আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্যাচাইল্যা আপুনি,আপনার প্যাচাল থামান!!!

আমার কথা সিরিয়াসলি নিয়া বাঁশ খাইলে নিজ দায়িত্বে বাঁশ খাইয়েন কিছুদিন ধরেই খুব ভোরে উঠে ভার্সিটির বাস ধরতে হচ্ছে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দৌড় দেই বলে কেমন ঘুম-ঘুম একটা ভাব থাকে। বেশীর ভাগ ছেলেমেয়েই চুপ করে বসে থাকে। কেউ হয়তো গান শোনে,কেউ পড়ে আবার কেউ কেউ হালকা গল্প-গুজবও করে। তবে অন্য সময় বাসে যত চ্যাচামেচি হয়,এই সময়টায় থাকে না।

সেদিন ভার্সিটি বাসে বসে ঝিমাচ্ছিলাম। এমন সময় এক আপুকে দেখি সমান তালে কথা বলে যাচ্ছে। ভাবলাম একটু পরে হয়তো থেমে যাবে। কিন্তু কিসের কি?থামেই না। আমারো শালার কপালটা এমন খারাপ না!!!!!বসছি একদম প্যাচাইল্যা আপুর পরের সিটেই।

যাই হোক,চুপচাপ বসে বসে আবার ঝিমানি মারার চেষ্টা চালাচ্ছি। কিন্তু ক্যাচকেইচ্যা পাখির জ্বালায় ঘুমানোর সাধ্য কার আছে। তাই বসে বসে আপু তার বান্ধবীর সাথে কি গল্প করে শুনতে লাগলাম। উনার গল্পের বেশির ভাগই হল,উনি কোন জায়গায় কি চালাকি করেছে,কাকে কিভাবে বাঁশ মেরেছে,কি কি কৃতীত্ব উনার আছে,ওনার বাপের বড়লোকি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি যে এইসব গল্প শুনলেই একদম বিরক্ত হই ,তা কিন্তু না।

মানুষের চাপাবাজি হজম করার অসীম ধৈর্য আমার আছে। তারপরও আপুর কথায় আমার হাস-ফাস লাগা শুরু হয়ে গেল। আমি আপুর বান্ধবির দিকে তাকালাম। সেও খুব বিরক্ত চেহারা নিয়ে বসে আছে। একটু আগে ঐ বেচারি হু-হা করছিল।

এখন ওটাও বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে প্যাচাইল্যা আপুর থামাথামির কোনো লক্ষন নাই। বরং গলার স্বর আরো উচুতে উঠে গেছে। আমি আসে-পাশে তাকিয়ে দেখি,সবাই উনার দিকে বিরক্ত ভঙ্গিতে তাকাচ্ছে। এভাবে পুরো এক ঘন্টা আমরা সবাই বসে বসে তার প্যাচাল সহ্য করলাম।

সারাদিন ক্লাস করে বিকাল বেলা বাসে উঠে দেখি প্যাচাইল্যা রানী আবারো আমার কয়েক সিট পরে বসে আছে। আমি আমার বান্ধবী অর্পিতাকে সকাল বেলার কাহিনী বললাম। কাহিনী শুনে অর্পিতা বলল,ও নাকি গত এক বছর ধরে বাসে উঠলেই এই প্যাচাইল্যা রানীকে প্যাচাল পাড়তে দেখে। আমি খেয়াল করে দেখলাম,প্যাচাইল্যা আপুর কথা কেউই খুব একটা মনোযোগ দিয়ে শুনছে না। প্যাচাইল্যা আপু তাতে তেমন অপমানিতোও না।

আমি প্যাচাইল্যা আপুর জন্য একটু দুঃখ বোধ করলাম। তারচেয়েও বেশী দঃখিত হলাম তাদের জন্য,যাদেরকে এই প্যাচাইল্যা রানীর কথা সইতে হচ্ছে। আমার কথা হল,একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর আর কারো বেশী কথা সহ্য করতে ভালো লাগে না। একটা পাচ বছরের শিশু যদি ফোকলা দাত বের করে পটর-পটর করে,সেটা শুনতে খারাপ লাগে না। একটা দশ বছরের শিশু যদি বানিয়ে বানিয়ে তার স্বপ্নপুরী জয় করার গল্প শোনায় সেটাও বেশ ভালো লাগে।

একটা দুই বছরের শিশু যদি আধো আধো করে কথা বলে,তাহলে সেটা অনন্ত কাল ধরেও শুনতে ভাল লাগে। কিন্তু একটা এ্যাডাল্ট মেয়ে যদি নিজের ব্যাক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে পট-পট করে সারা দেশের মানুষকে বিরক্ত করে তাহলে কি বলার আছে?নিজের মুল্য নিজে না জানলে রাস্তার মানুষ কিভাবে তা শিখিয়ে দেবে? আমার ওইদিন প্যাচাইল্যা আপুকে খুব বলতে ইচ্ছা করছিল,"প্লিজ,আপু চাপাবাজি অফ করেন। রাস্তা ঘাটে এভাবে মুরগীর মত পক-পক করেন না। ভাল্লাগেনা। " ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।