আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অপড়া, না-পড়া, কম পড়া : উত্তরবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা

বাঙলা কবিতা

অপড়া, না-পড়া, কম পড়া : উত্তরবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরার কবিতা-১ =========== বিশ শতকের চার দশকে, আলিপুর দুয়ারার কবি, বেণু দত্তরায় লিখেছিলেন : " ওদিকে হিংসুক নদী ভালুকের মতন লাফিয়ে পাড় ভাঙছে, তুমি চিরুনীর মত ঘন ঘাস কিছু ছিঁড়ে দিলে দাঁতে কিছু ছুঁড়ে দিলে দূরে যায়__ অসম্ভব ঘুরে ঘুরে সময়ের খরাক্ষিপ্র ফেনা। " (স্বপ্নের নারীরা) এ্কই এলাকার আরেকটু প্রবীণ কবি, সমীর চক্রবর্তী, তিনি বলেন : " এসেছি নারীর কাছে, ডালভাত খেতে। জলাজঙ্গলের মধ্যে নুনমাটি খেতে নলখাগড়ার বনে হৃদয় রগড়াতে। " (এই ভালোবাসা তার) কোচ বিহারের অজপাড়া গাঁয়ে বসে, অরুণেশ ঘোষ লিখেছেন : " তোমার উরু ও স্তনের স্মৃতি ও বিস্মৃতির মধ্য দিয়ে রোদ ও বাতাস তোমার শরীরের মধ্য দিয়ে রোদ ও বাতাস চলে আসে... রোদ ছড়িয়ে পড়ে আর প্রসারিত হয় আর ঝুঁকে পড়ে ছোট্ট ঢিবির মতো যৌনাঙ্গে তোমার। " ( উত্তরের বুড়ি বেশ্যার জন্য আমার এই বন্দনাগান) ওদিকে, রায়গঞ্জের নীরদ রায় লিখছেন : " এ এক অদ্বূত খেলার সঙ্গী হয়েছি আমরা, অপমানকে আর অপমান বলি না, দার্জিলিং মেল থেকে ভালোবাসাকে হঠাৎ কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিলেও ডান হাতের কথা আমরা জানতে দিই না বাঁ হাতকে, বরং ছেলেমেয়েদেরকে দূর থেকেই চেনাই শরৎকাল, রবী ঠাকুরের গান, জীবনানন্দের কবিতা আর সুচিত্রা সেনের অভিনয়।

" ( এ এক অদ্ভূত খেলা) জলপাইগুড়িতে বসে ভাস্বতী রায়চৌধুরী ভাবছেন : "বয়সের হাত ধরে ধরে তুমি এখন যেখানে পৌঁছেছো তাপসী সেখানে তোমার সঙ্গী বয়স ছাড়া আর কেউ নয়। " কিংবা, " আমি সুখ চাই অথচ দুঃখ তার নির্জন মুখশ্রী নিয়ে ঠিক সূর্যাস্তের নিচে দাঁড়িয়ে থাকে শেষ পর্যন্ত সকলকেই বুঝি সূর্যাস্তের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা দুঃখের হাতে হাত রেখে বলতে হয় : দেখা হলো, এবার তা হলে যাওয়া যাক !" (কিসের বদলে কি চাই) জলপাইগুড়ির মালবাজারে, সমীরণ ঘোষ থাকেন। লিখলেন : " দ্রুত একবার ঠোঁটে জিভ বুলিয়েই মনে করতে পারলো সে নারী। এ পৃথিবীর পথে তার নিতম্ব দোলানোর প্রয়োজন আছে" (প্রযত্নে, সময়) কবি নিত্য মালাকার বাস করেন, কোচবিহারের মাথাভাঙাতে। প্রথম দিকে টানা গদ্যে লিখতেন; পরে, অবশ্য, পদ্যও লিখেছেন।

অনুভবের কোমল সমতায় দ্রবীভূত কবি, বলছেন : " এমন কুটুম্বময় আলো, হাসি আর গুঞ্জরণপ্রিয় কাক, ঘুঘু, বক্ষ লগ্ন মেঘ, বিলকুস খাজুম কিংবা জনার্দন সাহার আকাশ... এমন কুটুম্বময় ইলসে গুড়ির দিনে শুধাবো যে কেউ নেই__ হে গুঢ়পশ্চিম, তোমাতেই হোক তবে প্রণাম, প্রণাম!" ( প্রণাম) [[ * আবুল হাসান, বিনয় মজুমদার, কিংবা এই অধমের মতোই তাঁরও কি কেউ গুঢ় পশ্চিমে !! যাই হোক...]] দেখে নিই, সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গের আরেক কবি, অনুভব সরকার, যিনি 'ব্যক্তিগত সিরিজ"-এ বলেছিলেন : " নতুন বউদির মুখের ভূগোল পড়ি স্নানঘরে জমা রাখি রক্তের চুন" এর পর কী বলছেন___ 'সম্পর্ক' নামক এই কবিতায় চারটি চরিত্র; বাবা, মা, কবি এবং বাড়িটি। " আমরা চারজনে, ভিন্ন ভিন্ন রুচি বাড়ির দিকে তাকিয়ে আছি, মায়ের দিকে মার হাত থেকে ক্রমশই খসে পড়ছে দীর্ঘ দড়ি। " (সম্পর্ক)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.