আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নারীর অগ্রগতির কালপঞ্জি



নারীর অগ্রগতির কালপঞ্জি বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট  খ্রীঃ পূর্ব ১২০০-৯০ - উত্তর ও পশ্চিম ভারতে আর্যদের প্রবেশ এবং মাতৃপ্রাধান্য খর্ব  খ্রীঃ পূর্ব ৩২৭ - মেসেনা অবরোধ যুদ্ধে ভারতীয় নারীর অস্ত্র ধারণ।  খ্রীঃ পূর্ব ২০০ - পতঞ্জলি কর্তৃক অস্ত্রধারী শক্তিকি স¤প্রদায়ের উল্লেখ।  খ্রীঃ পূর্ব ৬০০ - ব্রহ্মবাদীদের সভায় বিদূষী নারী গার্গীর প্রশ্ন উত্থাপন।  ৯০০-১০০০ - চর্যাপদে তান্ত্রিক ধারার সাধনমার্গে নারীকে সাধন সঙ্গীনী হিসেবে গ্রহণ।  ১১০০ Ñ ডাকের বচন, অপরসায়ন বা এ্যালকেমি চর্চায় গ্রামীণ নারী সমাজের অংশগ্রহণ।

 ১২০৪ Ñ বাংলায় ইসলাম ধর্মের প্রবেশ, ব্যাপক ধর্মান্তর ও ধর্মান্তরিত বাঙালী নারীদের সম্পত্তি, দেনমোহর, তালাক ও পুনর্বিবাহের মতো গুরত্বপূর্ণ কিছু অধিকারপ্রাপ্তি (অবশ্যই মুসলিম আইন অনুযায়ী)।  ১৩০০-১৪০০ Ñ বাংলা মঙ্গলকাব্যের উদ্ভব ও বিকাশ, বাংলায় লোকধর্ম ও নারীদেবতা, নারী পুরোহিত শ্রেণীর অভূদ্যয়।  ১৪০০-১৬০০ Ñ বাংলায় বৈষ্ণব আন্দোলন, বৈষ্ণব ধর্মে সর্বস্তরের নারীর সক্রিয় অন্তর্ভুক্তি, নারী গুরু ও নারী মহান্ত শ্রেণীর উদ্ভব।  ১৩৫১-১৫৭৭ Ñ ফিরোজ তুঘলক ও সিকান্দর আলী লোদী কর্তৃক বাঙালী মুসলিম নারীর চলাচলের স্বাধীনতা হ্রাস। বোরখা ও ঢাকা গাড়ি ছাড়া মেয়েদের চলাচল নিষিদ্ধ, বাড়িতে জেনানা মহল তৈরি।

 ১৫৭৫ Ñ মহিলা কবি চন্দ্রাবতীর রামায়ন অনুবাদ।  ১৭৫২-১৭৫৭ Ñ পলাশীর যুদ্ধপূর্ব প্রাসাদ রাজনীতিতে বাংলার প্রথম সক্রিয় নারী রাজনীতিবিদ ঘষেটি বেগমের অংশগ্রহণ।  ১৮১১ Ñ উইলিয়াম কেরী কর্তৃক ৪০ জন ছাত্রীসহ প্রথম বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।  ১৮১৮ Ñ রাজা রাম মোহন রায় কলকাতায় সহমরণ প্রথা (সতীদাহ) বাতিলের প্রথম উদ্যোগ নেন, সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক ও নিবর্তক সম্বাদ এ সময়েই প্রকাশিত হয়।  ১৮১৮-৫৮ Ñ মেরী কুক(১৮২১-২৪) ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৫৭-৫৮) কর্তৃক মোট ৪৩টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।

 ১৮২৯-৩২ Ñ ভারতে লর্ড বেন্টিংক সতীদাহ প্রথা বাতিল করে আইন পাশ করেন।  ১৮৩২ Ñ ১২ জুলাই, বিধবা বিবাহ আইন পাশ হয়।  ১৮৩৮-৪২ Ñ ২৫ নভেম্বর, ১৮৩৮ খ্রীঃ প্রসন্ন কুমার ঠাকুরের দি রিফর্মার পত্রিকায় এবং জুলাই, ১৮৪২ খ্রীঃ এ রামগোপাল ঘোষের বেঙ্গল স্পেকটেটার পত্রিকায় হিন্দু বিধবাদের পুনঃবিবাহের সমর্থনে প্রবন্ধ প্রকাশ।  ১৮৫০-৫৫ Ñ বিধবা বিবাহের স্বপক্ষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের তীব্র আন্দোলন। Ñ ৪ অক্টোবর ১৮৫৫, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে ৯৮৫ ব্যক্তির স্বাক্ষরসহ বিধবা বিবাহ আইন সমর্থনে সরকারের নিকট আবেদন পেশ।

১৮৫৬ Ñ ২৬ জুলাই, বিধবা বিবাহ আইন পাশ। Ñ কৃষ্ণ ভাবিনী দাসী প্রথম মহিলা কবি রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। Ñ কামিনী সুন্দরী প্রথম মহিলা নাট্যকার রূপে পরিচিতি লাভ করেন।  ১৮৫৬-৬৭ Ñ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক ৬০টি বিধবা বিবাহ আয়োজন।  ১৮৬০ Ñ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় সহবাস সম্মতি আইন জারি করা হয়।

 ১৮৬১ Ñ বামা সুন্দরী দেবী প্রথম মহিলা প্রবন্ধকার রূপে খ্যাতি লাভ করেন।  ১৮৬৩ Ñ (মতান্তরে ১৮৭২) শিবসুন্দরী দেবী প্রথম লেখিকা রূপে বাংলায় নভেল রচনা করেন।  ১৮৬৬ Ñ বাংলার প্রথম পেশাজীবি নারীরূপে রাধাসুন্দরী ৩০ টাকা বেতনে চাকুরী লাভ করেন।  ১৮৭০ Ñ মোক্ষদাদায়িনী মূখার্জী মহিলাদের জন্য এবং মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত প্রথম বাংলা পত্রিকা সম্পাদনা করেন।  ১৮৭১ Ñ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কর্তৃক বহুবিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে প্রচার চালানো।

 ১৮৭২-৭৭ Ñ বামা বোধিনী সভা, অন্তঃপুর স্ত্রীশিক্ষা সভা, ব্রাহ্মিকা সভা ও হিতৈষিণী সভা প্রতিষ্ঠিত হয়।  ১৮৭৩ Ñ ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী প্রথম কুমিল্লায় বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।  ১৮৭৬ Ñ ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী প্রথম মহিলা কবিরূপে খ্যাতি লাভ করেন।  ১৮৮৩ Ñ কাদম্বিনী গাঙ্গুলী ভারতে মহিলাদের মধ্যে এম.বি. (ডাক্তারি) পাশ করেন। Ñ অন্তঃপুরবাসিনীদের সঙ্গে বহির্জগতের মিলনের জন্য ঠাকুরবাড়ীতে লেডিস থিওসফিকাল সোসাইটি (খধফরবং ঞযবড়ংড়ঢ়যরপধষ ঝড়পরবঃু) প্রতিষ্ঠা।

স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন তার সভানেত্রী।  ১৮৮৪ Ñ চন্দ্রমুখী বসু মহিলাদের মধ্যে প্রথম এম. এ পাশ করেন। Ñ রবীন্দ্রনাথের ভগ্নী স্বর্ণকুমারী দেবী প্রথম মহিলা সম্পাদক রূপে বিখ্যাত ভারতী পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেন।  ১৮৮৫ Ñ বাংলার প্রথম নারী সংগঠন সখী সমিতি স্বর্ণকুমারী দেবী কর্তৃক গঠিত।  ১৮৮৯ Ñ বোম্বে শহরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সম্মেলনে ছয় জন ভারতীয় নারীর যোগদান।

 ১৮৯০ Ñ বিধুমুখী বসু প্রথম কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.বি (ডাক্তারি) পাশ করেন।  ১৮৯৩ Ñ নারী কল্যাণের লক্ষ্যে নবাব ফয়জুন্নেছা কুমিল্লায় জেনানা (মহিলা) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।  ১৯০১ Ñ ৪০০ জন মুসলিম মহিলা ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিতা বলে আদমশুমারির রিপোর্ট প্রকাশ।  ১৯০৪ Ñ রোকেয়া সাখাওয়াৎ কর্তৃক বাংলার প্রথম নারীবাদি প্রবন্ধ স্ত্রী জাতির অবনতি প্রবন্ধ প্রকাশ। এ প্রবন্ধে ধর্মগ্রন্থগুলোতে নারী সম্পর্কিত বক্তব্যের তীব্র বিরোধীতা করা হয়।

 ১৯১০ Ñ রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন কর্তৃক সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা। Ñ প্রথম নারীবাদি রূপে খ্যাত সরলা দেবী চৌধুরাণী কর্তৃক ভারত স্ত্রী মহামন্ডল নামক সর্ব ভারতীয় নারী সংগঠন প্রতিষ্ঠা।  ১৯১৪ Ñ ভূপালের বেগম আলীগড়ে প্রতিষ্ঠা করেন অল ইন্ডিয়া মুসলিম লেডিস কনফারেন্স।  ১৯১৭ Ñ ভারতে নারীদের ভোটাধিকার দাবী। Ñ সরলা দেবী ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত।

Ñ ডরোথী জিনারাজেদেশা, মার্গারেট কুসিন্স ও এ্যানি বেসান্ত কর্তৃক প্রথম সর্বভারতীয় নারী সংগঠন উইমেন্স ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন (ডওঅ) গঠিত।  ১৯১৯ Ñ ভারতীয় নারীদের ভোটাধিকারের দাবিতে সরোজিনী নাইডু, এ্যানি বেসান্ত, হিরাবাঈ টাটা, নির্বান টাটা প্রমুখ মহিলা নেত্রীর লন্ডন যাত্রা। Ñ নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে লেডি অবলা বসু জোত্যির্ময়ী গাঙ্গুলীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা করেন নারী শিক্ষা সমিতি।  ১৯২০ Ñ দেবী চৌধুরাণী নামে খ্যাত মহিলা নেত্রী জ্যোতির্ময় গাঙ্গুলীর নেতৃত্বে কলকাতা কংগ্রেসে প্রথম নারী স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন করেন।  ১৯২১ Ñ মহিলাদের মধ্যে চরকা জনপ্রিয় করে তোলার মাধ্যমে স্বরাজ্যের মূলমন্ত্র প্রচারের উদ্দেশ্যে ১৯২১ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের ভগ্নী উর্মিলা দেবী গড়ে তোলেন নারী কর্ম মন্দির।

Ñ উর্মিলা দেবী বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিদেশী দ্রব্য বর্জন করে কলকাতার রাস্তায় ফেরী করার অপরাধে গ্রেপ্তার হন। Ñ ১৯২১ সালে কবি কামিনী রায় ও লেডী অবলা বসুর নেতৃত্বে ভোটাধিকারের দাবিতে জনতম সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গড়ে ওঠে বঙ্গীয় নারী সমাজ। Ñ ভারতীয়দের ভোটাধিকার লাভ।  ১৯২২ Ñ ভারতে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে নারীরা রাস্তায় প্রথম মিছিল করেন। বহু নারী গ্রেপ্তার হন।

Ñ ভারতে মেয়েদের মধ্যে সাবিত্রী দেবীর প্রথম তিন মাসের জেল হয়। Ñ সুলতানা বেগম আইন বিষয়ে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।  ১৯২৩ Ñ লীলা রায় বাংলাদেশের ঢাকা শহরে নারী শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে দীপালি সংঘ নামক সংগঠন গড়ে তোলেন। এই সংঘের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ১২টি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুল এবং নারী শিক্ষা মন্দির ও শিক্ষা ভবন নামে দু’টি ইংরেজী বিদ্যালয় স্থাপিত হয়।  ১৯২৪ Ñ মহিলাদের মধ্যে দেশাত্মবোধ জাগ্রত করার উদ্দেশ্যে আশালতা সেন, সরমা গুপ্ত, সরযু বালা গুপ্ত প্রমুখ নারী নেত্রী ঢাকার গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি নামক সংগঠন গড়ে তোলেন।

সমিতির মহিলাগণ নিজেরাই খদ্দর কাপড়ের বোঝা কাঁধে নিয়ে ঘরে ঘরে খদ্দর বিক্রি করে স্বদেশী চেতনা প্রচার করতেন। Ñ নুরুন্নেসা খাতুন প্রথম মুসলিম মহিলা উপন্যাসিক রূপে আত্মপ্রকাশ করেন।  ১৯২৫ Ñ সর্বভারতীয় নারী সংগঠন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইম্যান ইন ইন্ডিয়া (ঘধঃরড়হধষ ঈড়ঁহপরষ ড়ভ ডড়সবহ রহ ওহফরধ-ঘঈডও) প্রতিষ্ঠালাভ।  ১৯২৬ Ñ মহিলা নেত্রী সরোজিনী নাইডু কংগ্রেসের সভাপতি হন। Ñ ন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইম্যান ইন ইন্ডিয়া (ঘঈডও) এর বঙ্গীয় শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়।

 ১৯২৭ Ñ মেয়েদের মধ্যে দেশপ্রেম প্রচারের জন্য নেতাজী সুভাষ বোসের মা প্রভাবতী বসুর তত্ত্বাবধানে গঠিত হয় মহিলা রাষ্ট্রীয় সংঘ গঠন। Ñ প্রথম বাঙালি মুসলমান ফজিলাতুন্নেসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এম.এস.সিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। Ñ নারীশিক্ষার প্রসার এবং সার্বজনীন ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার জন্য আনীত প্রস্তাবে বালিকাদের অন্তর্ভুক্তি করার ক্ষেত্রে বঙ্গীয় আইন পরিষদের সম্মতি আদায়ের উদ্দেশ্যে গঠিত হয় বেঙ্গল উইমেন্স এডুকেশন লীগ, বঙ্গীয় নারী শিক্ষা সম্মেলনের ফলশ্র“তিতে। Ñ অল ইন্ডিয়া উইমেন্স এডুকেশন কনফারেন্স প্রতিষ্ঠা। Ñ অন্যতম ভারতীয় নারী সংগঠন অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স (অওডঈ) প্রতিষ্ঠিত হয়।

 ১৯২৮ Ñ প্রভাবতী দাশগুপ্ত কলকাতা ও হাওড়ার ধাঙর (সুইপার) ও চটকল ধর্মঘটে নেতৃত্ব দেন। Ñ ঢাকার দিপালী সংঘের আদলে কলকাতায় ছাত্রীদের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন ছাত্রী সংঘ এর জন্ম। Ñ লতিকা ঘোষ কর্তৃক স্বেচ্ছাসেবিকা বাহিনী গঠন। Ñ অল ইন্ডিয়া উইমেন্স কনফারেন্স (অওডঈ) বঙ্গীয় শাখা প্রতিষ্ঠা।  ১৯২৯ Ñ বাংলার নারীরা ভোটাধিকার অর্জন করে।

Ñ সাহিত্য ক্ষেত্রে নারীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে সওগাত এর মহিলা সংখ্যা প্রকাশ। প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, ডাঃ সুহাসিনী মুখার্জি, চারুবালা দাস গুপ্ত প্রভৃতি নারীর নেতৃত্বে বাংলার বিপ্লবী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেস নেত্রী লতিফা বসু এতে সভাপতিত্ব করেন এবং সম্মেলনে পুরুষদের প্রবেশাধিকার না থাকায় বেশ কিছু বোরখা পরিহিতা মুসলিম নারীও ঐ সম্মেলনে যোগ দেয়।  ১৯৩০ Ñ এপ্রিল ১৩-আশালতা সেন, সরমা গুপ্তা, ঊষাবালা গুহ, প্রভৃতি নারীর নেতৃত্বে ঢাকায় গঠিত সত্যাগ্রহী সেবিকা দল নোয়াখালী গিয়ে বৃটিশ সরকারের লবন আইন অমান্য করেন। Ñ ঢাকা শহরে এ আন্দোলন করতে গিয়ে সুনীতি বুস, কামিনী বুস, প্রতিভা সেন প্রমুখ নেত্রী কারাদন্ডিত হন।

Ñ ১৮-২২ এপ্রিল জালালাবাদ পাহাড় কর্ণেল ডালাস ডিমথের বিরুদ্ধে তিন দিন ব্যাপী যুদ্ধে কল্পনা দত্ত অনুপম বন্ধুক চালোনার স্বাক্ষর রাখেন।  ১৯৩২ Ñ ২৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে ইউরোপিয়ান ক্লাব সার্থক ভাবে দখলের নেতৃত্ব প্রদানকারী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার পুলিশের হাতে ধরা না পড়ার জন্য পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। Ñ নারী ও বালিকা পাচার এবং যৌন শোষণ সংক্রান্ত সমস্যা মোকাবেলা করতে বঙ্গীয় আইনসভা কর্তৃক আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় অল বেঙ্গল উইমেন্স ইউনিয়ন Ñ ৯ ই ডিসেম্বর বাংলার মুসলিম নারী জাগরণের অদ্রগূত রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেনের মৃত্যু।  ১৯৩৩ Ñ ১৩ ই মার্চ কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় নারী সত্যাগ্রহ সমিতি। মদপান Ñ নিবারণ, বিলাতি দ্রব্য বর্জন, সভা সমাবেশ ইত্যাদি ছিল এই সমিতির কাজ।

 ১৯৩৭ Ñ হেমপ্রভা মজুমদার বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভায় নির্বাচিত হন।  ১৯৩৮ Ñ মাহমুদা খাতুন মহিলা কবি রূপে প্রথম সনেট রচনা করেন।  ১৯৩৯ Ñ মহিলাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলিম নারীরা বেগম সারা তৈফুর-এর নেতৃত্বে প্রকাশ্যে ঈদের জামাতে অংশগ্রহণ করেন। শত অপপ্রচার উপেক্ষা করে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ-এর ইমামতিতে কার্জন হলের পশ্চিমের মাঠে সলিমুল্লাহ ও ফজলুল হক হলের ছাত্রদের সঙ্গে একটা চাদরের পর্দার পেছনে ঢাকার মুসলিম মহিলারা ঈদের জামাতে শরীক হন। Ñ লায়লা আরজুমান্দ বানু প্রথম মুসলিম মহিলা বেতার শিল্পী হিসেবে গান শুরু করেন।

 ১৯৪০ Ñ মুসলিম মহিলা নেত্রী সাকিনা বেগম কমিউনিস্ট পার্টির সমর্থনে কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মুসলিম মহিলা এ্যাডভোকেট। তিনি কলকাতা ধাঙড় ধর্মঘটের নেতৃত্ব দেন।  ১৯৪২ Ñ ২য় বিশ্বযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নেত্রী স্থানীয় নারীদের নেতৃত্বে গঠিত হয় বঙ্গীয় মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি।  ১৯৪৩ Ñ বঙ্গীয় প্রাদেশিক মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি গঠিত।

 ১৯৪৪ Ñ মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি আইন সংস্কারের আন্দোলন শুরু করে। পাপ ব্যবসা নিরোধ বিল(ওসসড়ৎধষ ঞৎধভভরপ ইরষষ)সংশোধনী গৃহীত হয়।  ১৯৩৬-৪৬ Ñ যশোর, দিনাজপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ২৪ পরগনাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ও দক্ষিণ ভারতের তেলেঙ্গানায় বিশাল সংখ্যক নারীর বিভিন্ন স্থানীয় কৃষক আন্দোলনে সাহসী অংশগ্রহণ।  ১৯৪৬ Ñ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা আন্দোলনে ৫০০ নারীর লাহোরের রাস্তায় মিছিল।  ১৯৪৮ Ñ ১৫ নভেম্বর তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের শিক্ষা সংকোচন নীতির প্রতিবাদে ৫০০ ছাত্রীর ধর্মঘট।

Ñ ললি খান রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবিতে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধি হন। রাষ্ট্রভাষা বাংলা দাবিতে সিলেটের মহিলা মুসলিম লীগ জেলা কমিটির সভানেত্রী জোবেদা খাতুন চৌধুরী, সহ সভানেত্রী সৈয়দা সাহেরা বানু, সৈয়দ নাজিবুন্নেসা খাতুন, সিলেটের রাজকীয় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষয়িত্রী রাবেয়া খাতুন প্রমুখের নেতৃত্বে একটি মহিলা দল তৎকালীন মন্ত্রী আব্দুর রব নিশতা-এর নিকট স্মারকলিপি পেশ করেন।  ১৯৫০ Ñ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট নেত্রী ইলা মিত্রের নেতৃত্বে রাজশাহীর নাচোল সাঁওতাল বিদ্রোহের শুরু। পরবর্তীতে ধরা পরলে পুলিশ তার উপর অকথ্য নির্মম অত্যাচার চালায়। Ñ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের পৃষ্ঠপোষকতায় ঢাকায় বেগম পত্রিকা প্রকাশিত হয়।

 ১৯৫১ Ñ বকেয়া বেতন দাবি, ঔষধ সরবরাহ প্রভৃতির দাবিতে নার্সদের জঙ্গী আন্দোলন।  ১৯৫২ Ñ একুশে ফেব্র“য়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সভায় যোগদান করে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙ্গে এবং ১৪৪ ধারা অমান্য করে মেয়েদের প্রথম মিছিল। এতে স্কুলের মেয়েদের সংখ্যাই ছিল অধিক। ডাঃ শাফীয়া খাতুন, ডাঃ হালিমা খাতুন, সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্চু, ফজিলাতুন্নেসা, জুলেখা, নূরী, সারা তৈফুর প্রমুখ নারী এতে নেতৃত্ব দেন। পুলিশের লাঠি চার্জে সুফিয়া ইব্রাহীম, রওশন আরা বাচ্চুসহ প্রায় ০৮ জন মেয়ে গুরুতর আহত হয়।

বহুসংখ্যক মেয়েকে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কোর্টে নাদেরা বেগম ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে জুতো ছুঁড়ে মারেন।  ১৯৫৪ Ñ যুক্তফন্ট্রের প্রার্থী হিসেবে আইন পরিষদে নূরজাহান মোর্শেদ, দৌলতুন্নো খাতুন, বদরুন্নেসা আহমেদ, আমেনা বেগম, সেলিনা বানু, রাজিয়া বানু, তফতুন্নেসা, মেহেরুন্নেসা খাতুন প্রমুখ সহ ১৪ জন নির্বাচনে বিজয়ী হন।  ১৯৫৬ Ñ বাংলার প্রথম মুসলিম চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রূপে জহরৎ আরা মুখ ও মুখোশ ছবিতে অভিনয় করেন।  ১৯৬৪ Ñ টিভিতে ফেরদৌসী রহমান প্রথম মহিলা শিল্পী রূপে কাজ শুরু করেন।

Ñ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফাতেমা জিন্নাহ পদপ্রার্থী হন।  ১৯৬৫ Ñ বাংলার প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র পরিচালক রূপে রেবেকা ছবি পরিচালনা করেন।  ১৯৬৭ Ñ সুমিতা দেবী বাংলার প্রথম মহিলা চলচ্চিত্র প্রযোজক রূপে ছবি প্রযোজনা করেন।  ১৯৬৮ Ñ বাংলায় প্রথম আত্মজীবনী রচয়িতা রাম সুন্দরী দেবীর (১৮০৯- ১৯০০) গ্রন্থ আমার জীবন আবিস্কৃত হয়।  ১৯৬৯ Ñ গণআন্দোলনে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও ছাত্রী অংশগ্রহণ করে এবং পুলিশ ছাত্রীদের উপর লাঠিচার্জ করে।

Ñ ২৪শে জানুয়ারী হরতালের সময় ছাত্রী তরু আহমেদ কালো পতাকা নিয়ে রাস্তায় পুলিশ বেষ্টনী ভেদ করে এবং পরে হাজার হাজার মানুষ ঐ মিছিলে অংশগ্রহণ করে। Ñ পুলিশের গুলিতে নাখালপাড়ায় আনোয়ারা বেগমের মৃত্যু।  ১৯৭০ Ñ মাওলানা ভাসানীর ডাকে পাকশীর কৃষক সম্মেলনে ৫ হাজারেরও বেশি কৃষক নারী মনিকা বেগম, ফুরকুনি ভাবী(আম্বিয়া) প্রমুখের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাধীনতার দাবী তোলেন।  ১৯৭১ Ñ মুক্তিযুদ্ধে নারী নানাভাবে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন, ২ লক্ষ বাঙালি নারী ধর্ষিতা হন। জিন্নাত আরা, শিরিন বানু, মিতিল, তারামন বিবি বীরপ্রতীকের মতো নারীদের সশস্ত্র অংশগ্রহণ।

 ১৯৭২ Ñ স্বাধীন বাংলাদেশের মূল সংবিধানে অনুচ্ছেদ-২৭ এ সর্বস্তরে নারী- পুরুষের সমতা ঘোষণা এবং অনুচ্ছেদ ৬৫(৩)-এ নারীর রাজনৈতিক সমতা অর্জনের লক্ষ্যে আসন সংরক্ষণের ঘোষণা।  ১৯৭৪ Ñ মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ রেজিষ্ট্রিকরণ আইন প্রণয়ন।  ১৯৭৫ Ñ মুসলিম বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদ রেজিষ্ট্রির বিধিমালা প্রণয়ন।  ১৯৮০ Ñ জিয়াউর রহমান কর্তৃক শাফিয়া খাতুনের পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ প্রদান। Ñ ২৬শে জুন, তৎকালীন আইনসভার স্পীকার মির্জা গোলাম হাফিজের নিকট ১৭ হাজার মহিলার স্বাক্ষরসহ যৌতুক বিরোধী আইন প্রণয়নের দাবী পেশ।

Ñ ২৬শে ডিসেম্বর, যৌতুকবিরোধী আইন পেশ।  ১৯৮৩ Ñ কুখ্যাত মজিদ খান শিক্ষানীতি বিরোধী ছাত্র গণ সংগ্রামে দীপালি সাহার মৃত্যু।  ১৯৮৪ Ñ ১২ ফেব্র“য়ারি, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ২,১৩(ক),১৬ (গ) ধারায় সংরক্ষণ সাপেক্ষে সিডো (ঈঊউঅড) সনদে স্বাক্ষর দান।  ১৯৮৫ Ñ মহিলা পরিষদের তীব্র আন্দোলনের মুখে এসিড নিক্ষেপ বিরোধী অধ্যাদেশ ১৯৮৫ প্রবর্তন।  ১৯৮৫-১৯৯৪ Ñ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের অবিস্মরণীয় নেতৃত্ব।

 ১৯৮০-১৯৯০ Ñ গোটা দশকে দেশের দুই প্রধান দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার সফল আত্মপ্রকাশ ও আত্মপ্রতিষ্ঠা।  ১৯৮৮ Ñ এরশাদ সরকার রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিল পাশ করানোর প্রেক্ষিতে নারীপক্ষ কর্তৃক মামলা দায়ের।  ১৯৯০ Ñ পরিবেশবাদী চিংড়ীঘেরে বিরোধী আন্দোলনে চিংড়ি ঘেড়ের নারী শ্রমিক করুণাময়ী সর্দারের মৃত্যু।  ১৯৯১ Ñ কতিপয় স্বার্থান্বেষী চক্র কর্তৃক টানবাজারের পতিতালয় উচ্ছেদ অভিযান-এর বিরুদ্ধে যৌন কর্মীদের প্রাণপন লড়াই, যৌন কর্মীদের নেত্রী রীতা খানমের সবাক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব। Ñ দীর্ঘ নয় বছরের স্বৈরশাসনের অবসানের পর তত্ত্ববধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী ও শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী নির্বাচিত।

 ১৯৯৪-৯৫ Ñ বাংলাদেশী লেখিকা তসলিমা নাসরীনের সুইডেনের ওলফ পাসে শান্তি পুরুষ্কার লাভ বিশ্বব্যাপী এই বাংলাদেশী তরুণী নন্দিত-নিন্দিত- বিতর্কিত হয়ে ওঠা।  ১৯৯৬ Ñ ১২ জুন অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী ও খালেদা জিয়া বিরোধী দলীয় নেত্রী নির্বাচিত। Ñ জাতিসংঘ কমিটির (টঘঈঊউঅড ঈড়সসরঃবব) প্রথম এশিয় মহিলা হিসেবে সালমা খান চেয়ারপারসন নির্বাচিত। Ñ বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র মহিলা তদন্ত কেন্দ্র ঢাকার মিরপুরে স্থাপিত।  ১৯৯৭ Ñ ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো ১৪ দফা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা ঘোষিত।

[হাজার বছর ধরে নারীদের বাঁধন ছেঁড়ার যে বহুমাত্রিক প্রয়াস তার একটি অসম্পূর্ণ নির্ঘন্ট এই কালপঞ্জি। সূত্রঃ বাংলার নারী সংগ্রামী ঐতিহ্যের অনুসন্ধান-অদিতি ফাল্গুনী

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।