আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি বিস্মিত ও স্তম্ভিত। নর্থ সাউথে খুনিও আছে!

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্রের ছাত্রত্ব ও পরিচয়পত্র স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রথম আলোর এই সংবাদে যতটা না দুঃখিত তার চেয়ে বেশি বিস্মিত হয়েছি। দুঃখিত কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুনি পাওয়া গিয়েছে। আর বিস্মিত হয়েছি গ্রেপ্তারকৃতদের চিন্তা ধারা দেখে। ব্লগার রাজীব ইসলামের বিরুদ্ধে লিখেছে।

এজন্য তাকে ‌'উচিৎ শিক্ষা' দেবার জন্য খুন করা হয়েছে। ব্লগার রাজীবের ইসলাম বিরোধী লেখার নিন্দা করেছি আমিও। শুধু রাজীব কেন যারা এভাবে লেখালেখির মাধ্যমে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে তাদের সেসব কর্মকাণ্ড নিন্দার যোগ্য। কিন্তু সেজন্য যদি রাজীবের শাস্তির বিধান থাকে তবে তা দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কারো যদি এতটাই খারাপ লেগে থাকে তাহলে সে ঐ মর্মে আদালতে মামলা দায়ের করতে পারে।

কিন্তু আইন ভঙ্গ করে নিজেরা কারো শাস্তির বিধান করতে পারে না। এটা বিস্মিত হওয়ার মত ঘটনাই বটে কারন রাজনীতি থেকে একশ হাত দূরে থাকা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র এর সাথে জড়িত। সত্যি কথা বলতে কি, প্রথম দেখায় খবরটি বিশ্বাস করতে পারি নি। খবর পুরোটা পড়ার পরেও মনে খটকা লাগছে। আমি মনে করেছিলাম শিবিরের আরো উপর লেভেল থেকে হত্যাকাণ্ডটি পরিচালনা করা হয়েছে।

কিন্তু আটক পাঁচজনের মাত্র একজন অতীতে শিবিরের সাথে যুক্ত ছিল। তাতে রাজীবের হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড কি না তা নিয়ে আমি সন্দিহান। তদন্ত সুষ্ঠু হলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে। এটা শুধু ওই পাঁচ সাতজন ছাত্রেরই প্ল্যান না কি এর উপরেও কোন গডফাদার আছে সেটা জানা যাবে। যে ইসলাম শান্তির ধর্ম নামে পরিচিত তা এখন খুনোখুনি আর প্রতিশোধের ধর্ম হতে চলেছে ইসলাম নামধারী পথভ্রষ্ট কিছু মানুষের জন্য।

তারা মনে করে নবী রাসূল বিরোধীদের হত্যা করে তারা ডাইরেক্ট বেহেশতের চাবি হাসিল করে নিয়েছে। এখন সে জন্য ফাঁসি হলে চিন্তা কী! তাদের পরকাল তো সেফ। এমন চিন্তা ধারা যদি কোন মানুষের হয়ে যায় তাহলে সে বেপোরোয়াভাবে তার কাছে যেটা সঠিক মনে হয় সেটাই করবে দেশের আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই। তারা এই হত্যাযজ্ঞকে জিহাদ নাম দিয়ে এর বৈধতা হাসিল করবে। অথচ বড় জিহাদ হল নিজের কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ।

সেই জিহাদ করে কতজন? তারা জিহাদের নাম করে মানুষ খুন করবে, উপরন্তু মগজ ধোলাই করে তাদের সমর্থকের সংখ্যা বাড়াবে। একটি জঙ্গি সংগঠন বোধ হয় এভাবেই তৈরি হয়। ইসলামকে এই জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষা করুন। শান্তির ধর্ম হিসেবে এর সুনাম অক্ষুন্ন রাখুন। ব্লগার রাজীবের কিছু লেখা আমি পড়েছি যেখানে পরোক্ষভাবে ইসলামের বিধিবিধানের উপর প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

সেরকম কিছু লেখা এই সামহোয়্যার ইন ব্লগেও বিদ্যমান। কিন্তু ইসলাম নিয়ে ডাইরেক্ট আক্রমনাত্মক ও অশ্লীল কিছু লেখা আছে যেগুলো একটি ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগে বিদ্যমান ছিল সেটা আদৌ রাজীবের ছিল কি না সেটা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। সেই লেখার সাথে রাজীবের অন্যান্য লেখার ভাষার কোন মিলই ছিল না। লেখা গুলো ছিল উস্কানি মূলক এবং এরূপ লেখা পড়ে কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমানের মনে আঘাত পাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু যারা তাদের ধর্ম নিয়ে কনফিডেন্ট তারা এরূপ লেখা দারা নিজেকে প্রভাবিত করবেন কেন! তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস কি এতই ঠুনকো যে একজনের লেখা দারা তা নষ্ট হয়ে যাবে।

তাছাড়া জেনে শুনে নিজ ধর্ম সম্পর্কে অশ্লীল লেখাগুলো যারা পুরোটা পড়েছে তারা কোন মানসিকতায় সেটা পড়লেন যদিও তারা জানতেন সেগুলো পড়ার পর তারা মাথা ঠিক রাখতে পারবেন না। আমি তো দু লাইন পড়ে আর এগুতে পারি নি। সাথে সাথে ব্রাউজার ক্রস করে বের হয়ে এসেছি। ফেসবুকে তো এরকম অনেক পেইজ আছে যেগুলো ইসলাম বিদ্বেষী। কই সেগুলোর জন্য তো তারা ফেসবুক আর ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করছেন না যদি তারা মিডিয়া দারা এতটাই অ্যাফেক্টেড হয়।

মিডিয়াতে সবকিছুই বিদ্যমান। যেটা পছন্দ করবেন না সেটা সযতনে এড়িয়ে চলুন। মিডিয়ার মাধ্যমেই এর প্রতিবাদ জানান। মিডিয়া থেকে শুধু খারাপ নয়, ভাল দিকটাই গ্রহন করুন। লিংকসমূহঃ নর্থ সাউথের গ্রেপ্তার পাঁচজনের ছাত্রত্ব স্থগিত (ভিডিও) পাঁচজনের ছাত্রত্ব স্থগিত করেছে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটি ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।