আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শহীদ জননী জাহানারা ঈমামের সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ রুমির জন্মবার্ষিকীতে(২৯ মার্চ) খোলা চিঠি

শূন্য

প্রিয় রুমি ভাই, আজ ২৯ শে মার্চ আপনার জন্মবার্ষিকী। আমার অজ্ঞতার কল্যাণে জানি না যে কত তম বার্ষিকী এটি। শুধু জানি আপনার মৃত্যুও পর প্রায় ৪০টি বসন্ত পার হয়েছে। কিন্তু একটি স্মরণীয় ও বরণীয় ঘটনা আজো আপনাকে রেখেছে নব্য যৌবনে। আপনি বুয়েটের ছাত্র ছিলেন।

কিন্তু দেশে তখন অসহযোগ অন্দোলন শুরু হওয়ার ফলে ক্লাস শুরু না হওয়ায়, কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হোন। আর সেখান থেকে মায়ের অনুমতিক্রমে আপনি চলে যান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের গর্বিত ইতিহাসের নিজের অংশ বুঝে নিতে। আপনার জননীও আপনাকে দেশের নামে কোরবানী দিয়ে দিলেন। আপনি হয়ে গেলেন দেশের সব মানুষের ভাই। ৭১ থেকে আজ, এখান থেকে আগামী দিন।

অর্থাৎ যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, যতদিন বাংলা ভাষা থাকবে ততদিন আপনিও এই বাংলার সকল সুস্থ মনের মানুষের ভাইয়া হয়ে থাকবেন। আপনার মা জাহানারা ঈমামের “একাত্তরের দিনগুলি” আপনাকে প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে ভাই হিসেবে চিরস্থায়ী করে গেছেন। আপনি ছিলেন ২নম্বর সেক্টরের একজন মুক্তি সেনা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সবচাইতে গর্বের এবং সবচাইতে কষ্টের ঘটনাগুলোর একটা বড় অংশ আপনাদের টিমকে ঘিরে। আপনাকে আমি চিনতাম না।

এমনকি জানতাম না আপনার নাম পর্যন্ত। আমার জীবনে হঠাৎ একদিন আগ্রহ জন্মাল মুক্তিযুদ্ধকে জানবার। আর মুক্তিযুদ্ধকে জানতে জানতে একদিন জানলাম অন্য সবার মত আপনিও কিভাবে যেন আমার আত্বার পরম আত্বীয়, আমার ভাই হয়ে গেছেন। দিন আসে দিন যায়। আর ক্রমে ক্রমে আমিও কেমন যেন আপনার ও আপনাদের প্রতি দূর্বল হচ্ছি।

জানি একদিন আমিও হারিয়ে যাব এই পৃথিবী থেকে। এটাও জানি, সেদিন আমার বংশধরেরা আর সেসময়ের প্রজন্মও আপনাকে তাদের ভাই হিসেবেই চিনবে। আপনি চিরস্থায়ী যুবক হয়ে শুধু ভাই হয়েই বেঁেচ থাকবেন শেষ দিন পর্যন্ত। ৩০ লক্ষ শহীদের দেশে সব শহীদের প্রতিই আছে অগাধ শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালবাসা। নিজেকে ভালবাসতে হলে, মা কে ভালবাসতে হলে, ভালবাসতে হবে দেশকে, ভালবাসতে হবে ৩০ লক্ষ শহীদকে।

স্মরণ করতে হবে সকল মুক্তিসেনা আর তাদের গর্বিত ইতিহাসকে। কিন্তু এত কিছুর মাঝেও আমার কানে আপনার কথাই বেশী বাজে। আপনার জন্মবার্ষিকী ঘনিয়ে এলেই কিভাবে যেন মনে পড়ে যায় আপনার কথা। পরে একদিন অনুধাবন করলাম আসলে আমাকে মনে রাখতে গিয়ে আপনাকেও হৃদয় মন্দিরে স্থায়ী আসন দিয়ে দিয়েছি। আমি তো বিখ্যাত কেউ হতে পারিনি ! তবু আমার জন্ম নিয়ে আমি গর্ব করে মানুষকে বলি, বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ রুমি যেদিন জন্ম নিয়েছে, সেদিন আমারও জন্ম এই বাংলায়।

হ্যাঁ ২৯ শে মার্চ আমারও জন্মবাষিকী। ভাইয়া আকাশ থেকে রাহুগ্রস্থ এই বাংলাদেশ দেখে হতাশ হবেননা। দোয়া করবেন আমাদের জন্য। এটুকু জানবেন, আপনার ভাই-বোনেরা আবারও দেশের জন্য আপনারই মত জীবনকে দান করবে দেশ মাতৃকার সেবায়। দেশের জন্য কোরবানী দেবে নিজেবে।

আপনারই এই প্রজন্মের ভাই, তির্থক আহসান রুবেল ## বি.দ্র.ঃ আজ আমার ৩০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.