আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্যেক শিক্ষার্থীর উদ্দেশ্যে নিবেদিত

দেশটা নয়তো কারো বাপের ভিটা, করবে মন চাইলে যখন যেটা (গত ০১জুন রাজধানীর এক অডিটরিয়ামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং আয়োজিত ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামের বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রদানকৃত বক্তব্যটি আপনাদের খেদমতে নিবেদন করলাম, যা ঈষৎ সম্পাদিত) অদ্যকার এ ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামের সম্মানিত সভাপতি, প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, নবাগত শিক্ষার্থী বন্ধুগণ সকলকে জানাই আন্তরিক মোবারকবাদ ও অভিনন্দন। আজকের এ অনুষ্ঠানে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়, পরীক্ষার ধরণ, প্রশ্নের প্যাটার্ন, পরীক্ষায় কি করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে অনেক আলোচকবৃন্দ বক্তব্য রেখেছেন। আমি ভিন্ন অথচ জরুরী একটি বিষয়ে আলোচনা করতে চাই। দুঃখজনক বাস্তবতা হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের দেশে ইসলামী আইন প্রবর্তিত নয়। অথচ উত্তরাধিকারসূত্রে বংশানুক্রমে বাংলার মসনদে মুসলমান শাসক আরোহণ করার কথা ছিল।

যিনি দিনের বেলাতে প্রজাদের সকল অভাব-অনুযোগ শ্রবণ করবেন, গ্রহণ করবেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আবার রাত্রী হলেই দাঁড়িয়ে যাবেন প্রভুর সামনে নিজের অক্ষমতা, অদক্ষতা আর অযোগ্যতার কথা ভেবে। না জানি আমি ভুলে কারও উপর অন্যায়ভাবে জুলুম করছি কিনা। যা হোক আমাদের অদক্ষতা, অযোগ্যতার কারণে বাস্তবতা আজ উল্টো। কিন্তু কেন?? ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতার মসনদে মুসলমান শাসক থাকার কথা থাকলেও কেন তা অনুপস্থিত? দীর্ঘদিন ক্ষমতার মসনদে আল্লাহর মনোনিত শাসক অনুপস্থিত থাকায় এ মসনদের পরতে পরতে ফেরআউন-নমরুদের প্রেতাত্নারা আস্তানা গেড়েছে। আর তাইতো একের পর এক ক্ষমতায় গিয়ে ইসলাম, মানবতার কথা ভুলে গিয়ে নিজ দলের, দলের নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

হয়েছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। ইসলাম ও মানবতা সর্বদাই হয়েছে উপেক্ষিত। এ অবস্থার পরিবর্তনে আমরা আমাদের হারানো রাজত্ব ফিরিয়ে পেতে চাই, মুসলিম শাসকের ছায়াতলে নিজেকে সাচ্চা মুসলিম হিসেবে পরিচয় দিতে চাই । এজন্য কি আমাদের কিছুই করার নেই?; অবশ্যই আছে। প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দুটি বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে।

ইখলাছ আর ইখতিছাছ। একটি হলো নিয়তের বিশুদ্ধতা আর অন্যটি হলো বিষয়ের বিশেষজ্ঞতা। আমি বড় ডাক্তার হবো কিংবা হবো প্রকৌশলী অথবা করবো অধ্যাপনা নয়তো হবো বিচারক। আমি যাই হবার নিয়ত করিনা কেন আমার নিয়তের মধ্যে সর্বপ্রথম এ বিশুদ্ধতা নিয়ে আসতে হবে আমার অধ্যাপনা, প্রকৌশলী কিংবা ডাক্তারী দুনিয়ার সামান্য আয়-রোজগারের নিমিত্তে নয় বরং আমি এ ঘুণে ধরা সমাজের এক ব্যতিক্রমধর্মী মডেল হতে চাই অন্যরা যেন আমার নিকট হতে সৎভাবে চলতে, বৈধপথে আয় করতে, বিলাসবর্জিত জীবনযাপনে অনুপ্রাণিত হবে। আমি অন্যদের মত গড্ডালিকার প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিতে পারি না।

এছাড়াও সকল বিষয়ে থাকবে আমার মৌলিক জ্ঞান। এ হলো নিয়তের বিশুদ্ধতা। আমরা যেহেতু আমাদের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে পেতে চাই আর তাই আমাকে যে কোন বিষয়ে হতে হবে বিশেষজ্ঞ। ঐ কমবখতদের ক্ষমতার মসনদ হতে তাড়িয়ে আমাকে স্থান করবার মত যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। যদি কখনো ঐ শকুনের দল বয়কট করে বসে আমাদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষাবিদ মুসলমানদের ব্যবহার করতে দিবনা তখন যেন আমাদের উৎপাদিত ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আমাদের জন্য বেচেঁ থাকতে যথেষ্ট হয়।

আমি ডাক্তার হতে পারি কিন্তু আমি অন্য সাধারণ ডাক্তারদের চাইতেও কোন না কোন বিষয়ে আমি আরো বেশি দক্ষ। এ হলো বিষয়ের বিশেষজ্ঞতা। ভুলে গেলে চলবেনা বৃটিশ প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থায় আমি শিক্ষিত হব তবে দীক্ষিত হব না অর্থাৎ বৃটিশ হব না। আর এভাবেই যদি নিজেকে দেশ, জাতি তথা মুসলিম উম্মাহর খেদমতের জন্য এখন হতেই প্রস্তুত করতে পারি তাহলে সংশয় নেই এ বাংলার মুসলিম আবার বীরদর্পে শির উচুঁ করে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তুলবে আল্লাহ আমার রব, এ জগতের যা কিছু চলবে একমাত্র তার ইচ্ছাতেই; অন্য কারও নয়। আর তবেই আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য হবে স্বার্থক, গর্বিত হবে আমাদের এ সুজলা-সুফলা সোনার বাংলাদেশ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.