আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শত্রুরা এখন এক এক করে আসবে (প্রসঙ্গঃ বিভক্ত জাতি, পথচ্যুত শাহবাগ, বেপরোয়া জামাত, ভারতের রাষ্ট্রপতি)

শেকল আমাকে আটকাতে পারবেনা, পারবে সময়। সময়ের আগে তাই ছুটে চলেছি। কৌশলে আদায়কৃত সরকারের সাময়িক আপাত গ্রহণযোগ্যতার চাঁদরে কত যে গোপন এবং প্রকাশ্য দেশবিরোধী চুক্তি হয়ে যাবে ভারতের রাষ্ট্রপতির এই সফরে, সেটা ভেবে আতংকিত বোধ করছি। ১৯৭৪ এর পর এই প্রথম কোন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি আসছেন, আনন্দিত হবার বদলে আমি শঙ্কিত। বন্ধুত্বের বিপরীত কোন সত্তা যখন ওপার থেকে হাসিমুখে আসে, তখন বোঝাই যায় এপারেও তাঁর আত্নীয়ের আত্নত্যাগের প্রতিশ্রুতি সে পেয়েছে।

একদল চাঁদ দেখানোয় ব্যস্ত, আরেকদল চাঁদ দেখানোদের কলা দেখানোয় ব্যস্ত। শাহবাগের আন্দোলনটা আমাদের কাছে খুব জনপ্রিয়তা পাবার একটি কারণ হচ্ছে, এখানে দেশের ইতিহাসের প্রত্যেকটি অদ্ধ্যায় জেনে না এসেও গলা উঁচু করেই কর্ম সারা চলেছে, পুলিশ পাহারায় অত্যন্ত নিরাপদে আপাত দেশপ্রেম দেখানো গিয়েছে, ফেসবুক এবং বিভিন্ন ব্লগে যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে রথী মহারথীদেরকে বহুদিনের জমে রাখা রাগ মেটানো গিয়েছে। বিভিন্ন পোষাকে, পতাকায় মন্ডিত হয়ে ডিএসএলারে তোলা অসংখ্য হ্রদয়বিদারক ছবির সাথে পোস্ট করা গিয়েছে আবেগময় অনেক স্ট্যাটাস এবং কমেন্ট। শাহবাগে আমিও গিয়েছি। টানা ১৪ দিন।

আমার যতটুকু করার ছিল করার চেষ্টার কমতি ছিল না। প্রথম ৩ টি দিন শাহবাগে যা হয়েছে, অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। খুব দ্রুতই দৃশ্যপট বদলে যায় স্বার্থান্বেষী কিছু ব্যক্তির আপ্রাণ উদ্দ্যোগে। যখন বুঝতে পেরছি, আশাহত হয়ে সরে এসীছি আস্তে আস্তে, চেষ্টা করেছি বলার জন্য যে যেভাবে দৃশ্যপট বদলাচ্ছে তাঁর গতি এতই ধীর এবং সুকৌশলমন্ডিত যে এখনই তা ধরতে না পারলে আন্দোলন গণমানুষের কাছে থেকে স্বার্থান্বেষীদের হাতে চলে যাবে। কিন্তু নব্য দেশপ্রেমিক কিছু ব্যক্তি তাঁদের সামনে হাজির হওয়া এত সহজে প্রাপ্তপ্রায় ২য় মুক্তিযোদ্ধার খেতাব টা হারাতে চাননি।

খুঁটি গেড়ে বসেছিলেন অন্ধ সেজে, এখনো আছেন। দেশের জন্য যাদের চিন্তা হয়, চিন্তা করি ভবিষ্যৎ নিয়ে। রাজাকারদের বিচারের দাবীটা উত্থাপন করা হয়ে গিয়েছে প্রথম ৩ দিনেই, মহাসমাবেশের মধ্য দিয়েই, ধাপে ধাপে দাবীটাকে ভবিষ্যৎমুখী করতে পারলে, বিচার এবং রায় কার্যকর আরও শুদ্ধভাবে হত, কিন্তু আমাদেরকে শুধু পেছনেই টানা হয়েছে। শুধুই অতীতে আমাদের নিমজ্জিত করে রেখে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তার সময় দেয়া হচ্ছে না। শাহবাগের দাবী ছিল এক দফা, হয়ে গেল ছয় দফা (যদিও দুর্নীতি, সাংবাদিক হত্যা অথবা অন্যান্য দফা অন্তর্ভূক্তের ব্যাপারে ঘোর আপত্তি দেখানো হয়েছে) শাহবাগ ছিল রাজাকারের বিরোধী, বানিয়ে দেয়া হল একটি সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরোধী এবং মুখোমুখি (উদ্দেশ্য প্রতিপক্ষের আড়ালে নিজের অপরাধ এবং নিজের মানবতাবিরোধীদের আড়াল) সাধারন মানুষ খুন হল, সুযোগসন্ধানীরা কেউ তাকে শহীদ বানালো, কেউ বানালো ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা সৈনিকের সেনাপতি।

এই সুযোগে বহুদিনের পুষে রাখা রাজনৈতিক ক্রোধ রক্তের বন্যায় রূপান্তরিত হল। ভুক্তভোগী হল কিছু পুলিশের পরিবার এবং কিছু মগজধোলাই যুবকের পরিবার। সবাই যখন ব্যস্ত এই খেলায়, ভয় পাচ্ছি ভবিষ্যতকে ভেবে। বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত এ দেশটিতে হানা দেওয়ার জন্য (অন্তত গোপন অভিসার বাস্তবায়নের) জন্য এই সময়টি গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মোক্ষম। বন্ধুত্বের বিপরীত সত্তাদের কাছ থেকে দেশটা কিভাবে বাচবে, সেই দুশ্চিন্তা আপনাকে ঘিরে রেখেছে কিনা জানিনা, আমাকে বিদ্ধ করছে, জাতি যে আজ বিভক্ত এবং লক্ষচ্যুত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।