আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোয়ান্টাম প্যাচালি



নিচের লেখাটা আসলে ব্লগার পাকাচুলের একটা লেখার কমেন্ট ছিল আমার। বড় হয়ে যাওয়ায় ভাবলাম ব্লগে দিয়ে দেই । ভাল থাকবেন সবাই। লেখাটা এই লিংকে Click This Link """"অনেক লেখা দেখি কোয়ান্টাম নিয়ে আমি সামুতে । কিছু ধারনা আর চিন্তা শেয়ার করব কোয়ান্টামের সাথে আমার পরিচয় ক্লাস ৯ থেকে।

কোর্স করা হয়নি কেবল বইটাই পড়েছিলাম। আমি বলব হতাশা, প্রেমে ছ্যাকা আর যাই খারাপ জিনিষে কেউ পড়ুক না কেন যারা খুব ভালো অবস্থায়ও ছিলেন এই বই পড়লে তাদের ভাল ছাড়া খারাপ হবেনা। আর এর সুফল আমি আমার ভার্সিটি লাইফ শেষ করার আগ পর্যন্ত পেয়ে এসেছি প্রতিটা পদে। এটা ডিনাই করার উপায় নাই। মেডিটেশন ব্যাপারটা পুরাটাই বৈজ্ঞানিক।

যারা সামুতে আছেন নতুন করে কিছু বলার নাই এ ব্যাপারে সবাই ভাল জানেন আর না জানলেও এ ব্যাপারে জ্ঞানী হয়ে যাওয়া এক দিনের ব্যাপার এখন গুগলের কল্যানে। তবে যেহেতু জিনিষ্টা যেহেতু কিছুটা মানসিক ট্রেইনিং এর ব্যাপার, কাজেই এর শেখানোটা যতটা সহজ হবে ততই তা আপনার মনের মধ্যে গেথে যাবে। অনেক প্রতিষ্ঠান এই শেখানোর কাজ করলেও বাংলা ভাষায় এর সহজ ব্যবহার ও শিক্ষা কোয়ান্টাম প্রথমে এনেছে আমার জানামতে এবং এ কারনে এটা ছড়াতে সক্ষম হয়েছে। যে কারনে বিজয় সফটওয়ার এর চাইতে সবাই অভ্র পছন্দ করে কাজের জন্য ইংলিশ এর চাইতে তাই সবাই বাংলা টা পছন্দ করবে সুবিধার জন্য জানা কথা। কাজেই তা কিছুটা হলেও মানতে হবে।

কোয়ান্টামের এবার কিছু ফ্যাক্টর বলি যা আমার ভাল লাগেনা এইবার কেমন ???- ১। গুরুজীর মহাজাতক নাম নিয়ে আমার কোন কমপ্লেক্স নাই, অনেক ব্যক্তিবর্গের অনেক ধরনের ছদ্মনাম থাকে , তাতে কোন প্রব্লেম না হলে এটাতেও কোন প্রব্লেম থাকার কথানা, অনেকেই এটাকে একটা ইস্যু বানায় অনেক গালাগালি করে যেটা আসলে কোন ইস্যুই না, ছদ্মানামে কেউ থাকতাই পারে, বিভিন্ন গাইডে এক হারি লেখকের ছদ্মনাম মুখস্ত করতে হয়েছে বিভিন্ন পরীক্ষার জন্য তার গুরুজী নামেও আমার কোন প্রব্লেম নাই, মসজিদে গিয়ে তো আর হুজুরকে স্যার বললে সে খুশি হবেনা, আবার স্যরকে হুজুর ডাক্লেও খুশি হবেনা, সে যদি নিজেকে গুরুজী ডাকাটা প্রিফার করে কারো কিছু বলাটা বোকামি.। .। .। .।

.। .। । তবে তার ওয়াইফকে মাজী ডাকার কোন লজিক আমি দেখিনা। ২।

কোয়ান্টামের বইগুলো ম্যাক্সিমাম ভাল। সবগুলোই আমার পছন্দ, বেশিরভাগই অনেক ডিটেইলস লজিক দেয় , তবে কিছু কিছু বই আসলে কোন লজিকের ধার ধারেনা তার মধ্যে দুটো হল নিউমারোলজি যেটা নিয়ে লেখক কথা বললেন আরেকটা হল জন্মদিন ও আপনার ভাগ্য। আমার মতে দুইটাই ফাউল বই তবে তা বাকি আরো ৭-৮টা ভালো বইয়ের বাইরে। এটা কাউন্টে রাখবেন। ২টা বই দিয়ে আপনি তার ভালো খারাপ বিচার করতে গেলে ঠিক ভালো দেখায় না।

৩। কোয়ান্টামের ফিস অনেক বেশি। এ কথা যেমন ঠিক কারন একবারে এত টাকা ম্যানেজ করা যেমন সম্ভব না অনেকের জন্য এটাও ঠিক আপনাকে না পারলে একসাথে দিতেও হবেনা, ৫০০ করে ভেঙ্গে দেবার অপশন আছে। তবে তাও ৮০০০ টাকা এই কোর্সের জন্য বাংলাদেশের সাপেক্ষে অনেক অন্য দেশের ফি আমি দেখব না কারন আমি বাংলাদেশী তাই অন্য দেশ কম্পেয়ার করার দরকার আমার নাই তার কিরকম ফিস রাখে। কোর্স করে আমার মনে হয়েছে এর ফিস ৫০০০ হাইস্ট ৬০০০ হলে পারফেক্ট হয় এর বেশি না।

কেউ যদি চান আমার সাজেশান হল আগে বই পড়েন, জানেন , কোয়ান্টামের বিভিন্ন ফ্রি সভায় যান টাকা লাগেনা, ভালো লাগলে তবেই করবেন। হুজুগে পড়ে যাবেননা, তবে সাথে এটাও বলি , কোর্সটা করে আপনি মহাপুরুষ না হলেও আপনার লাইফটা আগে যা ছিল একটু হলেও ভাল হবে যেটা ওই কোর্স ফি ওয়ার্থ । তাও জেনে যাবেন না জেনে না। আমি জেনেছি ২০০২ তে আর করেছি ২০১১ তে কোর্সটা। ৪।

কোয়ান্টামের অনেক গ্রাজুয়েটদের সাথে কথা বললাম, বেশিরভাগই নরমাল পারসোনালিটির চাইতেও অনেক বেশি কিছু ধরে , তবে দুঃখের কথা হল অনেকেই জিনিষ্টা অনেক বাড়িয়ে বলে অথবা টেকনিকাল পুরো ব্যাপারটা না জেনে বলে। এটা খারাপ। হাতের বালা আমি কিনেছিলাম ঝোকে কোর্স করার পর কিন্তু ১ ঘন্টা পরেই খুলে রেখে দিয়েছি কারন আমার স্টাইলে হাতে চুরিদারি ছেলে হিসেবে পড়াটা খ্যাত একটা ব্যাপার আর রোগ বালাই ভাল হবে এ আমার মনে হয়না তাই। ওদের এরকম আরো অনেক প্রডাক্ট আছে যার কোন ভ্যালিডীটি আছে বলে আমার মনে হয়নাই, তবে ওদের সেল করা ভাল প্রডাক্টের মধ্যে কিয়দাংশ হল এই প্রডাক্ট গুলো । কাউন্ট করবেন।

৫। চুম্বক পানি গুরুজীর চুম্বক ছাড়া হবেনা এটা বোধয় ব্লাফ যার কাছেই শুনেন না কেন । তিনি তার বইতেও বলেছেন যেকোন একটা ম্যাগনেট দিয়েই হবে। যদিও পুরো ব্যাখ্যাটা আমি সাইন্টিফিকালি জানিনা তবে কিছু সুবিধা যে হয় সেটা নেটে সার্চ করলে আপনি পাবেন। কিছু সুবিধা হয়না তা না।

এবার কিছু কথা বলি তিনি একটা জিনিষ সেখান তার জন্য টাকা নেন। জিনিষটা আপনাকে সুপারম্যান না বানালেও একটা ভাল মানুষ বানাবে, সবাই না হলেও ম্যাক্সিমামি তা হয়, দুঃখজনকভাবে আপনার সাথে গাধা টাইপের গ্রাজুয়েটের দেখা হলেও ম্যাক্সিমামের জন্য এইটা ফ্যাক্ট। ইনিশিয়ালি শুনে অনেক বেশি মনে হলেও কোর্সটা ৪০ ঘন্টার । অনেক ইংলিশ শেখানোর কোর্সো সপ্তাহে ৩ দিন করিয়ে ৪০ ঘন্টা সার্ভিস দেয়না। মানুষ ৪ দিনটা দেখে, কিন্তু সময়টা দেখেনা।

কোয়ান্টাম নিয়ে গালাগালি করার জন্য এটা হচ্ছে প্রথম ট্রিক্স, যেটা সবাই খাটায়। তিনি এটা কিভাবে প্রপাগেট করেন। চকচকে এড না, যেটা দেয়া হয় তাও হয়ত মাসে দুবার, সাদাকালো এড এ কিন্তু বেশি প্রচার হয় কিছু ভাল কথা লেখা স্টিকার এর মাধ্যমে। যেই কথাগুলো খুব মানা দরকার একটা ভাল মানুষ হবার জন্য। ভাল একটা মীন্স ইউজ করে এড দেয়াটায় দোষ দেখিনা।

তিনি কিছু অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে যেভাবে দাড়ান সেভাবে অনেকেই কিছু করতে পারেনাই লামায় অসংখ্য পশুর কোরবানির মাংস শুধু গরীব্দেরই বিলানো হয়। একটা ঐ সাইজের শিশুকানন চালাতেও অনেক টাকা লাগে যা চুরিচামারি করে নেয়া হয়না, মানুষের দানে চলে, সেই দান হালাল্ভাবে ম্যানাজ করা সবার পক্ষে সম্ভব না যা তিনি করতে পেরেছেন, যতটুকুই করুন না কেন , করেছেন এবং তার অথেন্টিক ডকুমেন্টও রেখেছেন যাতে সবাই গিয়ে তা দেখতে পারেন কোন টাকা কোন খাতে খরচ হয়। সে অনেক টাকা কামায়, এই কোর্স করে কিন্তু কোরবানি অথবা অন্য কোন অনুশঠানে সে ঢাকার চাকচিক্যর মধ্যে বসে হয়তোবা থাকেননা, ঐ দুর্গম পাহাড়ী লামায় গরীব আদিবাসিদের সাথেই সময়টা কাটিয়ে দেন, অনেকেই যা করবেনা ঐ পরিমান টাকা কামালে। কোয়ান্টামের যাকাত এর সিস্টেম নিয়ে আমার ধর্মীয় কিছু প্রশ্ন থাকলেও যাকাতের টাকা এতটা এফেক্টিভ্লি ইউজ আমি আর কোথাও দেখিনি। যাকাতের আসল উদ্দেশ্য সাধনে কোয়ান্টাম সফল হয়েছে বলে আমার ধারনা।

মানুষকে শুন্য থেকে অন্তত রুজিরোজগারে সক্ষম করে তুলেছে এমন উদাহরন ভুরিভুরি। ওদের সি ডি একেক্টা ১৫০ টাকা হলেও তার কোন কপিরাইট নাই, আপনি চাইলে ইচ্ছামত কপি করতে পারেনা। সবগুলো ওয়েবসাইটে ফ্রি ডাউনলোডও করতে পারেন। সি ডি ক্যাসেট বের করা হচ্ছে যাদের পি সি নাই তাদের কথা চিন্তা করে এখনও। প্লেয়ারে দিয়ে চালানোর জন্য।

আমি গুরুজীর ব্লাইন্ড ফলোয়ার না, তারও অনেক ত্রুটি আছে যা আমি বিশ্বাস করি। কিন্তু তার কাছ থেকে আমি যা শিখতে পেরেছি তা হয়তবা আমার জীবনে এফেক্টিভ্লি শেখা বলতে যা বলে তাই , যা আমি প্রতিটা পদে কাজে লাগাতে পারি। তাকে গালি দিলে আমার খারাপ লাগেনা, কিন্তু তাকে ছোট করে যারা কোয়ান্টামকে ছোট করতে চায় আর মানুষকে একটা ভাল জিনিষ শেখানো থেকে বিমুখ করতে চায় তারা আমার মতে খুব একটা সুবিধার মানুষ না। কারোও দোষ্টা দেখলে ভালোটা দেখার চেষ্টাও করা উচিত। এক্ষেত্রে গুরুজীর দোষের চাইতে ভালোটা আমার কাছে কয়েকশ গুন বেশি, যদিও দোষগুলা ইগ্নোর করার মত না তারপরো।

বিশাল কমেন্টের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ব্লগে দেয়া উচিত ছিল কমেন্ট নাকরে। আপনার প্রতি রাগও নাই আর আমি কোয়ান্টামের এডও করছিনা, চাইলে মুছেও দিতে পারেন, হয়ত ব্লগে দেব পরে, এটা কোন কাউন্টারও না, কিন্তু কারো দোষ বের করার আগে একটু দেখবেন, সে মানুষের জন্য কতটুকু করতে পেরেছে আর আপনি কতটা উদ্যোগী হয়েছেন। কেউ যদি বলে , ভাই কোর্স কি করব, আমি বলব ভেবে তারপর যান। আগে টাকা খরচ করবেন না।

কিন্তু কেউ যদি বলে, ভাই কোয়ান্টামের সাথে কি কানেক্টড থাকব, আমি বলব চোখ বন্ধ করে যান। ভাল থাকবেন লেখক। """"

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.