মহান আল্লাহ্ তাআলার বাণী,
“তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রজ্জুকে সু-দৃঢ় ভাবে ধারণ করো। পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা। সুরা আলে ইমরান-১০৩
এহান আল্লাহর এ বাণীকে সামনে রেখে .......................................................
এ কালিমার উপর ভিত্তি করে মুসলিম সমাজ একতাবদ্ধ হয়ে যে মহান একটি দল গড়ে তুলেছিল বিশ্বে তা বিরল। এ মুসলিম দলটি ছোট একটি আরব ভূ-খন্ড থেকে ধীরে ধীরে অনারব ভূ-খন্ডগুলোকে ইসলামী খিলাফতের অধীনে এনে অর্ধ পৃথিবী শাসন করেছিল।
কোরআন ও সুন্নাহ্ ছিল মুসলমানদের ঐক্যের ভিত্তি।
মুসলমানদের এই ঐক্য দেখে কুফরী শক্তিগুলো হীন চক্রান্ত শুরু করে মুসলিমদের মাঝে নতুন নতুন ফেতনার জন্ম দিয়ে মুসলিম ঐক্যকে বিনষ্ট করে দেয়। মুসলিমদের মধ্যে ওহাবী, খারেজী, রাফেজী, শিয়া ও সুন্নী সহ প্রভৃতি দলের জন্ম দেয়। মুসলমানদের পবিত্র ভূমিকে ভেঙ্গে দিয়ে বায়ান্নটিরও বেশী রাষ্ট্রের জন্ম দিয়ে মুসলিম ঐক্য বিনষ্ট করে মুসলিম শক্তিকে ছিন্ন ভিন্ন করে দেয়।
মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে বিবাদে লিপ্ত হয়ে দিনদিন মুসলিম শক্তিকে খর্ব করে চলেছে। অথচ আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন ঃ
অর্থাৎ, “তোমরা পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হয়ো না।
যদি তা কর, তবে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে। এবং তোমাদের শক্তি, সামর্থ ও প্রভাব চলে যাবে। ”সুরা আনফাল-৪৬
আল কোরআনের এই নির্দেশ অমান্য করার ফলে আজ মুসলমানরা সাহস হারিয়ে কুফরী শক্তির পদতলে আশ্রয় প্রার্থনা করছে। আর সেই কুফরী শক্তি গণতন্ত্রের ছদ্ধাবরণে বোমার আঘাতে জর্জরিত করছে মানবতাকে কযার জলন্ত সাক্ষী ইরাক, আফগানিস্থান, চেচনিয়া, বসনিয়া সহ আরো অনেক দেশ। যার নির্যাতিত জনগোষ্ঠী নারী-শিশু ও সাধারণ জনগণ মুসলিম সেনাবাহিনীকে আহ্বান করছে আর বলছে ঃ
অর্থাৎ, “তোমাদের একি হয়েছে ! তোমরা আল্লাহর পথে সেসব অসহায় নারী- শিশু, বৃদ্ধ ও সাধারণ জনগণকে বাঁচাতে লড়াই করছনা ! যারা (নির্যাতনে কাতর হয়ে) এ বলে ফরিয়াদ করছে, “ হে আমাদের মালিক ! আমাদের যালেমদের এই জনপদ থেকে বের করে নিয়ে যাও।
অতপর তুমি আমাদের জন্য তোমার কাছ থেকে একজন অভিভাবক দাও। তোমার কাছ থেকে আমাদের জন্য একজন সাহায্যকারী পাঠাও। ”সুরা নিসা-৭৫
মুসলিম শাসকরা আজ সেই করুণ আত্ম চিৎকার শুনছনা, বরং কুফরী শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে মুসলিম উম্মাহর সাথে গাদ্দারীতে লিপ্ত হয়েছে।
আজ মুসলমানরা তাদের অতীত ঐতিহ্য ভুলে গেছে। অতীত গৌরব গাথা আমাদের নিকট স্বপ্ন মনে হয়।
তাই আমরা দিন দিন ধ্বংসের দিকে এগুচ্ছি। আজ আমরা আমাদের মূলনীতি বাদ দিয়ে ধার করা নীতির পেছনে ছুটছি। ।
আমরা মুসলমানদের অতীতের দিকে তাকালে দেখতে পাই, হযরত ওমর (রাঃ) বলেছিলেন, “ফুরাত নদীর তীরে একটি কুকুরও যদি না খেয়ে মরে, আল্লাহর কাছে আমি কি জবাব দেব ভয় হয়। ”
আজ আমাদের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে।
আমেরিকার মত ধনী রাষ্ট্রগুলো লক্ষ লক্ষ টন খাদ্য সাগরে নিক্ষেপ করছে, যে খাদ্য দিয়ে সোমালিয়ার মত দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্যাভাব দূর করা যেত।
আমাদের দেশে যখন প্রাকৃতিক দূর্যোগ হয় তখন আমেরিকা, ব্রিটিন ইত্যাদি দেশ খাদ্যের বদলে কনডম পাঠায়। এ হচ্ছে তাদের নোংরা আদর্শের নমুনা।
আজ মুসলমানদের পদ তলে ৭৫% তেল সম্পদ, ৫৮% গ্যাস, এক ট্রিলিয়ন স্বর্ণ সহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরা লক্ষ লক্ষ সেনাবাহিনী আছে। আর সে মুসলমান আজ অপরের কাছে মাথানত করছে।
কারণ মুসলমানদের সব কিছু আছে, নেই শুধু সম্পদগুলোর সমন্বয়।
অর্থাৎ, “তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন কওে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসন কর্তৃত্ব দান করবেন। যেমন তিনি শাসন কর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে। তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদেও দ্বীনকে, যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন, এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে অবশ্যই তাদেরকে শান্তি দান করবেন। তারা আমার এবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না।
আর যারা অকৃতজ্ঞ তারাই অবাধ্য। ”
আজ আমরা আল্লাহর প্রতি সেই বিশ্বাস হারিয়েছি বলে আমাদের হাতে নেতৃত্ব আসছে না। আমরা পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি না।
আসুন আমরা জড়ো হই। হাতে হাত রেখে সমস্বরে নজরুলের ভাষায় বলি,
আল্লাহ্ আমার প্রভু
আমার নাহি নাহি ভয়
আমার নবী মোহাম্মদ (সঃ)
যাহার তারিফ জগৎময়
আমার কিসের শঙ্কা কোরআন আমার ডংকা
ইসলাম আমার ধর্ম
মুসলিম আমার পরিচয়।
আজ মুসলমানদের মাঝে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্বেও সেই সম্পদের সমন্বয় নেই। মুসলিম ভূ খন্ডগুলোর সমন্বয় নেই।
মুসলমানদের মাঝে কোরআন ও সুন্নাহ্ পুস্তক আঁকারে আছে, বাস্তব জীবনে তার প্রয়োগ নেই। তাই আজ মুসলমানরা অবহেলিত জাতিতে পরিণত হয়েছে। মুসলমানদের হাত থেকে নেতৃত্ব চলে গেছে।
আর এই নেতৃত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত ফিরে আসবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তা ফিরে পেতে চেষ্টা না চালায়। আল্লাহ্ তাআলা বলেছেন ঃ
অর্থাৎ, “আল্লাহ্ তাআলা কখনো কোনো জাতির অবস্থার পরিবর্তন করেন না, যতক্ষণ না তারা নিজেরা নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। ”সুরা রাদ-১১
তাই মুস্লিম ভাইদের প্রতি আহ্বান, এসো, আমাদের হারানো অতীত, হারানো গৌরব গাঁথা ও হারানো নেতৃত্ব ফিরে পেতে চেষ্টা চালায়। যেন আবার আমরা হয়ে উঠতে পারি সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি।
মহান আল্লাহ্ বলছেন ঃ
অর্থাৎ, “হে ইমানদারগণ যখন আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল এমন কোন কিছুর দিকে তোমাদেরকে আহ্বান করেন, যা তোমাদের মধ্যে জীবন সঞ্চার করে, তখন সেই আহ্বানে সাড়া দাও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।