আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুরে এলাম রংপুর-পার্বতীপুর-ফুলবাড়ি-স্বপ্নপুরীঃ একটি এলোমেলো ছবি ব্লগ

কাপুরুষের শেষ আশ্রয় হল দেশপ্রেম

কিছুদিন আগে হঠাৎই পরিকল্পনা করলাম রংপুরে শ্বশুড়বাড়ি হয়ে পার্বতীপুর নিজের গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার। সেই অনুসারে এক রৌদ্রজ্জ্বল সকালে ঢাকা থেকে রওনা হলাম রংপুরের উদ্দেশ্যে। রংপুর থেকে পার্বতীপুর হয়ে ফুলবাড়ি স্বপ্নপুরীতে যাওয়ার পথের কিছু ছবি সবার সাথে শেয়ার করছি। রংপুর থেকে পার্বতীপুর যাওয়ার পথে সরষে ক্ষেত। অদ্ভুত সুন্দর একটা গন্ধ এসে নাকে লাগে! নষ্টালজিক করে দেয়- ক্ষেতের আইল ধরে পল্লী শিশুদের স্কুলে যাওয়া! আমি অনুরোধ করতেই ওরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গেল- শৈশবের স্মৃতিময় পার্বতীপুর স্টেশন।

এই স্টেশন থেকেই বাবা-মার সাথে ২৫ বছর আগে ঢাকায় পাড়ি জমাই। আমার প্রিয় পার্বতীপুর স্টেশনটি তেমনই আছে এখনও- ছোটবেলায় এই সিঁড়ি দিয়ে উঠতে ভয় লাগত। ভাবতাম, পা ফসকে যদি পড়ে যাই - কাছে আসা অথবা দূরে যাওয়া- বহু বছরের সাক্ষী এই গাছগুলো- মনে আছে, ছোটবেলায় এরকম একটি ইঞ্জিনে চড়ে রাগ করে দাদাবাড়ি থেকে নানাবাড়ি চলে এসেছিলাম! নিঃসঙ্গ সিগন্যাল বাতি- ছায়াঘেরা আমার প্রিয় গ্রামের পথে যেতে- বাড়ি সংলগ্ন কয়েকটি পুকুর- পুকুরের পানিতে হাঁসের জলকেলি- চষা মাটির একটা মাদক গন্ধ আছে, শরীরে মেখে নিতে ইচ্ছে হয়- বাড়ির পাশে বকুল ফুলের গাছ। ছোটবেলায় ফুফুরা (আমার ৭ ফুফু) আমাকে ঢাকায় আসার আগে বকুল ফুলের মালা গেঁথে দিতেন। যতদিন ফুলগুলো সৌরভ ছড়াতো ততদিন গাঁয়ের কথা মনে পড়ত- বাড়ির পাশেই আরেকটি পুরনো গাছ।

এরকম বেশ কয়েকটি উঁচু পাকড় (!), অশ্বথ, কড়ই, তেতুঁল গাছ আমাদের বাড়িতে ছিল। চাচারা সব কেটে ফেলেছে। এখন বাড়িটিকে কেমন যেন ন্যাড়া দেখায় - বাড়ির খিড়কি পথ- ভাতিজাকে (আমার ছেলে) কোলে নিয়ে চাচার (আমার চাচাতো ভাই) প্রাণ যায় যায় অবস্থা! এবার ফুলবাড়ির পথে- ক্ষেতের মাঝে (আমরা বলি পাথার) বক দেখে কারো হাত কি নিশপিশ করছে? বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সংলগ্ন এলাকায়- স্বপ্নপুরীর পথে। বাড়ির এত কাছে কিন্তু আগে কখনই যাওয়া হয়নি- স্বপ্নপুরী পৌঁছতে বিকেল গড়িয়ে গেল! কি করব! চাচীর হাতের রান্না পুকুরের টাটকা মাছ, পটলভাজি আর ডাল খেতে সময় লাগবে না! মাটির তৈরি ফলগুলো কি সুন্দর! একসেট সঙ্গে করে নিয়ে এলাম- স্বপ্নপুরীতেই সন্ধ্যা হয়ে গেল। গ্রামের এক হোটেলে চা, সিঙ্গাড়া খেয়ে ফিরতি পথ ধরলাম।

স্বপ্নপুরী থেকে মধ্যপাড়া খনির সামনে দিয়ে নতুন হওয়া নির্জন রাস্তা ধরে মিঠাপুকুর হয়ে রংপুর ফিরলাম। এই রাস্তায় সন্ধ্যার পর গাড়ি নিয়ে গা ছমছম করা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা না হয় আরেকদিন বলব! সবাইকে ধন্যবাদ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.