আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কামারুজ্জামানের চিঠি ও জামায়াত রিফর্মের ইশতিহার

একটি আলোর কণা থেকে লক্ষ প্রদীপ জ্বলে- একটি মানুষ মানুষ হলে বিশ্ব ভুবন দোলে

কারাগার থেকে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামান চিঠিটি কালের কন্ঠে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই এর সত্যতা খুঁজার চেষ্টা করছিলাম। যদিও এরকম একটি চিঠি অপ্রত্যাশিত নয় তার কাছ থেকে। কেননা জামায়াতের শুরাতে চিন্তাভাবনা করে যে কয়জন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম,যাকে অনেকেই জামায়াতের বুদ্ধিজীবি বলে চিনেন। যাক অবশেষে জামায়াতের আরেক বুদ্ধিজীবি জনাব শাহ আব্দুল হান্নান এর মন্তব্যে নিশ্চিত হওয়া গেল। শাহ আবদুল হান্নান লিখেছেন : Qamruzzaman has given his views in a private letter. Those who have circulated to others have done wrong. I feel that Jamaat is doing well now. The present leadership is quite efficient. Change in Jamaat is a matter for the party.They can accept some part of Mr Qamruzzaman's view or may not.It is the privilege of the party and its' Shura. Enemies will try to capitalize on this letter but Jamaat can hardly be harmed in this manner.Jamaat should not feel any worry on this. Shah Abdul Hannan (সোনার বাংলাদেশ ব্লগ, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১১; রাত ০৮:৩৫) জনাব কামারুজ্জামানের একটি কথাও ফেলনা নয়।

তার চিঠি নিয়ে বিভিন্ন মহলে অনেক হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে। কিন্তু যতই হিসেব নিকাশ হউকনা কেন এর কোন ইফেক্ট কি পরবে দেশের সবচেয়ে পুরাতন এই দলটির কর্মসুচী,কর্মপদ্ধতি ও কর্মকৌশলে? না,সুচক উত্তর মনে নিয়েই এই লেখার সুত্রপাত। সংগঠনবাদীদের উদ্ধত্যপূর্ণ কথাই বলে দেয় কোন পর্যালোচনাই তারা কেয়ার করেন না। আজহারুল ইসলাম বলেন, 'কারাগারে যাঁরা আছেন, তাঁরা দল পরিচালনার জন্য বাইরের নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই।

কেউ যদি এমন কিছু করার চেষ্টা করেন তা হবে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র। '। জামায়াতের জন্য এটা এক ধরনের বিল্ডিং ব্লক। যে বা যারাই প্রচলিত ধারার বাহিরে কথা বলেছে তাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং বের হয়ে যেতে হয়েছে,এমনকি সেটা আমীর(দলীয় প্রধান) হয়েও!! কামারুজ্জামান জেলে যাওয়ার অনেক আগে থেকেই দলের রিফর্মের জন্য কাজ শুরু করেছিলেন। তখনি তাকে সুযোগ সন্ধানী বলা হয়েছে, সেখানে ষড়যন্ত্রকারী বলা আর নতুন কিসের? এতেও আশ্চার্য্য হবার কিছু থাকবেনা যদি তাকে সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করা হয় কারন জামায়াতের ইতিহাসে এরকম ঘটনা নতুন নয়।

এটাকে অনেকে অবশ্য জামায়াতের সাংগঠনিক স্ট্রেন্থই মনে করেন। হয়তবা,কিন্তু এই স্ট্রেন্থ বাংলাদেশে জামায়াতকে পাওয়ার পলিটিকস এ দাবার ঘুটি'র মত ব্যবহার হওয়া ছাড়া বেশি কিছু দিয়েছে বলে পলিটিকাল এনালিষ্টদের চোখে ধরা পরেনি আজও। যাই হউক,সে দিকে না গিয়ে চিঠির বিষয় নিয়েই আজকের আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকুক,সীমাবদ্ধ থাকুক চিঠিতে জামায়াতের জন্য কামারুজ্জামানের রিফর্মের বিষয়গুলো প্রয়োজনীয়তা যাচাই বাছাইয়ের মধ্যে। জনাব কামারুজ্জামান এর কথাগুলোকে একটু ক্রস চেক করা,এক্সামিন করা দরকার,ফলে তার সত্যতা ও উপযোগিতা বুঝা সহজ হবে। "বদলে যাচ্ছে জামায়াতের নাম" শিরোনামে ১৩ মে ২০১০,বৃহস্পতিবার দৈনিক প্রতিদিন পত্রিকায় আরিফুর রহমান এর একটি এক্সক্লুসিভ লেখা ছাপা হয়।

এই নিউজটাকে বলা যেতে পারে একটি রুদ্ধধার বৈঠকের লিক হওয়া খবর। সেখানে জামায়াতের রিফর্মের উদ্দেশ্যে পুরানা পল্টনে একটি গোলটেবিল বৈঠকের কথা বলা হয় যেখানে মীর কাশেম আলী,মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সচিব শাহ আবদুল হান্নান এবং ছাত্রশিবিরের সাবেক বেশ কয়েকজন সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। রিফর্মের সুত্রপাত ২০১০ সালের ৯ জুন ঢাকার একটি বেসরকারি 'থিঙ্ক ট্যাঙ্ক' ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচন পর্যালোচনা করে একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণ দাঁড় করায়। এতে তারা জামায়াত সম্পর্কে মন্তব্য করে এই বলে যে, 'জামায়াত বর্তমানে ইমেজ সংকটে ভুগছে। ভবিষ্যতে এই অবস্থার আরো অবনতি ঘটতে পারে।

উক্ত বৈঠকের কথা আমীরে জামায়াত জনাব মতিউর রহমান নিজামীকে জানানো হলে তিনি শিবিরের সাবেক সভাপতি ও জামায়াতের তরুন নেতৃত্বকে এই বলে বোঝান যে, মীর কাশেম আলী ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সুযোগ-সন্ধানী। তাদের কথায় কান না দেয়ার পরামর্শও দেন তিনি। যদিও তরুন নেতাদের পাল্টা প্রশ্নের(সুযোগ সন্ধানী হলে দলে রেখেছেন কেন?) কোন জাবাব তিনি দিতে পারেননি বলে জানা যায়। ব্যাক্তিগত সুত্রে আরো জানা যায়, আমীরে জামায়াত তখন সাবেক আমীর গোলাম আযমের কাছে এই বিষয়ে দারস্থ হলে তিনি মীর কাশেম আলীকে ডেকে এইসব থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। ঐ গোল টেবিল বৈঠকে পাওয়ার পয়েন্টে উপস্থাপন করে জামায়াতে বেশ কয়েকটি সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরা হয়।

বলা হয় : এক, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করায় জামায়াতের প্রথম সারির বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিরূপ প্রচারণা থাকায় সর্বজনগ্রাহ্য জাতীয়ভিত্তিক ইমেজ তৈরি তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রায় চার দশক জামায়াতের বিরুদ্ধে এই প্রচারণা বন্ধ ছিল। কিন্তু বর্তমানে তা আবার শুরু হয়েছে। এতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জামায়াতের ব্যাপারে একটি বিরূপ প্রভাব পড়েছে। বর্তমানে যুদ্ধাপরাধী বিষয়টি সামনে চলে আসায় এটি আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।

এমতাবস্থায় জামায়াতের রাজনৈতিক ইমেজ পুনরুদ্ধার বা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত কঠিন হবে। দুই, দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে রয়েছে দুর্বলতা। তাদের কেউ কেউ বৃদ্ধ ও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নতুন উদ্যমে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য তাদের নেই। তিন, জামায়াতের পরিবেশ রুদ্ধদ্বার (রেজিমেন্টেড) ধরনের।

এ জন্য ইসলামী মূল্যবোধসম্পন্ন উদারনৈতিক ব্যক্তিরা এই দলে প্রবেশ করতে পারে না। দলটিতে সৎ মানুষের অভাব না হলেও দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার মতো উপযুক্ত ও দক্ষ লোকের অভাব রয়েছে। জামায়াতের বাইরে যেসব সৎ ও দক্ষ লোক রয়েছে, তারা যে কোনো পর্যায়ে জামায়াতে যোগ দিতে উৎসাহবোধ করে না। চার, জামায়াতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণা বর্তমানে আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে। এতে ভোটারের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।

পাঁচ, রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে জামায়াতের বর্তমান নেতৃত্বের মধ্যে আধুনিক ধ্যান-ধারণার অভাব রয়েছে। সমস্যাসংকুল বাংলাদেশের বেশকিছু মৌলিক সমস্যা রয়েছে। সব দলই এসব বিষয়ে কোনো না কোনো বক্তব্য দিয়ে থাকে। এসব সমস্যার অগ্রাধিকার নির্ণয় করে জামায়াত উত্তম বিকল্প কোনো সমাধানের দিকনির্দেশনা জাতির সামনে পেশ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অসৎ নেতৃত্বের বিকল্প হিসেবে জামায়াতের নেতারা তাদের দলকে জাতির সামনে তুলে ধরতে পারেননি।

ছয়, ভোটের রাজনীতিতে বর্তমানে যে কৌশল নেওয়া হয়, তা নিতে জামায়াতের বেশ সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সাত, জামায়াত নতুন প্রজন্মের চিন্তা-চেতনার আলোকে নিজেদের উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ভোটারদের কাছে নিজেদের কর্মসূচি উপস্থাপনের জন্য যে ধরনের আধুনিক পরিভাষা ব্যবহার করা প্রয়োজন, তা ব্যবহারে জামায়াতের ব্যর্থতা রয়েছে। আট, নীতি ও আদর্শের সঙ্গে আপস না করেও কৌশলগত কারণে উদারনীতি অনুসরণ করে সমর্থনের পরিধি বৃদ্ধির দৃষ্টিভঙ্গি জামায়াতের নেই। নয়, বর্তমানে বিএনপির ভঙ্গুর অবস্থার কারণে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির ঐক্য ভবিষ্যতে কতটা কার্যকর হবে তা বলা কঠিন।

এমনি এক পরিস্থিতিতে বিকল্প রাজনীতির সন্ধানের জন্য মত প্রকাশ করা হয় পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায়। উপরোক্ত সীমাবদ্ধতাগুলোর সাথে নুনতম জ্ঞান সমৃদ্ধ জামায়াত-শিবিরের নেতা কর্মিরা একমত হবেন বলে আমার বিশ্বাস। সেই বৈঠকে উপস্থিত কামারুজ্জামান সাহেব তার সাম্প্রতিক চিঠিতে পুরাতন কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন। তিনি ৩টি অপশন এর কথা উল্লেখ করেছেন; এক. যা হবার হবে। আমরা যেমন আছি তেমনি থাকব।

(বর্তমানে এই কৌশলই অবলম্বন করা হয়েছে। ) দুই. পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জামায়াত সিদ্ধান্ত নিয়ে পেছনে থেকে একটি নতুন সংগঠন গড়ে তুলবে। এই সংগঠন প্রজ্ঞা ও দৃঢ়তার সঙ্গে ধর্মহীন শক্তির মোকাবিলা করবে। তিন. আমাদের যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে, তারা জামায়াতের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াব এবং সম্পূর্ণ নতুন লোকদের হাতে জামায়াতকে ছেড়ে দেব। অর্থাৎ একটা নিউ জেনারেশন জামায়াত হবে এটি।

' তিনি অবশেষে দ্বিতীয় যে বিকল্পটির কথা উল্লেখ করেছেন তার পক্ষে মত দিয়েছেন এবং বলেছেন এটি সামনে রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাই হবে কাঙ্ক্ষিত এবং যুক্তিযুক্ত। ' তিনি উল্লেখ করেন, 'এ ধরনের একটি অবস্থান গ্রহণ করলে সাময়িকভাবে আমাদের জন্য ব্যক্তিগতভাবে অবমাননাকর মনে হলেও শেষ পর্যন্ত মহত্ত্বের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। ' অবশেষে Realisation অনেক আগে থেকেই দলের ভেতরে রিফর্মের গুন্জন চলছিল। ইশারা-ইংগিতে বিভিন্নজন বর্তমান নেতৃত্বের প্রথম সারির যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ(হয়তবা সেগুলো মিথ্যা) রয়েছে তাদের নিজ দায়িত্বে সড়ে যাওয়ার জন্য আওয়াজ তুলছিলেন। যুক্তি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের প্রথম সারির নেতাদের ভূমিকার কারনে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলার চেষ্টা করেছেন অনেকেই।

কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ইস্যু নিয়ে যখনি প্রশ্ন তোলা হত,এটাকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের থিওরি দিয়ে replace করা হত। কামারুজ্জামান নিজেই অবশেষে স্বীকার করেছেন; জামায়াতের অনেকে মনে করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার বিষয়টি একসময় মিটমাট হয়ে যাবে। আমরা অনেকেই মনে করেছিলাম এটা একসময় এমনিতেই শেষ হয়ে যাবে। আমাদের অনেকের চিন্তার গণ্ডি অতিক্রম করে এটা একটা জ্বলন্ত ইস্যু হিসেবে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিছু না হলেও দল ও নেতৃত্বের ভাবমর্যাদা ধুলায় লুণ্ঠিত হয়েছে এবং জনমনে এক ধরনের নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করা হয়েছে।

কয়েক বছর আগে লন্ডনে বলা ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাকের কথারই প্রতিধ্বনিই শুনতে পাই কামারুজ্জামানের কথায়; 'পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলনে বিরোধিতা করার মতো অতি স্পর্শকাতর কোনো অভিযোগ নেই। ব্যারিষ্টার রাজ্জাক আরো বলেন; "পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন নজির নেই যে, স্বাধীনতার বিরোধীদের সে দেশের মানুষ ক্ষমতায় নির্বাচিত করেছে" কামারুজ্জামান আরো লিখেছেন, এটা স্বীকার করতেই হবে যে, বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলন খুবই সম্ভাবনাময় আন্দোলন হওয়া সত্ত্বেও এই দুর্ভাগ্যজনক ও স্পর্শকাতর অভিযোগ আন্দোলনের রাজনৈতিক সাফল্য ও গ্রহণযোগ্যতার পথে বড় বাধার সৃষ্টি করে আছে। ' The Fact সামগ্রিক বিবেচনায় নতুন কর্মপন্থা ও কর্মকৌশল নির্ধারণ করা সময়ের অনিবার্য দাবি। আমরা যদি নতুন কর্মকৌশল গ্রহণে ব্যর্থ হই, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না বলেছেন জামায়াতের পরিক্ষীত এই নেতা। রিফর্মের ইশতিহার কামারুজ্জামান কি ধরেনর রিফর্ম হতে পারে তার কিছুটা বর্ণনা দিয়েছেন।

তাঁর মতে; ১। বাংলাদেশের সংবিধান সামনে রেখে যে ধরনের সংগঠন হলে কোনো প্রশ্ন থাকবে না, সে ধরনের সংগঠন করতে হবে। ২। ছায়া মন্ত্রিসভা কনসেপ্ট গ্রহণ করতে হবে( বৃটিশ কনসেপ্ট)। ৩।

বিশিষ্ট নাগরিক, প্রবীণ আলেম ও পণ্ডিত ব্যক্তিদের নিয়ে দলের একটি অভিভাবক পরিষদ থাকবে। ৪। তিনবারের বেশি কেউ কেন্দ্রীয় সভাপতি বা জেলা সভাপতি থাকতে পারবে না। ৫। সব পদের ব্যবহার বাংলা পরিভাষায় হবে।

(যেমন আমীরের জায়গায় সভাপতি হবে) ৬। কেন্দ্রীয় কমিটিতে সব পেশার লোকদের প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে। ৭। নির্বাচনে প্রথমে স্থানীয় সরকারব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। ৮।

সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে গতিশীল করতে হবে। ৯। যুব ও ছাত্রদের সহায়তায় ক্রিকেট, ফুটবল ও হকি দল, প্রয়োজনে ক্লাব গঠন করতে হবে। ১০। অমুসলিমদের সঙ্গে সামাজিক ও ওয়ার্কিং রিলেশন গড়ে তুলতে হবে।

The Challenge লন্ডনস্থ সাপ্তাহিক The Muslim Post পত্রিকার Editor আলতাফ হোসেন জামায়তের রিফর্মে অন্যতম একটি প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে বলেন; বাবা যেমন ছেলে বড় হলেও তাকে খোকা বলেই মনে করে,জামায়াতের নেতাদেরও এমনটি দেখা যায়। তারা আন্তরিকতার সাথেই মনে করেন; আমরা যদি চলে যাই জামায়াতের কি হবে?এই জামায়াতের অপেক্ষাকৃত যুব নেতৃত্ব সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করতে পারবেনা। এটা সত্য, "বিতর্কিত"নেতাদের ত্যাগ তীতিক্ষার কারনে জামায়াত আজ এত দুরে এসেছে কিন্তু পরিবর্তন সময়ের দাবী। জামায়াতকে লিড করার মত অনেক চৌকুস নেতৃত্ব আজ তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন যাদের বিরুদ্ধে অন্তত স্বাধীনতা বিষয়ক বিতর্ক নেই। যে বিষয়টা কামারজ্জামান সাহেব বুঝেছেন অন্যদেরও বুঝার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন, তার ভাষায়; 'আমাদের অনেকের তো বয়সও হয়েছে।

সরাসরি আন্দোলনে থাকলেই বা আমরা আর কতটা অবদান রাখতে পারব? তারপরেও যে চ্যালেন্জ মোকাবেলা করতে হবে,কামারুজ্জামান তার লেখায় কিছুটা উল্লেখ করেছেন; ১। চিঠির এক জায়গায় কারাগারে আটক নেতাদের প্রতি ইঙ্গিত করে কামারুজ্জামান বলেন, 'নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে। ২। নিজেকে সম্পৃক্ত করে চিন্তা করলে সমস্যার সমাধান হবে না। ' রিফর্ম করতে এই চ্যালেন্জগুলো মোকাবেলা করতেই হবে।

অন্যথায় উনার চিঠিতে উল্লেখ করা প্রথম অপশন যা হবার হবে। আমরা যেমন আছি তেমনি থাকব। (বর্তমানে এই কৌশলই অবলম্বন করা হয়েছে। ) যদি আঁকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করা হয় তাহলে তিনি নিজেই মন্তব্য করছেন, '"আমার ক্ষুদ্র বিবেচনায় প্রথমটা হচ্ছে নেতৃত্ব আঁকড়ে থাকা, হতবুদ্ধিতা এবং হতাশাবাদিতা। একটি গতিশীল আন্দোলন এ ধরনের পশ্চাৎমুখী অবস্থান গ্রহণ করতে পারে না।

" সর্বশেষ, কয়েকটি প্রশ্ন করে শেষ করতে চাই। জামায়াতের জটিল স্ট্রাকসার কি এই পরিবর্তন মেনে নিবে? পুরাতনকে পরিবর্তন করে সম্পূর্ন নতুন ব্রান্ডে জামায়াতের পথ চলা শুরু হলেও কি তারা জনগনের আস্থা ফিরে পাবে? নাকি দেশের মানুষ শত কষ্ট সহ্য করে হলেও পরিবারতান্ত্রিক,দুর্নিতীবাজদের দল ট্রেডিশনাল(৫বছর অন্তর "দেখিনা এবার কি করে") আওয়ামীলিগ ও বিএনপি'র মাঝেই দেশের উন্নয়নে তাদের আশার প্রতিফলন দেখার স্বপ্ন দেখে যাবে? দ্রষ্টব্য: অনেকের কাছে শুনেছি সামুতে গালাগালি হয়,যার ফলে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্লগ হওয়া সত্ত্বেও লেখার সাহস করিনি। গালাগালি করে ও সহ্য করে আর যাই হউক বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা হয়না। যে কেউ যেকোন মত দিতে পারেন,দ্বিমত হজম করার ধৈর্য আমার রয়েছে কিন্তু দয়া করে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার ও গালাগালি করবেন না।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.