আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেডিটেশন মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেন নিরাময়ে অব্যর্থ

আলোকিত জীবনের একজন সহযাত্রী । মাইগ্রেন এক ধরনের মাথাব্যথা যা অত্যন্ত কষ্টদায়ক। শতকরা প্রায় ২০ ভাগ লোক কোন না কোন সময়ে এই ধরনের মাথাব্যথায় ভূগে থাকেন। মাইগ্রেন মাথাব্যথার সঠিক কারণ আজ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি তবে, বলা হয়ে থাকে যে, ব্রেনের ভিতরে রক্তবাহী নালীসমূহ কোন কারণে সংকুচিত হয়। এটা হলে মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের তারতম্যের জন্যই এই প্রচণ্ড ধপ ধপ করে মাথাব্যথা শুরু হয়।

অনেক সময় বমি না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যথা কমে না। যাদের মাইগ্রেন নেই তারা ধারনাও করতে পারবেন না কতটা কষ্টদায়ক এই রোগ। মাইগ্রেন কথাটির অর্থ আধা মাথা ব্যথা। আমেরিকাতে কাজ থেকে ছুটি নেওয়ার সব চেয়ে বড় কারণ মাইগ্রেন। ক্যানসারের মতো ঘাতক ব্যাধিতে মৃত্যুটাই কষ্টের বিষয় নয়, মূল কষ্ট রোগীর দীর্ঘ যন্ত্রণা।

শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই এখন প্রতিবছর ১০০ মিলিয়নের চেয়ে বেশি রোগী অ্যাকিউট বা ক্রনিক অর্থাৎ দীর্ঘস্থায়ী ব্যথায় ভোগে। ব্যথানাশক হিসেবে শক্তিশালী নারকোটিক মরফিন বা প্যাথিড্রিন ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না, বরং যন্ত্রণা হয়ে পড়ছে সর্বগ্রাসী, এ নজির এখন ভূরি ভূরি। শুধু শারীরিক যন্ত্রণা কমানোর লক্ষ্যে অনেকে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে, পরিবার হয় সম্পদ হারিয়ে সর্বস্বান্ত। আবার ব্যথানাশক যেকোনো ড্রাগের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বিস্তর। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সেগুলো ধীরে ধীরে মানসিক ও দৈহিক ক্ষমতাকে করে তোলে বিকল, স্থবির, নেশাগ্রস্ত।

ডাক্তারদের মতে মাইগ্রেন এর চিকিৎসায় প্রথমেই বুঝতে হবে যে,কারো মাইগ্রেন থাকলে কোন ওষুধে এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব নয়। যাদের মাইগ্রেন মাথাব্যথা থাকে, সারাজীবনই কোন না কোন সময়ে কোন না কোন কারণে এই এই অসুখ আবার শুরু হতে পারে। আসলে সুখের অভাবই অসুখ। মনে সুখের অভাব হলেই তার প্রভাব পড়ে দেহে। মনের দুঃখ কষ্ট ক্ষোভ হতাশা গ্লানি জমে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা বেদনারূপে প্রকাশ পায়।

ব্যথা বেদনার বেশিরভাগই মনোদৈহিক। মাথাব্যথা, মাইগ্রেন, ব্যাকপেইন, বাত ব্যথাসহ ক্রনিক রোগগুলোর অবস্থাও তা-ই। মেডিটেশনে এলে মনের ভেতর থেকেই অপ্রয়োজনীয় এ জঞ্জালগুলো বেরিয়ে যায়। বইতে শুরু করে নিরাময়ের সুবাতাস। মেডিটেশনের ওপর প্রথম পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা যায়, গভীর মেডিটেশনের সময় একদল ধ্যানীর দেহে স্টিলের সুই ঢুকিয়ে দিলেও তাদের দেহে কোনো ব্যথাবোধ হয় নি।

তারপর থেকে গত ৩ দশক ধরে মেডিটেশনের ওপর পরিচালিত অনেকগুলো গবেষণার মধ্য দিয়ে এ সত্যটিই ফুটে উঠেছে যে সব ধরনের ব্যথা নিরাময়ে ( মাথাব্যথা, মেরুদণ্ডে ব্যথা, পেটে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা, গিঁটে গিঁটে ব্যথা, অপারেশন পরবর্তী ব্যথা, ঘাড়, হাত ও পায়ে ব্যথা, পিরিয়ড পূর্ব যন্ত্রণা) মেডিটেশন অব্যর্থ। আমেরিকার বিখ্যাত চিকিৎসা সাময়িকী প্রিভেনশন-এর জুন ১৯৯৭ সংখ্যায় সারাদেশে পরিচালিত এক জরিপের ফলাফলে বলা হয়, ২৭% আমেরিকান শিথিলায়ন করে ব্যথা কমান আর ২৩% আমেরিকান জানান যে, ডাক্তার তাদেরকে পেইনকিলারের পরিবর্তে শিথিলায়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন। গভীর মাথা ব্যথা ও মাইগ্রেন নিরাময়ে মেডিটেশন অব্যর্থ । দেহে ব্যথার অনুভূতি কমায়। জার্নাল অফ দি আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন-এর জুলাই ২৪-৩১, ১৯৯৬ সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় যে, গভীর শিথিলায়ন বা মেডিটেশন পেইনকিলার ও সার্জারির মতোই দ্রুত ক্রনিক ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে।

সার্জারি ও পেইনকিলারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলেও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই শিথিলায়ন বা মেডিটেশনের। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ-এর বাঘা বাঘা ডাক্তারদের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষজ্ঞ প্যানেল এটি ঘোষণা করেন। এর মধ্য দিয়েই যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো প্রথিতযশা চিকিৎসাবিদরা সরকারিভাবে শিথিলায়নকে কোমর ব্যথা, মাথাব্যথা বা মাইগ্রেন, আর্থ্রাইটিস, ব্যাকপেইন, পেশির ব্যথা, পায়ের ব্যথা, মহিলাদের মাসিকের সময়ের ব্যথা ইত্যাদি ক্রনিক ব্যথা নিরাময়ে কার্যকর প্রক্রিয়া হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অফ ম্যাসাচুসেটস-এর মেডিসিনের অধ্যাপক ডা. জন কাবাত জিন তার বিখ্যাত স্ট্রেস রিডাকশন ক্লিনিকে ১৪ হাজারেরও বেশি রোগীকে ওষুধ ছাড়াই ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করেন। রোগীদের অধিকাংশই ক্যান্সার, এইডস বা ক্রনিক ব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন।

এমনকি জন কাবাত জিনের তত্ত্বাবধানে দুরারোগ্য চর্মরোগ সোরায়াসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও চিকিৎসার সময় মেডিটেশন করে ভালো হয়েছেন অন্যদের তুলনায় ৪ গুণ বেশি হারে। কোয়ান্টাম মেথডের ৪ দিনের কোর্সে অধিকাংশ মহিলা আসেন শুধুমাত্র শারিরীক সমস্যা এবং ব্যথা নিরাময়ের জন্য। নিরাময় হয়ও। আপনি নিজেও মেডিটেশন শিখে পরীক্ষা করতে পারেন। ব্যথায় মেডিটেশন এর সাফল্য ১০০%।

কোয়ান্টাম মেথডের মেডিটেশন এর অডিও পাওয়া যাবে এই লিংক এ একদম ফ্রি # http://quantummethod.org.bd/bn/publications। ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।