আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কারসাজিতে ব্যবহার হয়েছে ভুয়া নাম ভুতুড়ে অ্যাকাউন্ট

I am also expert in body builder.

২০০৯ সালের দুই মাস এবং ২০১০ সালের দুই মাস-এই সময়কে বুস্টার পিরিয়ড হিসেবে চিহ্নিত করেছে শেয়ারবাজার বিপর্যয়ের ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটি। এই চার মাসে শেয়ারবাজারে সূচক যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল সে সময়টায় কারা সবচেয়ে বেশি শেয়ার কিনেছেন তাঁদের শনাক্ত করেছে তদন্ত কমিটি। গত বছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে শেয়ারবাজার বিপর্যয়ের সময় তাঁরাই আবার শেয়ার বিক্রি করে মার্কেট থেকে বের হয়ে গেছেন। এ ধরনের শেয়ারগুলো লেনদেন হয়েছে মূলত মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর 'অমনিবাস' নামের ভুতুড়ে অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে। এ ধরনের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে নামে-বেনামে শেয়ারবাজারে গত দুই বছরে কোটি কোটি টাকা সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে যাঁরা হাতিয়ে নিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন লুৎফর রহমান বাদল ও তাঁর স্ত্রী সোমা বাদল, মেসাদ্দেক আলী ফালু, ডা. এইচ বি এম ইকবাল, আরিফুর রহমানসহ আরো অনেকের নাম।

এ রকম শীর্ষ ১০০ জনের কারসাজির বিবরণ প্রতিবেদনে রয়েছে। তাঁদের কারোরই সরাসরি বেনিফিশিয়ারি ওনারস অ্যাকাউন্ট বা বিও অ্যাকাউন্ট না থাকলেও মার্চেন্ট ব্যাংকের শ্যাডো অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে কারসাজিতে তাঁদের যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে। এর মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন, যাঁরা মূলত বেনামেই লেনদেন চালিয়েছেন। সব মার্চেন্ট ব্যাংকও এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিল। এর মধ্যে প্রাইম ব্যংকের মার্চেন্ট ব্যাংকিং শাখায় তদন্তকাজেও বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

সেকেন্ডারি মার্কেট ছাড়াও প্রাইমারি মার্কেটে বড় ধরনের কারসাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে সালমান এফ রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জিএমজি এয়ারলাইন্স, বেঙ্টেঙ্, বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের ভাই আজিজ খানের মালিকানার বিদ্যুৎ খাতের কম্পানি খুলনা পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (কেপিসিএল) এবং আ ন হ মোস্তাফা কামালের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। বুক বিল্ডিংয়ের মতো একটি আধুনিক পদ্ধতিকেও কলুষিত করেছে কারসাজিচক্র। এ পদ্ধতিতে অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়িয়ে কেপিসিএল এবং ওশান কনটেইনার লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একই সঙ্গে এসব কম্পানি নিজেরাই নিজেদের শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে শেষে বিনিয়োগকারীদের বিপদে ফেলে মার্কেট থেকে টাকা নিয়ে সটকে পড়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির প্রধান ইব্রাহিম খালেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমরা মূলত বিভিন্ন পর্যায়ে অস্বাভাবিক লেনদেনের জন্য কিছু প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করেছি।

আর সেকেন্ডারি মার্কেটে সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য কিছু ব্যক্তিকেও শনাক্ত করেছি। প্রতিটি স্তরেই পাঁচ থেকে ১০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে, যেটা রিপোর্টজুড়েই রয়েছে। সব মিলিয়ে কতজন এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত সেটা আমরা হিসাব করিনি। ' তিনি বলেন, কারসাজির মাধ্যমে সেকেন্ডারি এবং প্রাইমারি মার্কেট থেকে বিনিয়োগকারীদের ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে। তবে এ টাকার সবটাই দেশের বাইরে চলে যায়নি।

শেয়ার বিক্রির টাকা ব্যক্তিগত, বেনামি অ্যাকাউন্ট ও অন্য খাতে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের মাধ্যমে কম্পানির শেয়ারের টাকা ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট বা অন্য কোনোখানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ পাচার হওয়ার অন্তত একটি প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিডি থাইয়ের শেয়ারে বিনিয়োগ করা প্রায় ১৫ কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে গেছে সিটি ব্যাংক এনএর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। এ প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিল ক্যারিবীয় দ্বীপে নিবন্ধিত জিএম গ্লোবাল ইন নামে একটি ভুঁইফোড় কম্পানি, যার পরিশোধিত তহবিল ছিল মাত্র এক সেন্ট।

এ কম্পানির মাধ্যমে দেশে দুই কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। শেয়ার বিক্রিতে লকইন থাকলেও তা মানা হয়নি। এ ক্ষেত্রে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এঙ্চেঞ্জ কমিশনও (এসইসি) নিশ্চুপ থেকেছে। ১৯৯৬ সালের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে ২০১০-এর ঘটনার তুলনা করে ইব্রাহিম খালেদ বলেন, এবার সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের মাধ্যমে ডিম্যাট শেয়ার হয়ে যাওয়ায় সেকেন্ডারি মার্কেট তুলণামূলক ভালো রয়েছে। বেশির ভাগ কারসাজি প্রাইমারি মার্কেটে হওয়ায় সামগ্রিকভাবে বাজার মূলধনে টান পড়েছে।

প্রাইমারি রিভ্যালুয়েশন-ওভারভ্যালুয়েশনসহ নানা প্রক্রিয়ায় কারসাজি করা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.