আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুঃখ = গ্যাস

জীবনে প্রাণ আসুক। প্রতিটা মুহূর্তকে আমরা সুন্দর করে তুলি। বঙ্গোপসাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মার্কিন কোম্পানি কনোকো ফিলিপস-এর সাথে ১৬ জুন সরকারের চুক্তি হয়েছে। তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটি দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিমুখী নমুনা উৎপাদন বণ্টন চুক্তি ২০০৮ এর আওতায় মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি কনোকো ফিলিপস-এর সঙ্গে সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধান চুক্তি বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু সরকার দেশের স্বার্থ বিবেচনায় আনেনি।

যদিও তারা বলছে, দেশবিরোধী কোনোকিছু করা হয়নি। ১৬ জুন কনোকোর সঙ্গে চুক্তি হওয়া নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি। তারা জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেহনুমা আহমেদের মাথাও ফেটেছে সেদিন। আগে আন্দোলন করে আনু মুহাম্মদও মার খেয়েছেন।

১৬ জুন রাতে নিউজ ডেস্কে এসে আজাদীর ম্যানেজার বাদল ভাই বলেন, আনু মুহাম্মদরা কী শুরু করেছেন। তাদেরকে সমুদ্রে নামিয়ে দেওয়া দরকার। এ কথা বলার সাথে সাথে রিপোর্টার শুকলাল ও চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর চেঁচিয়ে ওঠেন। তারা তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির বিরোধিতা করেন। এসময় আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক ক্ষুব্ধ স্বরে বলেন, আমেরিকা ছাড়া সমুদ্রের পাইপ লাইন আর কেউ বসাতে পারবে না।

নাই কাম করতেছে এরা। ঠিক কথা স্যার। শুকলালসহ কয়েকজন সায় দেন। বাদল ভাই বলেন, আনু মুহাম্মদরা বিদেশি টাকা খেয়ে এসব করছে। শুকলাল সায় দেন।

সম্পাদক সাহেব ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলে যাচ্ছেন আরো অনেক কিছু। আমি নিজাম ভাইয়ের দিকে তাকাই। অনুচ্চ কণ্ঠে বলি, এদের কি মাথা খারাপ হয়েছে? আমি তো থ। তারা এত বেশি বুঝে বসে আছে যে, তাদের সঙ্গে কথা বলা বা তর্ক করা বৃথা। তাদের জন্য করুণা হলো কেবল।

বঙ্গোপসাগরের ৯৭৩ কিলোমিটার এলাকায় ভূ-কম্পন জরিপ (দ্বি-মাত্রিক সার্ভে) ছাড়াও একটি অনুসন্ধান কূপ খনন করবে কনোকো। আগামী শুষ্ক মৌসুমে তারা কাজ শুরু করবে। কনোকোর সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী তারা ৮০ ভাগ গ্যাস পাবে। বাকি ২০ ভাগ পাবে বাংলাদেশ। ৮০ ভাগ গ্যাস কনোকো ফিলিপস এলএনজি করে রপ্তানি করতে পারবে।

বাংলাদেশের ২০ ভাগ গ্যাস সাগর থেকে পাইপলাইন বসিয়ে আনতে হবে, যা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। এ গ্যাসও সরকার কনোকো ফিলিপসকে রপ্তানির অনুমতি দিতে বাধ্য হবে! সামর্থ্য নেই, দক্ষতা নেই-এ যুক্তিতে বাপেক্সকে অকার্যকর রেখে ও প্রয়োজনীয় দক্ষতায় গড়ে তোলার উদ্যোগ না নিয়ে এভাবেই জনগণের গ্যাস সম্পদ লুটপাট করা হচ্ছে। বাপেক্স আবিষ্কৃত সুনেত্র গ্যাসক্ষেত্রও বহুজাতিক কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ গ্যাসক্ষেত্রে ৪.৮ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। উপনিবেশ কোথাও এলে আগে ব্যবসা নিয়ে আসে।

পরে সামরিকভাবে আসে। ব্রিটিশ এভাবে এসেছে। এখন বিশ্বের শয়তান আমেরিকাও আসছে এভাবে। বিপদে আছি মা। দুঃখে আছি মা।

১৯ জুন ২০১১ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.