আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাহাত্তর হনুস দূর আস্ত

তৃতীয় বিশ্বের নেতা হওয়ার জন্যে দুটি জিনিশ দরকার : বন্দুক ও কবর। হাতির লেজ কেটে ফেললে কি আসলে তার কোন ওজন কমে? নাকি তার বাহুল্য মেদই তাতে করে ছাঁটা পড়ে? বাহাত্তরে ফেরার নামে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সরকার যা করছে, এখন পর্যন্ত যদ্দুর বোঝা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে, পবিত্র সংবিধানের অনাকাঙ্ক্ষিত সাম্প্রদায়িক এবং গণবিমুখ অংশ ছেঁটে ফেলার নামে ওই হাতির লেজ কেটে ওজন কমানোর মতোই। পবিত্র সংবিধানে বাহাত্তরে ফেরার নামে এই সরকার জনগণের সঙ্গে যে নির্লজ্জ-নিষ্ঠুর প্রতারণা করছে, বাহাত্তরে ফেরার নামে এই সরকার যেভাবে বিস্ময়কর পদক্ষেপে নির্বাচনী অঙ্গীকার বা ইশতেহারের ওয়াদাকে বরখেলাপ করছে তা সত্যিই কি দুঃখজনক নয়? এই সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যা বলেছিল তা খুব সুস্পষ্ট, যে সরকার গঠন করতে পারলে তারা বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যাবে যেখানে মুক্তিযুদ্ধমনস্ক স্বাধীনতার চেতনার স্ফুরণ রয়েছে। যেখানে কোন সাম্প্রদায়িকতার স্থান নেই। বলবেন যে, সত্যিই কি আওয়ামী লীগ এই আশ্বাস দিয়েছিল বা অঙ্গীকার করেছিল? আমার কথায় বিশ্বাস স্থাপন করার দরকার নেই, জাস্ট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারটা খুললেই জবাবটি পাওয়া যাবে এবং তাতে প্রমাণিত হবে যে, আমি অসত্য বলিনি।

এখন বলবেন তো যে 'বাহত্তরের সংবিধান কী'? এর উত্তর আরও সোজা : 'বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিম' যুক্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত সে সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ যাওয়ার আগ পর্যন্ত যে সংবিধান, সমাজতন্ত্রকে ছেঁটে ফেলার আগ পর্যন্ত যে সংবিধান, বাঙালি জাতীয়তাবাদকে হত্যা করার আগ পর্যন্ত যে সংবিধান সেটাই বাহাত্তরের সংবিধান। আরও ছোট করে বলা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে যে সংবিধান রচিত হয়েছিল সেই সংবিধান, তাতে অন্য কোন যোগ-বিয়োগ আরোপিত হওয়ার আগ পর্যন্ত যে সংবিধান সেই সংবিধান। বুঝতে বা বোঝাতে তো কোন অসুবিধা থাকার কথা নয় জনগণের এবং রাজনৈতিক দলের বা বর্তমান সরকারের। এবার আমি একটা প্রশ্ন করি, বাহাত্তরে ফেরার নামে সরকার এখন পর্যন্ত যা করছে এবং করেছে, তা ওইসব বৈশিষ্ট্যের অনুকূল কি? নিশ্চয়ই নয়। নয় বলেই তো এত কথা।

নইলে এ নিয়ে সাতকাহন লেখার কিছু ছিল না। সরকার সত্যমুখী হলে, তাদের কমিটমেন্ট লেভেল আশানুরূপ থাকলে, এত দিনে আমরা বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে পারতাম কবেই! সেক্ষেত্রে আমাদের কাজ থাকত সরকারকে তার নির্বাচনী অঙ্গীকার প্রতিপালন করার জন্য ধন্যবাদ জানানো, কৃতজ্ঞতা জানানো। কিন্তু সেই রকম কোন স্যোসিও-পলিটিকাল জীবনবাস্তবতা কি আমরা আদতেও পেয়েছি? পাইনি? কেন পাইনি? এবার জবাবটা, সোজা নয়। তবে এই বলে এ চ্যাপ্টার ক্লোজ করা যায় যে, এই সরকারের নির্বাচনের আগে এক কথা, আর নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করে আরেক কথা। ভালো! কিন্তু অবশ্যই জোট সরকারকে, আওয়ামী লীগ এবং তার সঙ্গে আরও যে ১৩টি 'প্রগতিশীল' বা অন্য ধরনের দল, তাদেরকে মনে রাখতে হবে, এক মাঘেই কিন্তু শীত যাবে না।

এক নির্বাচনই কিন্তু শেষ নয়। আবার ভোটশক্তি প্রয়োগ করার ক্ষমতা এই রাষ্ট্রের মালিকদের কাছে আসবেই। এখন যেটা বোঝা যাচ্ছে, সরকার ঠিক বাহাত্তরের ফিরে যেতে রাজি নয়। রাজি থাকলে তো তা নিয়ে এত দেন-দরবার, আলোচনা-মতামত, টকশো'র কোন প্রয়োজন ছিল না। সিদ্ধান্ত কী, করণীয় কী, তা তো স্থির হয়েই রয়েছে নির্বাচনী ইশতেহারে এবং সেটা বাস্তবায়ন করাই যে সরকারের কাজ, সে কাজ করার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা তো জনগণ তাদের দিয়েই দিয়েছে।

তারপরও এত গড়িমসি, এত অনীহা! এবং তারপরও এই সরকার 'মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের'? হাঁ বিস্ময়! আমি বলি কী, মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বা নির্বাচনী ইশতেহারে 'মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে' বলে দাবি করলেই তো হবে না। বাস্তবে কর্ম-প্রয়োগ তো সেটা দেখাতে হবে। সত্যিকার অর্থে নিজেকে 'মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে' প্রমাণ করতে হলে তো আলোচ্য 'বাহাত্তরের সংবিধান'-এরও পক্ষে হতে হবে। তো বর্তমান সরকার কি সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে, নাকি হতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে? উত্তর নিশ্চয়ই আমাকে দিতে হবে না, পাঠকের মনই সে উত্তর দিতে সক্ষম। ১৫ মে ২০১১ তারিখের 'সংবাদে'র প্রধান যে শিরোনাম, সেটা হলো, 'সংবিধান সংশোধন- ১২৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তৈরি' এর নিচে এই খবরের মোদ্দা বিষয়গুলো স্টার দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাতে বলা হয়েছে : '*কাটছাঁট করে চূড়ান্ত করা হচ্ছে। *আগামী অধিবেশনেই সংসদে উপস্থাপন। *থাকছে না ধর্মনিরপেক্ষতা। *থাকছে বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। *ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলও থাকছে।

' ওই খবরের ভেতরে বলা হয়েছে '...আসন্ন সংসদ অধিবেশনেই বিশেষ কমিটির এ প্রতিবেদন সংসদে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। তবে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সাবেক বিচারপতি, আইনজ্ঞ, সংবিধান বিশেষজ্ঞ, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল এবং দৈনিক অনুষ্ঠিত সংলাপে আসা কয়েকটি মতামত বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বিসমিল্লাহ এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রাখার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদনে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার মতামতকেই বহাল রাখা হচ্ছে। কমিটির অনেক সদস্য এ বিষয়টি নিয়ে বিরোধিতা করলেও সেটা আমলে না নিয়ে চলছে কমিটির প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে সংসদে উপস্থাপনের প্রস্তুতি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

' '...তিন মে দেশের বিশিষ্ট নাগরিক এবং ৪ মে দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে সংলাপে বসে মতবিনিময় করে বিশেষ কমিটি। সংলাপের প্রথম দিনে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনজ্ঞ ও সাবেক বিচারপতিরা সংবিধানে 'বিসমিল্লাহ' ও 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' বহাল না রাখার সুপারিশ করেছেন। ' এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে সংসদেই আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য ১০ জনের নাম নির্বাচন করার কথা বলেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদে থাকা এবং সংবিধানে 'বিসমিল্লাহ' ও 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' রাখার পক্ষে মত দেন তিনি। এদিকে দেশের বিশিষ্টজনরা কোন ধরনের কাটছাঁট ছাড়াই '৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।

তারা রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাদ দেয়ার পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ করে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দলিল হিসেবে সংবিধানে সংযুক্ত করার সুপারিশ করেন। দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকরা বিকৃত হয়ে যাওয়া সংবিধানকে পুনরুদ্ধার ও হালনাগাদ করা এবং সংবিধান সংশোধনে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের সুপারিশ করেছেন। এ জন্য প্রধান বিরোধীদলকে আবারও সংলাপে বসানোর উদ্যোগ নিতে সুপারিশ করেন তারা। একই সঙ্গে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইলামকে বাদ দেয়ার পাশাপাশি ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ করে অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষতা বহাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ নির্ধারণ এবং বিচারপতিদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে নিয়োগ না দেয়া, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান ও বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা সংগ্রামের দলিল হিসেবে সংবিধানে সংযুক্ত করার সুপারিশ করেন ... কিন্তু আমার বিবেচনায় সব মতামত শূন্য হয়ে যায়, যখন ... সংলাপে আসা কয়েকটি মতামত বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে না। বিশেষ করে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বিসমিল্লাহ এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রাখার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদনে সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার মতামতকেই বহাল রাখা হচ্ছে।

' তালগাছটা যদি আমারই, তাহলে এত কাজির বিচার বসিয়ে লাভটা কী? যেসব বিধান বা যারা এসে আমার সংবিধানের মূল চেতনাকে হত্যা করেছে, যদি তাদেরকে বিদায় না করে আরও পাকাপোক্তভাবে বসা থেকে শোয়ার ব্যবস্থা করে দিই তাহলে এ আর এমন কী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার? তাহলে সেটা আবার কী রকম বাহাত্তরে ফেরা? আমি আমার ধর্মনিরপেক্ষতাকে ফিরে পাব না, সমাজতন্ত্রকে ফিরে পাব না, বাঙালি জাতিয়তাবাদকে ফিরে পাব না অথচ বাহাত্তরে ফিরে গেলাম, এর চাইতে নোংরা অসত্যাচার আর কী হতে পারে? এমনকি ওগুলো তো ফিরে পেলামই না, উল্টো তাদেরকে হটিয়ে যা বা যারা এসে তাদের জায়গাটি দখল করেছে সেই সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে বসা থেকে শোয়ার জাজিম বিছিয়ে দিচ্ছি। এই যদি 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী' মহাজোট সরকারের কর্তব্যপরায়ণতা, তাহলে আর সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত বিশেষ কমিটির ১২৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন রচনা করার কী প্রয়োজন থাকতে পারে? সেটা তো একপাতায় কয়েক লাইনেই শেষ করা যেতে পারত। এখন জনগণের প্রশ্ন, তাহলে বাহাত্তরের সংবিধানে সেই ্বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতান্ত্রিক ভুল ছিল, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার যে মূল্যবোধ, তার পরিপন্থী ছিল? জনগণের প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি ওগুলোকে হটিয়ে বিসমিল্লাহ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ঠিক ছিল? তাই যদি হয়, তাহলে আর এই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারকে কেন 'বাহাত্তরে ফেরা'র বাহানা করতে হলো? কেন নির্বাচনী ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীর বিচার ইত্যাদির মুলো ঝুলানো হলো? তাই যদি হয়, তাহলে কি এরশাদ ঠিক ছিলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়া ঠিক ছিলেন? তাহলে ওইসব সরকার অবৈধ ছিল মর্মে আদালতের রায় বেঠিক হয়েছে, নয় কি? তাই যদি সত্য, তাহলে আর কেবল হারাধনের একটি ছেলে, ঠুঁটো জগন্নাথ 'গণতন্ত্র'কে জায়গির রেখে লাভ কী? তাকেও বিদায় করে ইনডেমনিটি এবং ওই যে, যাকে বলে বস্নাসফেমি আইনটাকে যথাক্রমে ফিরিয়ে আনলে এবং বলবৎ করলেই তো হয়। ধরণী যদি একটু দ্বিধা হতো তাহলেই বুঝি জনগণ বাঁচত। একদা আমাদের পরাধীন আমলে ছিল মুসলিম লীগ।

সেটা বড়ই সাম্প্রদায়িক বলে একসময় তা থেকে পৃথক হয়ে একটি উদারবাদী এবং সব সম্প্রদায়ের জন্য গ্রহণযোগ্য হয়, এমন একটি দল তৈরি করা হয়। সেটির নাম দেয়া হয় 'আওয়ামী মুসলিম লীগ'। 'মুসলিম' কথাটা থাকায় তাতে সাম্প্রদায়িক একদেশদর্শিতা থেকে গেলেও 'আওয়ামী' কথাটি যুক্ত হওয়ায় নির্জলা 'সুসলিম লীগ' আমলে বঞ্চিত জাতি-গোষ্ঠীগুলো একটু হলেও আশ্বস্ত হয়েছিল যে, ওই 'মুসলিম'-এর মধ্যে না পড়লেও তারা অন্তত 'আওয়ামী'র মধ্যে ঠাঁই পেয়েছে। 'আওয়ামী' মানে হলো সব-সাধারণ বা আপামর বা জনসাধারণ। আমরা বলি না, 'আম পাবলিক'? এই 'আম' হলো 'আওয়ামী'রই চলতি বা কথ্যরূপ।

এখানেও একটা হীনতা ছিল যে 'আওয়ামী' বললেই হয়, সেখানে আর কিছুর যোগ থাকা লাগে না। বিশেষ করে কোন সাম্প্রদায়িক শব্দ তো বড়ই বেমানান। 'আওয়ামী মুসলিম' বললে আসলে বোঝায় 'মুসলিম সর্বসাধারণ'। কালে এই বোধ হতে আরও গণমুখী, আরও সর্বসকলের হলো নামটি। 'আওয়ামী মুসলিম লীগ' থেকে শুধুই 'আওয়ামী লীগ'।

এই 'আওয়ামী লীগ' নামটা সত্যিই সেক্যুলার একটি নাম, এই নামটি সব শ্রেণী-ধর্ম-পেশার মানুষের জন্যই গ্রহণযোগ্য এবং কালে কালে আমাদের রাজনৈতিক উত্থান-পতনে পর্বে-পর্বে এ কথা বিশ্বাস করার যথেষ্ট ঐতিহাসিক কারণ ঘটেছে যে, 'আওয়ামী লীগ' বস্তুতই 'আওয়ামী' বা গোত্র-ধর্ম নির্বিশেষে সবার। আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ একটি সংগঠন এবং সেটা ১৯৭২ সাল পর্যন্ত অটুটই ছিল বলে আমার ধারণা। কিন্তু তারপরে তারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ক্ষমতায় আসতেও পারেনি বহু দিন। মাঝে একবার এক মেয়াদের জন্য এসেছিল, কিন্তু যুগান্তকারী পরিবর্তন ইত্যাদি করার মতো যথেষ্ট সংসদ আসনের নিরঙ্কুশতা তাদের ছিল না।

মাঝে এক মেয়াদ পরে আবার তারা ক্ষমতায় আসে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এবং এখন সেই তারাই সরকার গঠন করেছে এবং মাশাল্লাহ সরকার চালাচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনের ইশতেহারে কৃত অঙ্গীকার অনুসারে তারা বাহাত্তরে ফেরা বলতে যা করছে, তা আমার কাছে যেন আবার 'আওয়ামী লীগ' হতে 'আওয়ামী মুসলিম লীগ'-এ ফেরারই নামান্তর। ভাবছি এই লেখাটা 'জিন্দাবাদ' দিয়ে শেষ করলেই বুঝি এই সরকার বেশি খুশি হতো। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।