আমি যা শিখি আমি তা বিশ্বাস করি। আমার শিক্ষা আমার বিবেক কে জাগ্রত করে। এবং অপশক্তির কাছে মাথা নত করতে আমার বিবেকে বাঁধে। দিনভর নাটকীয়তা শেষে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আবার ভিকারুন নিসা প্রশঙ্গে কথা বলছি। আসলে আজকে এমন একটা দিন গেছে যে আমরা আগের মুহুরতেও বুঝতে পারছিলাম না পরের মুহূর্তে কি হতে পারে।

সে যাই হোক, আমরা সব ভিকিরাই বিশেষ করে যারা এই পুর বিশয়তার সাথে উতপ্রত ভাবে জড়িত তারা মিডিয়ার আচরণে যার পর নাই দুঃক্ষিত। আজকে এতো রাতে ব্লগে ব্লগর ব্লগর কড়তে বসার কারন হচ্ছে আমাদের আপাদের সম্পর্কে কিছু বিষয় সবাইকে জানানো। প্রথমেই বলছি আম্বিয়া আপার কথা। আমাদের মন্ত্রনালয় বা বোর্ড যাই বলুক না কেনও, হামিদা আলি আপার পড়ে সব চেয়ে জনপ্রিয় প্রিন্সিপাল হয়ে থাকবেন ভিকারুন নিসার ইতিহাসে। এবং একি সাথে আমাদের আম্বিয়া আপা আমাদের ইতিহাসে সব চেয়ে কম সময়ের প্রিন্সিপাল।

আপার কথা কি বলবো! আমি যদিও বরাবরই মানবিকের ছাত্রী ছিলাম, তাই বিজ্ঞানের শিক্ষকদের চেনার কথা আমার না। য়ার এতো বড় কলেজের সব শিক্ষক্কে চেনা মোটামুটি অসম্ভব। কিন্তু আপার মধ্যে এমন একটা কিছু আছে, যা আমাদের সবাইকে আপার প্রতি আকৃষ্ট করত। আপা অত্যন্ত স্পষ্টবাদী এবং সজা কথার মানুষ। কথার মারপেচ আপা জানেন না।

আপা জখন আমাদের পরিক্ষার গার্ডে পরতেন, সারাক্ষন আমাদেরকে সততা আর নিতি নিয়ে কথা বলে যেতেন। আমার এখনও মনে আছে, আমাদের একদিনের পরীক্ষার গার্ডে আপা বলছিলেন 'সোনালি ৫ এ যেনও পোকায় না ধরে'। আজকে আপাকে জড়িয়ে বলতে ইচ্ছে করছে, আপা! দেখেন, সোনালি ৫ পোকায় কাটেনি। কারন আমরা আপনার ছায়ায় ছিলাম। আপা প্রচণ্ড নিয়মানুবর্তী একজন মানুষ।

আমরা আপার কাছ থেকে শিখেছি স্মার্ট হওয়া। চুলের বেনি ঠিক নেই, হাতের নখ লম্বা, রুমাল নেই, জুতোটা ময়লা এমন অবস্থায় আপার সামনে যাবার কথা আমরা ভাবতেও পারতামনা। স্রষ্টার প্রতি আপার সব সময়ই অগাধ ভরসা। মাথার স্কার্ফ ছাড়া আপাকে কোন দিন দেখি নি। কিন্তু আপার ধর্মচর্চা কখনই অন্ধ ছিল না।

আপা সব সময়ই বিজ্ঞান মনস্ক একজন সচ্ছ মানুষ। যেকোনো মেয়ের যে কোন সমসশায় আপা আমাদের কাছের মানুশ। আজকে আমাদের সেই আপাকে মিডিয়া বানিয়ে দিয়েছে জামাত অনুসারী। তাদের মধ্যে মানবিকতার কি কিছুই অবশিষ্ট নেই? একটা মানুষকে কতটা কষ্ট দিয়েছে তারা কি তা জানে? শুধু আপা কেনও, এই কথায় কষ্ট পেয়েছি আমরা সবাই। পুর ভিকারুন নিসা পরিবার।

মিডিয়ার এই এক কথায় দহাই দিয়ে আজকে আপাকে প্রিন্সিপালের পদ থেকে নামানো হোল। তারা কি জানে আপা এই পদ টা নিতেই চাননি। আপা যদি প্রিঞ্চিপাল হতেই চাইতেন তাহলে হসনে আরার আগে আমাদের যে আপা ছিলেন সেই সময়ই হতে পারতেন। কিন্তু আপা ক্ষমতা লিপ্সু নন কোন দিন ই। এই চেয়ারে আপা বসতে চাননি।

আমরা ১৮০০০ মেয়ে, ৪৫০ শিক্ষক আর ২০০ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী দের অনুরধেই আপা ঢেকি গিলে ছিলেন। আজকের সাংবাদিকরা এটুকু বুঝল না, যে কতটা ছাত্রী নন্দিত হলে একজন শিক্ষিকার কাছে প্রত্যেকটা মানুষ ছুটে যায়। আর তাই আজ যখন আমাদের আরেক আপা, মঞ্জু আপা প্রিঞ্চিপালের আসনে বসলেন, আপা তার উষ্ণ হৃদয়ে তাকে স্বাগত জানান। এবার আসি, মঞ্জু আপার কথায়। মাটির একজন মানুষ।

ছাত্রী অন্ত প্রান। ভিকারুন নিসা নুন স্কুলের ইতিহাসের প্রধান। আমার গর্ব হয়, যে এমন একজন শিক্ষকের প্রত্যক্ষ ছাত্রী আমি। আপা জখন ইতিহাশ পরাতেন, মেসোপটেমিয়া, নিল নদ, মিসরিয়, এসেরিও সভ্যতাগুলো চোখের সামনে উঠে আসতো। আপা কোন দিন কোন ছাত্রির সাথে উঁচু গলায় কথা বলেছেন বলেও মনে হয় না।

আজকে যখন এই মানুশটি এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারে বসলেন তখন মনে হোল যেনও সত্যি একজন মা আজ তার সংসারের হাল ধরেছেন। আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে কোনদিন কনরকম দলাদলি দেখিনি। আমরা ছাতির শিক্ষক সবাই একটা পরিবার। আজকে যখন মিডিয়া আর বাইরের কিছু মানুষ আমাদের মধ্যে ফাটল ধরাতে চাচ্ছে তখন তাদেরকে ধন্যবাদই দিতে হয়। কারন, তারা আমাদেরকে আজ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, আমরা একে অপরকে কতটা ভালবাসি! উপরের ছবিটা দেখুন, আমাদের আম্বিয়া আপা মঞ্জু আপাকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন।

এটা আমাদের ভিকারুন নিসার সত্তিকারের সিক্ষকের পক্ষেই সম্ভব। এই সম্মান হসনে আরা চিনেই না! ছিঃ! আমি কাদের সাথে আক্র তুলনা করছি? আমাদের আপাদের তুলনা হয়না। এতো জঘন্ন কারো সাথে তো নাই! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।