আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণমাধ্যমে নারীর উপস্থিতি, নারীর উপস্থাপন



:: মহিলা, শিশু ও প্রতিবন্ধিদের জন্য ৯টি সিট বরাদ্দ:: পাবলিক বাসে এখন এই কথা লেখা আছে। অন্য অনেক কিছুর মতোই মানা হয় না, লিখে রেখেই দায়িত্ব শেষ এই প্রকল্পের। বিষয় সেটি না। মহিলা/শিশু ও প্রতিবন্ধিদের এক কাতারে ফেলে দেয়াটাই প্রেেশ্নর জায়গা। এদের শুধু বরাদ্দ দিতে হয়।

পুরুষ দিবে আর মহিলা/শিশু বা প্রতিবন্ধি যারা বা যারা এদের মতো তারা নিবেন। না নিলে? আপনি ব্যাটা ব্যাটা। এখানে যা কিছু লেখা হবে তাতে করে নারী সাংবাদিক হিসেবে তোপের মুখে পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। সেটা মাথায় নিয়েই লিখতে বসা। তোপের মুখে পড়বো গণমাধ্যমে কর্তব্যরত নারী কর্মীদেরই।

বিষয়গুলো উপস্থাপন এবং বোঝাপড়া শেষ করার তাগিদ থেকেই সেই চ্যালেঞ্জটা নেয়ার সাহস করা। আমার প্রথম পর্যবেণ হলো, গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে নারীর উপস্থিতি বর্তমানে সংখ্যাগতভাবে বাড়লেও গুনগতভাবে বাড়েনি। গুনগতভাবে নারীর উপস্থিতি না বেড়ে ওঠা বা বনসাই করে রাখার বড় কাজটা পুরুষরা করছেন বটে তবে নারীরা যে অজান্তে নিজেরাও সেই কাজে সাই দিচ্ছেন সেটা জানেন না অনেকে। রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র জুড়ে নারী সাংবাদিকদের যে আনাগোনা তাকে অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখা প্রয়োজন। প্রতিবছর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা পড়ে ন্যূনতম দুইশত শিার্থী বের হচ্ছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বাদ দিলাম। আর তাছাড়া আছে অনেকের পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা বেছে নেয়া এবং বিভিন্ন ছোট খাটো দোকানে গিয়ে তার অ-আ-ক-খ শেখা। এর পরিমানও কম না। এতো বিপুল সংখ্যক শিার্থীর মধ্যে মেয়ে শিার্থীদের ইচ্ছের কথা জানতে চাইলে খুব কমই পাওয়া যাবে যারা বলবেন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করবো। বেশিরভাগই হতে চায় সংবাদ পাঠক, আর জে (রেডিও জকি: যারা রেডিওতে উপস্থাপনা করে থাকেন), ভিজে (যারা টেলিভিশনে উপস্থাপনা করেন) কেউ কেউ হয়তো কালেভদ্রে রিপোর্টার হতে চান তবে অবশ্যই টেলিভিশনের।

অর্থনীতিতে প্রধান বা কর্তা হবে মেয়েরা এমন ভাবনা এখনো বাবতে কস্ট হয় আমাদের। ফলে সহকারী হয়ে থাকলেই যেহেতু হয় সেহেতু মূল কাজের জায়গাগুলো দখলের জন্য নিজেদের প্রস্তুত না করে পরিচিতি লাভটাই মূখ্য হয়ে ওঠে। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতা কখনোই তারজন্য মূখ্য জায়গা হতে পারেনি। গণমাধ্যমে নারীর উপস্থাপন নিয়ে বর্তমানে বেশকিছু গবেষণা হয়েছে, হচ্ছে। জেণ্ডার এ্যণ্ড মিডিয়া ফোরামসহ নারী সংগঠনগুলো পর্যবেকের কাজ করছেন।

পাশাপাশি ব্যক্তিক পর্যায়েও গবেষণাধর্মী কাজ হচ্ছে। ফলে এই জায়গাটায় আমি খুব ছোট করেই উপসংহার টানবো। আমার দ্বিতীয় পর্যবেণ হলো, গণমাধ্যম কোন মহৎ জায়গা যেমন না, সাংবাদিকতাও মহান কোন পেশা না। ফলে সমাজের চোখকে পাল্টানোর কোন উদ্দেশ্য গণমাধ্যমের কোনদিন ছিলো না, এখনো নেই। বরং নারীকে একমাত্র পণ্য আকারেই উপস্থাপনে সেই শুরুর সময় থেকেই তাদের আগ্রহ দেখা যায়।

আরেকভাবে বললে, এখানে নারীকে ঠিক সেভাবেই উপস্থাপন করা হয় যে দেশের ‘পুরুষ’ তাকে যেভাবে দেখতে অভ্যস্ত। (‘পুরুষ চোখ’ বলতে আমি সেই চোখকে বুঝিয়েছি যা ‘পুরুষের’ আদলে তৈরি। এমন চোখের অধিকারী একজন নারীও হতে পারেন। এবং বলতে দ্বিধা নেই ‘পুরুষ চোখের’ অধিকারী নারীর সংখ্যা কোনভাবেই কম না)। এই গণমাধ্যম যখন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তখন নারী পণ্য।

এবং বিক্রয়যোগ্য পণ্য। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় নারী একজন নারী যদি মেধাশক্তি দিয়ে তার জায়গা করে নিতে পারে তাহলে পুরুষ সাংবাদিকরা তাকে সুযোগসন্ধানী হিসেবে দেখে থাকে। এটাকে নিছক মন্তব্য আকারে পাঠ না করার অনুরোধ থাকবে। কোন বিটে কাজ করবে নারী সেেেত্র নারী-শিশু-প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাজই ধরিয়ে দেয়া হয়, সংবাদপত্রে। টেলিভিশনে অন্য কাজগুলো করলেও সেটা একটা ছকে ফেলে দেয়া হয়।

টেলিভিশন সাংবাদিকতায় গাড়ির সুবিধা, সাথে একজন ‘পুরুষ’ ক্যামেরাম্যান থাকায় নারীর জন্য সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর েেত্র স্টেশনের বাইরে হুট করে নারীকে এ্যসাইন করা হয়না (ব্যতিক্রম যদি শুরুর দিকে সাংবাদিকদের ধরি তাহলে বলা দরকার সেই নারী সাংবাদিকরাও নিশ্চয় হেনস্তা হন এবং ব্যতিক্রম দিয়ে পুরো বিষয়টা সংজ্ঞায়ন করা সম্ভব না) সদ্য শুরু করা পুরুষ সাংবাদিকরা যখন দীর্ঘদিন কাজ করা নারী সাংবাদিকদের ছাড়িয়ে যান তখন কি কেবলই গুণগত কর্মমতা দিয়ে সেটা বিবেচনা করার কথা ভাববো আমরা? নারী-পুরুষের শেয়ারিং এর জায়গা এক না হওয়ায় স্টেশনের মধ্যে কিছু সমস্যা হতেই পারে। কাজের ফাঁকে একসাথে চা-সিগারেট খাওয়া, কিংবা কারো বাসায় রাতভর আড্ডায় নারীরা যোগ দিতে না পারায় সহকর্মীদের মধ্যে যে ইনফরমাল সম্পর্ক সেটা নাীতে পুরুষে খুব কম হয়। এর বাইরে কোন নারী যদি বেরিয়ে এসে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে চলাফেরায় অভ্যস্ত হয়ে ওঠে তখন অন্য নারী সাংবাদিক এবং যে পুরুষ সহকর্মীদের সাথে সে মিশছিলো তাদের দ্বারাও ভিন্নভাবে চিহ্নিত হয়। (ভেবে দেখুন আপনার সহকর্মী যে কিনা আপনার সামনে খুব ভালো মানুষ সে আপনার আড়ালে আপনাকে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করছেন। তার মানে তিনি যখন আপনার সামনে আসেন তখন আপনাকে সেইভাবেই, সেই ইঙ্গিত করেন যে বিষয়গুলো নিয়ে, দেখেন।

যে পুরুষ সহকর্মীর সাথে চলাফেরা করছেন তার ভিতর এ ধরনের নোংরা মন্তব্য জায়গা পাওয়ার কারণ কি হতে পারে? যেটা দাঁড়ায় আসলে সেটা হলো: পুরুষ সহকর্মীটিকে সমাজে বাস করতে হয়। সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণার সাথে বোঝাপড়া শেষ না করেই তিনি নারী সহকর্মীর সাথে মিশতে শুরু করেছিলেন। ফলত সমাজের কেউ যখন তাকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় তখন সে আর উত্তর করতে পারে না। ফলে নিজের গা বাঁচানোর জন্য নারী কর্মীটি সম্পর্কে এমন মন্তব্য ছুঁড়ে দেয় যাতে করে সমাজের আলোচনার ফোকাসটা তার (পুরুষ সহকর্মীটি) দিক থেকে সরে গিয়ে নারী কর্মীটির ওপর পড়ে। এবং তারা সফল হন।

কেননা সমাজে প্রচলিত অনেক ধারণার একটি হলো: ছেলেরাতো একটু আধটু দুস্টুমি করবেই, মেয়েটা কেনো সায় দিবে, তার তো নিজেকে আড়াল করে রাখা উচিত ছিলো। ফলে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এই বিষয়টি ফয়সালা করা যে জরুরি সেটা অনুধাবন করতে হবে। কেনো নারীদের ছোট করা হচ্ছে বলে কেউ যদি হই হই করে ওঠেন তাদের বিনীত অনুরোধ নিজে যে জায়গা পেয়েছেন সেটা কতোজন পায় এটা না ভেবে আরো বড় জায়গা আপনার প্রাপ্য ছিলো কেবল নারী হওয়ায় আপনি বঞ্চিত হয়েছেন সেটা বুঝতে চেষ্টা করুন। এতে করে যারা একেবারেই নবিশ তারা এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাটা অন্তত পাবে নাতো সমাজের কাঁধে চড়ে তারা সেই দ্বিতীয় শ্রেণীর প্রথম সারির নাগরিক হিসেবেই খুশি থাকবে আর আমরা যারা বিষয়গুলো বুঝি বলে দাবি করবো তারা এক ঘরে হয়ে থাকবো। এক ঘরে হয়ে থাকতে আমার মোটেই আপত্তি নেই।

কিন্তু বিষয়গুলো সমাধান না হয়েই থেকে যাওয়াটা সমস্যাজনক। ভেবে দেখবেন কি, এতো নারীকর্মীকে প্রশিণ দেয়ার সময় যে স্বপ্ন দেখানো হয় তার কতোটুকু সফলতার জায়গায় নিয়ে যাওয়া গেছে? প্রশ্নটা তাদের জন্য যারা এই স্বপ্নগুলো দেখায় আর আমরা যারা এর ভিতর বছরের পর বছর কাটাই। যারা এরমধ্যে বাস করছি তারা কিন্তু এর ভিতরের বিষয়গুলো স্পষ্ট বুঝেও যারা নতুন চোখ নিয়ে এসেছেন তাদের চোখে এমন চশমা এটে দিচ্ছি যাতে করে ভালো না দেখে ভুল দেখতে সহায়ক হবে। প্রশিণ দিতে এসে কেউ যদি বলেন ১০ বছর পর মিডিয়ায় আর পুরুষ দেখা যাবে না, নারীদের রাজস্বই শেষ কথা হবে তখন কি তিনি ভুলে যান নিউজরুমে এমনও কথা হয় যে ‘আর কিছু নারী হলে মন্দ হয় না। কাজে উদ্বুদ্ধ হতে স্মার্ট নারী আশেপাশে থাকা দরকার।

’ আজকাল যে নানাবিধ দোকান খোলা হয়েছে সেখানে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার উচ্চমার্গীয় মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে পড়িয়ে থাকেন। কিন্তু তারা কি এই জায়গার উপযোগী করে তাদের গড়ে তোলেন? হয়তো রিপোর্ট কিভাবে করতে হয় শিখিয়ে দিলেন। তাহলেই কি রিপোর্টার হওয়া যায়? যদি যায় তাহলে কথা নেই। কিন্তু আমার মনে হয় যায় না তাই আমার কয়েকটা কথা আছে। এই যে মানুষগুলোকে শুধু রিপোর্টের টেকনিক্যাল দিক শিখিয়ে বলে দেয়া হয় তোমরা কাজের উপযোগী হয়েছো।

এটা কতোটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে? মুশকিলের বিষয় হলো তারা প্রশিণ নেয়ার পরের দিনই যদি নিজেদের রিপোর্টার ভাবতে শুরু করেন তাহলে তারা পরবর্তীতে কতোটা শেখার চেষ্টা করবেন আমার সন্দেহ আছে। আমি এমন প্রশি নেয়া কয়েকজনের কাছে একটি প্রশ্ন রেখেছিলাম: সাংবাদিক আর রিপোর্টারের পার্থক্য কি? তারা বলতে পারেননি। এখানে আপনি বলতে পারেন, সবাই সব পারবে এমন কোন কথা নাই। ঘটনা সত্য। কিন্তু আমার প্রশ্ন সেই নারী সাংবাদিকদের নিয়ে।

তাদের গুণগত অবস্থান নিয়ে। কেননা নারী সাংবাদিকরা পোশাকে আশাকে এবং কাজের ধরণে বিষয়টিকে সাংবাদিকতা থেকে সরিয়ে পারফর্মিং এর দিকে নিয়ে গিয়েছেন। (আমি সবাইকে ঢালাওভাবে বলছি না। তবে বড় অংশের পরিস্থিতি যে এটাই সেটা কিন্তু দাবি করছি। নিউজরুম থেকে বেরিয়ে এবার সাজরুমে যাই: শাড়ি পরে খবর পড়া এমনকি অনুষ্ঠান উপস্থাপনার েেত্রও শাড়ি পরানো হয়।

তাই বলে আমি কিন্তু সেইসব পোশাক পরতে উদ্বুদ্ধ করছি না যেটা আমাদের সংস্কৃতিকে বুড়ো আঙুল দেখায়। বেসরকারি চ্যানেলগুলোতে ব্যাণ্ড মিউজিক এর অনুষ্ঠানে যে পোশাক পরানো হয় সেটাও আপত্তিকর। ভয়াবহ আপত্তিকর। কেউ যখন তার নিজের পরিসরে ঘুরে বেড়ায় তখন সে নিজের রুচির সাথে মিলিয়ে যেটা পরতে পারবে যখন সে কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাতে যাচ্ছে তখন অবশ্যই মনে রাখা দরকার পরিবারের সবাই একসাথে বসেই টিভি দেখা আমাদের দেশের প্রায় নিয়মই বলা যায়। অধিকাংশ বাড়িতে এখন পর্যন্ত টেলিভিশনের সংখ্যা একটিই, একাধিক নয়।

বিষয় এখানে দুইটা একজন নারীকে শাড়ির সৌন্দর্যে বেঁধে রাখা আর আরেকদিকে এমন পোশাক পরানো যা আমাদের চোখ দেখতে অভ্যস্ত না। উপস্থাপক হিসেবে পুরুষ এর উপস্থিতি খুবই কম, যারা আছেন তাদের দেখে মনে হয় না যে উপস্থাপনার জন্য তারা বিশেষ কোন মনোযোগ দিয়ে সেজেছেন। কিন্তু সেখানেই একজন নারীকে হাজির করুন। দেখবেন কতোরকম সাজে তাকে সাজানো যায়। কিন্তু আপনি কি বিশ্বাস করেন, যখন কোন একজন উপস্থাপক অপরিহার্য হয়ে যান তখন তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবেই তাকে স্বাধীনতা দেয়ার কথা প্রযোজক ভাবেন? ফলে তখন তিনি কোনভাবেই তার রুচির বাইরের পোশাক পরতে বাধ্য হবেন না।

কিংবা শাড়ি পড়লেও আপনাকে পুতুল সাজিয়ে বসাবেন না। পোশাকের েেত্র একেবারেই ভিন্ন উপস্থাপনা একুশে বিজনেস এ পাওয়া যায়। সিএনএন বা বিবিসির ঢঙে উপস্থাপন করতে গিয়ে কোর্ট পরা হাফ সার্ট পরা মেয়েদের স্ক্রিনে দেখা গেছে। এরাই কিন্তু আবার যখন সংবাদ পাঠে বসেছেন তখন সেই শাড়ি পরিহিত একগাদা মেক-আপ করে বসেছেন। প্রশ্ন হলো, একুশে বিজনেস এ কেনো শাড়ি না পরিয়ে অন্য পোশাক পরালো? কারনটা পরিস্কার।

আমাদের নারীদের বিজনেজ কমিউনিটি যেভাবে দেখতে এবং দেখাতে চায় সেখানে এই ধাঁচটাই স্বাভাবিক। এই প্রয়োজনের কথা মনে রাখলে অন্য কোন বিশ্লেষণে যেতে হবে না। নারীদের জন্য যখন নারী ও শিশু বিট বংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে নারীর অবস্থান নিয়ে সমালোচনা করার মতো যথেস্ট সময় পার হয়েছে বলে আমি মনে করি না। সেহেতু প্রথমত এখন শুধু পর্যবেণ করে বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করে রাখাটাই কাজ। দ্বিতীয়ত, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সবাই সব কাজ পারের মতো করে এ্যসাইনমেন্ট কাভার করতে দেখা যায়।

ফলে এদের জন্য এই অংশটুকুতে বলার কিছু নেই। সাদামাটাভাবে এটা বলা যায় যে, সংবাদপত্রের নারীকর্মী যারা আছেন তাদের প্রায় সবাই নারী ও শিশু বিটে কাজ করেন। বা নারী পাতা, শিশু পাতা বা ফিচার বা সাজঘর বা রান্না বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেন। অন্য কোন বিষয়ে নারীদের কাজ করতে দেয়া হয় না। সমমানের কোন একজন নারীকর্মী এবং একজন পুরুষকর্মীর জন্য যদি দুইটি বিট থাকে।

নারী ও শিা। অবধারিতভাবে অফিস থেকে নারীকে নারী বিটে দেয়া হবে। কেউ যদি সেটা করতে অস্বীকৃতি জানান তাহলে তাকে বুঝানো হয় কেনো এই বিটে কাজ করা তারজন্য সহজ হবে, যদ্রি সে কাজে নামার সময় সহজ সাংবাদিকতা করতে নামেননি। যে জায়গা থেকে নারীকে এই পর্যায়ে রাখা হয় ঠিক সে কারনেই আমাদের দেশের মিডিয়াগুলোর নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নারীর উপস্থিতি একেবারেই নেই। (আবারো মনে করিয়ে দিই ব্যতিক্রম উদাহরণ হিসেবে গণণা করবেন না।

) পুরো সিস্টেমটা দাঁড়িয়ে গেছে। এর ভিত নড়িয়ে না দিলে বানিয়ে ফেলা একটা দালান ওপর থেকে ভেঙে পড়লেও আবার গজাবার রাস্তা তৈরি হয়ে থাকে। একটা গল্প বলি। একটা সংগঠন ঠিক করলো জাতীয় দিবসগুলো নিয়ে পত্রিকাগুলো পোশাক বিক্রির পসার সাজায় সেটাকে ব্যঙ্গ করা দরকার। কোন এক ২১শে ফেব্র“য়ারী ধরে পুরো পত্রিকায় কি ধরনের পোশাক এ দিনে পরা উচিৎ সেই অংশগুলো কেটে তারা নিজেদের মতো ব্যাঙ্গাÍক ক্যাপশন দেন।

কিন্তু প্রদর্শনীতে আসা অনেক মেয়েই সেই সুরটার দিকে কান না দিয়ে প্রদর্শনীর কোন শাড়ি-জামা-পাঞ্জাবিগুলো কোথায় পাওয়া যাবে, কাকে কোনটাতে মানাবে এই বিষয়গুলোতেই ঢুকে পড়তে দেখা গেলো। ওই যে আগে একটা ব্যাঙ্গাÍক প্রদর্শনীর কথা বললাম। আয়োজকদের উদ্দেশ্য সেদিন কতোটা সফল তা নিয়ে সন্দেহও যদি করি তাহলে তারও আগে প্রশ্ন করা জরুরি: এই ব্যর্থতা নিয়ে কি করা যেতে পারে। এই উদ্যোগ সে অর্থে সফল হলো না তাইবলে কি আমরা আর কথা বলবো না? এধরনের আর কোন প্রশ্ন উত্থাপন করবো না? আবারো করবো। টেলিভিশনে যেমন এক জিনিষ দশবার দেখিয়ে হালাল করে ফেলা হয়, আপনি দেখবেন না দেখা ঠিক হবে না বা দেখতে ইচ্ছে করছে না ভেবেও যেমন দেখতে থাকেন তেমনই উল্টা পাশ থেকেও আওয়াজ আসতে থাকতে হবে।

এবং সম্মিলিত আওয়াজ: মেংে ফিরে দেখো, যেটুকু এসেছো হেটে, সে পখ কেউ মসৃন করে রেখে যায়নি, সামনে যাবে যতোটা সেটাও মসৃন না। যেখানে দাঁড়িয়ে আছো সেটাকেই যদি গন্তব্য ভাবে তাহলে এখানেই থাকতে হবে ঠিক এভাবেই। ঠাঁই দাঁড়িয়ে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.