আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"ভয়াবহ ইসলাম অবমাননা"

আশায় বুক বাঁধা একজন মানুষ। লেখাটি মোবাইল থেকে অনেক কষ্টে লিখেছি ,মনযোগ দিয়ে পড়বেন : আজকে সকালে নামাজ পড়তে যাওযার সময় হকারের দোকানে দেখলাম নয়া দিগন্তে প্রথম পেজে বড় করে লেখা "দেবদেবীর নামে জবাই পশু হালাল!" আমার দেশ পত্রিকায় লেখা আছে "ভয়াবহ ইসলাম অবমাননা" আরো লেখা আছে 'দেবদেবীকে আল্লাহর সমান্তরাল বলা' নিয়ে রয়েছে চরম একটি আর্টিকেল। লেখাগুলো দেখে থমকে গেলাম । রক্ত গরম হয়ে গেলো । সরকার এসব কি শুরু করেছে ? শাহবাগ থেকে আজকাল দেবদেবীর প্রতি উত্সর্গিত পশুর গোশত খাওয়া হালাল ঘোষনা দিয়েছে নাকি? না না এইরকম তো মেনে নেওয়া যায়না ।

আজকেই সরকার পতনের ডাক দিতে হবে । সাথে সাথে দুই পত্রিকার দুই আর্টিকেল একনিমিষেই পড়ে ফেললাম । মাথা থেকে খুত দৌড়াতে পারছিলাম না । কারন তারা প্রতিটা লাইনেই তাদের পক্ষের কথা বলছিলো ,আর মুসুল্লীদের রক্ত গরম হয়ে যাওযার মত লাইন লিখেছিলো। একটু আগে বাসায় এসে ছোট ভাইয়ের নবম শ্রেনীর ইসলাম বইয়ের ৮২ নং পৃষ্টায় গিয়ে ঐ আলোচিত লাইনটি পড়ে আমি তো হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি ।

ঐ লাইনটি হচ্ছে : "দেবদেবীর বা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া (হারাম)" আমি ভাই আপনাদের রাজনীতি না বুঝলেও বাংলা ব্যাকরণ ভালো বুঝি । প্রকৃতি প্রত্যয় কিংবা তত্পুরুষ সমাসে রয়েছে অল্পবিস্তর ধারনা । ব্যাকরণ ছাড়াই একটু বুঝিয়ে বলি : লাইনটা আবার পড়ুন -"দেবদেবীর বা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া (হারাম)" ডাইরেক্ট পড়ে গেলে মাথায় ঢুকবে দেবদেবী কিংবা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া হারাম । তার মানে দেবদেবী ও আল্লাহর নামে উত্সর্গ করা পশু হালাল (নাউযুবিল্লাহ) আসলেই কি তাই ? আসুন দেখে নেই একনজরে । আমি এখন আপনাকে দুটো শব্দের দিকে নজর দিতে বলবো ।

"দেবদেবীর" শেষে যে "র" রয়েছে এবং "অন্যের" শেষে যে "র" রয়েছে । অর্থ্যাত্‍ "দেবদেবীর" শব্দটি সাথে তুলনা করা হয়েছে "আল্লাহ ব্যতিত অন্যের" শব্দটিকে । যেহেতু "আল্লাহর" শব্দটি উল্লেখ করেনি করেছে "আল্লাহ" । সেহেতু আপনাকে "র" পর্যন্ত যেতে হবে। মোটেও আল্লাহকে তুলনা করা হয়নি ।

এখন এই 'দেবদেবীর' এবং 'আল্লাহ ব্যতিত অন্যের' শব্দের মাঝখানে রয়েছে একটি "বা" । খেয়াল করেছেন ? বা এর ব্যবহার জানেন তো ?বা এর ব্যবহার আপনি জানলে কি হবে ভাই ? কট্টরপন্ত্রী সাংবাদিকগুলো তো জানেনা । তাদেরকেই বলছি ,বা এর মানে হলো "অথবা" । "বা" যুক্ত লাইনকে আপনি সর্বদাই দুটো বাক্যে রুপান্তরিত করতে পারবেন ,যাদের অর্থ একই থাকবে। যেমন - রহিম বা শফিক কেউই মেধাবী নয় ।

এইটাকে দুইটি বাক্য করলে হয় - 1) রহিম মেধাবী নয় 2)শফিক মেধাবী নয় বুঝা গেছে ? এইবার আসুন আমাদের পাঠ্যবইয়ে ,যা লেখা আছে - ""-"দেবদেবীর" বা "আল্লাহ ব্যতিত অন্যের" নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া (হারাম) । এইটাকে দুটো বাক্য করলে হয় - ১.দেবদেবীর নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া (হারাম)। ২.আল্লাহ ব্যতিত অন্যের নামে উত্সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া (হারাম) । এতোকিছুর পরো যদি না বোঝেন তাহলে আপনাকে মুখ দিয়ে পানি না খাইয়ে তলদিয়ে খাওয়াতে হবে । অর্থাত্‍ উল্টোদিক থেকে বোঝাতে হবে : "আল্লাহ ব্যতিত অন্যের" বা 'দেবদেবীর' নামে উত্‍সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া হারাম " এইবার ঠিকই বুঝেছেন দেবদেবীর নামে উত্‍সর্গকৃত পশুর গোশত খাওয়া হারাম ।

এক কথা :আল্লাহর সাথে দেবদেবীকে তুলনা করা হয়নি । আল্লাহ ব্যতিত অন্যের সাথে দেবদেবীক তুলনা করা হয়েছে । যেমন - হিন্দুদের/খ্রিস্টানদের/বৌদ্ধদের বা মুসলমান ব্যাতিত অন্যের মসজিদ এ যাওয়া নিষেধ ! সরকারকে নাস্তিক বানানোর আরো অনেক উপায় আছে ,কিন্তু কিছু কট্টরপন্ত্রী লোক মুসুল্লীদেরকে উস্কিয়ে দিতে ,দেশে গৃহযুদ্ধ লাগাতে ধর্মের নামে অপব্যাখা করে সরকারকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেরাই ফাঁদে পা দিচ্ছে । তাদেরকে দ্রুত বিচারের আওতায আনা হোক । (লেখাটি আপনার ধর্মান্ধ ব্যক্তির ওয়ারে শেয়ার করুন ,যুক্তি দেখাতে আমি আছি লেখক - Akjon Hridoy Ismail ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.