আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তানোরে মাটির ৩০ ফুট গভীরে প্রাচীন স্থাপত্যের সন্ধান


রাজশাহীর তানোরে পুকুর খনন করতে গিয়ে মূর্তি উদ্ধারের পর এবার ৩০ ফুট নিচে প্রাচীন স্থাপত্যের সন্ধান মিলেছে। উপজেলার কামারগাঁ এলাকায় একটি পুকুর খনন করতে ইটের প্রাচীরের সন্ধান পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইটের প্রাচীর ও মূর্তি প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন হতে পারে। তানোর এলাকার ইতিহাসের দিকে লক্ষ্য রেখে একই ধরনের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরাও। জানা যায়, ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতর থেকে কামারগাঁ ইউনিয়নের গাংহাটি গ্রামের জিয়োতকুড়ি নামের একটি পুকুর পুনঃ খনন সম্প্রতি শুরু হয়।

গত ৩ মার্চ থেকে পুকুর খনন শুরু করে শ্রমিকরা। গত ২৫ মার্চ সেখানে একটি পাথরের মূর্তি উদ্ধার করা হয়। এরপর যতো খুঁড়তে থাকেন ততো ইটের প্রাচীরের আকৃতি ফুটে উঠতে থাকে। অবশেষে সোমবার পুকুরের তলদেশে ৩০ ফুট নিচে সন্ধান পাওয়া গেছে বিশাল প্রাচীন ইটের প্রাচীর। কামারগাঁ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, পাথরের মূর্তিটি উদ্ধারের পরপরই তারা তা থানায় জমা দিয়েছেন।

এরপর ইটের প্রাচীরের আকৃতি ফুটে উঠতে থাকে। প্রায় ৩০ ফুট নিচে এমন ইটের প্রাচীরের সন্ধান পাওয়ায় এলাকার মানুষ বিস্মিত হয়ে পড়েন। গত কয়েকদিনে ইটের দেয়ালের পাশে পাথরও পাওয়া গেছে। তিনি আরো জানান, ইটের আকার-আকৃতি দেখে তারা আরো অবাক হয়েছেন। বর্তমান সময়ের ইটের আকারের সঙ্গে এই ইটের আকারের কোনো মিল নেই।

ইটগুলো অনেক চওড়া ও পুরুত্ব কম, কিন্তু ওজন বেশি। এ ব্যাপারে রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে রাবি ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সাইফুদ্দিন চৌধুরী জানান, তানোর ঐতিহাসিকভাবে প্রাচীন এলাকা। যে স্থানটিতে পুকুরের নিচে মূর্তি ও ইটের দেয়াল মিলেছে সেই একই ইউনিয়নে অবস্থিত বিহারইল, ধানুরা ও পরিশো এলাকায় অনেক আগেই তিনটি বিহারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এরমধ্যে বিহারইলের বিহারটি খুবই বিখ্যাত। কারণ, এই বিহারটি পাল যুগেরও আগে নির্মিত।

সেখান থেকে স্যান্ডস্টোনে নির্মিত একটি ভিন্নরকমের বুদ্ধমূর্তি উদ্ধার করা হয়, যা এখন বরেন্দ্র গবেষণা যাদুঘরে রয়েছে। এই এলাকাটি বারনই নদী ঘেঁষে হওয়ার কারণে উত্তর ভারতের সঙ্গে এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল সেই সময়। এ কারণে সভ্যতাটি বেশ সমৃদ্ধই ছিল। কাজেই কামারগাঁতে আরো একটি নিদর্শনের দেখা পাওয়া বিচিত্র কিছু নয়। তবে এই বরেন্দ্র গবেষক মনে করেন, খুব শিগগির এই নিদর্শনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, যারা খুঁড়ছে তারা প্রত্নতত্ত্ব খননে অভিজ্ঞ কেউ নন। সে কারণে অনভিজ্ঞতায় যেকোনো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কাজেই এখন সেখানে খনন বন্ধ রেখে প্রাপ্ত নিদর্শন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা জরুরি। ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি তারা উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। সূত্র
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।