আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কনকো ফিলিপ, ইউনুস টোপ ও দেশদ্রোহীতা

ক্লিন'স অল্টারনেটিভ ওয়ার্ল্ড বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধান বিষয়ক চুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরকারের পুশে রাখা সংকোচ কেটে গেছে- এবং অত্যন্ত অল্প দিনেই চুক্তিটি আলোর মুখ দেখেছে (অবশ্যই বাংলাদেশের ভবিষ্যত অন্ধকার করে)। আনু মোহাম্মদ সহ যারা চোখে দেখছেন এই অন্ধকার ভবিষ্যত, তাদের শরীরে আবারো পুলিশের বুট ও বেতের আঘাত বইবে সন্দেহ নেই। সরকার এবার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাকে তার শর্ত পূরণ করতেই হবে। আজ পত্রিকায় এসেছে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের উক্তি- কনকোফিলিপসের সাথে যে চুক্তি হয়েছে তা দেশদ্রোহীতার শামিল।

আমি একবার বলেছিলাম- কোন দেশের স্বাধীনতাই স্থায়ী ধারণা নয়। স্বাধীনতা যাদের মাধ্যমে আসে তাদের হাতেই স্বাধীনতা সবচেয়ে অনিরাপদ, যদি না সত্যিকার দেশপ্রেম থাকে তাদের। গত চল্লিশ বছরে আমরা জাতীয়ভাবে দেশপ্রেম অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি। সামরিক ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতারোহন কেবল ব্যক্তিস্বার্থকে সমুন্নত রেখেছে, দেশের স্বার্থকে নয়। তাই এতবছর পরও একটি 'দেশদ্রোহী চুক্তি' স্বাধীনতার তথাকথিত স্বপক্ষের দলের হাতেই সই হয়েছে।

আর 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও' বলে ডাক দেয়া দেশের প্রধান বিরোধী দল এই চুক্তির বিষয়ে একটিও কথা বলে নি। কী দুর্ভাগ্য, কী অসহায় দেশ আমাদের! আমরা এতটাই ঘুমন্ত, আমাদের বিবেক এতটাই অন্ধ, দলীয় আনুগত্যের বাইরে, দেশের প্রধানমন্ত্রী বা এলাকার সন্ত্রাসী সাংসদের বাইরে আমরা খুব কমই চিন্তা করি। নিজেদের বিবেকবোধকে সম্পূর্ণভাবেই অন্যদের কাছে সপে দিয়েছি। তারা যা বলে, তাতেই শতভাগ আস্থা। ভাবার চেষ্ট নেই- আসলেই কী হচ্ছে।

যে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুতিকাগার বলা হয় সেখানে এই চুক্তি নিয়ে কোন উচ্চবাচ্য হয় নি। হওয়ার কথা না। ছাত্র সমাজ এখন পুরোটাই স্বার্থবাদী রাজনীতির একটা এক্সটেনশন মাত্র। নিজেরে শিক্ষায় নিজের সিদ্ধান্ত নেবার ইচ্ছা বা শক্তি কোনটাই নেই। এমন অবস্থায় দেশ নিয়ে খুব আশাবাদী হওয়ার উপায় নেই।

সরকার যে তাড়িঘড়ি করে মার্কিন কোম্পানী কনকোফিলিপসের সাথে চুক্তি করলো তা আরেকটি শর্তের বাস্তবায়ন মাত্র। এমন একটি অপমানজনক ও দেশ বিরোধী চুক্তি করার জন্যই শেষ পর্যন্ত ইউনুস ইস্যুতে পিছু হটেছিলো যুক্তরাষ্ট্র। যারা ইউনুস ইস্যুটিকে তারা ব্যবহার করেছিলো সরকারের উপর 'গিভ এন্ড টেক' চাপ সৃষ্টির একটি ধাপ হিসেবে। এ ধরনের আরো কিছু চুক্তি- যেমন, গভীর সমুদ্র বন্দর চুক্তি কিংবা একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের মার্কিন ইচ্ছার কাছে সরকারের নতজানু হবার নজিরও হয়তো দেখা যেতে পারে দূর ভবিষ্যতে। ইউনুস যুক্তরাষ্ট্রের কোন বিষয় নয়, বিষয় ছিলো তিনি ক্ষমতায় আসলে যা তারা পেতে চাইতো তা অন্য সরকারকে দিয়েও পাওয়ার চেষ্টা করা।

গণতান্ত্রিক সরকারের কাধে অস্ত্র রেখে সব আদায় করে নিতে পারলে ব্যক্তিকে ক্ষমতায় বসানোর প্রয়োজন নেই তাদের। আমার এ কথাগুলো হয়তো কারো কানেই বাজবে না। বাজার কথাও না। কারণ আমাদের বিবেকের কান এবং চোখ বহুদিন ধরেই বধির ও অন্ধ হয়ে গেছে। এখন আনু মোহাম্মদরা গলা ফাটিয়ে চিৎকার করলেও আমরা শুনবো না কিংবা তাদের কপাল ফেটে রক্তবন্যা বইলেও আমরা দেখবো না।

অদ্ভুত অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি আমরা। যারা অন্ধ তারাই এখন চোখে দেখবে এখানে। যাদের দেখার কথা ছিলো- তারা সব অন্ধ হয়ে গেছে যে!! ক্লিন ৯.২৫ ১৭ জুন ২০১১ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।