আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিএসসি ভেঙে দুই কর্মকমিশন হচ্ছে

প্রতিদিন যা পড়ি পত্রিকার পাতায়, ভাললাগা-মণ্দলাগা সবই শেয়ার করি সবার সাথে।

মানাব্জামিন ০৮ এপ্রিল ২০১১ বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ভেঙে অবশেষে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (সাধারণ)’ ও ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (শিক্ষা)’ নামে আলাদা দু’টি কর্মকমিশন হচ্ছে। দুই কর্মকমিশন গঠন প্রক্রিয়াই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন আইন, ১৯৭৭-এ সংশোধনী আনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সংশোধিত আইনের খসড়ার ওপর অর্থ বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মতামত দিয়েছে।

ওই সব মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে খসড়াটি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। গত ৩১শে মার্চ এদেশের শিক্ষা সেক্টরে দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য আলাদা কর্মকমিশন গঠন সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির কাছে পাঠিয়েছে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়। ওই সারসংক্ষেপে পিএসসি গঠন ও এর আদ্যোপান্ত তুলে ধরে বলা হয়েছে, দেশের শিক্ষা সেক্টরের জনবল সমস্যা দূর করে স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে একটি আলাদা কমিশন গঠনে সংস্থাপন সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্থাপন সচিব ইকবাল মাহমুদ মানবজমিনকে বলেন, দুই কর্মকমিশন গঠনের প্রস্তাব শিগগিরই প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে উঠবে। আশা করছি প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করতে পারবো।

ওদিকে সচিব কমিটিতে পাঠানো সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বর্তমানে ২৭টি ক্যাডার সার্ভিস আছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক একটি বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্তভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করতে কমপক্ষে দুই বছর সময় লেগে যায়। নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগার কারণে সংশ্লিষ্ট সেক্টরে বা ক্যাডারে শূন্য পদের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে ওই ক্যাডারের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে- যা সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ ছাড়া এদেশের বার্ষিক বাজেটের একটি বিরাট অংশ শিক্ষা খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়।

তবে শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক পদ শূন্য থাকার কারণে সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যক্রম নেয়া সম্ভব হয় না। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (এডুকেশন) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার রুলস, ১৯৮০ অনুযায়ী সাধারণ শিক্ষার ক্ষেত্রে (সরকারি কলেজ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজগুলোর জন্য) অনুমোদিত ১৪৪৪৭টি পদের মধ্যে ২৫০০টি পদ শূন্য আছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতি দিনই পদোন্নতি ও অবসর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা ক্যাডারে বিপুল সংখ্যক পদ শূন্য হচ্ছে। সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, পিএসসি সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার, মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি স্কুলগুলোতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক নিয়োগসহ সরকারি কলেজগুলোতে শতকরা ১০ ভাগ কোটায় সহকারী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক নিয়োগ করা হচ্ছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৪৭৯৪টি ভিত্তি পদে নিয়োগসহ ১৮টি সরকারি মেডিকেল কলেজের মধ্যে আর্ম ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ বাদে ১৭টি মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, অধ্যাপক এবং কনসালটেন্ট নিয়োগের কাজ করে থাকে।

এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন পর্যায়ে এসব শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করা দরকার। তবে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের জনবল কম থাকায় ২৭টি ক্যাডারের জনবল নিয়োগের সঙ্গে শিক্ষা ক্যাডারের শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই শিক্ষা সেক্টরের জন্য আলাদা একটি কর্মকমিশন গঠন করা হলে শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন পর্যায়ের শূন্য পদে ঠিক সময়ে জনবল নিয়োগ বা পদোন্নতি ও অন্যান্য বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম নেয়া সম্ভব হবে। এমন অবস্থায় শিক্ষা সেক্টরের বিভিন্ন পর্যায়ের শূন্য পদসহ সরকারের অন্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পদগুলোও এ সংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রম নিতে কমিশনের বদলে সংবিধানের ১৩৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (সাধারণ)’ ও ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (শিক্ষা)’ নামে দু’টি আলাদা কর্মকমিশন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন আইন, ১৯৭৭-এ সংশোধনী আনতে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

ওদিকে সংবিধানের নবম ভাগের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণিত ১৩৭ নং অনুচ্ছেদের বিধানবলে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন নামে প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োগ দেয়ার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি মনোনয়ন দিতে একটি কর্মকমিশন রয়েছে। ১৯৭২ সালের ৮ই এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন আদেশ (প্রেসিডেন্টের ৩৪ নং আদেশ) জারির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারি (প্রথম) কর্মকমিমন ও বাংলাদেশ সরকারি (দ্বিতীয়) কর্মকমিশন গঠন করা হয়। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন আইন, ১৯৭৭ জারির মাধ্যমে প্রথম ও দ্বিতীয় কর্মকমিশনকে এক করে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন’ গঠন করা হয়। বর্তমান সরকারি কর্মকমিশন একজন চেয়ারম্যান ও ১৪ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। তারা সবাই সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৩৮ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট কর্তৃক নিয়োগ পেয়েছেন।

০৮ এপ্রিল ২০১১

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.