আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সেহরি খাওয়ার প্রকৃত শেষ সময় !



আমাদের প্রায় সবার সেহরির সময় খেতে কষ্ট হয়। ঘুম থেকে উঠে খাওয়া আসলেই বিরক্তিকর। যারা বয়স্ক তাদের আরও বেশি কষ্ট। আস্তে আস্তে খেতে খেতে দেখা যায় আজান দিয়ে দিলে অনেকেই খাওয়া বন্ধ করে দেয়, বা মুখে খাওয়া থাকলে ফেলে দেয়, কুলি করে ফেলে ইত্যাদি। আমরা অনেকে তখন তাড়াতাড়ি খেতে থাকি।

আমার কাছে এটা কেমন যেন লাগে ! ধর্ম পালন করব, কিন্তু সেখানে এত কঠোরতা থাকবে কেন ? ইসলাম তো এতটা সংকীর্ণ নয় যে আজান দিয়ে দিল আর মুখে খানা থাকলেও ফেলে দিতে হবে ! ভাল একটা অভ্যাস ছিল যে বাংলা অনুবাদ ছাড়া কুরআন শরীফ পড়ার অভ্যাস নাই। সুরা বাকারার ১৮৭ নং আয়াত পড়তে গিয়ে দেখলাম- " তোমরা খাও এবং পানাহার কর যতক্ষণ না পর্যন্ত পূর্ব দিগন্তের কালো রেখা সাদা রেখায় প্রকাশ না পায়। " স্পষ্ট এই আয়াতে বলা আছে তার ভিত্তিতে আমরা যখন খাওয়া শেষ করি তখন কি পূর্ব আকাশ আস্তে আস্তে ফর্সা হয় ? মোটেও না। যারা সেহরির পর ফজর এর নামাজ পড়তে বের হবেন তারা নামায শেষে কি দেখেছেন কখনও পূর্ব আকাশ আস্তে আস্তে ফর্সা হতে ? কিন্তু রোজার মাস ছাড়া যারা এমনি ফজর এর নামায মসজিদে পড়েন তারা নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন যে সালাম ফিরানোর পর আকাশটা কেমন যেন ফর্সা। যেটাকে আমরা বাংলায় "ভোর" এবং ইংরেজিতে "dawn" বলি।

এখন কথা হল তাহলে কেন সবাই আযানের সময় অনুসরণ করে ? কেন করে সেটা আমিও জানি না ! বুখারি শরীফের ৩ নং ভলিউমের ৪৮ নং বইয়ের ৮২৪ নং হাদিসে আছে- " বিলাল যখন আযান দেয় তখনও রাত থাকে; তাই তোমরা সেহরি খাও এবং পানাহার কর যতক্ষণ না পর্যন্ত পরবর্তী আযান দেয় ইবনে আম মাক্তুম । " ( ইবনে আম মাক্তুম একজন অন্ধ লোক ছিলেন। তাঁকে তখনি আযান দিতে বলা হত যখন ভোর হত ) আর একটি হাদিসে আছে- আবু হুরাইয়া রাঃ বর্ণনা করেছেন- "যদি আযান দিয়ে দেয় আর তখনও কারও হাতে খানার পাত্র থাকে তবে সে যেন তার খাওয়া শেষ করে উঠে। " যেটা দেখা গেল হাদিস থেকে আমরা যখন আযান শুনি সেটা অনেকটা বিলাল রাঃ এর আযানের সময় এর মত। কারন ফজর এর আযান দেওয়ার নিয়ম যখন ভোর হয় অর্থাৎ পূর্ব আকাশ একটু সাদা বক্র রেখা দেখা যায়।

কিন্তু আমরা যখন আযান শুনি তার ১৫ মিনিট পড়ে জামাত হয়। জামাত শেষে তখনও আকাশ তেমন ফর্সা হয় না। তাড়াতাড়ি খাইয়া ঘুম দিয়ে দেওয়া আর কি ! দুই ধরনের ভোর আছে। প্রথম টাকে বলা হয় " আল-ফজর আল খাদিব" যেটাকে "মিথ্যে ভোর" বলা হয় কারন তখন সূর্য উদয় শুরু হয় আর তাই পূব আকাশ একটু সাদা হয়ে আবার মিলিয়ে যায়। এটাকে ভোর বলে না।

আসল ভোর কে বলে "আল ফযর আল সাদিক" যখন দিগন্তরেখায় আসলেই আস্তে আস্তে আলোকিত হতে শুরু করে। আর এটাকেই বলে ভোর। তাই সুরা বাকারায় এই ভোর হওয়া আগ পর্যন্ত সেহরির খাওয়ার শেষ সময়ের কথা নির্দেশ করেছে। এরপরেও আমাদের আগেভাগে খেয়ে নিলে ফেলাই উত্তম। ‪


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।